নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এখানে নেই কোন হিসেব, শুধু আছে নীল আকাশ

বিপুলা পৃথিবী //

বিপুলা পৃথিবী // › বিস্তারিত পোস্টঃ

দোজ ওয়ার দ্যা বেস্ট ডেইজ অব মাই লাইফঃ পর্ব ০৫

২২ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৩:৩৮

ওভাবেই চলতে চলতে তান্না আর ডালিয়ার জন্মদিন চলে এলো। ১৪ জানুয়ারি বা ১৪ ডিসেম্বর এর মধ্যে একদিন তান্নার আরেকদিন ডালিয়ার জন্মদিন। কোনটা কার ঠিক মনে নেই। তান্নার জন্মদিনে একটা চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছিলো, মনে আছে। প্ল্যান ছিল যে শিবলী, ডালিয়া, তান্না আর আমি চারজন মিলে বিকেলে শহীদ মিনারের পিছে টিলায় বসে কেক কাটব আর আড্ডা দিব। কিন্তু অইদিন আমাকে কোন একটা কাজে সিলেটের বাইরে যেতে হলো। পরে শিবলী, ডালিয়া, তান্না আর আমার ফ্রেন্ড ম্যাথমেটিক্সের ইরফান একসাথে শহীদ মিনারের পিছে ঘুরতে গেলো। সন্ধ্যা হবার কিছু আগে একদল ছিনতাইকারী তাদের আক্রমন করলো, হাতে ছুরি। মোবাইল টাকা পয়সা ছিনতাই করবে, সাথে আরো অন্যান্য বিপদ হতে পারে। পরে শিবলী আর ইরফান চালাকি করে বললো তারা শাহপরাণ হলের থাকে আর ছাত্রদল করে। এতে ছিনকারীরা কিছুটা ভয় পেয়ে ওদেরকে ছেড়ে দিলো। শেষ পর্যন্ত কোন বিপদ আপদ হয়নি। আমি রাত্রে শিবলীকে ফোন দিলে শিবলী আমাকে সব ঘটনা জানালো। সব শুনে আমি আতংকিত হইলাম ও একইসাথে মজাও পাইলাম। ডালিয়ার জন্মদিন আর এভাবে পালন করা হয় নাই। ওর জন্মদিনেও আমি সিলেটের বাইরে ছিলাম। বিকেলে ফোন করে ওকে বার্থডে উইশ করলাম সাথে ১০০ টাকার মোবাইল রিচার্জ করে দিলাম গিফট হিসেবে। হেহ।

তান্না ডালিয়া দুজনের সাথেই ভাল সম্পর্ক। ক্যাম্পাস লাইফের প্রথম বছর ওদের সাথে অনেক সময় পার করেছি। সাথে শিবলী রেগুলার, মাঝে মধ্যে বাসিত, মাঝে মধ্যে শামিম ছিল। একদিনের কথা মনে আছে। ক্যাম্পাসের গেইটে সন্ধ্যার দিকে সবাই আড্ডা দিচ্ছিলাম। সবাই কোক খেলাম। ডালিয়া কোকের খালি বোতল নিয়ে নিলো। হলের গণরুমে থাকা মেয়েদের মনে পানির কষ্ট ছিল। তাই দেখতাম বোতল নিয়ে কাড়াকাড়ি হতো। তান্নার বোতল লাগবে দেখে অই সময়ে আমি আরেকটা কোক কিনলাম, আবার খেলাম। কোক খেয়ে খালি বোতল তান্নাকে দিলাম। তান্না সম্ভবত এই ঘটনা এখনো মনে রাখছে।

ফার্স্ট ইয়ারে আমাদের ফ্যাকাল্টির মধ্যে লেডি টিচার ছিলেন শরিফা ইয়াসমিন ( অই সময় অন লিভ), সানজিদা খাতুন বক্স। সানজিদা বক্সের সাথে ক্লাস জমছিলো না। তাই লিটারেচার পড়তে গিয়ে একজন উপযুক্ত লেডি টিচারের অভাব বোধ করছিলাম সকলেই। অই সময়েই শুনলাম যে আফসানা সালাম নামে একজন লেকচারার রিক্রুট হয়েছেন। খবরটা শুনে সবাই খুশি আর এক্সাইটেড। প্রথম দিন এসে প্রথম ক্লাসটা সম্ভবত আমাদের সাথেই ছিল। কিন্তু আফসানা ম্যাডাম একটু হতাশই হলো। কারণ অইদিন কোন ক্লাসরুম খালি পাওয়া যাচ্ছিলোনা। ডি বিল্ডিং এর ওই একটা সমস্যা। পরে লাইব্রেরির চিপায় এক রুম পাওয়া গেল যেখানে আমাদের ক্লাস হলো। আফসানা ম্যাডামের ক্লাস করেও হতাশ। পুরা ক্লাস একটুও ভাল লাগলো না। ম্যাডাম মনে হয় এটা বুঝতে পারলেন। তাই ক্লাসের শেষ দিকে আমাদের একটু মজা দিতে লাগলেন। নানারকম ডায়লগ ছাড়লেন। শেষে ভংগি করে আই লাভ ইউ ও বলে দিলেন। অনেকে মজা পেলো কিন্তু আমি না। আফসানা সালাম ম্যাডামের ক্লাস আর ভালই লাগেনি। যদিও ম্যাডামকে এজ এ পার্সন ভাল লাগতো।

প্রথম প্রথম বলতাম যে- স্যার আজকে আমাদের ক্লাস নিবেন। ইংলিশে- Sir will take our class today. ক্লাস মনিটর নোমান স্বভাবসুলব ভুল ধরে ফেললো। বললো- টিচাররা কখনো ক্লাস নেয় না, ক্লাস দেয়। তাই সঠিক বাক্য হবে- Sir will give our class today. আমি জানতামই না। নতুন জিনিস শিখলাম। নোমান ডায়াসে উঠে ঘোষণা দিতো-
Ok guys, listen. Mr Tahsin sir will give us class on Seneca's Agamemnon, course no Eng 122, course name- Drama: From Aeschylus to Seneca. Room no-208. Please be quite.

ওকে। নোমানের ঘোষণা শুনে হুড়াহুড়ি লেগে যেত। ক্লাসরুম একটা থাকায় সবসময় ক্লাসরুম খালি পাওয়া যেত না। এটা একটা পেইন ছিলো। এর মধ্যে ক্লাসের টাইম চেঞ্জ হতো। সবাই মনিটর নোমানের ঘোষণার উপর নির্ভরশীল। তখন ত আর ফেসবুক মেসেঞ্জার হোয়াটসএপ ভাইবার ছিলোনা। মনিটর নোমান ক্লাসের টাইম প্লেইস ঘোষণা দিত- আমি সাথে সাথে জানাইতাম তান্নাকে- তান্না সাথে সাথে জানাইতো শিবলীকে। মনিটর নোমান ক্লাসের টাইম প্লেইস ঘোষণা দিত- আমি সাথে সাথে জানাইতাম তান্নাকে- তান্না সাথে সাথে জানাইতো শিবলীকে। মনিটর নোমান ক্লাসের টাইম প্লেইস ঘোষণা দিত- আমি সাথে সাথে জানাইতাম তান্নাকে- তান্না সাথে সাথে জানাইতো শিবলীকে। আমি খেয়াল করলাম তান্না শিবলীকে বেশ প্রায়োরিটি দিচ্ছে। এভাবে চললো কিছুদিন। এবং আরো অনেক কিছু ঘটে গেলো। সব মনে নেই। মনে থাকলেও বলবো না। একদিন তান্না ফোনে কথা বলতে বলতে আমাকে জানালো- শিবলী তাকে প্রপোজ করছে। আমি বিশ্বাসই করলাম না। শিবলীকে ধরলাম- কিরে ব্যাটা! শিবলী বললো- তুই কেমনে জানোস? আমি বললাম- তান্না বলছে। ভেজাল লাইগা গেলো। পরেরদিন লাইব্রেরি বিল্ডিং এর সাথে শিবলী- তান্না আর আমাকে তলব করলো। সামনাসামনি তান্নাকে জিজ্ঞেস করলো- এই ঘটনা বিপুল কিভাবে জানে? তান্না বলল- আমি বিপুলকে কিছু বলি নাই। তান্নার এমন মিথ্যা কথা আমার ভাল লাগেনি। আমি অপমানিত হয়ে ওখান থেকে চলে এলাম। কেউ কারো সাথে কথা বলিনা। পরে অবশ্য শিবলী আর আমি দ্বিপাষীয় বৈঠকে আলোচনা করে নিজেদের সমস্যার সমাধান করেছিলাম। কিন্তু তান্নার সাথে আমাদের ফ্রেন্ডশিপটা ভেংগে গেল। ক্যাম্পাস লাইফে আর জোড়া লাগেনি। বাকী ৪/৫ বছর প্রকাশ্যে আর তান্নার সাথে কথা বলেনি। এখন অবশ্য ভাল সম্পর্ক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.