![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন/ জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন। [email protected]
মানবসভ্যতার প্রত্যেক জাতিরই হয়তো-বা মূল সংবিধানের পাশাপাশি একটি করে অলিখিত সংবিধানও রয়েছে। যে অলিখিত সংবিধানে সেই জাতিসত্তার প্রকৃত স্বরূপ প্রতিফলিত। বাংলাদেশ তথা বাংলাও এর ব্যতিক্রম নয় । বাংলার অলিখিত সংবিধান গড়ে উঠেছে বাংলার সাধকগণের গভীর চিন্তাসমৃদ্ধ বাণীতে। যেমন চতুর্দশ শতকের কবি চন্ডীদাস- এর ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।’ কিংবা সপ্তদশ শতকের কবি আবদুল হাকিম- এর ‘যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী/ সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।’ তদ্রুপ বাংলার মরমীকূল শিরোমনি লালন- এর অনেক বাণীই বাংলা অলিখিত সংবিধানে হীরকদূত্যিসম বিরাজমান। তারই একটি -
এই মানুষে হবে মাধুর্য-ভজন/তাই তো মানুষ-রূপ গঠলেন নিরঞ্জন
কিন্তু, কি এর মর্মার্থ?
বয়ান করার চেষ্টা করি। সুদূর অনন্তলোকে অনাদিকাল থেকে এক আদি অন্তহীন নিরাকার নিরঞ্জন বাস করছেন। সমস্ত বিশ্বজাগতিক রূপ ও কাঠামোর যিনি উৎস । তিনি কী এক অজ্ঞাত কারণে নিজেকে প্রকাশ করবেন ভাবলেন। অর্থাৎ নিরাকার সাকার রূপ ধরবেন। তাই হল। তিনি স্বরূপে প্রকাশিত হলেন। সৃষ্টি করলেন বিশ্বজগৎ। তারপর মানুষ-রূপ সৃষ্টি করলেন। কিন্তু,মানুষ-রূপ সৃষ্টি করলেন কেন?
এই মানুষে হবে মাধুর্য-ভজন ... তাই ...
অর্থাৎ মানুষ পৃথিবীতে জন্ম নিয়ে জগতের রূপ-রস-গন্ধ উপভোগ করবে। বিশ্বজগতের সৌন্দর্যের আরাধনা করবে। সুতরাং মানুষ সুন্দরের আরাধনা না করলে নিরাকার ঈশ্বর কর্তৃক জগৎ সৃষ্টির পরিকল্পনাই যে ব্যর্থ হয়ে যাবে। কেননা, সমস্ত রকম সুন্দরের মাঝেই নিহিত নিরঞ্জন ঈশ্বর। মানুষের কর্তব্য কেবল তাঁকে খুঁজে বের করা। এ জগৎ সংসারেই তিনি নানারূপে প্রকাশিত। সেই ঐশ্বরিক সৌন্দর্যের অনুসন্ধানই মানবজীবনের অন্যতম সাধনা লালন এর মতে। ঈশ্বরের সৃষ্টিতে সৌন্দর্য-মাধুর্য আস্বাদন করাই মানবজন্মের পরমব্রত। অর্থাৎ, লালন শিল্পের ওপর অসীম গুরুত্ব দিচ্ছেন। কেননা, শিল্পের মূলে রয়েছে সৌন্দর্য। মানুষকে শিল্পরসিক এবং শিল্পস্নাত হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন লালন। সমস্ত দুঃখের মাঝেও সুন্দরকে খোঁজার তাগিদ রয়েছে লালন এর এই অপূর্ব বাণীতে । লালন মানুষকে ঈশ্বরের সন্ধানে শিল্পের সাধনায় নিমগ্ন হতে বলছেন। নইলে কি হবে? নইলে ঠকতে হবে। লালন বলছেন,
এবার ঠকলে আর
না দেখি কিনার
অধীন লালন তাই ভাবে।
শিল্পসাধানার মাধ্যমে ঈশ্বর আরাধনায় মগ্ন হওয়ার পাশাপাশি মানুষকে অতি অবশ্যই নৈতিক জীবন যাপন করতে হবে। জীবন যেহেতু বিরল এক ঘটনা, একটি মহার্ঘ বিষয়; তাই জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই অমূল্য। মানবজন্ম তো সম্ভব হতে নাও পারত। সম্ভব যখন হয়েছে, তখন মস্ত এক অলীক ঘটনা ঘটে গেছে, কাজেই এখন জীবন-নদীর নৌকা বাইতে হবে সু-ধারায় (কু-ধারায় নয়)। লালন বলছেন-
কত ভাগ্যের ফলে না জানি/
মন রে পেয়েছ এই মানব-তরণী/
বেয়ে যাও ত্বরায় সু-ধারায়/
যেন ভরা না ডোবে
অনেকেই গানটা শোনার সময় এই লাইনগুলি ঠিক বুঝতে পারে না। অথচ লালন সহজ একটি কথা বলছেন। বলেছেন:নৌকা (ভরা বা ভারা) যাতে না ডোবে সে কারণে সু-ধারায় নৌকা বাইতে হবে ... এখানে যে নৈতিক জীবনযাপনের ইঙ্গিত রয়েছে তা আমরা লালন- এর গানে বহুবার দেখেছি ... এবং বাঙালি মরমীগুরুর কাছে এমনটাই তো স্বাভাবিক। নৈতিক জীবনে অটল থেকে মানুষকে শিল্পসাধনায় ঈশ্বরের সন্ধান করে জীবন সার্থক করতে হবে। কারণ এ জীবন যে দূর্লভ। তাই তো বাংলার অলিখিত সংবিধানের অন্যতম রচয়িতা লালন বলছেন,
এমন মানব-জনম আর কি হবে
মন যা করো ত্বরায় করো এই ভবে।
Click This Link
২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:৫৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:৪৩
মামুণ বলেছেন: চম'কার একটি গান সব সময় শুনি ।
২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:০১
ইমন জুবায়ের বলেছেন: গানটা আমারও খুব প্রিয়। ১৮৫০ সালের কথা ও সুর। ভাবা যায়?
ফুয়াদের কম্পজিশনের কনাও ভালো গেয়েছেন।
৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:৪৭
মাইনাস এইটিন_পন্ডিত বলেছেন: ভালো লাগলো।
২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:০১
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:০৪
ডেভিড বলেছেন: বিশ্লেষণ ভালো লেগেছে, ধন্যবাদ
২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:০৬
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:২০
মামুণ বলেছেন: আমার পিসিতে ফেভারিট নামে একটি ফোল্ডারে শুধ লালন এর গান । যখনই পিসিতে বসি আগে গান গুলো প্লে করি ।
২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:৪১
ইমন জুবায়ের বলেছেন: বাঙালির প্রাণ ...আর কী বলব ...
অরূপ রাহী লালনের কিছু গান গাইছেন যা আগে শোনা হয়নি। রিনকুর কানার হাটবাজার তো অসাধারণ ; ক্লোজআপ তারকা বিউটির গানেও আবেগ টের পাই। আর কেবল একতারার সঙ্গতে মূলধারার আবদুল করিম শাহর গান ...কী বলব ...দুশো বছর পিছনে লালনের সময়ে চলে যাই ...
আবদুল করিম শাহর কন্ঠে মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি ...
http://www.mediafire.com/?kbk62ss3vh6qkpb
ধন্যবাদ।
৬| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৫
খাতা কলম বলেছেন: +++++
২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:০০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১১:২৩
রাতুল_শাহ বলেছেন: লেখার উপস্থাপন অনেক সুন্দর।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
২৭ শে এপ্রিল, ২০১২ ভোর ৬:১৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ৯:৪১
ভারসাম্য বলেছেন: সুন্দরের ধারণাওতো একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। তাই লালনের সুন্দরের সাধনায় প্রতিপালিত উপাচারগুলির অনেক কিছুই অনেকের মত আমার কাছেও বেশ অসুন্দর লাগে।
তবে লালনের গান গুলোর শিল্পমূল্য অসাধারণ।
বরাবরের মতই সুখপাঠ্য লেখায় ভাল লাগা অনেক অনেক।
২৭ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১১:০৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১০:০০
রায়হান কবীর বলেছেন: আমরা শুধু বিজ্ঞান প্রযুক্তিতেই আগ্রসর হচ্ছি, আমাদের মনন, শিল্পকলা, আবেগ, চিন্তাধারা খুব একটা পরিবর্তন হয় না, আর সেজন্যই একশ-দেড়শ বছর আগের গান এখনো ভাবায়, ভিঞ্চি আর এঞ্জেলোর কাজ এখনো বিশ্বসেরা উপাধি পায়।
আসলে মনের তো কোন পরিবর্তন হয় না তেমন।
পোস্টে প্লাস।
২৭ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১১:০৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১০| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১০:১১
পাকা খোকা বলেছেন: ভাল লাগল।
২৭ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১১:০৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১১| ০১ লা মে, ২০১২ রাত ১১:২২
নাজিম উদদীন বলেছেন: 'এই মানুষে হবে মাধুর্য ভজন'
আমার মনে হয়, মানুষ রুপের মধ্য দিয়ে বিধাতা নিজেকে প্রকাশ করেন কারণ মানুষের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার মহিমা কীর্তন হবে, তাঁর attributes বা 'গুণাবলী' প্রকাশিত হবে, 'মাধুর্য ভজন' হবে।
লীলাময় শুধুমাত্র 'সৌন্দর্য' বা সুন্দরের মাঝে এটা মনে হয় ঠিক না। ' সর্বম খল্বিদম ব্রক্ষ্ম', যা আপাতদৃষ্টিতে অসৎ বা অসুন্দর তাতেও সত্য এবং সুন্দর বিদ্যমান।
০২ রা মে, ২০১২ দুপুর ১২:২০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১২| ০২ রা মে, ২০১২ দুপুর ১:২৭
গানচিল বলেছেন: খুবই প্রিয় একটা গান।বিভিন্নজনের কন্ঠে এ পর্য্যন্ত যে কতবার শুনেছি হিসেব নাই।যদিও রুনার কন্ঠে সবচেয়ে বেশী ভাল লাগে।
http://www.youtube.com/watch?v=
গানটা নিয়ে বিশ্লেষনটা ভাল লেগেছে।
০২ রা মে, ২০১২ দুপুর ১:৩৪
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:৩২
শহিদুল বলেছেন: চমৎকার