নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্ল্যাইন্ড আইজ

ব্ল্যাইন্ড আইজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ম্যাডামের সমীপে

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৩৬

পহেলা মার্চ ২০১৩ এর বিকালে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলের এক উল্লেখযোগ্য প্রেস ব্রিফিং; যার দরুনে আবরও সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক বাক যুদ্ধ। যার প্রতিফলন হয়তো বাংলাদেশের মানুষ দেখেছেন বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাওয়া নরকিও সহিংস ঘটনার মাধ্যমে। তাই ঐ বিবভ্রান্তিকর ব্রিফিংএর পর্যালোচনা করাটা যথেষ্ট প্রয়োজন।



প্রধান বিরোধী দলের ম্যাডাম বেশ কিছু অপ্রীতিকর মন্তব্য করছেন যা ওনার অবস্থান থেকে করাটা কখনই বাঞ্ছনীয় নয়। প্রথমেই বলি যে এই তরুণ প্রজন্ম যথেষ্ট লেখাপড়া করে এবং রাজনীতি সহ অন্যান্য বিষয় প্রচুর চিন্তা করে; তাই জনগনের উদ্দেশে কথা বলার পূর্বে সকল রাজনীতিবিদ্দের উচিৎ একটু ভেবে নেওয়া। এছাড়া এই টেকনোলজির যুগে মনে রাখবেন সব মন্তব্য দলিল আকারে সংরক্ষিত হচ্ছে যা কোন এক সময় আবার পেশ করা যাবে আপনাদের বিরুদ্ধে।



এখন মূল প্রসঙ্গে আশি; প্রধান বিরোধী দলের ম্যাডাম বলেছেন যে পাখির মত মানুষ মারা হচ্ছে; প্রশ্ন ওঠে দয়া করে যুক্তি দিয়ে মতবাদ দিন ও আবল-তাবল কথা পরিহার করুন। উনি কোথায় দেখলেন ঐ দৃশ্য - প্রমাণ থাকলে দয়া করে ‘উ-টিউবে’ দিন; তরুণ প্রজন্মের উপকারে আসবে। ওনাকে জানিয়ে রাখী যে ‘মৃত পাখিদের’ মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েজন পুলিশ, হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও সরকারী দলের নেতা; তাই প্রশ্ন ওঠে এদের এই পরিনতি কিভাবে হল- যদি প্রমাণ সহ যুক্তি দিয়ে বলতেন।



উনি গন জাগরণ মঞ্ছকে ফ্যাচিবাদ্দের আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। খুব দুঃখ লাগে ও রাগ ও হয় ভেবে উনি কি ভাবে ঐ উক্তিটা ব্যবহার করলেন ও ১৯৭১ এর নর পশুদের পক্ষ নিলেন। উনি যদি ঐ শব্দটির মানে জানতেন তাহলে হয়তো এতো সহজেই ওনার ছেলের বয়সী ছেলে-মেয়েদের এবং ওনার নাতি-নাত্নির বয়সী নিষ্পাপ শিশুদের উদ্দেশে ঐ উক্তিটা দিতে পারতেন না। আমার সাথে অনেক পাঠক হয়তো একমত হবেন যে ‘যার মনে যা ফাল দিয়ে ওঠে তা’। তাই আন্দোলনের দিন থেকে ওনার অবস্থান দেশের স্বাধীনতা প্রেমিক জনগনের কাছে পরিষ্কার না হলেও ঐ ব্রিফিং এরপর তা সুস্পষ্ট। আবারও প্রমাণ হল যে খুব বেশি দিন কেউ অভিনয় করে ও ভনিতা ধরে প্রকিত রূপ ঢাকতে পারে না। ১৯৭৫ সালে যারা ঐ নর পশুদের আমাদের এই দেশে প্রতিষ্ঠিত করার ষড়যন্তে লিপ্ত হয়; এই ২০১৩ তে তাদের কাছ থেকে এর চেয়ে আর বেশি, এই স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী জনগণ, কি আসা করতে পারে।



উনি এই আন্দোলন চলাকালীন সময়ের হত্যাকে ‘গণহত্যা’ বলেছেন। প্রশ্ন ওঠে এটা যদি গণহত্যা হয় তা হলে ১৯৭১ সালে কি হয়েছিলো। যদি আপনি এই আন্দোলন চলাকালীন সময়ের হত্যার নিন্দা জানান; আপনাকে অভিনন্দন কিন্তু ১৯৭১ সালের হত্যার ও হত্যাকারীদের ব্যাপারে কেন নিন্দা জানাতে এতো কষ্ট হয় ও তাদের দোসরদের রক্ষা করতে কেন এতো প্রচেষ্টা আপনার?



উনি পুলিশ প্রশাসনকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে তাদের অস্ত্র জনগনের টাকায় কিনা তাই এর ব্যাবহার জনগনের ওপর না করার জন্য। প্রশ্ন ওঠে উনি জনগণ বলতে কাকে বুঝিয়েছেন; হয়তো ওনার শরিক দলের সন্ত্রাসীদের। কারন গন মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ঐ সন্ত্রাসীরা নির্দ্বিধায় সংখ্যালঘুদের সম্পদ ধ্বংস করছে, পুলিশ বাহিনীর ওপর হামলা ও তাদের মারছে। আর পুলিশ যখন তার দায়িত্ব, জনগনের জান-মাল রক্ষা, পালন করতে ঐ সহিংসতার প্রতিরোধ করছে তখন ওনার অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাহলে উনি আসলেই ঐ জামাত-শিবিরদের রক্ষায় প্রতিজ্ঞা বদ্ধ।



উনি পবিত্র ইসলামকে রক্ষা করার কথা বলেছেন। প্রশ্ন ওঠে ২২.০২.২০১৩ শুক্রুবারের ঘটনা কি উনি দেখেন নাই? অনেকে বলেন উনিতো দেশের বাহিরে ছিলেন; এই যুগে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো প্রান্তের খবর যানা সহজ। তাই এই সব ফালতু কথা বলবেন না। আর যারা মসজিদে জায়নামাজ ও নামাজের গালিচা পড়ায় তাদের দিয়ে আর যাই হোক ইসলামকে রক্ষা করা সম্ভব নয়; কারন অতীতের মত তারা আবারও প্রমাণ করেছেন যে ইসলাম হচ্ছে তাদের শেষ অস্ত্র এই ধর্ম ভীরু জনগনকে কাবু করার। কিন্তু জেনে রাখবেন এখনকার জনগণ তাদের ধর্মের ব্যাপারে অনেক সচেতন ও সোচ্চার।



উনি এক দলকে ধর্ম পরায়ন বলেছেন; অবাক হই যখন ঐ তথাকথিত ধর্ম পরায়ণরা আল্লাহ্‌তায়ালার বানি ‘লা কুম দি নু কুম আলিইয়া দিন’ এর মানে ভুলে অন্য ধর্ম অবলম্ভিদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।



উনি এক নিহত ব্লগারকে ইসলামের ব্যাপারে কুৎসা রটনার দাবী তোলেন। যতটুকু মনে পরে ওনার দলের এক নেতা, খোকা সাহেব, এক সমাবেশে বলেছেন যে ‘উনি বুঝতেই পারছেন না ঐ ব্লগার এতোদিন কি ভাবে বেচে ছিলেন এই সব কুৎসা রটনার পর’। প্রশ্ন ওঠে আপনারা কি ঐ ব্লগের সত্যতা যাচাই করেছেন। নাকি প্রয়োজনও মনে করেন নাই, যেহেতু খুব ভালো করে জানেন যে ঐ মিথ্যা ব্লগের পেছনে রয়েছে আপনাদের ভালবাসার রাষ্ট্র ‘পাকিস্তান’ এর একটি ব্লগ। তাই জানুন পরে বলুন।



উনি বলেছেন যে ঐ আন্দোলনে অনেক ‘সম্মানিত’ লোকের নামে বাজে কথা ছড়ানো হচ্ছে। শাহাবাগে গেলে দেখতেন ও শুনতেন যে স্লোগানগুলো মূলত রাজাকার ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে। যেমন ‘গোলাম আজম – তুই রাজাকার তুই রাজাকার’ এর মত আরও অনেক রাজাকারের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন ওঠে ঐ রাজাকাররা যদি ওনার চোখে ‘সম্মানিত’ লোক হয়। তাহলে অনেক বেক্তি ঐ ‘সম্মানিত’ কথাটি থেকে হয়তো দূরে থাকবেন। আরও প্রশ্ন ওঠে এখনও যদি ঐ নর পশুদের তাবেদারিতে ব্যস্ত থাকেন; তাহলে ক্ষমতায় গেলে যে কি হবে তা কে জানে।



উনি বলেছেন জনগনের জীবনের নিরাপত্তা নেই তাই সুশাসনের জন্য ওনাদের দরকার। প্রশ্ন ওঠে যদি এই তরুণ সমাজই দরকার ঐ সংসদে যাবার জন্য; তাহলে এই তরুণ সমাজের দাবী যুদ্ধ অপরাধীদের বিষয় কেন উনি নিরব। প্রশ্ন ওঠে ঐ প্রসংগ আসলেই কেন উনি ও উনার নেতারা আবান্তর কথা বলে ও এড়িয়ে যায়।



উনি বলেছেন ট্রাইবুনাল স্বচ্ছতা হারিয়েছে। আরে নিরবোদ স্বচ্ছতা প্রশ্ন আসে বিচার চলাকালিন সময়, রায়ের পরে না। এতো প্রশ্ন থাকলে কেন আগে কথা না বলে মুখে কলা দিয়ে রেখেছিলেন। ঐ রাজাকাররা যখন বিদেশী ‘লবিইষট’ ভাড়া করে তখন তো প্রশ্ন করেন নাই; ছিলেন নিচ্ছুপ। কারনটা কি? আর ম্যাডাম যখন ওনার পৃষ্টপোষকদের কাছে সাহায্য চেয়ে চিঠিতে উল্লেখ করেন যে তাদের হস্থক্ষেপ প্রয়োজন ও অনুরোধ করেন ১৯৭১ সালের মতন এই দেশকে সাহায্য করার জন্য; তখন প্রশ্ন ওঠে ওনার এই কর্মকাণ্ড কি আমার সারভমউত্তের বিরুদ্ধে নয়। আর তাই যদি হয় উনার বিরুদ্ধে কেন দেশ দ্রহিতার মামলা হবে না? ওনাকে অনেক ধন্যবাদ যে উনি ড্রন হামালা করতে অনুরোধ করেন নাই।



উনি খুব সুন্দর করে এই সব ঘটনাকে নজিরবিহীন বলেছেন। প্রশ্ন ওঠে ১৯৭১ সালের গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা আর মালায়সিয়া সহ অন্যান্য দেশে টাকা পাচার কোন নজিরে পরে?



উনি বলেছেন ক্ষমতা লোভি সরকার। প্রশ্ন ওঠে তাহলে কোন লোভে উনি এই তরুণ সমাজের চেতনাকে ধিক্কার জানিয়ে ঐ জামাত-শিবিরের সাথে এখনও আঠার মতন লেগে আছেন?



উনি পাহাড়িদের কথা বলেছেন। প্রশ্ন ওঠে তা হলে কেন উনার দল বিগত বছরে ঐ পাহাড়ি এলাকায় বাংলাদেশীদের বসিয়ে বছরের পর বছর দাঙ্গা লাগিয়ে রেখেছিলেন কেন; সেটা কি ঐ পুরাতন রাজনীতি ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’।



যদিও উনার বক্তব্যে আরও অনেক সাঙ্ঘরশিক মতবাদ রয়েছে; অতঃপর প্রশ্ন করি (জানি এড়িয়ে যাবেন) জামাতকে কি বিনপি করন করা হয়েছে না কি বিনপি জামাতি করন হয়ে গেছে?



যাই বলেন না কেন একটা বিষয় ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে; ১৯৭১ সালে এই দেশের জনগণ একি সাথে দুটি দলের, পাকিস্তান ও রাজাকার, বিরুদ্ধে যেহেতু জয়ী হয়েছেন অতএব ২০১৩ সালেও ইনশাআল্লাহ্‌ এই জনগণ একি ভাবে জয়ই হবে...।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.