নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্ল্যাইন্ড আইজ

ব্ল্যাইন্ড আইজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধন্যবাদ আপনাদের... অবশেষে!

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

প্রজন্ম চত্বর অথবা গন জাগরণ মঞ্চ যেই নামেই ডাকি না কেন, এই শাহাবাগ বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিছেদ্য অংশ। তাই এই স্থানটির আন্দোলনকে নিয়ে প্রথম থেকেই অনেক জল্পনা আর কল্পনা সবার মাঝে। প্রত্যেকে তার নিজের মতন করে এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ রূপরেখা এঁকেছে। কেউ বলে এখান থেকে বাংলদেশের রাজনীতি তার নতুন নেতা পাবে, কেউ বলে রাজনীতির প্রেক্ষাপট বদলে যাবে, কেউ বলে এটা সরকারি দলের চাল, আবার কেউ বলে ‘ফ্যাসিবাদের’ আন্দোলন।



আমরা যাই বলি বা চিন্তা করিনা কেন একটা বিষয় এইখানে সুস্পষ্ট যে, এই আন্দোলন বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে একত্রীত করতে পেরেছে। অনেকের ধারণা ছিল যে এই নতুন প্রজন্ম হচ্ছে ইন্টারনেটের পোকা যারা শুধু পারে ‘ফেসবুকে’ আপডেট দিতে অথবা অনলাইনে কথোপকথন করতে। কিন্তু এই আন্দোলন সব হিসাব নিকাশ, সব ধারণা পাল্টে দিয়েছে। এখন রাজনীতিবিদরা হয়তো একটা বিষয় সোচ্চার হবেন যে এই তরুণ সমাজ অনলাইনে থাকার পাশাপাশি অন্যায়কে শক্ত হাতে রুখে দিতে পারে। তাই এখনই সময় রাজনৈতিক নিতিতে পরিবর্তন আনা। এই আন্দোলন থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে যে এই মাটিতে একের অধিক রাজনৈতিক দল থাকবে কিন্তু তাদের অবস্থান কোন ভাবে কোন সময়ই আমাদের কষ্টে অর্জিত স্বাধীনতার বিপক্ষে যেতে পারবে না।



তাই রাজনীতিবিদের উচিৎ খুব হিসাব করে তাদের কর্মসূচী ঘোষণা করা। এটা হয়তো অনেকেরই যানা যে এইবারও নতুন ভোটারের সংখ্যা অনেক; তাই রাজনীতিবিদের উচিৎ এটি মনে রেখে এগোনো।



এই আন্দোলন চলাকালীন সময় রাজনৈতিক অনেক দলের অবস্থানটা পরিষ্কার ছিলনা। কারন অনেক দলই এই আন্দোলনকে তাদের নিজেদের দিকে টান্তে চেয়েছে। এই আন্দোলন শুরু হওয়ার আগে আমার ধারণা ছিল যে এই তরুণ সমাজ সরকারী দলের প্রতি বেশ বিরূপ। যেই যুদ্ধ অপরাধীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হল, শেই সাথে শুরু হল দেশের প্রধান বিরোধী দলের বিভ্রান্তিকর বিবৃতি। যার বদলোতে এই তরুণ সমাজের মধ্যে অনেক প্রশ্ন ওঠতে থাকলো। প্রধান বিরোধী দলের এক নেতা (জেল থেকে বের হয়ে) বলেন এই আন্দোলনকে স্বাগতম, আরেকজন বলেন ট্রাইব্যুনাল স্বচ্ছতা হারিয়েছে আবার অন্য একজন আখ্যায়িত করেন এটিকে একটা নাটক হিসেবে।



সকল এই বিভ্রান্তিকর বিবৃতিতে যখন তরুণ সমাজ বিচলিত; তখন একটি তথ্য অনলাইনে ও অনেক গন মাধ্যমে চলে আশে। যেখানে সুস্পষ্ট ভাবে দেখানো হয় যে প্রধান বিরোধী দলের প্রতিষ্ঠাতা এই সব যুদ্ধ অপরাধীদেরকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। এখন প্রশ্ন ওঠে কেন? কি দরকার ছিল এদের পুনরায় আমাদের এই দেশে প্রতিষ্ঠিত করার। নাকি ১৫ অগাস্টের নীল নকশার এটি একটা অংশ। যাই হোক না কেন নতুন প্রজন্ম তাদের উত্তর ঠিকই খুঁজে নিবে।



বিগত বেশ কিছু বছরে আমাদের ইতিহাসকে অনেক ভাবে কলসিত করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু একটি সত্য হচ্ছে সত্য কখনও চাপা থাকে না। মহান আল্লাহ্‌তালা বলেছেন যে যদি তুমি সত্য দিয়ে মিথ্যার ওপর আঘাত করো মিথ্যা বিলুপ্ত হবেই কারন মিথ্যা বিলুপ্ত হবার জন্যই। এই কারনে এতো দিন পরও সেই যুদ্ধ অপরাধীদের পুনর্বাসনের সত্য বেরিয়ে এসেছে।



আন্দোলন চলা কালীন সময়, আমার সব সময় মনে হত, কেন প্রধান বিরোধী দল তাদের শরিক যুদ্ধ অপরাধীদের ছেড়ে আসেনা; কারন আমার যানা মতে তাদের মধ্যে অনেকে আছেন মুক্তিযুদ্ধের স্পক্ষে। কিন্তু গন মাধ্যমের দেওয়া অনেক তথ্যের ভিত্তিতে আমার ধারণা ধীরে ধীরে পাল্টাতে লাগলো। এখন মনে হয় প্রধান বিরোধী দলের বেশী দরকার যুদ্ধ অপরাধীদের যত না দরকার তাদের।



মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলে, যে এই বিশেষ (যুদ্ধ অপরাধীদের) দলটি আমাদের শান্তির ধর্ম ইসলামকে পুঁজি করে সত্রু পক্ষকে দিয়ে অনেক অনৈতিক ইসলাম বিরোধী কাজ করিয়েছে। ছোট বেলায় শুনেছি ‘পাপ বলে বাপকেও ছাড়ে না’। তারই প্রতিফলন দেখছি যখনি পাকিস্তানের দিকে তাকাই। অনেকে বলে পাকিস্তানের আর্মির কি করার আছে তাদের যুদ্ধ করতে বলা হয়েছে তারা করেছে। তখন মনে প্রশ্ন জাগে যুদ্ধ করতে বলেছে ঠিক আছে, তাহলে ধর্ষণ কেন। যদি বলেন আমাদের জাতিকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালানো হয়। তাহলে প্রশ্ন ওঠে মোসলমান-মোসলমান ভাই-ভাই, তাহলে ভাইয়ের মা-বোনকে ধর্ষণ করা কি ইসলামে জায়েজ।

তখন জানতে পারলাম যে এই যুদ্ধ অপরাধীরা বলেছে এখানকার মোসলমানরা ‘মুরদাত’ হয়ে গেছে তাই যেকোনো পাশবিক নির্যাতন এদের ওপর জায়েজ। কিন্তু প্রশ্ন জাগে এই আর্মিদের কি আল্লাহ্‌তালা বিবেক-বুদ্ধি দেয় নাই; অবশ্যই দিয়েছে কিন্তু তারা সেটার অপব্যাবহার করেছে। তাই প্রধান বিরোধী দলের উদ্দেশে বলছি কোন ভাবেই এই জঘন্য যুদ্ধ অপরাধীদের পক্ষে থাকার কারন ইসলামের স্বার্থের জন্য হতে পারে না। যারা আমার এই মহান ধর্মকে ও সর্বশ্রেষ্ঠ মানবকে বিক্রি করতে পারে তারা যাই হোক ইসলামিক দল হতে পারে না। তাই এদের সাথে থেকে আপানারা আমাদের এই নতুন প্রজন্মকে কি বোঝাতে চাচ্ছেন তা আপনারাই জানেন, শুধু একটাই অনুরধ দয়াকরে মনে করবেন না যে আমারা এই তরুণ সমাজ কাঁঠাল পাতা খাই।



শুক্রুবারের (২২.০২.২০১৩) জুম্মার নামাজ শেষের ঐ তাণ্ডবের পর, আপনাদের রবিবারের হরতালের সমর্থন ওলামা-মাশায়েকের (হতে পারে ঐ যুদ্ধ অপরাধীদের টাকা খওয়া একটি দল) প্রতি, আমাদের ধারনাকে আরও দৃঢ় করেছে যে আপনারা আমাদের স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তিকে ছাড়ছেন না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কি এমন ভালোবাসা, কি তার উৎস যদি আমাদের বলতেন। যদি এই ভালোবাসা দেশের সারভমউত্তের ও স্বাধীনতার প্রতি হত কতই না মঙ্গল হত।



আমাদের দেশে একটি রিতি আছে যে, যেই প্রধান বিরোধী দলে যায় তার দায়িত্ব হয় হারতাল, সাধারণ জনগনের সম্পদ ধ্বংস, সংসদ বর্জন ও অন্যান্য অনিতিক কাজ করা। আমাদের ধারণা ছিল হয়তো আপনারা এই প্রচলিত রিতি ভাঙবেন, কিন্তু আমাদের আপনারা আরও একবার নিরাশ করলেন।



প্রধান বিরোধী দল অনেকবার বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী, পদ্মা সেতু দুর্নীতি ও সরকারের আরও অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে গন জাগরণের মঞ্ছে দাবী তলার জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় আপনারা কেন জানি কম বোঝেন অথবা কম বোঝার চেষ্টা করেন। আপনারা যে সব কথা বলছেন শেগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক ইস্যু আর গন জাগরণ মঞ্চের প্রধান দাবী জাতীয় ইস্যু; দুঃখ জনক এই যে আপনারা আমাদের জাতীয় ইস্যুতে আপনারা আমাদের পাশে নেই।



আপনারা আরও বলেন ক্ষমতায় গেলে সকল যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার করবেন। দুঃখের বিষয় এই যে আপনারা আমাদের আবার কাঁঠাল পাতা খাওয়া প্রাণী মনে করেন। আপনারা নির্বাচন করবেন যুদ্ধ অপরাধীদের দলকে নিয়ে আবার তাদের সহ অন্যান্যদের বিচার করবেন, খুবই হাস্যকর। দয়া করে একটু ভালো রাজনীতি করেন, এইসব সস্তা রাজনীতি বাদ দেন। আর যদি আমরাই আপনাদের ক্ষমতায় নেই অথবা আমাদের কাঁধে ভর করে যদি ক্ষমতায় বসার স্বপ্ন দেখেন তা হলে আপনাদের এত দিনের রাজনীতির কি হল এবং আপনাদের তা হলে কি প্রয়োজন।



আপনাদের এই সব কর্মকান্দে একটা জিনিস প্রকাশ পাচ্ছে যে আপনারা প্রধান বিরোধী দলের স্থান থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছেন এবং যুদ্ধ অপরাধীদের দলটি ধীরে ধীরে আপনাদের স্থান দখল করে নিচ্ছে। তাই যুদ্ধ অপরাধীদের দলটিকে যদি সরকার নিষিদ্ধ করে তাহলে মনে হয় আপনাদের কিছুটা লাভ হলেও হতে পারে।



তাই, এই অবস্থায়, আপনাদের অবস্থান সুনিশ্চিত করার জন্য ধন্যবাদ আপনাদের... অবশেষে!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.