এসেছি আমি

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:০৩

সাইকেলের প্যাডেল ঘুরাতে ঘুরাতে যখন টিউশনের সামনে আসল, পকেটে থাকা ছোট মোবাইলটা বেজে উটল। রিসিভ করতেই..
বাবা তোই কোথায়? এইতো মা আমি টিউশনে। ওহ.. আচ্ছা। তাহলে বের হলে কল দিস। না.. মা, এখন বল। এই মানে বলছিলাম কি, আমার ওষুধ তো শেষ হয়ে গেছে যদি পারিস এক পাতা প্রেশারের ওষুধ.... মা তুমি চিন্তা করো না, আসার সময় নিয়ে আসব। আল্লাহর রহমত করুক, ফিরতে অনেক রাত হবে, সাবধানে আসিস বাবা.. মা তুমি কোন চিন্তা করো না।
.
মায়ের ওষুধ এর কথা শুনে চেহেরা ফেকাশে হয়ে গেল। মাসের ২৭ তারিখ, পকেটেও টাকা নাই আবার টিউশনেও টাকা পাবেনা মাস শেষ হয়নি বলে। স্টুডেন্টকে অংক বুঝাতে যেয়ে বার বার ভুল হচ্ছে। এমনটা আগে কখনো হয়নি। এই মাসে ছোট বোনকে স্কুলে ভর্তি করায় টাকার খুব সমস্যা হচ্ছে। নিজের ভর্তি ফরমটাও এখনো নিতে পারেনি।
ওষুধ এর টাকা ম্যানেজ করতে কিছু কাছের বন্ধুদের কল দিলেও তেমন একটা আশা পায়নি। সবাই ই বলল বন্ধু "মাসের তো শেষ আমার কাছে তো টাকা নাই দেখি কারো থেকে পায় নাকি। কথায় আছেনা "অভাগা যে দিকে যায়, সাগরও শুকিয়ে যায়" আজ যেন তেমনটায় হচ্ছে।
.
অবশেষে মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে মায়ের প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনলেও দুইদিন আগে বলা ছোট বোনের বই এখনো কিনতে পারেনি। আসার সময় ইমাম সাহেব একটা কোরআন এর আয়াত বলেছিলেন। যার বাংলা অর্থ
"তোমরা কখনো আল্লাহর রমত থেকে নিরাশ হয়োনা"
যখন বাসায় পৌঁছাইল ততক্ষণে মা ঘুম। বোন বলল মা অনেক্ষণ অপেক্ষা করছিল, প্রেশার বেড়ে যাবে ভেবে ঘুমিয়ে পরেছে। আচ্ছা দাদা আমার জন্য বই এনেছ? বলার কিছু ছিল না, মাথা নিচু করে বলল এই মানে....
ভাত ঠান্ডা হয়ে যাবে, খেয়ে ঘুমিয়ে যাও।

৮ টি +১/-০