![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার উপরে মানুষ সত্য! চেষ্টা করি সেই সত্যকে অনুসরণ করতে।
পশুকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়ার জন্য কোন নিয়ম কানুন তৈরি করতে হয় না, কেবল চাবুক মারলেই চলে। অধিকন্তু সেই পশুটাকে দিয়ে আরও বেশি বেশি কাজ করিয়ে নিতে চাইলে বড়জোড় প্রতিদিন দু-বেলা কিছু খেতে দিতে হয় যাতে হাড় মাংস চামড়া সমবেত কোন রকমে পশুটি বেঁচে থাকে! এটাতে পশুটির যে লাভ হয় তা নয় বরং মালিকটি পশুটির দ্বারা আরও বেশিদিন বেশি বেশি কাজ করিয়ে নেয়ার পথ তৈরি করে নেন আর পশুটি হাড়ভাঙা পরিশ্রমের দূর্ভোগে আটকা পড়ে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ দিন! অন্য দিকে বর্তমানে মানুষকে দিয়ে তো আর সেরকম পশুর মতো নিয়ম কানুনহীনভাবে চাবুক চালিয়ে কাজ করিয়ে নেয়া সম্ভব হয় না তাই নৈতিকতার বেড়াজালে মানুষকে আটকিয়ে একটা নিয়ম কানুনের ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে যাতে মানুষ বিবেক তাড়িত হয়ে স্বেচ্ছায় পশুর শ্রম দেয়। যদিও প্রাগৈতিহাসিক কালে সেই নৈতিকতা বা নিয়ম কানুনের ফাঁদও ছিল না, ছিল কেবল অর্থ-কড়ি ও পেশীশক্তির জোড় যা দিয়ে তৈরি হয়েছিল দাসপ্রথা অর্থাৎ সেই পাশবিক প্রক্রিয়ায় চাবুক মেরেই শ্রমিকের দেহ নিঙরিয়ে শ্রম আদায় করা হতো দুবেলা দুমুঠো খেতে দিয়ে! সভ্যতার ধারাবাহিকতায় যদিও এখন মানুষ জ্ঞান ও বোধশক্তি দ্বারা সচেতন এবং ফলশ্রুতিতে সেই দাসপ্রথা থেকে বেড়িয়ে এসেছে তথাপি মানুষ নতুন রূপে পুঁজিবাদের দ্বারা তৈরি নব্য দাসপ্রথার শৃংখলে কোন না কোন ভাবে বন্দী! বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশের মতো জনসংখ্যা বহুল উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোতে। পুরাতন মদ নতুন বোতলে, নতুন লেবেলে, নতুন নামে এই যা পার্থক্য! আধুনিক পুঁজিপতিদের মানুষকে দিয়ে ‘পশুকে চাবুক মেরে কাজ করিয়ে নেওয়ার মতো’ নিজের স্বার্থ হাসিল করে নেওয়ার আর একটি হাতিয়ার অর্থাৎ নব্য দাসপ্রথার অন্যতম আর একটি রূপ হল ‘কন্ট্রাকচুয়াল নিয়োগ’। এই থিয়োরিকে কাজে লাগিয়ে পুঁজিপতিরা, প্রতিষ্ঠানের মালিকরা, NGO উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দর কষাকষি করে মধ্য ও নিম্ন সারির কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা শ্রমিকদেরকে সর্বনিম্ন সুবিধা দিয়ে তাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ শ্রম ( আমার মতে রক্ত) শোষণ করছে! ‘কন্ট্রাকচুয়াল নিয়োগ’এর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রথম সারিতে যারা নিয়োগ পান তারা অনেক ক্ষেত্রেই দর কষাকষি করে কিংবা স্বজনপ্রীতি/সার্কেল পরিচিতির দ্বারা আনুকূল্য পেয়ে নিজেদের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক সুযোগসুবিধা সহজেই হাতিয়ে নিতে পারেন কিন্তু মধ্য ও নিম্ন সারির কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা শ্রমিকদের সেই দর কষাকষি করার সুযোগ একেবারেই থাকে না জনসংখ্যার তুলনায় কর্মক্ষেত্রের অপ্রতুলতার কারনে। আর এই পুঁজিপতিরা সেই সুযোগটাকেই মোক্ষম উপায়ে কাজে লাগাচ্ছেন। দর কষাকষির ভাষা একটাই- ‘এই (অল্প) সুযোগ সুবিধায় আপনার পোষালে চাকুরি করেন, না হলে চলে যান!’ লোকের তো আর অভাব নেই। কেউ না কেউ তো পেটের ক্ষুধা নিবারণে, পরিবারের ভরণপোষণের দায় সামলাতে, বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের দুটো ডাল ভাতের যোগান দিতে লজ্জা শরম ত্যাগ করে ঠিকই তাদের পায়ে পড়ে হাউমাউ করে কেঁদে-কেটে বলবেন- ‘ স্যার, চাকুরীটা আমার খুবই দরকার!’
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৩০
দস্যু বনহুর বাই রোমেনা আফাজ বলেছেন: হাউমাউ করে কেঁদে-কেটে বলবেন- ‘ স্যার, চাকুরীটা আমার খুবই দরকার!’