নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিষ্পত্তি কি সব সময়ে জয়-পরাজয়ে? ময়দানি ধুলোয় তার বাইরেই যে পড়ে থাকে খেলার আসল-নকল গল্পগুলো৷ ময়দানের ঘাস-ধুলো যাঁর প্রিয়তম বন্ধু, তাঁর কলমে অভিজ্ঞতার দস্তাবেজ৷

ফেলুদার তোপসে

দিনরাত সাদা-কালো জীবনের মধ্যে এক্কাদোক্কা খেলতে খেলতে হারিয়ে যাই অচেনা দুপুরের কোলে। বাকি থেকে যায় কিছু মরচে পড়া নিঃশ্বাস, কয়েকটা পোড়া স্বপ্ন আর কিছু ব্যক্তিগত উন্নাসিকতা। রাত আসে, শহর ঘুমিয়ে পড়ে... আর মন পড়ে থাকে কোনও একলা ছাদের অন্ধকারে। এভাবেই চলছে জীবন... এভাবেই মাঝে মাঝে ভিড় করে আসে রাত জাগানো শব্দেরা। ইচ্ছে, কবিতা, প্রেম, রাস্তা, অন্ধকার... আমি।

ফেলুদার তোপসে › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুতপা যেদিন নিজেই লাল কৃষ্ণচূড়া হয়ে যায়

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৭

লাল লাল ফুল সমেত কৃষ্ণচূড়া বরাবরই খুব প্রিয় ছিল সুতপা’র। বলতো,
আর কোন ফুল দেখতে এর থেকেও সুন্দর হয়, দাদা?
আর কোন গাছ পারে নিজের শরীরে এমন করে
আগুন লাগাতে?
আমি শুনতাম। শুনতাম আর হাসতাম।
ধুর, পাগলী! এর থেকে বাগানবিলাসের ঝোপ কত সুন্দর দেখতে!
ওই যে পিকলুদের পেছনের বাগানে ফুটে আছে নীল অপরাজিতা?
সেটাই বা কম কিসে!

সুতপা আমার বোন। তখন রোজ বেণী করে স্কুলে যায়।
স্কুল শেষ হলে, আমিই গিয়ে নিয়ে আসি রোজ। স্কুলের মাঠে লাগানো
কৃষ্ণচূড়া গাছটা দেখিয়ে রোজই একই কথা বলে,
আর কোন ফুল দেখতে এর থেকেও সুন্দর হয়, দাদা?
আর কোন গাছ পারে নিজের শরীরে এমন করে
আগুন লাগাতে?

আমি রোজই শুনি। শুনি আর হাসি।

এককালে বেণী দুলিয়ে স্কুলে যাওয়া ছোট্ট সুতপা একসময়
ভার্সিটি যায়। সেই ছোট্ট সুতপা। যে বলতো,
আর কোন ফুল দেখতে এর থেকেও সুন্দর হয়, দাদা?
আর কোন গাছ পারে নিজের শরীরে এমন করে
আগুন লাগাতে?

ভার্সিটি বন্ধ। সুতপা আসছে।
পরের দুইদিনই হরতাল। মর্জি হলে তার পরের দুইদিনও।
তাই দেরি না করে সুতপা আজকেই আসছে।
চারটের ট্রেনে। একাই।
সুতপা এখন অনেক বড়।
সেই ছোট্ট সুতপা, যে আমার বোন, লাল কৃষ্ণচূড়া যার বড়ো প্রিয় ছিল।

সুতপা-কে নিয়ে আসাটা আমার অনেক দিনের অভ্যাস।
অন্তত স্টেশন থেকেও তো নিয়ে আসা যায়!
রিক্সা না নিয়ে হেঁটেই রওনা দিই। সৃষ্টিছাড়া
কৃষ্ণচূড়া কি আর দোকানে কিনতে পাওয়া যায়!

স্টেশনে পৌঁছুতে দেরি হয়ে যায়। প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা
সুতপা’র ট্রেন তখন জলন্ত অঙ্গার। গাছ না পারলেও
মানুষ তো পারে, নিজেদের শরীরে এমন করে আগুন লাগাতে!

সুতপা আর আসেনি।
সেই সুতপা, লাল কৃষ্ণচূড়া যার বড়ো প্রিয় ছিল। যে বলতো,
আর কোন ফুল দেখতে এর থেকেও সুন্দর হয়, দাদা?
আর কোন গাছ পারে নিজের শরীরে এমন করে
আগুন লাগাতে?

সেই ছোট্ট সুতপা, যে ছিল আমার বোন,
যে লাল কৃষ্ণচূড়ার কথা ভাবতে ভাবতে একদিন নিজেই
লাল কৃষ্ণচূড়া হয়ে গিয়েছিল।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৮

কাজী মেহেদী হাসান। বলেছেন: গাছ না পারলেও
মানুষ তো পারে, নিজেদের শরীরে এমন করে আগুন লাগাতে-- সুন্দর লাইন

যে লাল কৃষ্ণচূড়ার কথা ভাবতে ভাবতে একদিন নিজেই
লাল কৃষ্ণচূড়া হয়ে গিয়েছিল। --- ভালো লিখেছেন

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১২

ফেলুদার তোপসে বলেছেন: বুকের বামদিকটায় জমে থাকা কষ্টগুলোকে কবিতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করি, মাঝখান থেকে লাল কৃষ্ণচূড়ারা সবকিছু এলোমেলো করে দেয়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.