নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই দিন হব শান্ত....

বিদ্রোহী ভৃগু

সকল অনাচার আর অনিয়ম জাগায় দ্রোহ.....

বিদ্রোহী ভৃগু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মসজিদের সেকাল একাল: করোনা ইফেক্ট ও সামাজিক দায়পূরণ

২৭ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০৬

মসজিদের শহর বলা হয় ঢাকাকে।
পৃথিবীতে মসজিদের দিক থেকে বাংলাদেশ হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। জনস্যংখ্যানুপাতে মুসলিম আধিক্যে মসজিদের পরিমান চোখে পড়ার মতো। যদিও বর্তমানে মসজিদগুলো কেবলই উপাসনার জন্য সাময়িক সময় ব্যবহৃত হয়। বাকী পুরো সময়টা আইডল পড়ে থাকে।

অথচ এক সময় এমন ছিল না। ইসলামের ইতিহাস বলে, রাসূল সা: এর সময় থেকেই মসজিদ ছিল সকলকাজের প্রাণ কেন্দ্র। ভরসার স্থান। নিরাপত্তার স্থান। ইচ্ছা পূরনের স্থান। একজন বিধর্মী্ও নিশ্চিন্তে মসজিদে নবুবীতে আসতে পারতেন এবং মহানবীর সাক্ষাত পেতেন। তার সমস্যা জানালে সে অনুপাতে মানবিক সাহায্য, খাদ্য সাহায্য, আইনি সাহায্য সহ সবকিছু পেতেন। মুসলমানদের বাইতুল মালের কেন্দ্র ছিল মসজিদ। সুষম খাদ্য বন্টন থেকে শুরু করে সকল সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত হতো মসজিদ থেকে। তখন মসজিদ শুধু মুসলমানের ‘উপাসনালয়’ নয়, বরং তা ছিল ইসলামী জীবন ব্যবস্থা ও মুসলিম সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র। ইসলামের সোনালি যুগে মসজিদ থেকেই পরিচালিত হতো ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রের যাবতীয় কাজ।

মসজিদে নববী মুহাম্মদ সা: কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মসজিদ যা মদিনায় অবস্থিত। গুরুত্বের দিক থেকে মসজিদুল হারামের পর মসজিদে নববীর স্থান। মুহাম্মদ সা: এর বাসগৃহের পাশে এই মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে মসজিদের নির্মাণকাজে অংশ নিয়েছিলেন। সেসময় মসজিদ সম্মিলনস্থল, আদালত ও মাদ্রাসা হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। হিজরতের পর মুহাম্মদ সা: এই মসজিদ নির্মাণ করেন।এই স্থানটি দুইজন বালকের মালিকানায় ছিল। তারা মসজিদের জন্য জায়গাটি বিনামূল্যে উপহার হিসেবে দিতে চাইলেও মুহাম্মদ সা: জায়গাটি কিনে নেন। এরপর এখানে মসজিদ নির্মিত হয়। খেজুর গাছের খুটি দিয়ে ছাদের কাঠামো ধরে রাখা হয়। ছাদে খেজুর পাতা ও কাদার আস্তরণ দেয়া হয়। এর উচ্চতা ছিল ৩.৬০ মিটার (১১.৮ ফু). এর তিনটি দরজা ছিল দক্ষিণে বাব-আল-রহমত, পশ্চিমদিকে বাব-আল-জিবরিল এবং পূর্বদিকে বাব-আল-নিসা বা নারীদের প্রবেশ দরজা।

(দা মেসেজ ছবি থেকে স্ক্রীট শট)
মসজিদকে ঘিরেই মুসলমানদের কর্মকান্ড পরিচালিত হতে থাকে। হযরত মুহাম্মাদ সঃ কে অনুসরন করে পরবতীর্তে বিজয়ী মুসলমানরা যেখানেই ইসলামের পতাকা উড্ডিন করেছিলেন সেখানে প্রথমেই একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদ ছিল নও মুসলিমদের আশ্রয়স্থল। মোসাফিরদের বিশ্রামাগার । জানমালের হিফাযতখানা। রক্তপাতমুক্ত নো ম্যান’স ল্যান্ড। এ পৃথিবীতে মসজিদের চেয়ে শান্তিময় ও পবিত্রস্থাণ আর কোথাও নেই।


বাংলাদেশ অলি আল্লাহর দেশ। আল্লাহর অলিরা ইবাদতখানা ও সমাজপরিচালনার স্বার্থে এদেশে অসংখ্য মসজিদ তৈরী করেছেন। সেগুলোর মধ্যে খুলনা-বাগের হাটের ষাট গুম্ভুজ মসজিদটি অন্যতম । বিখ্যাত অলিয়ে কামেল উলুঘ খান জাহান আলি রঃ এটি ১৫শতাব্দীতে নির্মাণ করেন। যা এখন বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত। মসজিদ যে এক সময় সামজিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু ছিল তার অন্যতম প্রমান এ মসজিদ। সুফী সাধক খাজা খান জাহান আলি রঃ সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন এই মসজিদ থেকে ।

মসজিদকে কেন্দ্র করে ঐ অঞ্চলে সুপেয় পানির অভাব দূরিকরণে বিশাল দিঘি খনন করেন। যার সুপেয় জলে ঐ এলাকার মানুষের পানির সমস্যার সমাধান হয়েছিল। তার ইবাদতখানা , বিচারালয়, জনকল্যাণমূলক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হতো এ মসজিদ হতে। তখন পথিক ও মুসাফিরের সরাইখানা হিসেবেও ব্যবহৃত হতো মসজিদ। মুসলিম শাসন আমলে কাজির আদালত হিসেবেও মসজিদ ব্যবহার হতো বলে জানা যায়। অনেক সামজিকতা ও নিকাহ-বিবাহও মসজিদে অনুষ্ঠিত হতো।


প্রাথমিক যুগের মসজিদগুলো অত্যন্ত সাদামাঠা ছিল। মহানবি সঃ এর হাতে গড়া ইসলামের প্রথম মসজিদটি খেজুরগাছ ও খেজুর গাছের পাতার ছাউনিতে গড়া হয়েছিল। বর্তমানে অনেক মসজিদ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত মসজিদে রূপান্তরিত হয়েছে। এভাবে যুগের চাহিদার প্রেক্ষাপটে প্রায় মসজিদগুলোই অত্যন্ত চমকপ্রদ করে আধুনিকতার স্পর্শে নান্দিক দৃষ্টিতে বহুতল বিশিষ্ট করে তৈরি হচ্ছে।

এসি সম্বলিত টাইলস্ ও মার্বেল পাথর দ্বারা তৈরী মসজিদে আকর্ষণীয় ঝর্ণাধারা , নানা বর্ণের আলোর ঝলকানিতে মসজিদগুলো এখন মানুষের চিত্তাকর্ষণের বস্তুতে পরিণত হয়েছে। দামী থাই গ্লাস এ নির্মিত জানালা -দরোজা, কলাপসিবল গেট, পাঁচ- দশজন পাহারাদার সর্বোপরি সিসি ক্যামেরা দ্বারা মসজিদগুলোকে সার্বক্ষণিক নজরদারীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই এখন কোন কোন মসজিদে প্রবেশ করতে একজন সাধারণ মুসল্লিকে হিমশিম খেতে হয়। এ সবই করা হচ্ছে মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি তথা নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে। যার প্রযোজনীয়তার কথা অস্বীকার করা যায় না।


কিন্তু মসজিদের মূল যে স্পিরিট তা কতখানি কার্যকরি হচ্ছে ? মসজিদে প্রাণ যে কর্মকান্ডে তা কতটা পরিচালিত হচ্ছে মসজিদুগলো থেকে?
না থাকার শুন্যতা নিয়ে কবি আল্লামা ইকবাল লিখেছেন ,
‘‘রছম রয়েছে আজানের বটে আজানের রুহ বেলাল নাই
ফালসুফা আছে প্রাণহীন পড়ে আল গাজালিরে কোথায় পাই ।’’
অর্থাৎ হযরত বেলাল রাঃ এর মত একজন জৌলুসহীন ব্যক্তি যার চেহারায় কোন লাবণ্য ছিল না, মুখের উচ্চারণও স্বাভাবিক ছিল না কিন্তু তিনি যে আবেগ নিয়ে আযান পরিবেশন করতেন তাঁর তুলনা শুধু তিনি নিজে । ঠিক তদ্রুপ আজ মসজিদের চাকচিক্য বেড়েছে কিন্তু হযরত আলি রাঃ এর ন্যায় মুসল্লির অভাব । চাটাই পাতার মসজিদে নামায আদায় করে যে মানসিক তৃপ্তি পাওয়া যেত এখন মার্বেল পাথরের মসজিদে সেই তৃপ্তি হয়ত পাওয়া যায় না।
আবার সেই হাদীস্ও পণিধান যোগ্য - যেখানে বলা হয়েছে একসময় মসজিদ হবে জৌলুস পূর্ন কিন্তু তাতে ঈমান থাকবে না। আমরা কি তবে সেই সময় পার করছি?

সবসময়ের নির্ভরতার স্থান মসজিদ এখন আর আগের মত সাধারণ মুসল্লিদের জন্য উম্মুক্ত থাকে না । ফরয নামাযের পর পরই খাদেমগণ মসজিদের ফ্যান বাতি বা এসি বন্ধ করে দিয়ে থাকেন। ফলে একজন মুসল্লি বেশ তাড়ার মধ্যে থেকেই তার সালাত শেষ করে থাকেন। এ ব্যাপারটি বিশেষ করে তাদেরই ঘটে যারা জামাতের দু’ এক রাকাত মিস করেন।
আর মসজিদে বসে তাসবিহ তাহলিল করা তো দূরের ব্যাপার। অনেকে বলবেন, মসজিদ তো আর নফল নামাযের স্থান নয় ; শুধু ফরয নামাজের স্থান। কিন্তু কথাটি সব ক্ষেত্রে ঠিক নয়। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তো নয়ই। আমাদের দেশের অধিকাংশ বাসা বাড়িতে তেমন নির্জন পরিবেশ নেই যেখানে বসে একজন ব্যক্তি নফল নামাযসহ অন্যান্য ইবাদত করতে পারেন। তাই অনেক সময় তারা মসজিদ দীর্ঘক্ষণ থেকে সালাত আদায় করেন বা তাসবিহ তাহলিল করে থাকেন । অনেক বৃদ্ধ মুসল্লি আবার আছর নামায শেষে মাগরিব ও এশা আদায় করে মসজিদ থেকে বাসা বাড়িতে যেতে চান । কিন্তু আধুনিক মসজিদ বিশেষ করে শহরের মসজিদে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয়ে ওঠে না। কারণ নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে মসজিদগুলোর গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। যদিও কিছু কিছু মসজিদে বারান্ধায় মুসল্লিদের জন্য স্বল্প পরিসরে ব্যাবস্থাপনা থাকে।

অথচ ইতিহাস বলে আগের মসজিদগুলোতে সাধারণ মুসল্লি বা পথিকদের জন্যও সার্বক্ষণিক অজুখানা, ইস্তেনজাখানা ও টয়লেট খোলা রাখা হতো। পথিকগণ নামাজের সময় ছাড়াও তাদের প্রাকৃতিক কাজ সেরে পরিচ্ছন্নতা লাভ করতে পারতেন।যা সামাজিক সেবা হিসেবেই চালু রাখা হতো। আবার অনেক সময় কোন পথিক বিপদে পড়ে অনুমতি সাপেক্ষে মসজিদে রাতযাপন করতেন। কেউ তাদের বাধা দিত না। দেখা যেত পাশের বাড়ি হতে পথিক মুসল্লির জন্য খাবার আসত বা মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন খাদেমগন তাকে নিজেদের খাবারে অংশি করে নিতেন। এখন তেমনটি আর কল্পনা করা যায় না । বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলায় সামাজিকতা হতে মসজিদগুলোকে অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছে।

মসজিদে নবুবীতে বাব আননিসা (নারীদের প্রবেশ পথ)

আর নারীদের জন্য তো দেশীয় কিছু মসজিদ বাদে অধিকাংশেই কোন সুযোগ সুবিধাই নেই। তাদের সমস্যা প্রকট। নারী মুসল্লিরা নানা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হন। তারা অফিস আদালতে চাকরি করেন। চিকিৎসা বিনোদন বাজারসহ নানা কাজে একজন নারীকে এখন অহরহ ঘর হতে বের হতে হয় । কিন্তু অধিকাংশ মসজিদে নারীদের নামাযের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের ওয়াক্তিয়া নামাযগুলো কাযা হয়ে যায়। আবার রাস্তাঘাটে চলার পথে তারা প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারতে পারেন না। ফলে মা বোনেরা অমানসিক কষ্টভোগ করে থাকেন। আমাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো এতবেশী সংরক্ষিত হয়ে পড়েছে যে মানবিকতা পদে পদে বিঘ্নিত হচ্ছে।

তাই সত্যানুভবের জন্য সত্য জ্ঞানের জন্য আমাদের জানতে হবে মসজিদের প্রকৃত ভূমিকা কি? মহানবী সা: এর সময়ে মসজিদে নবুবীতে কি কি কার্যক্রম চলতো।
সংক্ষেপে মসজিদে নববীর গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমসমূহ -

১. জামায়াতে সালাত আদায়: নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সলাত জামায়াত সহকারে অনুষ্ঠিত হয়। এতে নারী পুরুষ সবাই অংশ গ্রহণ করত।

২. দ্বীনের কাজে সার্বক্ষনিক সময়দানকারী সাহাবাদের বাসস্থল : ইহা ছিল মসজিদের উত্তর কোণে। তাদেরকে বলা হত আসহাবে সুফফা। সার্বক্ষনিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আসহাবে সুফফার ভূমিকা ছিল মুখ্য।

৩. রসূলের স: ইসলামী আন্দোলনের অফিস : রসূল স: অহী প্রাপ্তির পর আল্লাহ তা’য়ালার দেয়া
বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য হিজরতের পর থেকে সার্বক্ষণিক অফিস হিসেবে মসজিদে নববীকে ব্যবহার করেছেন।
পরামর্শ, সিদ্ধান্ত, বাস্তবায়ন, কাফেলা প্রেরণ, গ্রুপ বন্টন এক কথাই সাংগঠনিক যাবতীয় কর্মকান্ড মসজিদে নববী কেন্দ্রীক পরিচালিত হতো। অথচ আমাদের সমাজে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে “মসজিদে দুনিয়াবী কথা বলা হারাম।”

৪. মুসলিম উম্মাহর সভাকক্ষ ও পরামর্শ সভা: রসূলুল্লাহ স: মসজিদে নববীকে ‘দারে নাদওয়া’ বা শলা-পরামর্শের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তিনি মুসলমানদের সাথে মসজিদে দীন ও দুনিয়ার সকল বিষয়ে এবং বিশেষ করে যুদ্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে পরামর্শ করতেন।
রসূলুল্লাহ স: মসজিদে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানাতেন। প্রতিনিধিরা মসজিদের পার্শ্বে সওয়ারী বেঁধে মসজিদের খোলা অংশে রসূলুল্লাহ স: এর সাথে সাক্ষাত করতেন।

৫. ইসলামে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়: মসজিদে নববী ছিল ইসলামের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। সাহাবায়ে কেরামগন ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ্য ছাত্র। তাঁরা মসজিদ থেকেই ইলম, হেদায়াত, ফযীলত ও শিষ্টাচার অর্জন করেছেন।
রাসূলুল্লাহ স: বলেছেন- “যে আমাদের এ মসজিদে কিছু ভাল জিনিস শিখতে কিংবা শিখাতে আসে, সে যেন আল্লাহর পথের মোজাহিদ। আর যে এটা ব্যতীত মসজিদে প্রবেশ করে, সে যেন এমন জিনিসের দর্শক যা তার জন্য নেই।” রাসূলুল্লাহ স: জোর দিয়ে বলেছেন : “ব্যক্তি যে সময় পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন করে সে সময় পর্যন্ত আলেম বা জ্ঞানী থাকে। যখন সে ধারণা করে যে, শিখে ফেলেছে, তখনই সে অজ্ঞ-মুর্খের কাতারে নাম লেখায়।”

৬. আদর্শ ইসলামী পাঠাগার : মসজিদে নববী পাঠাগার হিসেবেও ব্যবহার হয়েছে। বই-পুস্তকসমূহ
মসজিদে রেখে পাঠকদের চাহিদা পূরণ করা হত। সাধারণত ধনী ও জ্ঞানী-গুণী লোকেরা মসজিদে কিতাব-পত্র ও বই-পুস্তক দান করতেন। পরবর্তীতে দেখা গেছে খতীব বাগদাদী নিজ কিতাবসমূহ মসজিদে ওয়াকফ করে গেছেন এবং মৃত্যুর আগে তা নিজ বন্ধু আবুল ফদ্বল বিন খাইরুনের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন।

৭. সমাজসেবা ও আশ্রয়কেন্দ্র : মসজিদ মুসলমানের জীবনে বিপদ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায়
আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। বিপদগ্রস্থ লোকেরা দলে দলে কিংবা একাকী মসজিদে দৌড়ে আসে ও আশ্রয় নেয়। সেই কঠিন মুহূর্তে মুসলিম দায়িত্বশীলরা সেখানে একত্রিত হয়ে দুর্যোগের মোকাবিলার উপায় বের করেন।

মসজিদের সামাজিক ভূমিকা আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে ইবনে জোবায়ের এবং ইবনে বতুতার মত বিশ্ব পর্যটকের মন্তব্য ও বক্তব্য থেকে। তাঁরা যখনই কোন নতুন দেশে গিয়েছেন, যেখানে কোন পরিচিত লোকজন নেই, সেখানেই তাঁরা প্রথমে মসজিদে হাযির হয়েছেন। মসজিদে স্থানীয় কিংবা প্রবাসী লোকজনের সাথে পরিচিত হওয়ার পর তাদের থাকা-খাওয়ার আর কোন সমস্যা হয়নি। স্থানীয় লোকেরা পর্যটক আলেমের সন্ধান পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হন এবং কোন কোন সময় তাদের যোগ্যতা ও মর্যাদা মোতাবেক উপযুক্ত কাজে যোগদানেরও আহ্বান জানান।

৮. আদালত (কোর্ট): মসজিদ আদালতের ভুমিকা পালন করে। মসজিদের বিছানা ও খুটির মাঝ থেকে
বিচারকের এমন ইনসাফপূর্ণ রায় ঘোষিত হয়েছে যা গোটা মানবতার বিচারের ইতিহাসে সোনালী অক্ষরে লেখা আছে। মসজিদে বসেই বিচারক উটের রাখালের পক্ষে ও আব্বাসী খলীফা মানসুরের বিরুদ্ধে ইনসাফপূর্ণ রায় ঘোষণা করেছিলেন। বিচারক খলীফার বিরুদ্ধে দরিদ্র-অসহায়-দিনমজুরের পক্ষে রায় ঘোষণা করতে কোন পরোয়া করেননি।

৯. সাহিত্য-সংস্কৃতি কেন্দ্র: মসজিদে বর্ণিত দীনী জ্ঞান চর্চাই সব কিছু ছিল না। বরং তা ছিল
সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চারও উপযুক্ত ময়দান। তাতে যুদ্ধের বিজয় গাঁথাও গাওয়া হত। হযরত হাস্সান বিন সাবিত মসজিদে নববীতে কবিতা আবৃত্তি করতেন। কিন্তু রসূলুল্লাহ স: তাঁকে নিষেধ করেননি। যে গান বা কবিতায় আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রশংসা কিংবা ইসলামের প্রতিরক্ষার বিষয়বস্তু থাকবে, তা অবশ্যই উত্তম জিনিস। তাই রসূলুল্লাহ স: তাঁকে বারণ করেননি।

একদিন হযরত হাস্সান রা: কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। হযরত ওমর রা: মসজিদে তাঁর দিকে নজর দেন। তখন হাস্সান বলেন, ‘আমি এই মসজিদে আপনার চাইতে উত্তম ব্যক্তির উপস্থিতিতে কবিতা আবৃত্তি করেছি। তখন ওমর রা: চলে যান এবং বুঝতে পারেন যে, হাস্সান রসূলুল্লাহর স: প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। একদিন কা’ব বিন যোহাইর মসজিদে নববীতে রসূলুল্লাহ স: সহ সাহাবায়ে কেরামের সামনে ফজর বাদ ‘বানাত্ সোআদ’ নামক প্রখ্যাত আরবী কবিতাটি পাঠ করেন। অথচ, ইতিপূর্বে রসূলুল্লাহ স: তার বিরুদ্ধে মৃত্যু দণ্ডাদেশ ঘোষণা করেছিলেন। তারপর নবী স: তার ওপর থেকে মৃত্যু দণ্ডাদেশ প্রত্যাহার করেন এবং মৃত্যুদন্ডের বিনিময়ে ১শ উট দানের নির্দেশ দেন।

১০. হাসপাতাল ও দাতব্য চিকিৎসালয় : মসজিদ হাসপাতাল হিসেবেও সেবা দান করে। ইসলামের ইতিহাসে সংঘটিত যুদ্ধসমূহে মসজিদের একাংশকে যুদ্ধাহত মোজাহেদীনের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হত। এর উত্তম উদাহরণ হল; আহযাব যুদ্ধে আওস বংশের নেতা আহত সা’দ বিন মোআ’যকে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সেবার জন্য রসূলূল্লাহ স: মসজিদে একটি তাবু কায়েমের নির্দেশ দেন। (বুখারী-১ম খন্ড) সেখানে তাঁর চিকিৎসা করা হয়। আনসারী মহিলা সাহাবী রাফিদাহ রা: ঐ তাঁবুতে যুদ্ধাহত মুসলিম সেনাদের চিকিৎসা-সেবা আঞ্জাম দেন। সম্ভবত আহযাব যুদ্ধের বেশ আগেই তাঁবুটি মসজিদে নির্মিত হয়েছিল।

১১. অর্থভান্ডার ও বিতরণ কেন্দ্র : মসজিদে নববীতে য্দ্ধুলব্ধ মালে গনীমত এবং সাদকাহ ও যাকাতের মাল আসত। রসূলুল্লাহ স: সেগুলো অভাবী লোকদের মধ্যে বিলি করতেন এবং এতে যাদের অধিকার আছে, তাদেরকে তা দিতেন। তিনি ছিলেন সর্বাধিক দাতা। প্রতি রমযান মাসে জিবরীলের সাথে সাক্ষাতের পর তিনি মুক্ত বাতাসের মত উন্মুক্ত দান শুরু করতেন। তিনি নিজের ভোগের অংশ যে কোন অভাবী লোককে চাওয়া মাত্র দিয়ে দিতেন। এ দৃষ্টিতে মসজিদে নববী ছিল অর্থভান্ডার ও বিতরণকেন্দ্র। পরবর্তীতেও প্রত্যেকটি মসজিদের ছিল নিজস্ব তহবিল। সেই তহবিল থেকে দান ও সমাজকল্যাণমূলক কাজ করা হত।

রসূলুল্লাহ স: যাকাতভিত্তিক অর্থনীতি কায়েম করেন। এর ফলে, মসজিদে যাকাতের মাল-সম্পদ জমা হত। মসজিদ থেকেই যাকাতের অর্থ গরীব লোকদের মাঝে বন্টন করা হত। এ যাকাত পদ্ধতির কারণেই মুসলিম সমাজের অভাবী ও সর্বহারা লোকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় এবং খলীফা ওমর বিন আবদুল আযীযের আমলে যাকাতের সংগৃহীত অর্থ বন্টনের জন্য কোন গরীব মুসলমান-অমুসলমান কাউকেই পাওয়া যায়নি। আল্লাহ ইসলামী অর্থনীতির বরকতে সমাজ থেকে দারিদ্র দূর করে দিয়েছেন।
আজও মসজিদের এ ধরনের তহবিল থাকলে অভাব ও দারিদ্র দূর করে বহু সামাজিক সেবা আঞ্জাম দেয়া সম্ভব।

১২. প্রশিক্ষন কেন্দ্র: মূলত ‘মসজিদ একটি প্রশিক্ষণ শিবির। কিসের প্রশিক্ষন? নিয়ম-নীতি ও শৃংখলার প্রশিক্ষণ শিবির। সময়ের নিয়মানুবর্তিতা ও এর মূল্য বুঝা এবং ঠিক সময়ে ঠিক কাজ করার জন্য আমরা পাঁচ ওয়াক্ত সলাত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করি। নির্ধারিত সলাত সমূহের জন্য মসজিদে জামায়াতের সুনির্দিষ্ট সময় রয়েছে। সে সময় অনুযায়ী দিনে পাঁচ বার মসজিদে হাযির হতে হয়।
এরপর রয়েছে, সোজা ও সমানভাবে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো। কাতার সোজ না হলে গুনাহ হয় এবং নামায অসম্পূর্ণ থাকে।

১৩. দৈনন্দিন তালিম ও সাপ্তাহিক খুতবাহ: প্রত্যহ ফজর ও আছরের সলাতের পর মহানবী সঃ উপস্থিত মুসল্লীদেরকে দ্বীনি তালিম ব্যবহারিক শিক্ষাসহ নানামুখি হেদায়েত দিতেন এবং আর্থ-সামাজিক সার্বিক বিষয়ের উপর সাপ্তাহিক জুময়ার খুতবাহতে মুসল্লিদেরকে সচেতন করে তুলতেন। পরবর্তীতে খোলাফায়ে রাশেদাসহ সাহাবায়ে কেরাম রা: এবং খলীফা ও মুসলিম উম্মাহর খতীবগণ একই পদ্ধতিতে মসজিদে মসজিদে এ তা’লিম ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু রাখেন।

আলোচনা থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামের সোনালী যুগে মসজিদ সকল কর্মকান্ডের কেন্দ্ররূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন অদূরদর্শী স্বার্থান্ধ এবং গোত্রীয় আধিপত্যের প্রভাবে এবং জনসম্পৃক্ততাহীন, নীতিহীন শাসক, রাজ-রাজরাদের অনৈতিক কাজের সুবিধার্থে তারা প্রশাসনকে নিজেদের এখতিয়ারে নিতে প্রশাসনিক এবং সামাজিক নীতি নির্ধারনী কাজ গুলোকে পৃথক করে নিজস্ব গন্ডিতে আটকে ফেলে। যে প্রশাসনিক ভবনে, প্রাসাদে, রাজমহলে আমজনতার প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত হয়ে পড়ে। জবাবদিহীতার বদলে রক্তচক্ষু এবং তাদের পোষা বাহিনীর তান্ডবে সাধারন মানুষ সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে তারা ধর্মীয় আবহের দোহাই দিয়ে মসজিদকে কেবলই উপাসনালয়ে পরিণত করে। যার ক্রমধারাবাহিকতায় আমরা সেটাকেই নিয়ম বলে মেনে আসছি ।

বৈশ্বিক বিবর্তনে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিবর্তিত ধারায় যেহেতু এখন রাষ্ট্রীয় বিষয়গুলো রাষ্ট্রীয় ভাবে পরিচালিত হয় তাই মসজিদ এখন আর প্রশাসনিক সেই দায়গুলো বহন করতে পারে না। কিন্তু সামাজিক এবং মানবিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে কিন্তু সেই বাঁধা নেই। আর আল্লাহ নিজেও সেই সামাজিক দায় হক্কুল এবাদের মাধ্যমে মানুষের জন্য অব্যশ করণীয় বলেই নির্ধারিত করেছেন।

কিন্তু রাষ্ট্রীয় বিষয়গুলোর বাইরে যে সামাজিক কল্যান কাজে আগে মসজিদের অংশগ্রহন ছিল উল্লেখ্যযোগ্য রকম প্রভাববিস্তারী, ব্যাপক; সেই কাজগুলো্ও কিন্তু আমরা করছি না। সামাজিক সেবা এবং সামাজিক দায় পূরন যে ধর্মেরই অংশ হক্কুল এবাদের অংশ সেই অনুভব্ও হারিয়ে ফেলেছি। ব্যাক্তি কেন্দ্রীকতার চাপে সামষ্টিকতার শিক্ষা ভুলতে বসেছি।
যেমন শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরন মসজিদ গুলো যদি কার্যকর ভূমিকা রাখে অচিন্তনীয় পরিমানে শীতবস্ত্র সংগ্রহ করা যাবে। যা দরিদ্রদের মাঝে সহজেই বিতরণ করা যায়। বন্যা বা এমনি বহু প্রাকৃতিক দুর্যোগ রয়েছে যে সবে মসজিদে দারুন ভাবে এক্টিভ ভুমিকা পালন করতে পারে। আর সব সময়ের জন্য সামাজিক সেবার কাজতো রয়েছেই।

যেমনি পারে আজকের মহামারী রুপী করোনা প্রতিরোধে সামাজিক অংশগ্রহনের এক দারুন মাধ্যম হিসেবে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে। প্রতিটি মসজিদে ভলান্টিয়ারের ব্যবস্থা করে পিপিই কিট সহ তাদের মাধ্যমে এলাকা ভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম, ঘরে ঘরে সেনিটাইজার বিতরন, সাবান বিতরন, দুরিদ্র পরিবারে খাদ্য বিতরন ইত্যাদি খুব সহজেই করা যায়। আবার করোনা সহযোগীতা তহবিলও গঠন করে তাতে সাধারন মানুষের দান সংগ্রহ করতে পারে। যা পরিমানে খুব কম হবার কথা নয়। আর ইমাম সাহেবরা যদি বিষয়টার গুরুত্ব সহকারে বয়ান করেন, সেই দান আশাকরি অনেক মানুষের কল্যানেই কাজে আসবে। একই সাথে যেমন মসজিদ আবাদ থাকলো -তেমনি আবারো মানুষের ভরসা ও নির্ভরতার স্থান হয়ে উঠলো।
আবার সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায়্ মসজিদ ফিরে আসুক তার মূল ভূমিকায়। মানুষের সেবা ও দয়ার কেন্দ্র হিসেবে। আল্লাহ প্রেমিক আশেক, অলি, মুমিন, মুসলমানদের এবং সকল ধর্মের মানুষের ভরসার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠূক পবত্রি মসজিদ গুলো। আর স্বাভাবিক সময়ে আমরাও যেন আবার বলতে পারি যেমন জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বলেছেন:
“কত দরবেশ ফকির রে ভাই মসজিদের আঙ্গিনাতে,
আল্লাহ নাম জিকর করে লুকিয়ে গভীর রাতে।”


তথ্য কৃতজ্ঞতা :
ড. খলিলুর রহমান মাদানী
অনলাইন পত্রিকা
গুগল

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৪৫

শের শায়রী বলেছেন: ম্যাভাই পড়া হইছে, কিছু আলোচনা আছে রাতে করুম। আপাতত বুকিং দিয়া গেলাম দারুন এই পোষ্টে।

২৭ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৪৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ম্যা'ভাই।

আপনার বুকিংয়ে যারপরনাই আনন্দিত। অনুপ্রানীত।
অপেক্ষায় রইলাম।

শুভেচ্ছা । করোনায় নিরাপদ থাকুন শুভকামনা।

২| ২৭ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে তো ভালো ভালো কথা বলেছেন।
সমস্যা হলো দেশের মানুষ ভালো কথা শুনে না, মানে না।
তারা যা মন চায় তাই করে।

পোষ্টে বলেছেন, বাংলাদেশ অলি আউলিয়াদের দেশ। দুঃখজনক হলো এমন কোনো জঘন্য কাজ নেই যা এই দেশে হয় না।

২৭ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অলি আউলিয়ারা আসেনই মন্দদের ভাল করতে।

যারা ভাল হয়ে যায় তারা ভাল কথা বলে এবং শোনে। মন্দরাতো মন্দ করবেই। যারা শোনে না -তারা মন্দ।

৩| ২৭ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৪০

হাকিম মিয়া বলেছেন: লেখাটা ভালো হয়েছে।

২৭ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ @হাকিম মিয়া :)

শুভেচ্ছা রইল

৪| ২৭ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


অন্য জাতি যখন কষ্টের পয়সা দিয়ে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি বানায়েছে, আমাদের মানুষেরা চাঁদা তুলে ঢাকায় ও পুরো বাংলাদেশের মাঝে দরকারের চেয়ে বেশী মসজিদ বানায়েছে; স্কুলের অভাবে কিশোরীরা চাকরাণী হয়েছে, শতশত মসজিদ খালি পড়ে আছে। আফগানিস্তান, ইয়েমেন, পাকিস্তানে প্রয়োজনের তুলনায় মসজিদ সব সময় বেশী ছিলো, স্কুল ছিলো না; মানুষ অশিক্ষিত রয়ে গেছে।

২৭ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম।
মসজিদ বানিয়েছে সমস্যা সেটা নয়। সমস্যা হলো মসজিদের শিক্ষা ভুলে গেছে।
এবং মসজিদের মূল ভূমিকা থেকে দূরে সরে যাওয়াতেই বাকী যে সমস্যাগুলোর কথা বলেছেন তার উদ্ভব হয়েছে।

ইসলামে শিক্ষা গ্রহণ আবশ্যিক । কেউ না করলে তার দায় ঐ ব্যাক্তিরই।
ইসলামের প্রথম বাণী ইক্বরা। পাঠ করো। পড়ো।

৫| ২৭ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:০৪

আকন বিডি বলেছেন: মসজিদ এর সাথে যত দূরত্ব হয়েছে, দ্বীন হারিয়েছে জীবন থেকে, আল্লাহর নিকট থেকে ততই দূরে সরে গিয়েছি। মসজিদ কেন্দ্রীক জীবন ব্যবস্থা দরকার। কিন্তু মসজিদ দখলে আছে বর্বররা।দল কানারা।

২৭ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কারবালার পর থেকেই মসজিদের এই বিবর্তণ।
মসজিদে যাবার মতো পবিত্রতা হারানো লোকজন যখন ক্ষমতা জোর করে কেড়ে নিল
তারাই মসজিদকে পরবর্তীতে কেবল উপাসনার স্থানে পরিণত করলো।
রাজনীতি এবং ক্ষমতা নিয়ে গেল মসজিদের বাইরে।

আর এখনতো সমাজের সবচে নিন্দনীয় লোকগুলোই অর্থ আর ক্ষমতার জোরে কমিটিতে থাকে।
ভাল থাকে খুবই কম।

৬| ২৭ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:১২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।

২৭ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভায়া

শুভেচ্ছা রইল
করোনায় নিরাপদ থাকুন-শুভকামনা।

৭| ২৭ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৮:২৪

শের শায়রী বলেছেন: আজকের কথাই বলি ম্যাভাই, সারা দেশ এক রকম লক ডাউন, দুনিয়ার সব মুসলিম কান্ট্রি জুমার নামায পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে অথচ দেখেন আমাদের দেশে পাচ ওয়াক্ত নামায সহ জুমার নামায সবই হচ্ছে, কারো কোন ধারনাই নাই আসলে কি হচ্ছে! এইভাবে কি করোনা মোকাবেলা করা যায়? মীরপুরের তোলারবাগে যে দুজন মারা গেছে তাদের ইনফেকশন মসজিদ থেকে হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। যারা এই জামায়াতে যাচ্ছে তাদের মাঝে একজন ইনফেক্টেড থাকলে পুরা মসজিদের মুসুল্লীরা সাফার করবে। এ কোন অন্ধ ধর্ম ভিত্তিক দল। কেন এই রকম সিরিয়াস পরিস্থিতিতে মসজিদে যাবার পারমিশান দেয়া হচ্ছে?

অথচ রাস্তায় মানুষ দেখলে নাকি বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ পিটাচ্ছে। মসজিদ কি ইনফেকশানের বাইরে? এ কি ধরনের লক ডাউন?

আসি আপনার পোষ্টের ব্যাপারে, অসাধারন এক পোষ্ট। মসজিদ ভিত্তিক নীতি নৈতিকতা আমাদের পারে অনেক খারাপ কিছু থেকে রহিত করতে, কিন্তু সেক্ষেত্রে মসজিদের ইমাম বা নেতৃস্থানীয়দের সঠিকভাবে ইসলাম কে অনুধাবন করতে হবে, তবে তারও একটা সময় আছে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরন ঘটলে মসজিদ কেন্দ্রিক শিক্ষাকে ঢেলে সাজাতে হবে তবেই মুক্তি ভবিষ্যতের বালা মুসিবত থেকে।

আমি নিজে আজকে জুমার নামাযে যাই নি, যতটা না নিজের ভয়ে তার থেকে বেশী ভয় আমার যদি আল্লাহ না করুন কিছু থেকে থাকে তবে তো আমি আরো কতজনকে ইনফেক্টেড করব আল্লাহ জানে, এর জন্য আমি আল্লাহর কাছে জবাবদিহী করব কিভাবে? জানি না মানুষ কিভাবে? তবে একটা ভালো জিনিস দেখছি, জানিনা এটা ভালো না খারাপ সবাই কম বেশী আল্লাহর নাম নিচ্ছে।

আল্লাহ সবাইকে মাফ করুক।

২৭ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৮:৪৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ম্যা'ভাই অপেক্ষার অবসান ঘটানোয় :)

হুম।
আমাদের ধর্ম আর সাধারন জ্ঞানের মাঝে যেন বিশাল চীনের প্রাচীর! এবং এটাও হয়েছে অজ্ঞানতা আর অন্ধ বিশ্বাসের জন্যই।
টোলার বাগের ঘটনা অবশ্যই অসচেতনতা,এবং এরকম আরো বহু বহু বাগে একই ঝুঁকি রয়েছে। কারণ মসজিদ কমিটিতে কারা থাকে আপনি জানেন। ইমাম বা মুয়াজ্জিনের জ্ঞানের দৌড় খূবই সীমিত। ফলে তাদের কাছ থেকে পূর্ন সচেতনতা পাওয়া যাবে না। ইসলামের যারা নেতৃ স্থানীয় তাদের ভাবনা বা জ্ঞানের সীমাবদ্ধতায় যারপরনাই বিস্মিত। তা খোদ আরব ভূমি বলেন বা উপমহাদেশের ইসলামীক স্কলারদের কথাই বলেন।

আমি আমার আম ভাবনা আপনার সাথে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না।
মনে করুন এই অবস্থায় পোষ্টে শেষে যা বলেছি তার উদ্যোগ নেয়া যেত স্বাস্থ্য সম্মত ভাবেই এবং সরকারী আইন মেনেই।
প্রতিটি মসজিদ হয়ে উঠতে পারতো হাইজিন আর ভরসার কেন্দ্র। মসজিদ গুলোতে অজুখানায় সাবার এবং স্যানিটাইজার রাখতে পারতো। এবং আম মানুষের কাছে বিতরনের ব্যবস্থা রাখতে পারতো।
মসজিদে প্রবেশ পথে করোনা টেষ্টের প্রাথমিক তাপমান যন্ত্র রাখা যেতো। এবং প্রতিটি মুসল্লির ডাটা নিত্য আপডেট করার ব্যবস্থা রাখা যেত। এবং সাথে তার পরিবারের তথ্যও। সে ক্ষেত্রে মসজিদ গুলো হয়ে উঠতে পারতো তথ্য ভান্ডার। যা সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্ভারে আপডেট করলে সরকারও সঠিক তথ্য লাভ করতে পারতো।
আর যেহেতু টেষ্ট করেই মুসল্লি ভেতরে যেতে পারতো, ভয় ছিল না , তারপরো সতর্কতা হিসেবে পরষ্পরে দূরত্ব বজায় রেখে (কিয়াসের ভিত্তিতে) সালাত আদায় করাই যেতো।
তা খোদ কাবা থেকে মহল্লার আম মসজিদ একই রকম ভাবে পরিচালীত হতে পারতো- সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের সাথৈ সমন্বয়ের মাধ্যমে। আমজনতার আল্লাহ বীতিকে যেমন অবজ্ঞা করা উচিত নয়, তেমনি তাকে বিপদে ফেলাও উচিত নয়। তাই দরকার মধ্যম পন্থা। যা উপরে উল্লেখ করেছি।

আপনি জুমার নামাজে না গিয়ে চলমান ব্যবস্থায় সঠিক কাজটিই করেছেন। সরকারের আইন মানাও ধর্মের অংশ যদিনা তা আল্লাহ এবং তার রাসুলকে অস্বীকার করার বিষয় হয়। হুম, ভয়ে মানুষ আল্লাহকে বেশী ডাকে। ঝড় জলৌচ্ছ্বাস বন্যায় দেখা যায়! করোনাতেও ব্যাতিক্রম নয়।
আপনার প্রার্থনা কবুল হোক।





৮| ২৭ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৮:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: আপাতত আমাদের কাজ হওয়া উচিত জীবন বাচানো।
ধর্মীয় নিয়ম নীতি ঘরে বসেই পালন করা যায়।

২৭ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৮:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জীবন মৃত্যুর মালকি আল্লাহ।

আপনি নাকে অক্সিজেন পাইপ গুজেও বাঁচতে পারবেন না, যখন মৃত্যুর সময় এসে যাবে।
এটা মুসলিমের বিশ্বাস। ঈমানের অংশ। হায়ত, মউত, রিজিক আল্লাহর হাতে।

অবিশ্বাসীর ভাবনায় আমার কাজ নেই।

হুম, জুররী অবস্থায় নিয়ম ঘরে বসে পালনে কোন বাঁধা নেই। সহমত।

৯| ২৭ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:০৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বিশাল পোস্ট শ্রদ্ধেয় কবি ভাই।
সুদীর্ঘকাল ধরে মসজিদের ক্রমবিবর্তনের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস পারলাম। অতিসম্প্রতি করোনা মোকাবেলায় মসজিদকে নয়া ভূমিকায় অবতীর্ণের প্রস্তাবে আপনার উদ্ভাবনী শক্তিকে জানাই স্যালুট। এমনটা হলে দারুণ হবে।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:৩৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ পদাতিক দাদা :)

আপনার মূল্যায়নে প্রীত অনুপ্রানীত।
শুভেচ্ছা অন্তহীন।

করোনা মুক্ত থাকুন শুভকামনা রইলো

১০| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৫৪

ইফতি সৌরভ বলেছেন: অসাধারণ এবং বাস্তবসম্মত!
কয়েক বছর আগে আমার বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে বখাটে (অপেক্ষাকৃত) ছেলেটি হঠাৎ করে মসজিদে গিয়ে নামার পড়ার জন্য মন থেকে উতলা হয়ে উঠে এবং তার উৎসাহে আমরাও তার সাথে তৈরি হয়ে মসজিদে যায়। অতঃপর, মসজিদ তালাবদ্ধ! অথচ তখন সময় ছিল দুপুর ০২:৩০ এর কিছু পরে!

আসলেই, মহতী কবি আল্লামা ইকবালের মতো বলতেই হয়, অনিন্দ্য সুন্দর মসজিদ তুমি, আল্লাহ্'র ঘর আর নও!

২৮ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:৩৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুমমম
জাতীয় কবি নজরুল ইসলামও সেই ক্ষোভেই লিখেছিলেন

খোদার ঘরে কে বাট লাগায়
কে দেয় সেখানে তালা
সব দ্বার এর খোলা রবে,
চালা হাতুড়ী শাবল চালা...
হায়রে ভজনালয়, তোমার মিনারে চড়িয়া ভন্ড
গাহে স্বার্থের জয়!

দিন আজো খুব একটা বদলায়নি ।

১১| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১:২২

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ইসলামের সেই যুগ আর নাই। আল্লাহ কিছু বদ, নামধারী মুসলমানের হাতে অঢেল টাকা দিয়েছে। সেই টাকায় তারা শো-অফ করছে। ইসলামের মূল শিক্ষাই এদের মধ্যে নাই। আপনি ঠিকই বলেছেন, মসজিদগুলো এখন যতোটা না আল্লাহর ঘর, তার চাইতে বেশী পর্যটন কেন্দ্র। মুসলমানদের সামনে আরো কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।

তবে এরা শিখবে না। আল্লাহ এদের অন্তরে সীল মোহর মেরে দিয়েছে।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:৩৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আল্লাহ ক্ষমা করুন এবং রহম করুন।

না শিখলে অব্যবহিত যে শাস্তি তা থেকে কেউ রেহাই পাবে না।
কারণ পাপ শুধু পাপী করলেও শাস্তি সবাইকে ছুঁয়ে যায়! ঐ যে, নগর পড়ুলে দেবালয়ও এড়ায় না।

মোহর মারাদের কোনঠাসা করে ভালবাসার মানুষদের সাহস এবং দায় নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
এ যে আল্লাহরই আহবান।

১২| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৩৬

সোহানী বলেছেন: তুমি যা লিখছো তা পড়তে পড়তেইতো টায়ার্ড হয়েগেলাম, এতোকিছু লেখলা কেমনে ;)

শুনো, আমাদের চিন্তা চেতনা মগজ হ্রদয় সব কিছু লকডাউন হয়ে আছে। কোনভাবেই এর মাঝে কিছু প্রবেশ করার উপায় নাই। কারন খুব সহজ, দেশে যা চলছে তার মাঝে যে সবাই বেচেঁ আছে সেটাইতো বেশী।

আর সারা বিশ্বের মুসলিমদের কপাল দিন দিন পুড়তেই থাকবে যতদিন নেতানিয়াহু আর মোদির মতো লোক থাকবে।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৪১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যাক, লক ডাউনের কিছু সময়তো কাটানোর ব্যবস্থা হলো ;)
তায় আবার ক্লান্তও হয়ে গেছো :)
পরিশ্রম তবে স্বার্থক ;)
হা হা হা

হুম। নেতুনিয়াহু মোদীর বিপরীতে মুসলিম বিশ্বে দৃঢ় বিশ্বাসী ভিশনারী নেতা নেই বলেই ভোগান্তি বাড়বে।
ইসলামের প্রান মক্কা মদীনা ইসলাম বিরোধী শক্তির দখলে! নেতৃত্ব আর দেবে কে?

শুভেচ্ছা অফুরান। করোনা মুক্ত থেকো শুভকামনা সবসময়।

১৩| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:১৯

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
রাস্তায় ১ জন মানুষ দেখলেও পুলিশ পিটাচ্ছে। কিন্তু মসজিদে দল বেধে ঢুকছে। গোনাহ ভয়ে কিছু বলেছে না।
মসজিদ আমার মতে করোনা ছড়ানোর সবচেয়ে বিপদজনক যায়গা।
নামাজিরা ৬ ফুট তফাতে থাকলেও বিপদমুক্ত হয় না।
কারন প্রতিটি সেজদায় মাদুরে নাক লেগে থাকে, ডাইরেক্ট নিঃস্বাসের ভেজা ড্রপ্লেট মাদুরে/ফ্লোরে সরাসরি পরে।
আধা ভেজা যাগায় ভাইরাস দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে।
সেই স্থানে আরেকজন সেজদা দিলে ইনফেক্টেড হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯%
নিজস্য পরিষ্কার যায়নামাজ আনলে বিপদ কমে বাট আরো একটা বিপদ, ঘরে ভাইরাসটি বহন করে নিয়ে পরিবারের বিপদ ঘটানো।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৩৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

তবে বিষয়টা খেয়াল করেননি বোধ করি, প্রবেশের আগেই ইনফেকশন চেকের অপশনের কথা লিখেছিলাম। পিপিই কিট সম্বলিত ভলান্টিয়ারের কথা বলা হয়েছে। এবং আরো বাকী সব সচেতনতা এবং সতকর্ততার কথাও।
যেহেতু চেক করে ঢুকছে ইনফেক্টেড লোকেরা প্রবেশানুমতিই পাচ্ছে না্ সো সিজদায় ইনফেক্টেড হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে না।
মসজিদের ভেতর আঁধভেজা জায়গা থাকে??? !!!! ইসলামী পবিত্রতার পরো বাড়তি স্যানিটাইজেশনের কথাও বলা আছে।

যাকগে।
বিশ্বাসীর জীবন, মৃত্যু সবই আল্লাহর হাতে।
যাদের মৃত্যু নির্ধারিত তাদের আইসিইউতে অক্সিজেন ঠুসেও বাঁচানো যায় না।
হায়াত- মউতের মৌলিক বিশ্বাস যাদের নাই তাদের ভাবনা ভিন্ন হতেই পারে। কিন্তু মুসলিম মাত্রই তা বিশ্বাস করে।
সতর্কতা এবং সচেতনতার পরো বিশ্বাস ধারন করতেই হয়।

করোনা থেকে নিরাপদ থাকুন- শুভকামনা রইলো।



১৪| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:০৪

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
পোষ্টে মন্তব্য করলে কারো ধর্মবিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তোলা কোন ধরনের ভদ্রতা?

২৮ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অমা!
আপনার ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুললাম কোথায়?

আপনি কি
"হায়াত- মউতের মৌলিক বিশ্বাস যাদের নাই তাদের ভাবনা ভিন্ন হতেই পারে। কিন্তু মুসলিম মাত্রই তা বিশ্বাস করে।" এই বাক্যের মিসইন্টাপ্রিটেশনের স্বীকার? এটাতে আপনাকে কোথাও মেনশন করা হয় নাই ভ্রাতা। বলেছি- যারা ঐ মৌলিক বিষয়গুলোতে বিশ্বাস করেনা তাদের কথা। তাদের ভাবনা কি ভিন্ন নয়? খুবই সাধারন বর্ণনামূলক ভাষায় বিবৃত।

আর মুসলিম মাত্রই তাতে বিশ্বাস করে। আর বিশ্বাস যদি তাই হয়, মৃত্যুর মাধ্যম কি তা নিয়ে মুমিনরা ভাবে না। বরং যে যত বেশী মুমিন সে তত অধীর থাকে প্রভুর সাক্ষাতে। মৃত্যুর জন্য ততই প্রস্তুত হয়ে বসে থাকে আল্লাহর আদেশের অপেক্ষায়।
আশাকরি মনোকষ্ট দূর হয়েছে।

তারপরো অজানিতে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা করবেন। কে জানে কে কখন চলে যাই।
থাকবেনা কিছু শুধু স্মৃতি ছাড়া। সেখানে অন্তত একটু শুভকামনার জায়গা থাকুক। :)

১৫| ২৯ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:০১

মলাসইলমুইনা বলেছেন: চমৎকার লেখা ।
মসজিদ কনসেপ্টে আমরা এখন ঠিকমতো বুঝতে পারছিনা । মসজিদ শুধুই নামাজের জায়গা হয়ে গেছে । এটাকে কেন্দ্রকরে যে শিক্ষার প্রসার, দেশ চালাবার মতো জরুরি কাজগুলো ইসলামের প্রথম যুগে করা হতো সেটা আমরা আর করতে পারলাম কোথায় ? তাতেই মসজিদ জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো আর আমরা তার কোনো রিপ্লেসমেন্টও বের করতে পারলাম না । বাংলাদেশে কত লক্ষ্য লক্ষ্য মসজিদ। এগুলোকে ভিত্তিতে করেই শিক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা করানো যেত গ্রাম অঞ্চলের দিকে যেখানে স্কুল নেই বা কম আছে।
সামাজিক কল্যানমুলক কাজগুলো আরো বেশি করে আর সাফল্যের সাথে কর যেত । কি আর হলো সে সব ।
লেখা ভালো লেগেছে খুব ।

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৪৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম।
ঐ যে ইয়াজিদি শাসন ব্যবস্থা তার ক্ষমতা নিরংকুশ করতেই জনতাকে বিচ্ছিন্ন করতে
এই উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রশাসনকে নিজের কব্জায় নিয়ে মসজিদকে উপসনার স্থানে বদলে দিয়েছিল...
সেই ধারাবাহিকতা পরবর্তী শাসকরাও দেখলো প‌্যারা কম। যত পাবলিক পার্টিসিপেশন তত ঝামেলা

তারচে এক অক্ষরে দশ নেকী তত্ত্ব আর জন্মের আগে আর মরনের পরের তত্ত্ব দিয়া ছাইড়া দিল!
তারা নিশ্চিন্তে শাসন চালায়া গেল!
পাবলিকও খাইতে খাইতে অভ্যাস হইয়া গেল! দুনিয়ার অপূর্ণতা বেহেশতে গিয়ে সত্তর হুরে পূর্ণ করার
অবচেতন খোয়াবে ডুইবা গেল!!!

অনেক ধন্যবাদ ভাইজান।

১৬| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:১৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: অতি চমৎকার একটি পোস্ট, প্রাঞ্জল ভাষায় লিখা, তথ্যপূর্ণ।
ইসলামী আদর্শে ব্যক্তিক এবং সামাজিক জীবনে মাসজিদ এর ভূমিকা খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মাসজিদকে কিভাবে জনমানুষের খেদমতে ব্যবহার করা যেত/যায়, তারও দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্য ধন্যবাদ।
পোস্টে প্লাস। +
আপনার বেশীরভাগ প্রতিমন্তব্য চমৎকার হয়েছে, সেগুলোতেও প্লাস +।
হাসান কালবৈশাখী, সোহানী, শের শায়রী (৬ নং) এবং পদাতিক চৌধুরি এর মন্তব্যগুলো ভাল লেগেছে। প্লাস +।
সম্প্রতি মেলবোর্ন সফর করে এসেছি। Keysborough, Melbourne এর Turkish Islamic & Cultural Centre (Masjid) এ জুম্মার নামায পড়েছিলাম জানুয়ারীর ৩ তারিখে, ২০২০ এর প্রথম জুম্মায়। সে মাসজিদটির একটি ছবি দিলাম।

নিউ যীল্যান্ড এর ক্রাইস্টচার্চ এর আল নূর মাসজিদে ২০১৯ এর ১৫ মার্চে এক শ্বেতাঙ্গ আততায়ীর ঠান্ডা মাথায় পরিচালিত হত্যাযজ্ঞে প্রাত পঞ্চাশ জনের মত মুসল্লী নামাযররত অবস্থায় নিহত হন। আমি গত ০৯ ফেব্রুয়ারী তারিখে সেই মাসজিদে গিয়ে নিহতদের জন্য দু'রাকাত নফল নামায পড়েছিলাম। পরের ছবি দুটো সেই মাসজিদেরঃ

Keysborough, Melbourne এর Turkish Islamic & Cultural Centre (Masjid)




নিউ যীল্যান্ড এর ক্রাইস্টচার্চ এর আল নূর মাসজিদের ভেতরের অংশ, যেখানে এক আততায়ীর হত্যাযজ্ঞে প্রায় পঞ্চাশ জনের মত মুসল্লী নামাযররত অবস্থায় নিহত হন।






নিউ যীল্যান্ড এর ক্রাইস্টচার্চ এর আল নূর মাসজিদের ভেতরের অংশ, যেখানে এক আততায়ীর হত্যাযজ্ঞে প্রায় পঞ্চাশ জনের মত মুসল্লী নামাযররত অবস্থায় নিহত হন।


নিউ যীল্যান্ড এর ক্রাইস্টচার্চ এর আল নূর মাসজিদের ভেতরের অংশ, যেখানে এক আততায়ীর হত্যাযজ্ঞে প্রায় পঞ্চাশ জনের মত মুসল্লী নামাযররত অবস্থায় নিহত হন।

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৫১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: করোনা আইসোলেশনে কমই আসা হচ্ছে ব্লগে!
তাই দেরীতে উত্তরের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী

আপনার অসাধারন মন্তব্য আমাকে অনুপ্রানীত করলো।
সত্যি বলতে কি আমার বহু বহু বার মনে হয়েছে সামাজিক বিপ্লবের বিশাল সূতিকাগার অবহেলায় পড়ে রয়েছে
যার আংশিক ব্যবহারেও সমাজ বদলে যেতে পারে বহু বহু গুন।

ক্রাইস্টচার্চের নিহতদের জন্য নামাজ দোয়া করেছেন জেনে ভাল লাগলো। উনাদের বিদেহী আত্মার জন্য শুভকামনা।

১৭| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:২২

খায়রুল আহসান বলেছেন: একই ছবি ভুলক্রমে তিনবার পোস্ট হয়ে গেল, অতি সাবধানতা অবলম্বন করা সত্ত্বেও! দুঃখিত।
নিউ যীল্যান্ড এর ক্রাইস্টচার্চ এর আল নূর মাসজিদের ভেতরের অংশের ছবি দিলাম, যেখানে সিজদারত অবস্থায় এক আততায়ীর হত্যাযজ্ঞে প্রায় পঞ্চাশ জনের মত মুসল্লী নামাযররত অবস্থায় নিহত হন।

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৫৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মন্তব্য আগে লিখে পরে ছবি এড করলে এরকমটা হয় । ব্যাপারস না। সামু বাগ ;)

পুন:মন্তব্যে এবং ছবি প্রদানে কৃতজ্ঞতা।
আমাদের সকলেরই দায় রয়েছে যার যার স্থান থেকে মহাকালে বিলিন হবার আগে
আত্মার ডাকে, পরমাত্মার প্রেমে কিছূ করার।
প্রিয় সিনিয়রকে চাই এমন ভাবনায় অগ্রনী ভূমিকায় :)

১৮| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:১৪

ইসিয়াক বলেছেন: শুভ নববর্ষ ভাইয়া।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শুভ নববর্ষ :)

সুস্থ থাকুন নিরাপদ থাকুন

১৯| ০৭ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:২৮

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: মসজিদের গোড়ার কথা এবং অদ্যবধি মসজিদের অবস্থান আমাদের সমাজে- যেভাবে তুলে ধরেছেন তা অতুলনীয়। উপস্থাপনা অনেক সুন্দর-এক কথায় অসাধারণ। আমার ভাল লেগেছে আপনার কথা।
এরপর যা বলতে চাচ্ছি, মসজিদ ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা আজ উঠে গেছে বললেই হয়। অযোগ্য, অদক্ষ লোকেরা এখানে দৌড়াঝাঁপ করায় আমাদের সমস্যারও যেন শেষ নেই। কি শিক্ষিত কি অশিক্ষিত সকলে এখন মসজিদকে নিজের কাজে লাগাতে চায়। ঈমাম-মোয়াজ্জেনের কাজ পাওয়ার জন্যও আজকাল তদবির করতে হয়। খুবই লজ্জাজনক।
যা হবার হয়েছে, আসুন অন্তত আমি আপনি শুরু করি মসজিদের যথাযথ ব্যবহার। আসুন আজ থেকেই সমস্যা নিয়ে কথা বলি পাড়ার মসজিদ কমিটির সাথে, ঈমাম সাহেবের সাথে কিভাবে মসজিদে আগের চেহারা তুলে আনা যায়। ধন্যবাদ।

০৮ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ খুরশিদ আলম ভায়া

হুম। প্রকৃত জ্ঞানের চর্চার অভাবে আমরা সত্য থেকে বহুদূরে!
জ্ঞানের বদলে আচার নির্ভরতা আমাদের হীন করে ফেলেছে। ফিরতে হলে আবার সেই
জ্ঞান, সাধনা এবং সত্যের মাধ্যমেই ফিরতে হবে।

হুম। শুরুটা নিজ থেকেই। নিজের বিশ্বাস, জ্ঞান এবং চর্চা হলো প্রথম পাঠ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.