নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন মানুষ। ভালো মানুষ হয়তো এখনও হতে পারিনি তবে মন্দ কিছু করি না- কারো মন্দ কিছু করাতে বিশ্বাসও করি না। উপকার করতে না পারলেও কারো ক্ষতি অন্ততঃ করি না!!

বীরেশ রায়

সবার উপরে মানুষ সত্য! চেষ্টা করি সেই সত্যকে অনুসরণ করতে।

বীরেশ রায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

আলোচনা-সমালোচনারও একটা পজিটিভ দিক আছে, অন্ততঃ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা ব্যক্তির কিছুটা হলেও টনক নড়ে ব্যবস্থাপনা অব্যবস্থাপনা কিংবা ব্যক্তিটির চরিত্রের ব্যাপারে!

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৬

আমাদের এক বস ছিলেন, মানে এখন উনি বস হিসেবে আমদের অফিসে নেই। যা হোক, বস সম্পর্কে মূল কথায় আসা যাক। আমাদের কোন অফিসিয়াল মিটিং কিংবা সেমিনার অর্গানাইজ করা হলেই উনি প্রাসঙ্গিক আলোচনা ছেড়ে অপ্রাসঙ্গিক লাইনেই চলতেন বেশি, মানে ধর্ম হিসেবে ইসলামের জ্ঞান দান কিংবা অন্য ধর্ম বিশেষ করে পৌত্তলিকতা যে মিথ্যা এবং শিরক সেটাই ফুটিয়ে তুলতেন বেশি। কেননা তিনি নিজেকে একজন খাঁটি মুসলমানই দাবি করতেন। তো সেবার ভারতের এক তীর্থ ক্ষেত্রে ঝড়বৃষ্টি ও পাহাড়ি বন্যায় কয়েক হাজার লোক মারা যাওয়ায় তার কথা বার্তায় প্রকাশ করতেন যে যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উপাসনা করেন যা স্পষ্ট শিরক এবং মহাপাপ তাদের কাছে এমন কঠিন শাস্তি আল্লাহর তরফ থেকেই এসেছে! আজ ওনাকে নিকটে পেলে একটু জিজ্ঞেস করতাম “সৌদি আরবের এবারের এই ক্রেন দূর্ঘটনা ও বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে গিয়ে এত এত হাজির মৃত্যু কিসের জন্য হল?” যদিও আমার এই লেখা ইসলামের বিপক্ষে নয়, এই লেখা সেই বসের মানসিকতা সম মানুষদের জন্য, যারা প্রতিনিয়ত অন্য ধর্মের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করেন আল্লাহকে নিজের ভাষায় সবার উপরে তুলে ধরার জন্য! মাঝে মাঝে আমাদের সবার মাঝেই কমবেশি প্রশ্ন জাগে “কিসের জন্য আজ সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলাম ধর্মের মানুষের মাঝে এই হানাহানি, এই বোমাবাজি, এই ধ্বংসযজ্ঞ?” যদিও এর কোন একক উত্তর সবার মনোপুত নয়, কিন্তু সুস্থ স্বাভাবিক চিন্তাশীল অধিকাংশ মানুষের কাছেই এর একটা সাধারণ উত্তর মনে হয় আছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে সামগ্রিক ভাবে এটা স্পষ্ট যে ইসলাম ধর্মের অনেক মানুষের মাঝেই সহিষ্ণুতা ও অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ অনেক কম তাই এই ইসলাম ধর্মের মানুষদের সাথে অপর ধর্মের মানুষগুলোর দ্বন্দ সবচেয়ে বেশি বিশেষ করে ধর্ম কেন্দ্রিক ইস্যু নিয়ে! এমনকি ইসলাম ধর্মের মানুষদের নিজেদের মাঝেই ধর্ম কেন্দ্রিক ইস্যু নিয়ে সারা পৃথিবী ব্যাপী সবচেয়ে বেশি সংঘাত ও রক্তপাত হচ্ছে! অন্যান্য ধর্মের মানুষের মাঝে ধর্ম নিয়ে সংঘাত নেই তা বলছি না কিন্তু এতটা মহামারি আকারে নেই। যে মধ্য প্রাচ্য থেকে ইসলাম উৎসারিত হয়েছে সেই মধ্য প্রাচ্যই আজ অশান্তির আগুনে দিনে দিনে প্রজ্জ্বলিত হচ্ছে! যদিও মুষ্টিমেয় কিছু লোক ইসলামকে দেখছে শান্তির মহৌষধ হিসেবে! ইসলাম শান্তির মহৌষধ কি না সেটা বোঝাতে হলেও তো সবার আগে এই ধর্মের মানুষদের দেখাতে হবে অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি, শান্তিপ্রিয় মানুষের প্রতি সহিষ্ণুতাবোধ। কিন্তু সেটা কতটুকু আছে? এই ঈদে এক মন্দিরের সামনে এক দল মুমিনকে দেখা গেল একটি গরু কোরবানি দিতে। তারা তো ভাল করেই জানেন হিন্দুরা গো হত্যা ও গো মাংস ভক্ষণ করেন না ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই। তাহলে সংখ্যায় বেশি হওয়ায় গায়ের জোড়ে কেন তারা এই সমালোচনা মূলক হিংসাত্মক কাজটি করলেন? ওয়াজ মাহফিলে ও জুম্মাবারেও অনেক মাইক থেকে ভেসে আসে বিধর্মী কাফের ও পৌত্তলিকদের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করার হাজারও অসহিষ্ণু ভাষা। যদিও বর্তমানে মানব সমাজের সর্বত্রই বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মাঝেই পরস্পর বিরোধী একটা প্রচ্ছন্ন বিদ্বেষ কাজ করছে। যেটার কিছু কারণ ঐতিহাসিক, কিছু রাজনৈতিক, কিছু স্বার্থলোভী কিছু মানুষের দাবার চাল কিংবা কিছু মানুষের অসহিষ্ণু মনোভাব। তবে সারা পৃথিবীতে খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, জৈন, হিন্দু, ইহুদি ও অন্যান্য ধর্মগোষ্ঠীর মানুষের মাঝে ধর্ম নিয়ে যতটা রেষারেশি বিদ্যমান তার থেকে কয়েক গুণ বেশি বিদ্বেষ রয়েছে একমাত্র ইসলাম ধর্মের মানুষের সাথে অপরাপর ধর্মগোষ্ঠীর মানুষগুলোর! কোথাও এই বিদ্বেষ প্রকাশ্যে, কোথাও প্রচ্ছন্নভাবে! রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের, এক দল মানুষের সাথে অপর দলের, একজন মানুষের সাথে অপর জনের যেমন দ্বন্দ্ব আছে হয়তো থাকবে কিন্তু তার মাঝেও একটা স্বাভাবিক ভাল সম্পর্ক থাকে, রাখতে হয় একটা স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সমঝোতার মাধ্যমে। তেমনি আমাদের বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মাঝে ধর্মীয় দর্শন কিংবা অন্য কোন কারণে বিরোধের জন্ম হলেও তার নিষ্পত্তি কেন আমরা সংঘাত, তলোয়ার কিংবা চা-পাতি দ্বারা করবো? একটু ভাবলেই তো সেটা জ্ঞানের দ্বারা বিবেকবোধ জাগিয়ে শান্তির পথে করতে পারি সমঝোতার দ্বারা! আমাদের মাঝে কি সেই বিচক্ষণ ধৈর্যশীল জ্ঞানি লোক নেই? সমাজের সব মানুষ কি সেই সংঘাত সৃষ্টির মানসিকতায় যুতবদ্ধ? নাকি এই সংঘাত, এই হানাহানি, এই রক্তপাত, পক্ষ-বিপক্ষের সুউচ্চ গলা বাজাবাজি এটাই সভ্যতার গতানুগতিক ধারা?
এরই মাঝে সৌদি আরবে শয়তানকে পাথর মারতে যাওয়া শত শত হাজিদের মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে বিভিন্ন জল্পনাকল্পনা!বিভিন্ন জ্ঞান পাপিদের মাথা থেকে বের হচ্ছে বিভিন্ন আইডিয়া ও কল্পনায় মস্তিষ্ক প্রসূত বিভিন্ন কারণ! কেউ কেউ বলছেন ঘটনাস্থলে বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগ করা হয়েছিল ইরানের শিয়া মুসলিমের একজন বিশেষ ব্যক্তিকে মারার জন্য। আবার কেউ কেউ সমালোচনা করছেন হাজিদের পবিত্র দেহের লাশে স্তুপ নিয়ে! কেউ কেউ সমালোচনা করছেন মারা যাওয়া হাজিদের সৌদি আরবেই দেয়া গণকবর নিয়ে। কেই বলছেন যেভাবে ক্রেন ব্যবহার করে হাজিদের লাশের স্তুপ সরাচ্ছেন বা স্তুপ করে এক জায়গায় রাখছেন, সেটা এই হাজিদের দেহগুলোর ব্যাপারে ঠিক হয়নি!কেউ বলছেন দূর্ঘটনার প্রকৃত কারণ ও লাশের সংখ্যা নিয়ে সৌদি আরব বানোয়াট তথ্য দিচ্ছেন, প্রকৃত সত্য গোপন করছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। নেপালের ভূমিকম্পের পরও সেখানের ঘটনা নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল যে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমেরিকা কৃত্রিমভাবে এই ভূমিকম্প ঘটিয়েছিলেন! মানুষের কল্পনা সত্যি অদ্ভূদ! ভারতেও প্রতি বছর তীর্থ স্থান গুলোতে উন্মাদনা কিংবা অব্যবস্থাপনার কারণে অনেক লোক মারা যায়। সেই মৃত্যুতেও আলোচনা, সমালোচনার ঝড় উঠে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে! তবে এই আলোচনা-সমালোচনারও একটা পজিটিভ দিক আছে, অন্ততঃ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা ব্যক্তির কিছুটা হলেও টনক নড়ে ব্যবস্থাপনা অব্যবস্থাপনা কিংবা ব্যক্তিটির চরিত্রের ব্যাপারে! যার একটা সুফল হয়তো পরবর্তীতে প্রভাব ফেলে। যা হোক মানুষ তার জ্ঞান দ্বারা ভাবতেই পারেন বিশেষ কিছুকে নিয়ে, বিশেষ কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। কিন্তু সেই ভাবনা , সেই কল্পনা মানুষের কল্যাণে লাগছে কিনা সেটাই আসল কথা! এই সব ঘটনা নিয়ে পরস্পর বিরোধী অসহিষ্ণু কথাবার্তার থেকে সবার আগে আমাদের ভাবা উচিত আমরা নিজেরা কে কতটুকু সৎ, অন্যের প্রতি মর্যাদাশীল, শ্রদ্ধাশীল কি না কিংবা ভাল কাজ করি কি না সেটা। সর্বোপরি আমাদের মেধা, আমাদের জ্ঞান দ্বারা, আমাদের বিচক্ষণতা দ্বারা ভাল কিছু করার মানসিকতা তৈরি করতে করতে হবে, দ্বন্দ , সংঘাত দেখা দিলে সেখানে ইন্ধন না যোগীয়ে সংঘাত নিরসনে পদক্ষেপ নেয়াই তো প্রকৃত ধর্মের অন্যতম দিক!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৯

যাযাবরমন বলেছেন: ভেজাল তো খাটি জিনিষেই হয়| দুধে, কেরোসিনে ভেজাল হয়, চোনায় হয়না| খাটি দুধ যেমন খুজে বের করতে হয়, তেমনি খাটি মুসলমান ১০০ তে ৫ টাও মেলে না|

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬

বীরেশ রায় বলেছেন: খাটি মুসলমান যদি ১০০ তে ৫ টাও না মেলে তাহলে সংখ্যাটা কি দাঁড়ালো? সারা বিশ্বে এত এত মানুষ নিজেদের খাঁটি মুসলমান দাবি করে সবই কি গোল!!! ভাই আপনি কি খাঁটি মুসলমান?

২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৬

যাযাবরমন বলেছেন: আর তারাই মুসলমান যারা কোরআন এর নির্দেশ মত চলে, তথাকথিত মাসালা মাসায়েল অনুসারে না|

৩| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৩

যাযাবরমন বলেছেন: না, তবে হওয়ার চেষ্টা করছি|

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.