![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন/ জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন। [email protected]
ঘরে বসে একটা লোকগান শুনতে পাচ্ছি। জানালার ওপারে, বহু নীচে, মালিবাগ মোড়ে বিকট আওয়াজে বেজে চলেছে কাঙালিনী সুফিয়ার গান:
নিতাইগঞ্জ ডাইনে রেখে/সাধের নৌকা দিলাম ছেড়ে গো।/
এবার নিতাইগঞ্জ বামে রেখে/ ঢাকার গাঙে নাও ডুবাই।
কি এর মানে?
বাংলা লোকগানের মানে সহজে বোঝা যায় না বলেই এই প্রশ্ন। প্রথম লাইনটি (নিতাইগঞ্জ ডাইনে রেখে/সাধের নৌকা দিলাম ছেড়ে গো।) যাও-বা বোঝা যায়, কিন্তু পরের লাইনটিতে (এবার নিতাইগঞ্জ বামে রেখে/ ঢাকার গাঙে নাও ডুবাই। ) শুনে বড় ধন্ধ লাগে। কি এর মানে? ঢাকার নদীতে (গাঙে) নৌকা কে ডোবাচ্ছেন? কেনই-বা ডোবাচ্ছেন? উত্তর সহজে পাওয়া যায় না বলে মন অস্বস্তিতে ভরে ওঠে।
বাংলা লোকগানের মানে বোঝা সহজ নয় কেন?
এইসব ভাবনায় অস্থির হয়ে একবার পিছন ফিরে বাংলার ধূসর অতীতের দিকে তাকাই। আবছা কি সব যেন মনে পড়ে যায়। বইয়ের তাক থেকে হুমায়ুন আজাদ -এর একটি জনপ্রিয় বই তুলে নিই। দেখি যে হুমায়ুন আজাদ লিখেছেন, ‘বাঙলা ভাষার প্রথম বইটির নাম বেশ সদূর রহস্যময়। বইটির নাম চর্যাপদ। ... চর্যাপদ কতগুলি পদ বা কবিতা বা গানের সংকলন। এ -কবিতা গুলো লিখেছিলেন ২৪ জন বৌদ্ধ বাউল কবি। যাঁদের ঘর ছিল না, বাড়ি ছিল না। যাঁরা ঘর চান নি, বাড়ি চান নি। সমাজের নিচুতলার অধিবাসী ছিলেন আমাদের ভাষার প্রথম কবিকুল। ... এ-কবিতাগুলো সহজে পড়ে বোঝা যায় না; এর ভাষা বুঝতে কষ্ট হয়, ভাব বুঝতে হিমশিম খেতে হয়। কবিরা আসলে কবিতার জন্য কবিতা রচনা করেন নি; এজন্যই এত অসুবিধা, পদে পদে পা পিছলে পড়ার সম্ভাবনা । আমাদের প্রথম কবিরা ছিলেন গৃহহীন বৌদ্ধ বাউল সাধক। তাঁদের সংসার ছিল না। তারা সাধনা করতেন গোপন তত্ত্বের। সে-তত্ত্বগুলো তাঁরা কবিতায় গেঁথে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে একমাত্র সাধক ছাড়া কেউ তাদের কথা বুঝতে না পারে। ’ (লাল নীল দীপাবলী। পৃষ্ঠা ২০-২১)
আমার মনে হল যিনি ‘কোন-বা পথে নিতাইগঞ্জে যাই’ গানটি লিখেছেন তিনিও তাঁর এই গানে কোনও এক নিগূঢ় তত্ত্বের কথা বলেছেন। যা আমি বুঝতে পারছি না। আমি তো সাধক নই, সাধুসন্তদের তত্ত্বদর্শনের ব্যাপারে কৌতূহল বোধ করি মাত্র। কাজেই ভাবি যে, নিতাইগঞ্জ কোথায়? নারায়নগঞ্জ সদরে নিতাইগঞ্জ নামে একটি এলাকা আছে বৈ কী। গীতিকার কি সেই নিতাইগঞ্জের কথা বলছেন? হতে পারে। যদি তাই হয় তাহলে তা তিনি সরাসরি বলেছেন না। বলছেন প্রতীক ব্যবহার করে । কেননা, ‘কোন-বা পথে নিতাইগঞ্জে যাই’ এই গানের অত্যন্ত আকর্ষনীয় সুর কিংবা পপুলার বিটের আড়ালে হাজার বছরের পুরনো প্রতীকবাদী সন্ধ্যা গান উঁকি দেয় বলেই মনে হয় আমার। কাজেই আজও আমরা অগ্রহায়ণের রৌদ্রের ভিতর নিতাইগঞ্জের পাটের গুদামের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এই ভেবে শিহরণ বোধ করতে পারি যে কাঙালিনী সুফিয়ার ‘কোনবা পথে নিতাইগঞ্জে যাই’ গানটিতে বাংলার হাজার বছরের লোকায়ত ভাবদর্শন নিহিত! এবং আমাদের মনে বাংলার সেই ভাবকথার রহস্যের উদঘাটনের ইচ্ছা জাগতেই পারে। কিন্তু, তার আগে গানটির কথা জেনে নেওয়া যাক :
ঘুমাইয়া ছিলাম, ছিলাম ভালো/ জেগে দেখি বেলা নাই
কোন বা পথে নিতাইগঞ্জ যাই/ ও বন্ধুরে ...
নিতাইগঞ্জ করব বাসা/ মনে ছিল দারুন আশা গো
এবার ছয় ডাকাতে চুক্তি করে/ আশার মুখে দিল ছাই।
নিতাইগঞ্জ যাবার আশে/ দাঁড়াইয়াছি রাস্তার পাশে
আরে গাড়িতে চড়ব/ টিকিট কাটব গত্তি (!) মাসুল কিছু নাই।
নিতাইগঞ্জ ডাইনে রেখে/সাধের নৌকা দিলাম ছেড়ে গো।
এবার নিতাইগঞ্জ বামে রেখে/ ঢাকার গাঙে নাও ডুবাই।
এবার দেখি এই জনপ্রিয় লোকগানটির প্রকৃত মর্ম কিছু হলেও বোঝা যায় কিনা-
ঘুমাইয়া ছিলাম, ছিলাম ভালো/ জেগে দেখি বেলা নাই
কোন বা পথে নিতাইগঞ্জ যাই/ ও বন্ধুরে ...
এই লেখার সূচনায় হুমায়ুন আজাদ- এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছি যে: ‘আমাদের প্রথম কবিরা ছিলেন গৃহহীন বৌদ্ধ বাউল সাধক।’ কাজেই গানটির গোড়ার কথাগুলি উপলব্দি করতে
বৌদ্ধদর্শনের দিকে একবার ফিরে তাকানো যাক। বৌদ্ধধর্মে সচেতন অবস্থায় থাকার বিশেষ এক অর্থ রয়েছে। জগৎ সংসারে অধিকাংশ মানুষ অচেতন মোহেঘোরে পড়ে থাকে। তারপর সে একসময় সচেতন হয়ে ওঠে। সে বোধি লাভ করতে চায়, অর্থাৎ সে আলোকিত হতে চায়, জীবন ও জগতের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্দি করতে চায়। সে মোক্ষ লাভ করতে চায়। ধরা যাক -গৌতম বুদ্ধ রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করে পথে নেমেছেন। ঠিক তেমনি একজন কেউ, ধরা যাক 'কোন বা পথে নিতাইগঞ্জ যাই' গানটির গীতিকার, তিনি অসচেতন ছিলেন, ঘুমিয়ে ছিলেন, ঘুমিয়ে থেকে ভালোই ছিলেন, কেননা, অচেতন থাকলে অস্তিত্বের যন্ত্রণা বিদ্ধ করে না, সেই গীতিকার এখন জেগে উঠে দেখলেন যে হাতে বেশি সময় নেই (বেলা নেই), তিনি নিতাইগঞ্জ যেতে চান।
কিন্তু, নিতাইগঞ্জ কোথায়?
নিতাইগঞ্জ করব বাসা/ মনে ছিল দারুন আশা গো
এবার ছয় ডাকাতে চুক্তি করে আশার মুখে দিল ছাই।
নিতাইগঞ্জের অবস্থান যেখানেই হোক না কেন-সেটি যে এক বিশুদ্ধ স্থান, সেটি বোঝা যায়। সেখানে যাওয়ার আশা সচেতন জেগে-ওঠা গীতিকারের। কিন্তু, সে আশা পূর্ণ হল না। কেন? ‘এবার ছয় ডাকাতে চুক্তি করে আশার মুখে দিল ছাই।’ ছয় ডাকাত আসলে কাম-ক্রোধ-লোভ ইত্যাদি ছয় রিপু। রিপুর প্রবল তাড়নায় মোক্ষে পৌঁছনো যাচ্ছে না। দূরবীন সাঁইয়ের গান স্মরণ করি-
নামাজ আমার হইল না আদায় আল্লা ...
রিপুর তাড়নায় যে মোক্ষে পৌঁছনো যাচ্ছে না-এই কথাটাই প্রতীকে বলা হচ্ছে। কেন? হুমায়ুন আজাদ এর লেখায় আবার ফিরে যাই। ‘... আমাদের প্রথম কবিরা ছিলেন গৃহহীন বৌদ্ধ বাউল সাধক। তাঁদের সংসার ছিল না। তারা সাধনা করতেন গোপন তত্ত্বের। সে-তত্ত্বগুলো তাঁরা কবিতায় গেঁথে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে একমাত্র সাধক ছাড়া কেউ তাদের কথা বুঝতে না পারে।’ ... ধরা যাক আমরা আজ এই অগ্রহায়ণের রোদে নারায়নগঞ্জের নিতাইগঞ্জের ট্রাক টার্মিনালের পাশ দিয়ে হাঁটছি। আর মধ্যযুগের চর্যাপদের সেইসব সহজযানী কবিদের কথা ভাবছি। আর ভাবছি সেই গীতিকার-সাধকের কথা যিনি আবহমান বাংলার একই ভাবধারায় অবস্থান করে ‘কোনবা পথে নিতাইগঞ্জে যাই’ গানটি লিখেছেন এবং সুর করেছেন।
নিতাইগঞ্জ যাবার আশে/ দাঁড়াইয়াছি রাস্তার পাশে
আরে গাড়িতে চড়ব/ টিকিট কাটব গত্তি মাসুল কিছু নাই।
রাস্তা অর্থ পথ। পথ- এর একটি প্রতিশব্দ হল: মার্গ। গৌতম বুদ্ধ যে পথে নেমে সাধনার মাধ্যমে মোক্ষ অর্জনের জন্য আটটি ‘মার্গ’ (পথ) নির্দেশ করেছেন- সেসব ইতিহাস আমরা জানি। আমাদের নারায়নগঞ্জের গীতিকার-সাধকটি সেই বিশুদ্ধ স্থানে পৌঁছবার জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। গাড়ি হচ্ছে "যান"। বৌদ্ধধর্মে কয়েকটি যানের (সম্প্রদায়) উদ্ভব হয়েছিল। (১) মহাযান। (২) হীনযান। (৩) বজ্রযান। (৪) কালচক্রযান। (৫)সহজযান ইত্যাদি। বাংলার গৃহহীন বৌদ্ধ বাউল সাধকগণ ছিলেন সহজযানপন্থী। কিন্তু, যে পথে তিনি যাবেন সে পথে যাওয়ার যোগ্যতা (গত্তি মাসুল) অর্জিত হয়েছে কিনা সাধকের সে নিয়েও ঘোর সংশয় রয়েছে। সেই জন্য আর্তনাদ- ‘আরে গাড়িতে চড়ব/ টিকিট কাটব গত্তি (!) মাসুল কিছু নাই।’ এর মানে গাড়িতে চড়ার টিকিটের টাকা নেই। মানে তিনি নিজেকে যথেষ্ট তৈরি করেননি।
নিতাইগঞ্জ ডাইনে রেখে/সাধের নৌকা দিলাম ছেড়ে গো।
এবার নিতাইগঞ্জ বামে রেখে/ ঢাকার গাঙে নাও ডুবাই।
গাড়িতে যাওয়ার টিকিটের অভাবেই কি নৌকায় যাওয়া? নাকি নৌকার প্রতীকটি লোকায়ত গানে বহুল ব্যবহৃত বলেই নৌকার উল্লেখ? ... "মনের মানুষ" চলচ্চিত্রের অবিস্মণীয় নৌকার দৃশ্যও মনে পড়ে যায়। যা হোক। সাধক-গীতিকার নিতাইগঞ্জ ডাইনে রেখে সাধের নৌকা ছেড়ে দিলেন বটে ... কিন্তু -
এবার নিতাইগঞ্জ বামে রেখে/ ঢাকার গাঙে নাও ডুবাই।
এই শেষ চরণে পৌঁছে আমরা একেবারে স্তব্দ বিমূঢ় হয়ে যেতে বাধ্য। কেননা, ‘ঢাকার গাঙে নাও ডুবাই’ -এই লাইনের প্রকৃত অর্থ কি? গীতিকার কি ঢাকা শহরকে লোভ ও লালসা চরিতার্থ করার নগরী মনে করেন? (যে শহরে ড.মৃদুলকান্তি চক্রবর্তী কিংবা দেহঘড়ির আবদুর রহমান বয়াতীদের মতো জ্ঞানী সাধকগণ শেষ জীবনে করুণ পরিস্থিতির সম্মূখীন হন?) ... বড় নির্মম এই ঢাকা শহরের পাঁকে পড়ে ঢাকা শহরের দুর্গন্ধময় কালো পানির নদীতে অভিমান করে তার নৌকা ডুবিয়ে দিচ্ছেন। (মূল গানে তিনি নৌকা ডোবানোর কথা দুইবার আর্তনাদ করে গেয়েছেন: ঢাকার গাঙে নাও ডুবাই ...নাও ডুবাই) ... তিনি ঢাকা শহরের ফাঁদে পড়ে মোক্ষে পৌঁছতে পারছেন না। সেই আশাও করেন না। এখানেই তার আক্ষেপ। আর এই আক্ষেপই তিনি প্রতীকের আশ্রয় নিয়ে গানের সুরে বলছেন। প্রতীক ব্যবহারের কারণে গানের শরীরে এক ধরণের সন্ধ্যার আবছায়া তৈরি হয়েছে । যে সন্ধ্যাভাষায় হাজার বছর আগে বাংলার গৃহহীন বৌদ্ধ বাউল সাধকগন গান করতেন । কিন্তু, সন্ধ্যা ভাষা কাকে বলে? বাংলাপিডিয়ায় মহাম্মদ দানীউল হক লিখেছেন: ‘সন্ধ্যা ভাষা বাংলা ভাষার উদ্ভব যুগের এক প্রকার প্রহেলিকাবৎ দ্ব্যর্থক শব্দযুক্ত ভাষা। সুকুমার সেনের মতে সন্ধ্যা ভাষা হল: যে ভাষায় অভীষ্ট অর্থ বুঝতে হয় অনুধাবনের মাধ্যমে অথবা যে ভাষার ভাবার্থ বিশেষভাবে গুপ্ত তা-ই সন্ধ্যা ভাষা।’ আজহার ইসলাম লিখেছেন: ‘চর্যাকাররা সহজযান ধর্মমতে দীক্ষিত ও সিদ্ধাচার্য নামে পরিচিত ছিলেন। তান্ত্রিক যোগসাধনা তাঁদের ধর্মমতের বৈশিষ্ট্য । চর্যাপদে এই সাধনার কথা হেঁয়ালিপূর্ণ ভাষায় ব্যক্ত করা হয়েছে। ফলে দেশজ ভাষায় রচিত হলেও চর্যাপদের মূল ভাবের মর্মোদ্ঘাটন দুরূহ ব্যাপার। এ কারণে পন্ডিতগণ এই ভাষাকে ‘আলো-আধাঁরি’ বা সন্ধ্যা ভাষা নামে অভিহিত করেন।’ (বাংলাপিডিয়া)
এখন আমরা নিশ্চিত যে- যিনি ‘কোনবা পথে নিতাইগঞ্জে যাই’ এই গানটি লিখেছেন এবং সুর করেছেন তিনি একজন বড় মাপের দার্শনিক কবি এবং সুরকার। যদিও তাঁর নাম আমরা জানতে পারিনি। দু-এক জায়গায় ফোন করে বা ইন্টারনেট ঘেঁটেও পাইনি। বুঝলাম যে এই দার্শনিক-সংগীতজ্ঞকে কখনও টিভির টকশোতে দেখা যাবে না। কারণ ‘সমাজের নিচুতলার অধিবাসী ছিলেন আমাদের ভাষার প্রথম কবিকুল।’ ... কাজেই অগ্রহায়ণের এই মিষ্টি রোদের ভিতরে নিতাইগঞ্জের তোলারাম মোড়ে দাঁড়িয়ে পোড়া ডিজেলের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে বাংলার এই সব সাধক কবিদের হৃদয়ের প্রসারতা অনুধাবন করে আমাদের শরীর শিহরণে কেঁপে উঠতেই পারে ...
ডলি সায়ন্তিনীর কন্ঠে
Click This Link
এমপি থ্রি (ডলি সায়ন্তিনীর কন্ঠে )
http://www.mediafire.com/?15p1rpqgjj4lask
ড. মৃদুলকান্তি চক্রবর্তী স্মরণে এবং আবদুর রহমান বয়াতীর সুস্থতা কামনা করে এই লেখাটি উৎসর্গ করলাম।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:০০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: সব লোকগান তো আর সম্ভব না। তবে যে গানগুলি শুনি, সে গানগুলির একটা তাৎপর্য বোঝার চেষ্টা করি। এবং ভাবনাটুকু শেয়ার করব বলে গুছিয়ে পোস্ট করার কথা ভাবি।
অনেক ধন্যবাদ।
২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:২২
নষ্ট কবি বলেছেন: কোনবা পথে নিতাই গঞ্জ যাই
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:২৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ঘুমাইয়া ছিলাম, ছিলাম ভালো/ জেগে দেখি বেলা নাই বেলা নাই
৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:২৫
নষ্ট কবি বলেছেন: চমৎকার
দয়াল তোমার লাগিয়া যোগিনী সাজিব গো
সইপা দিব আমার মন প্রাণ
কোনবা দেশে গেলা রে দয়াল চাঁদ
এই বাংলার প্রতিটি গানে ঈশ্বর কে খুঁজে পাওয়ার নিরন্তর চেষ্টা
যেমন টা আপনি করেন
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:২৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:৩১
নষ্ট কবি বলেছেন: জয় রাধে রাধে
কৃষ্ণ কৃষ্ণ
গোবিন্দ গোবিন্দ বলরে
রাধে গোবিন্দ গোবিন্দ
গোবিন্দ গোবিন্দ
গোবিন্দ বলে সদা ভাসরে
এই গান টা শুন্তেসি
মনে হচ্ছে ভেসে যাব কৃষ্ণ প্রেমে
গান গুলো আসলেই অনেক অনেক অনেক গুঢ়
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:৪০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: বাংলার লোকগানের প্রেক্ষাপটে রয়েছে বাংলার মধ্যযুগের গৃহহীন বৌদ্ধ বাউল সাধকদের ভাবনা । বাংলার লোকগান নিগূঢ় হওয়ার এটাই অন্যতম এক কারণ।
৫| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:৪১
রেজোওয়ানা বলেছেন: বিশ্লেষণ খুবই চমৎকার লাগলো।
গানটা কত দিনের পুরানো, সেই বিষয়ে কি কিছু জানা গেছে?
সন্ধ্যা ভাষা কি?
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:৫০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: যিনি ‘কোনবা পথে নিতাইগঞ্জে যাই’ এই গানটি লিখেছেন এবং সুর করেছেন তিনি একজন বড় মাপের দার্শনিক কবি এবং সুরকার। যদিও তাঁর নাম আমরা জানতে পারিনি। দু-এক জায়গায় ফোন করে বা ইন্টারনেট ঘেঁটেও পাইনি।
‘সন্ধ্যা ভাষা বাংলা ভাষার উদ্ভব যুগের এক প্রকার প্রহেলিকাবৎ দ্ব্যর্থক শব্দযুক্ত ভাষা। সুকুমার সেনের মতে সন্ধ্যা ভাষা হল: যে ভাষায় অভীষ্ট অর্থ বুঝতে হয় অনুধাবনের মাধ্যমে অথবা যে ভাষার ভাবার্থ বিশেষভাবে গুপ্ত তা-ই সন্ধ্যা ভাষা।’ আজহার ইসলাম লিখেছেন: ‘চর্যাকাররা সহজযান ধর্মমতে দীক্ষিত ও সিদ্ধাচার্য নামে পরিচিত ছিলেন। তান্ত্রিক যোগসাধনা তাঁদের ধর্মমতের বৈশিষ্ট্য । চর্যাপদে এই সাধনার কথা হেঁয়ালিপূর্ণ ভাষায় ব্যক্ত করা হয়েছে। ফলে দেশজ ভাষায় রচিত হলেও চর্যাপদের মূল ভাবের মর্মোদ্ঘাটন দুরূহ ব্যাপার। এ কারণে পন্ডিতগণ এই ভাষাকে ‘আলো-আধাঁরি’ বা সন্ধ্যা ভাষা নামে অভিহিত করেন।’ (বাংলাপিডিয়া)
৬| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:৫৫
গানচিল বলেছেন: ঘুমাইয়া ছিলাম ,
ছিলাম ভালো ,
জেগে দেখি বেলা নাই,
কোন বা পথে নিতাই গঞ্জ যাই"
অনেকবার শুনলেও গানের পুরোটা আপনার মত খেয়াল করে শুনিনি। তবে গানের প্রথম কয়েকটা লাইন শুনে আমার কাছে যা মনে হয়েছে সেটা হল-ছয়টা রিপূর কুমন্ত্রনায় (নিতাইগঞ্জ করব বাসা/ মনে ছিল দারুন আশা গো এবার ছয় ডাকাতে চুক্তি করে আশার মুখে দিল ছাই) সারাজীবন আকাম-কুকামে মত্ত থেকে ভালই তো ছিলাম। কিন্তু যখন হুশ হল, দেখলাম বেলা পড়ে গেছে। এই অবেলায় গন্তব্যে পৌছাব কিভাবে। অর্থাৎ রুপক অর্থে পরকাল অথবা 'স্বর্গ' কে নিতাইগঞ্জ দেখানো হয়েছে।
এনিওয়ে, আপনার বিশ্লেষন পড়ে গানের কথাগুলো আরও গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য করল।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:২৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৭| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:০৩
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
ভালো লাগলো ভাই।
আমাদের অনেক অসাধারণ গানের স্রষ্টারাই কিন্তু আড়ালে থেকে গেছেন।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:২৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:০৭
কনক মোমেন বলেছেন: ধন্যবাদ। এই গানটা র লিঙ্ক আমি মনেপ্রাণে খুঁজছিলাম কয়েক দিন ধরে।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:২৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:০৯
গানচিল বলেছেন: আরেকটা কথা, আমার যদি ভূল না হয়ে থাকে তাহলে সম্ভবতঃ শেখ ওয়াহেদের লেখা। যিনি কাঙ্গালীনি সুফিয়ার " বুড়ি হইলাম তোর কারনে" গানটাও লিখেছিলেন। এবং ব্যক্তিগত জীবনে উনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:২৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
১০| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:১১
বলাক০৪ বলেছেন: জন্মাবধি নিতাইগঞ্জের পথ খুঁজে মরছি..........।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:১৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: আমিও।
১১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:১২
সানজিদা হোসেন বলেছেন: সুন্দর।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:১৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫৯
শুভ রহমান বলেছেন: আপনার বিশ্লেষণ অনেক ভালো লাগলো। ঘুম থেকে হঠাৎ জাগি সবাই আধো-ঘুম-জাগরণে। কিন্তু পাত্তি টিকিটের সন্দেহে আবার ফিরে যাই সহজ ঘুমে।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
১৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০৪
চাটিকিয়াং রুমান বলেছেন: "কোন-বা পথে নিতাইগঞ্জে যাই" গানটি বাংলা লোকসঙ্গিতের মধ্যে আমার অন্যতম প্রিয় একটা গান।
আপনার চমৎকার বিশ্লেষণের জন্য +++++++
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
১৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪০
মাহমুদা সোনিয়া বলেছেন: জেনে গেলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৯:০৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ
১৫| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০২
অভী আসলাম বলেছেন: ঢাকার গাঙের কালা পানি
আমারে নিল যে টানি।
ডুবতেছিলাম ছিলাম ভাল
ডুইবা দেখি পানি নাই, পানি নাই
ক্যামনে আমি আরেকবার ঘুমাই?
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৭:২০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ
১৬| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৭:৩৪
তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: অসাধারণ। বিশ্লেষণ পড়ে পুরা ঝিম মেরে গেলাম। গানটা এতবার শুনেছি; কিন্তু কখনোই এভাবে ভেবে দেখিনি। পুরনো গান যেন নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠল। সাধুবাদ।
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৭:৩৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
১৭| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৩৯
দীপান্বিতা বলেছেন:
সন্ধ্যা ভাষা - আলো-আধারির ভাষা...
কাআ তরুবর পঞ্চবি ডাল।
চঞ্চল চীএ পইঠা কাল।।
এখনও এ ভাষার চর্চা হয় যেনে খুব ভাল লাগছে
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৯:০৬
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
১৮| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:৩৭
েরজা , বলেছেন:
কোন বা পথে নিতাইগঞ্জ যাই ?
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:১৫
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
১৯| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:৪১
এইযেদুনিয়া বলেছেন: আমার জন্ম হয়েছে নিতাইগঞ্জে।
১৩ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:৪৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ভালো।
২০| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৫
আনোয়ার আহমেদ বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো...গানটি লোককবি শেখ ওয়াহিদুর রহমান রচনা করেন...বিস্তারিত পড়ুন এখানে...ধন্যবাদ...
Click This Link
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:৫৪
রাইসুল জুহালা বলেছেন: আপনি কি প্রতিটা লোকগানকেই এইভাবে চুলচেঁড়া বিশ্লেষন করেন? চমৎকার লাগল আপনার বিশ্লেষন।