![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন/ জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন। [email protected]
গতকালই আমি হরপ্পা সভ্যতার ওপর ধারাবাহিক লেখার প্রথম কিস্তিটি পোস্ট করেছি। সে পোস্টের ভূমিকায় লিখেছি যে, হরপ্পা সভ্যতা ভারতবর্ষের প্রাচীনতম সভ্যতা । এবং হরপ্পা সভ্যতার আবিস্কার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কেননা, এই আবিস্কারের পূর্বে মনে করা হত যে ভারতের ইতিহাসের সূচনা আর্যদের ভারতবর্ষে আসার পর থেকে । আজ আর এ কথার কোনও ভিত্তি নেই। হরপ্পা সভ্যতা আবিস্কারের পর ভারতীয় সংস্কৃতির প্রাচীনত্ব এবং মৌলিকত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছে। অন্তত পাঁচ হাজার বছরের পরনো হরপ্পা সভ্যতাটি প্রাচীনত্বের দিক থেকে মিশর-ব্যাবিলন আসিরিয়ার সমকক্ষতা অর্জন করেছে। সে যাই হোক। প্রাগৈতিহাসিক ভারতবর্ষে সিন্ধু নদের অববাহিকায় হরপ্পা সভ্যতা গড়ে ওঠার সুনির্দিষ্ট কারণ ছিল। মাঠ পর্যায়ে গবেষনা করে প্রতœতাত্ত্বিকগণ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, নবোপলীয়, অর্থাৎ নব্যপ্রস্তর যুগে খাদ্য ও ঘাসের অভাব দেখা দিয়েছিল। নিজেদের এবং পশুদের খাদ্য যোগানোর জন্য নদীর তীরই ছিল উপযুক্ত জায়গা। কাজেই ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ নদীর তীরে বসতি গড়তে থাকে। ঐতিহাসিকদের মতে হরপ্পা সভ্যতার কালসীমা খ্রিস্টপূর্ব ২২০০ থেকে ১৭০০। মিশর কিংবা মেসোপটেমিয় সভ্যতার তুলনায় হরপ্পা-সংস্কৃতি সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান সীমিত। এর প্রধান কারণ লিখিত দলিলের অভাব। প্রায় হাজার দুয়েক সীল পাওয়া গেলেও সেগুলির পাঠোদ্ধার হয়নি। প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখননের (archaeological excavation ) ফলে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তারই ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। অবশ্য এই খননকার্যও মহেনজোদারোয় ভূগর্ভস্থ কয়েকটি স্তর জলমগ্ন থাকায় পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। সুবিশাল হরপ্পা সংস্কৃতির আয়তন সব মিলিয়ে ১২,৫০,০০০ বর্গ কিলোমিটার ।এ প্রসঙ্গে একজন ভারতীয় ঐতিহাসিক লিখেছেন: The total geographical area over which this civilization flourished is more than 20 times of the area of Egyptian and more than 12 times of the area of Egyptian and Mesopotamian civilizations combined.
হরপ্পা সভ্যতার মানচিত্র।১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় সিন্ধ অঞ্চলে সব মিলিয়ে চল্লিশটির মতন প্রত্নক্ষেত্র আবিস্কার হয়েছিল। এর পর গত ৫০/৬০ বছরে সব মিলিয়ে ১৪০০ প্রাচীন বসতি আবিস্কৃত হয়। এর মধ্যে ৯২৫ টি ভারতে; এবং ৪৭৫ টি পাকিস্তানে। কাজেই বর্তমানকালের রাজনৈতিক সীমানায় হরপ্পা-সংস্কৃতির বিচার করা যাবে না, কাজেই হরপ্পা-সংস্কৃতির সমীক্ষা চালাতে হবে সভ্যতাটি ভৌগোলিক প্রেক্ষপটে। যা বিশাল এক ভূখন্ডে ছড়িয়ে রয়েছে- পশ্চিমে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের সুতকাজেন্দর; পুবে ভারতের উত্তরপ্রদেশের মিরাট জেলার আলমগীরপুর; দক্ষিণে মহারাষ্ট্রের আহমদনগর জেলার ধাইমাবাদ; এবং উত্তরে জন্মু এবং কাশ্মীরের আখনুর জেলার মানডা। পুব-পশ্চিমে সব মিলিয়ে ১৬০০ কিলোমিটার। এবং উত্তরদক্ষিণে ১৪০০ কিলোমিটার।
এই পর্বে আমি হরপ্পা সভ্যতার নগরগুলির রাস্তাঘাট ও দালানকোঠা নিয়ে আলোচনা করব । এ ব্যাপারে প্রথমেই আমি যে কথাটা বলে নিতে চাই তা হল হরপ্পা সভ্যতা হল নগর সভ্যতা, এবং নগর ঘিরে থাকা কৃষিজমি এই সভ্যতার অন্নের সংস্থান করেছে। হরপ্পা সভ্যতা কেবল নগর সভ্যতাই নয়, এর নগরগুলি রীতিমতো সুপরিকল্পিত । রাস্তাগুলি তৈরি করা হয়েছিল সোজা উত্তর-দক্ষিণ এবং পূর্ব পশ্চিমে। কাজেই দেখতে ছিল অনেকটা গ্রিডের আকার। ৪,০০০ বছর আগের সুপ্রাচীন নগর পরিকল্পনাবিদদের চিন্তাভাবনা দেখে বিস্মিত হতেই হয়। নগরের প্রধান সড়কগুলি ছিল ৩৫ ফুট চওড়া। সবচে অপরিসর রাস্তা চওড়ায় ছিল ১০ ফুট প । গলি ছিল চওড়ায় ৫ ফুট ।
হরপ্পা সভ্যতার একটি নগরের মানচিত্র; যেনবা আধুনিক কোনও শহরেরই মানচিত্র দেখছি ওপর থেকে ! ভেবে বিস্মিত হই, ওই অঞ্চলের প্রাচীন কৃষকেরা আজ থেবে ৪/৫ হাজার বছর আগে কী এক বিপুল উদ্যমে কৃষিজমির মাঝখানে পরিকল্পিত নগরের সৃষ্টির কথা ভাবলেন! শুধু ভাবলেনই না- সেই সঙ্গে কারিগরি জ্ঞানের অধিকারী হলেন। যে কোনও নগরেরই ক্ষুদ্রতম ভিত হল ইট (বা আজকের ‘হলো ব্লক’)। সে ইটের নির্মাণ কৌশল তারা কি ভাবে আয়ত্ব করলেন? কি ভাবে আয়ত্ব করলেন সে ইট বিন্যাসের হরাইজেন্টাল এবং ভার্টিক্যাল জ্যামিতিক/গাণিতিক জ্ঞান? আমি মনে করি যে হরপ্পা সংস্কৃতি উপলব্দি করতে হলে আমাদের দীর্ঘ সময় ধরে এই বিষয়টি নিয়েই ভাবতে হবে। আরও ভাবতে হবে গণিতশাস্ত্রের প্রাচীন ভারতের অবদান অসামান্য। কেননা, বিশ্বসভ্যতায় সংখ্যা হিসেবে ‘শূন্যের’ ধারণা এদেরই। এই গণিতজ্ঞানের উৎপত্তি হরপ্পা সভ্যতায় নয় তো?
আর সব প্রাচীন নগরের মতোই হরপ্পা সভ্যতার নগরগুলিতে ছিল নগরপ্রাচীরের বেষ্টনী। এর পর গভীর পরিখা বা খাল । পশ্চিমদিকে সুরক্ষিত দূর্গ। পশ্চিমদিকে, কেননা, ওই পথ দিয়েই শক্রর আক্রমনের সম্ভবনা। তাই কিন্তু হয়েছিল। ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বে আর্যরা ওই পশ্চিমদিক থেকেই ভারতের সিন্ধু অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল। সে যাই হোক। সব কিছুর আগে প্রতিরক্ষা। সে কারণেই দূর্গগুলিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সৈন্য এবং অস্ত্রশস্ত্র মজুদ ছিল। দুর্গের দৈর্ঘ্য ১,২০০ ফুট এবং প্রস্থ ৬০০ ফুট। দুর্গের চারিদিকে আবার ৪০ ফুট উঁচু প্রতিরক্ষা দেয়াল ছিল। কাদামাটি এবং কাঁচা ইট দিয়ে দুর্গের দেওয়াল তৈরি করা হয়েছিল। দুর্গের বাইরের অংশে পোড়ানো ইটের দেয়ালটি ৪ ফুট পুরু আরেকটি অতিরিক্ত দেয়াল ছিল। আর ছিল সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। এসবই যাযাবর ইরানি আর্যরা গুঁড়িয়ে দিয়েছিল সেই ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বে। বৈদিক সাহিত্যে আর্যদের বলা হয়েছে ‘নগর ধ্বংসকারী’। প্রধানতম বৈদিক দেবতা ইন্দ্রকে ‘পুনন্দর’ বলা হয়ে ছে। এর মানে,‘পুর (নগর) ধ্বংসকারী’।
হরপ্পা নগরের মানচিত্র। রাস্তার পাশে সমান দূরত্বে ছিল সড়ক বাতি বা ল্যাম্পপোষ্ট। এবং ময়লা ফেলার জন্য ছিল ডাস্টবিন! ভাবা যায়?
নগরে প্রবেশের জন্য ছিল বিশাল নগর তোরণ; এবং সে তোরণে সাঁটা থাকত সাইনবোর্ড। সে সাইনবোর্ডে জরুরি বিজ্ঞপ্তি লেখা থাকত সম্ভবত । তো, কি ভাবে সাইনবোর্ড তৈরি করা হত? কাঠের তক্তার ওপর জিপসামের পেস্ট দিয়ে লেপ্টে । হরপ্পা এবং মহেনজোদারো নগর দুটি বিভক্ত ছিল দুটি অংশে। একটি অংশ সমতলের চেয়ে কিছুটা উঁচু; সেখানেই ছিল নগরদূর্গটি। বাকি অংশটি নীচু। উঁচু দুর্গ এলাকায় বাস করত অভিজাত শ্রেণির মানুষ । আর নীচু এলাকায় বাস করত মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণি। (ঐতিহাসিকদের মতে হরপ্পাসমাজে মধ্যবিত্ত শ্রেনির সংখ্যা বেশি ছিল এবং এই শ্রেনিটি হরপ্পাসমাজে গুরুত্বপূর্ণ ছিল) ... সে যাই হোক। নগরে সড়ক এবং গলিপথ ছাড়াও ছিল বড় বড় ভবন, বাজার এবং ছোটবড় ঘরবাড়ি। তবে কোনও বাড়িই দোতলা কি তিনতলার বেশি উঁচু হত না। (এই পোষ্টের শেষে একটি ভিডিও চিত্র সংযুক্ত করেছি। ভিডিও চিত্রটি মহেনজোদারো নগর সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেবে । )
পাখির চোখে হরপ্পাসভ্যতার একটি নগর।
প্রাচীন হরপ্পাবাসীরা কি ভাবে তাদের বাড়িঘর তৈরি করত ? প্রধানত পলিমাটির তৈরি ইট দিয়ে। তার সঙ্গে মেশাত কাঠ আর নলখাগড়া। কোথাও আবার ব্যবহার করত পাথর। ইটের আয়তয় ছিল ৭.৫/১৫/৩০ সেন্টিমিটার । অবশ্য দূর্গ প্রাচীর নির্মাণের ইটের আয়তন ছিল ১০/২০/৪০ সেন্টিমিটার।দরজা জানালার উপাদান ছিল কাঠ বা ঘন ভাবে পাকানো কিছু-যেমন ম্যাট। মেঝে তৈরি করত ঘন কাদা দিয়ে। স্নানঘর এবং নর্দমা তৈরি করত পোড়ানো ইট কিংবা পাথর দিয়ে। কিছু বাড়ি ছিল ইটের এবং পোড়ানো টেরাকোটা কেক-এর তৈরি । বাড়ির ছাদ আবিস্কৃত হয়নি। ছাদ সম্ভবত কাঠের বিমের ভিতর নলখাগড়া এবং কাদা ভরে তৈরি করত।
কতযুগ আগে যেন ছিল কোলাহলমূখর এ নগর ...আজ মৌন আজ কেবলি স্মৃতি
হরপ্পা সভ্যতার নগরগুলির ভবন এবং বসতবাড়িগুলিকে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ তিনভাগে ভাগ করেছেন। (ক) ব্যাক্তিগত বাড়ি;(খ) ছোট ছোট বাড়ি ঘেরা বড় বাড়ি; এবং (গ) বড় সরকারি দালান। এসবের মধ্যে এক কক্ষের বাড়ি যেমন আছে তেমনি আছে প্রাঙ্গন ঘেরা বিভিন্ন আকারের ১০/১২টি কক্ষবিশিষ্ট বাড়িও। রাস্তার দিকে দরজা এবং জানালা ছিল না। দেয়াল থাকার কারণে রাস্তার থেকে বাড়ি দেখা যেত না । কাজেই প্রাঙ্গনে কি হতো না হতো তা পথিক দেখতে পেত না। বাড়ি হত দোতলা। এমনকী তিনতলাও! রান্নাবান্না ঘরের ভিতরেই করত। তাছাড়া প্রতিটি বাড়িতেই ছিল স্নানাগার। কিছু কিছু বাড়ির দোতলায় ছিল স্নানাগার! দরজা বানাত কাঠের ফ্রেম দিয়ে; আর দরজা চৌকাঠে থাকত ইটের ছোট গাঁথুনি ।দরজায় রং করত, থাকত অলঙ্করণ। (হরপ্পা সভ্যতার শিল্প সম্পর্কে আলোচনা করব তৃতীয় পর্বে ) ঘরের জানালা ছোট হত। দুবাড়ির মাঝখানে থাকত অলিখিত সীমান্ত।
মহেনজোদারোর বৃহৎ স্নানাগার; এত শতাব্দী পর আজও অটুট।
মহেনজোদারো নগরের একটি বৃহৎ স্নানাগার আবিস্কৃত হয়েছে । ইটের তৈরি স্নানাগারটির ভিতরে ছিল একটি জলাধার - যার গভীরতা ছিল ৮ফুট এবং চওড়ায় ২৩ ফুট এবং দৈর্ঘে ৩০ ফুট। দোতলা স্নানাগারটি চারধারে ছিল সিঁড়ি। চারিদিকে ছিল পোর্টিকো আর ঘর। মেঝেটি ছিল মসৃণ ইটের তৈরি । পাশের বড় কুয়া থেকে পানি সরবরাহ করা হত । কুয়ার এক প্রান্তে ছিদ্রে নর্দমা। জলাধারটি সম্ভবত ধর্মীয় কৃত্য পালনের জন্য ব্যবহৃত হত।
কুয়া? হরপ্পাসভ্যতায় নগরবাসীর জন্য পানি সরবরাহের চমৎকার ব্যবস্থা ছিল। পথের ধারে অনেক কূপ খনন করা হতো। অনেক বাড়ির আঙ্গিনায় কূপ ছিল।গলিপথের ধারেও কূপ ছিল।
কূপে দড়ি আর কাঠের বালতি ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মহেনজোদারোর নগরের আয়তন ছিল এক বর্গমাইলের মতন। আর হরপ্পা নগরের সীমানা ছিল প্রায় আড়াই বর্গমাইল।প্রশ্ন উঠতেই পারে এত মানুষের ভরনপোষন কী ভাবে হত। বলছি। হরপ্পা ও মহেনজোদারোয় খননকার্যের ফলে জানা গেছে যে নগরের চারপাশে ছিল কৃষিজমি। তাতে উৎপন্ন হত যব ও গম। এমনটাই ছিল স্বাভাবিক। কেননা কৃষির উদ্বৃত্ত থেকেই নগর গড়ে ওঠে। কৃষিজমি বাদেও ছিল নদী; মহেনজোদারো সিন্ধুনদের তীরে, হরপ্পা রাভী নদীর তীরে। নদী ছাড়াও সেকালে বনভূমি এবং চারণভূমি। এতে করে শিকারী এবং খাদ্য সংগ্রাহক শ্রেণির অস্তিত্বের কথা অনুমান করা যায়। চারণভূমি নগরে দুধ, মাংস, হাড় ও চামড়ার যোগান দিত । নদীপথে নৌবাণিজ্য গড়ে উঠেছিল।
অতীত নগরের দিকে অভিভূত হয়ে দেখছেন বর্তমান কালের এক মানুষ
এর আগে ভরনপোষনের বিষয়টি তুলেছিলাম। হরপ্পায় দুর্গের উত্তরে আবিস্কৃত হয়েছে বিশাল একটি শস্যাগার। যার আয়তন ১৬৯ ফুট/১৩৫ ফুট।বিশিষ্ট ঐতিহাসিক বাসাম একে রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্কের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এর কাছে রয়েছে পাথরের তৈরি একটি উচুঁ মঞ্চ। ওই মঞ্চেই সম্ভবত শস্য মাড়াই করা হত। শস্যাগার সংলগ্ন কক্ষগুলি ছিল শ্রমিকদের বাসস্থান । ঐতিহাসিক মার্টিমার হুইলার বলেছেন,‘কী পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্যে, কী বিস্ময়কর উৎকর্ষে, সিন্ধু উপত্যকার শস্যাগারগুলির সঙ্গে তুলনীয় কোনও শস্যাগার খৃঃ পূঃ পঞ্চম শতাব্দীর পূর্বে পৃথিবীর কোথাও পাওয়া যায়নি। সেদিক থেকে এগুলি অনন্য। ’
হরপ্পা সভ্যতা মানেই ইট আর ইটের রাজ্য; সেকালের রিয়েল এস্টেট কোম্পানী গুলোর ব্যবসাপাতি যে রমরমা ছিল সেটি বোঝাই যায় !
হরপ্পা সভ্যতার নগরসমূহের পয়ঃপ্রণালী ছিল অত্যন্ত উন্নতমানের। নগরায়নের এমন আধুনিক ধারণা অন্য কোনও প্রাচীন সভ্যতায় দেখা যায়নি। প্রতিটি বাড়িতে স্নানাগার ও ময়লা পানি বের হওয়ার জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা ছিল। এই ড্রেনগুলি প্রধান ড্রেন বা পয়ঃপ্রণালীর সঙ্গে যুক্ত ছিল। ড্রেনগুলির মধ্যে কিছু ছিল মাটির ওপর দিয়ে আবার কিছু ছিল মাটির নীচ দিয়ে। ড্রেন তৈরি করা হত পোড়ানো ইট দিয়ে। ড্রেনের প্রধান মুখটি থাকত নদীর দিকে। নিয়মিত ড্রেনের পাইপ পরিস্কার করা হত। এসব কারণে একজন ভারতীয় ঐতিহাসিক আক্ষেপ করে বলেছেন, "বর্তমান ভারতের অনেক শহরেরও এত উন্নতমানের পয়ঃপ্রণালী নেই!"
বর্তমান কালের শিল্পীর চোখে হরপ্পা সভ্যতার একটি নগর।
মহেনজোদারো নগরের ওপর নির্মিত একটি ভিডিও চিত্র; এই ভিডিও চিত্রটিতে আরও অনেক কিছুর সঙ্গে মহেনজোদারের বৃহৎ স্নানাগারটি রয়েছে। তাছাড়া নগর জুড়ে ইটের ব্যবহার লক্ষনীয়। যে প্রশ্নটি আগেই তুলেছি যে ... কি ভাবে আয়ত্ব করলেন সে ইট বিন্যাসের হরাইজেন্টাল এবং ভার্টিক্যাল জ্যামিতিক/গাণিতিক জ্ঞান?
ক্রমশ ...
ছবি: ইন্টারনেট।
তথ্যসূত্র: শেষ কিস্তিতে সংযুক্ত করা হবে।
প্রথম পর্বের লিঙ্ক
Click This Link
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:১৪
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:১৫
রাইসুল জুহালা বলেছেন: পয়ঃপ্রনালী, রাস্তার বাতি, ডাস্টবিন, উত্তর-দক্ষিন এবং পূর্ব-পশ্চিম রাস্তা!! মাই গড, অবিশ্বাস্য ব্যাপার। এত উন্নত একটা সভ্যতা আর্যদের কাছে জমি হারিয়ে হরপ্পা-মহেঞ্জদারো থেকে বহুদূরে দক্ষিন ভারতে সরে গেল কিভাবে, সেটাই ভাবছি। নাকি দক্ষিন ভারতের দ্রাবিড়দের আবির্ভাব ভিন্ন কোন সুত্র হতে?
চমৎকার লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ। তৃতীয় পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম এখন।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:২৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন: আর্যরা সংখ্যায় ভারী ছিল। দলে দলে এসেছিল, আক্রমনের পর আক্রমন করছিল। অবশ্য তার আগেই হরপ্পাসভ্যতায় ঘুন ধরেছিল। সরস্বতী নদীটি গিয়েছিল মজে আর দীর্ঘকালীন স্থবিরতা গ্রাস করেছিল। নতুন কিছু শিখতে চাইত না হরপ্পাবাসী । কাজেই হরপ্পা ধ্বংসের কারণ হিসেবে আর্যরা তেমন ভাবে দায়ি করা চলে না।
দ্রাবিড়দের বিষয়ে দুটি মত আছে। (১) তারা মূলত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে ভারতে এসেছে। (২) তারা দক্ষিণ ভারতে আদি বাসিন্দা।
ধন্যবাদ।
৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:২২
কাগজের নাও বলেছেন: প্রিয়তে।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:২৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:২৮
এস.কে.ফয়সাল আলম বলেছেন: পরীক্ষার খাতায় আর অ্যাসাইমেন্ট এ এই সভ্যতার কথা লিখতে লিখতে সিন্ধু সভ্যতাকে অনেক ভাল লেগে গিয়েছিল নবম শ্রেণী থেকেই।
আমার সবচেয়ে অবাক লাগতো ঐ সময়কার ল্যাম্পপোষ্টগুলোর কথা ভেবে।
সত্যিই যদি টাইম মেশিন আবিষ্কার হয়, তো আমি প্রথমেই চাইবো সিন্ধু সভ্যতাটা পুরো ঘুরে আসার।
এসব দেখে সত্যিই শ্রদ্ধা জাগে তখনকার মানুষগুলোর প্রতি।
পোষ্টে ভাললাগা রইল।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৩০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: সত্যিই যদি টাইম মেশিন আবিষ্কার হয়, তো আমি প্রথমেই চাইবো সিন্ধু সভ্যতাটা পুরো ঘুরে আসার।
আমিও
৫| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৩০
সোহরাব সুমন বলেছেন: দারুন পোস্ট ইমন ভাই !
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৩১
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ। কেমন হচ্ছে রাগসঙ্গীতের সাধনা?
৬| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৪৫
সোহরাব সুমন বলেছেন: ঢাকার বাইরে ছিলাম অনেক দিন, ক্যান এফবিতে দেখেন নাই আমার স্টেটাস? আবার শুরু করবো !
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৫১
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ওকে ...
৭| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:১০
স্রাবনের রাত বলেছেন: অনেক সুন্দর লেখা । আরও ভাল পোস্ট এর অপেক্ষায় থাকলাম ।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:২২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ওকে ...
৮| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:১২
সত্যান্বেষী বলেছেন: ৫ হাজার বছর আগে রাস্তায় ময়লা ফেলার ডাস্টবিন! আহা, আমি যদি দুর্গন্ধে বমি আসা এই ঢাকার রাস্তার আশেপাশে না থেকে সেকালের হরপ্পায় থাকতে পারতাম!
হে কুচকুচে কালো আর পুতিগন্ধময় বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী ঢাকা, হরপ্পার তুলনায় তুমি কতটা আদিম?
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:২৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: কথা তো সেটাই। তবে হরপ্পাবাসীরও শেষ রক্ষা হয়নি কিন্তু। অর্থাৎ ড্রেনেজ সিসটেম যতই উন্নতমানের হোক না কেন; সভ্যতাটি সাসটেইন করেনি।আর ঢাকার চারপাশের পুষ্টিকর শস্যদায়িনী জমিজমা হরপ্পার তুলনায় উর্বর হওয়ায় মাশাল্লা জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারটি সেই প্রাচীন সভ্যতাটির তুলনায় অতিমাত্রায় উর্ধ্বগামী ...কাজেই ...
ধন্যবাদ।
৯| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:৫৩
তৌফিকতুহিন বলেছেন: কেমন সেই জাতি যারা পাঁচ হাজার বছর আগে পরিকল্পিত নগরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলো,এটাই কেবল ভাবি।হায় পাঁচ হাজার বছর পরো পরিকল্পিত নগরায়ন কি শিখলাম না।পুরো নগরকে কংক্রিটের বস্তি বানাচ্ছি দিন দিন।নাই ড্রেনেজ নাই ল্যাম্প পোস্ট।
ধন্যবাদ,লেখার জন্য।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:৫৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: অথচ হরপ্পা সভ্যতার মানুষের গড় আয়ূ ছিল মাত্র ২০ বছর! রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার অভাবেই মানুষ স্বল্পায়ূ ছিল। অথচ, আজকাল আমাদের গড় আয়ূ বাড়ছে। কিন্তু কাজের কাজ কি হচ্ছে খোদা মালুম।
ধন্যবাদ। পড়ার জন্য।
১০| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ২:৩৯
স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো... বলেছেন: অসাধারন পোস্ট। আগের পর্বে আগ্রহ বাড়ছিলো, এখন এসে মুগ্ধ হলাম আপনার লেখায় আর এতোকিছু জেনে। এসব দেখতে আমি একদিন না একদিন যাবই যাব।
+++
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ২:৪৪
ইমন জুবায়ের বলেছেন: আপনার স্বপ্ন পূরণ হোক। এই কামনা করি।
ধন্যবাদ।
১১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:০০
নষ্ট কবি বলেছেন: +
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:০৬
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
১২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৩১
রাশমী বলেছেন: +++++++++
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৪৪
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:০৬
নীল বরফ বলেছেন: অনেক ভালো লাগছে এ সিরিজটা, প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:১৩
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৪| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩১
অনিক আহসান বলেছেন: হরপ্পা মহেঞ্জোদারোর সাথে মেসোপটেমিয়ার নগর সভ্যতাগুলির দীর্ঘ দিনের বানিজ্যিক যোগাযোগ ছিলো বলে মনে হয় .. লাগাশ,কিশ ,ইউরুক্উর প্রভৃতি মেসোপটেমিয়ান শহরে হরপ্পার অনেক সীল পাওয়া গেছে...
পোস্টে যথারীতি+++
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:১৪
ইমন জুবায়ের বলেছেন: হ্যাঁ। পরের পর্বে সেসব বিষয় আসবে। ধন্যবাদ।
১৫| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৩৯
মুনসী১৬১২ বলেছেন: হায়রে সভ্যতা
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৪৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: কি আর করা ...
১৬| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ ভোর ৪:১১
কামরুল হাসান শািহ বলেছেন: দারুন পোষ্ট
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৭:১২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৭| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৫৩
পদ্ম।পদ্ম বলেছেন: +++
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৮| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:১৯
ব্লাক উড বলেছেন: অসাধারন সুন্দর!
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:২৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৯| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:৩৩
ডাঃ মাহবুব গাউস বলেছেন: ++++
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:৪০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
২০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১:০১
তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: হরপ্পার নগর পরিকল্পনাবিদদের কাছ থেকে আমাদের তথাকথিত নগরপরিকল্পনাবিদরা যদি কিছু শিখতে পারত!! বাই দা ওয়ে, হরপ্পার সিটি কর্পোরেশন দুইটা ছিল নাকি একটাই ?
একটা মজার জিনিস দেখলাম। হরপ্পার মৃতদেহগুলোতে নাকি অস্বাভাবিক মাত্রার তেজষ্ক্রীয়তা পাওয়া গিয়েছে। আর মৃতদেহগুলোও নাকি মাটির সাথে মুখোমুখি ভাবে চ্যাপ্টা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে? এ বিষয়ে কিছু জানেন? নিজের ইউটিউব ভিডিওতে দেখলাম। আগেও এধরণের কথা পড়েছি কোথাও।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৭:১২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: হরপ্পার মৃতদেহগুলোতে অস্বাভাবিক মাত্রার তেজষ্ক্রীয়তা সম্বন্ধে তেমন কিছু জানতে পারি নি। এনি ওয়ে লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ।
২১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:১২
উম্মে মারিয়াম বলেছেন: তাদের জীবিকা সম্পর্কে পরিষ্কার করে কি কিছু লিখেছেন পরবর্তী পোষ্টে?
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:২১
ইমন জুবায়ের বলেছেন: yes.
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:০৮
মঈনউদ্দিন বলেছেন: চমৎকার ++++++++++
চালিয়ে যান