নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালোবাসি গান শুনতে, লিখতে, পড়তে, তৈরী করতে আরো অনেক কিছু। সরলতাই আমাকে দিয়েছে মুগ্ধতা। সরল জীবনযাপনই সফলতার সোপান বলে আমি মনে করি

প্রশ্নের কারখানা

আগামীকালের ভ্রমে সবাই বন্দী। কিন্তু আগামীকাল নিয়ে না ভেবে আজটাকে সম্বল করেই এগিয়ে যাওয়া উত্তম

প্রশ্নের কারখানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একহাতে ইতিহাস গড়ার গল্প (Károly Takács)

২৯ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৩

একজন হাঙ্গেরিয়ান, একজন ক্যারোলি, একজন আর্মি, একহাতে অলিম্পিক ইতিহাস গড়ার ব্যক্তি। Károly Takács। জন্ম ১৯১০ সালের ২১শে জানুয়ারি। হাঙ্গেরিতে জন্ম নেওয়া এই বালকটি। কেই-বা জানত যে একদিন তার একহাতে ইতিহাস লেখা হবে।

শুটার ক্যারোলি

সময়টা ১৯৩৮। যখন ক্যারোলি তার কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে হয়েছিল হাঙ্গেরির সেরা পিস্তল শুটার। জাতীয় পর্যায়ের সকল পুরস্কার প্রায় তার অর্জন করা হয়েছে। সকলে তাকে ১৯৪০ সালের অলিম্পিকে পাঠানোর জন্য উদগ্রীব এবং সকলের এও বিশ্বাস ছিল যে তিনি অলিম্পিকে স্বর্ণ অর্জন করবেই। অলিম্পিকের আশায় তিনি শুরু করেন আরো জোড়দার ট্রেনিং। শুদুহ চোখে একটিই স্বপ্ন, নিজের হাতকে দুনিয়ার সেরা শুটারের হাত করতে হবে। সেরাদেরও সেরা।

জীবনটা যখন যুদ্ধের থেকেও কঠিন

১৯৩৮ সালে প্রথম দিকে একবার হাঙ্গেরিতে আর্মিদের ট্রেনিং চলছিল। যেহেতু ক্যারোলি একজন আর্মি ছিল, সেহেতু সেও অই ট্রেনিং-এ যোগ দেয়। কিন্তু ট্রেনিং ক্যাম্পে এক দূর্ঘটনা হয়। দুর্ভাগ্যবষত ক্যারোলিও দূর্ঘটনায় আহত হয়। তার সেই হাতে যে হাতে তার স্বর্ণ জেতার কথা সেই হাতেই একটি হ্যান্ড গ্রেনেড ফাটে। হাতটি নির্জীব হয়ে যায়। হাতটে কেটে ফেলতে হয়। জীবনের সব স্বপ্নই মূহুর্তেই খতম। জীবনের সব আশা, সব ইচ্ছা এক মুহুর্তেই শেষ হয়ে গেল। যেন জীবনে "টর্নেডো" বয়ে গেল।



স্বপ্ন যখন নিজেই দূর্গ সমান

জীবনের এক বিরাট ধাক্কা ছিল যে, জীবনে যা চেয়েছিল তা এক মুহুর্তেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। নিজের ডান হাতটি ফেলে দিতে হয়েছে। তার আর শুটার হওয়ার কোন অবকাশ ছিল না। কিন্তু নামটা বোধহয় ক্যারোলি বলেই ইচ্ছাশক্তি এতটা প্রখর। জীবনের সকল বাঁধাকে এক ঝটকায় পিছনে ফেলে তিনি নেমে পড়েন তার স্বপ্ন পূরণে। তিনি সবকিছু ছেড়ে দিয়ে স্বপ্ন পূরনণের যাত্রায় নেমে পড়লেন তা নিয়েই যা তার ছিল। তার বাম হাত। এটা সেই হাত যে হাতে সে কলমও ধরতে পারত না, সে হাতেই সে তার স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব দিল। সে নিরবে সকলে অগোচরে সে ১ বছর যাবৎ নিজের সেরাটা দিয়ে পরিশ্রম করতে লাগল। অতঃপর ১৯৩৯ সালে সে আবার ফিরে এলো। আগের ক্যারোলি হয়ে।

একহাতের স্বপ্ন পাড়ি দেওয়া

তখন হাঙ্গেরিতে অলিম্পিকের জন্য সকল শুটারদের প্রতিযোগিতা চলছিল। সেখানে ক্যারোলি উপস্থিত। সকলে দেখে বলতে শুরু করল, "দেখো, একেই বলে একজন অ্যাটলেটসের ইচ্ছাশক্তি। এতকিছু হবার পরেও সে এখানে এসেছে।" প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করল এবং বীরের মতই জয়ী হল। আবার শুরু হল অলিম্পিকের প্রস্তুতি। কিন্তু ভাগ্যের ফের কি সহজে কাটে? হাঙ্গেরির সেই ক্যারোলির ভাগ্যে জুটল না ১৯৪০ সালের অলিম্পিক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে অলিম্পিক হবে না। কিন্তু যার জীবনে গ্রেনেডও কিছু করতে পারল না তার জীবনে এই সংবাদ নিতান্তই পোকামাকড় সমান। সে এতটুকুও দুঃখ না পেয়ে শুরু করে দিল ১৯৪৪ সালের জন্য অলিম্পিকের প্রস্তুতি। আবার ভাগ্যের পরিহাসে ক্যারোলি। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের জন্য ১৯৪৪ সালের অলিম্পিকও হল না। কিন্তু তাতে কি? মানুষটা তো ক্যারোলি। জীবনের সবকিছু আবার শুরু করলেন এবং ১৯৪৮ সালের অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। বিশাল প্রচেষ্টার ফল এবার মিলতে চলল।



স্বপ্ন জয়ের কাহিনী

ক্যারোলি ১৯৪৮ সালের অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করল। সবার বিশ্বাস, আশা, আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করে ক্যারোলি স্বর্ণ জিতল। ঘটনাটা যদি এইখানে শেষ হত তবে ঠিক ছিল। কিন্তু ক্যারোলির স্বপ্ন আরো বড়। তিনি পরের অলিম্পিক অর্থাৎ ১৯৫২ সালের অলিম্পিকেও অংশগ্রহণ করল এবং স্বর্ণ জিতল। ইতিহাসে একহাতের কাহিনী স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনিই প্রথম যিনি অলিম্পিকের শুটিং-এ টানা দুইবার স্বর্ণ জিতল। কিন্তু সে সব কিছুই একহাতে, বাম হাতের ইতিহাস। জীবনের সব বাঁধা উপেক্ষা করে এগিয়ে চলেছিল উদ্যমের সাথে। সর্বদা ভাগ্যের পরিহাসের পাত্র ছিলেন। কিন্তু সবশেষ কি ঘটল?

The Man with The Only HAND.

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.