![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(ঐ ব্লগারের ব্লগটি পড়ুন Click This Link)
আপনার প্রশ্ন গুলো আমার কাছে যুক্তি যুক্ত মনে হয়েছে এবং মনে হচ্ছে আপনার মতন হয়তো অনেকে এই একই রকম ধারণা পোষণ করেন; তাই আমার স্বল্প জ্ঞানে আমি আপনার প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করছিঃ
আপনি সর্ব শেষে বলেছেন যে আপনি নিরপেক্ষ - এই পৃথিবীতে, শিশু ও পাগল ছাড়া, কেউ নিরপেক্ষ নয়। যদি আপনি খুব ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন। এখন আসি আপনার প্রশ্নের উত্তরে-
উত্তর ১) আপনি স্বাধীনতা বলতে কি বঝেন আমি জানি না, তাই অনুমান করে লিখছি। যদি আপনি মনে করেন স্বাধীনতা মানে একটি দেশ, একটি মানচিত্র ও একটি পতাকা তবে এটা আমরা পেয়েছি। যদি আপনি মনে করেন স্বাধীনতা মানে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা, বাক স্বাধীনতা, জাতীয় নিরাপত্তা ও অন্যান্য। তাহলে বলতে হবে এই ৪২ বছরের কুচক্র মহলের কারনে তা আমরা সম্পূর্ণ ভাবে অর্জন করতে পারি নাই। আর ইতিহাস দেখলে বুঝবেন অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আসতে বেশ সময় লাগে এটা রাতারাতি সম্ভব নয়। এছাড়া বাক স্বাধীনতা ও জাতীয় নিরাপত্তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ; কারন যখন ব্লগে কিছু লেখা হয় তখন সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে অনেকেই তার জীবন নিতে প্রস্তুত হয়। কিন্তু যখন পুলিশ তার জীবন রক্ষা করতে, জনগনের জান-মাল নিরাপত্তা দিতে সহিংসতার প্রতিরোধ করে তখন কেন জানি কোনও দল কটাক্ষ করে কথা বলে। তাই প্রশ্ন ওঠে দল মতবাদ দিলে সমস্যা নেই কিন্তু ব্লগে কিঞ্ছু লেখলে তার নিস্তার নেই। অবশেষে আমি বলি যদি বিদেশ যেতে আমারদের ভিসা দরকার হয়, আমারদের পাসপোর্ট বিভিন্ন দেশে গ্রহন করা হয় তাহলে আপনিই বলুন আপনি কি স্বাধীন?
উত্তর ২) ইসলাম ধর্ম কখনই সহিংসতাকে লালন করে না এবং প্রশ্রয় দেয় না। কিন্তু আমাদের দেশ সহ বেশ কিছু দেশে দেখা যায় যে, কিছু অতিমাত্রায় উৎসাহি জনগণ নিজেদের ধর্ম সম্পর্কে না যেনে না বুঝে কিছু তথাকথিত ধর্মীয় ব্যক্তির সান্নিদ্ধ পেয়ে মনে করেন তারাই প্রকৃত মুসলমান। তাই, তারা মনে করেন যে, তাদের কর্তব্য হচ্ছে ইসলামকে রক্ষা ও প্রতিষ্ঠা করা। তাই বলি যখন আল্লাহতায়ালা বলেছেন উনি এই কোরানকে রক্ষা করবেন এবং যখন আমাদের কাছে নবী করীম মুহাম্মাদ (সাঃ) এর হাদিস রয়েছে তখন কেন আমরা এগুল না পড়ে অন্যের কোথায় কান দেই। আবারও বলি ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম ও এটাকে নিয়ে কে কি বলল বা লিখল তাতে আমাদের এই মহান ধর্মের কিছুই আসে যায় না। কারন ইসলামের ইতিহাসে এইরকম, ধর্মের অপব্যাবহারের, ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে অথবা ভবিষ্যতেও ঘটবে। আপনি আমার কথা অন্ধের মত বিশ্বাস না করে কোরান ও হাদিসকে বিশ্বাস করুন, তা হলে ইনশাআল্লাহ্ আপনি প্রকৃত সত্য জানতে পারবেন।
উত্তর ৩) এতক্ষনে হয়তো আপনি আমাকে নিশ্চই কোন দলের দলীয় লোক মনে করছেন। আমার দল একটাই আমি সত্যিটা জানতে চাই বা জানার চেষ্টা করি। তাই এখনে আমি আমার ব্যক্তিগত মতামত পেশ করছি। আমার মতে এই অরাজগতার জন্য দায়ই আমরা নিজেরাই; যারা কোনও কিছু বিশ্লেষণ ছাড়াই, কিছু ক্ষমতালোভী মহলের পাল্লায় পরে সহিংসতায় নিজেদের জরিয়ে ফেলেছি। শাহাবাগের সৃষ্টি গন মানুষের ৪২ বছরে জমে থাকার ক্ষোভ থেকে। যা একটা জনগনের একাত্মতা ঘোষণা করার প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে; এবং যাকে নিয়ে অনেক রাজনীতিবিদরা খেলতে চেয়েছেন, আর ঐ খেলায় যারাই পরাজিত তারাই এই জাগরণকে নিয়ে কুৎসা রটনা করছে, হুমকি দিচ্ছে ও কটাক্ষ করে কথা বলছেন। যখন তারা কথায় পারছেন না, তখন তারা লেলিয়ে দিচ্ছেন তাদের পেশাদার সন্ত্রাসীদের আবার কখনও ব্যবহার করছেন সাধারন জনগনের ধর্মীয় অনুভূতি। আপনি আমার কথায় প্রলোভিত না হয়ে, নিজেই সকল ঘটে যাওয়া ঘটনাকে বিশ্লেষণ করুন অতঃপর সিদ্ধান্ত নিন। জানবেন হয়তো আমরা মানুষ হচ্ছি ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ যার মানে সৃষ্টির সেরা জীব এবং আল্লাহ্ আমাদের বিবেক নামক একটা জিনিস দিয়েছেন যা দিয়ে আমারা ন্যায়-অন্যায়ের বিশ্লেষণ করতে পারি। তাই অন্যের কথায় নয় নিজের বিবেক দিয়ে ভাবুন।
উত্তর ৪) যদি আপনার বাবা-ভাইকে হত্যা করা হতো, মা-বোনকে ধর্ষণ করা হতো তাহলে আপনি কি বলতেন। যদিও আমার পরিবারে কাউকে হত্যা বা ধর্ষণ করা হয় নাই, কিন্তু যেহেতু আমি মুসলমান এবং বিশ্বাস করি যে মুসলমান-মুসলমান ভাই-ভাই; তাই আমার ভাইয়ের মা-বাবার সাথে ঘটে যাওয়া জঘন্য ঘটনা কি আমরা ক্ষমা করতে পারি? এখন প্রশ্ন ওঠে ঐ নর পশুদের ১৯৭১ সালের কর্মকাণ্ড নিয়ে কি কোন সন্দেহ আছে? যদি বলেন কি প্রমাণ আছে, তাহলে প্রশ্ন ওঠে আমাদের বাবা যে আমাদের বাবা তার কি প্রমাণ আছে, এছাড়াও এতো সন্দেহ থাকলে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সব প্রমাণ দেখে আসেন। কিছু তথ্য দেই, এখনও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে তাহলে আমাদের দেশে যুদ্ধ অপরাধীদের হতে সমস্যা কই। যে অন্যায় করেছে তার বিচার ও শাস্তি হলে এতো প্রশ্ন কেন ওঠে। মনে রাখবেন ঐ নর পশুদের মৃত্যু নয় সর্বোচ্চ সাঁজা হওয়া প্রয়োজন; তাহলে ভবিষ্যতে অনেকে ঐ রকম জঘন্য কাজ করা থেকে বিরত থাকবে হয়তো। আর বয়সের কথা বলবেন, আমাদের দেশে বয়সের জন্য সাঁজা হবে না তা আমাদের আইনে নাই; আর যারা আমাদের সংবিধানের বিরুদ্ধে গিয়ে আহত মুক্তিযোদ্ধা (কর্নেল তাহের সহ অন্যান্যদের) ফাঁসি দিতে পারে অতঃপর সংবিধান পরিবর্তন করে তাহলে রাজাকারদের সাঁজার কথা উঠলে এতো প্রশ্ন কেন?
উত্তর ৫) রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করবেই কারন এটাই তাদের পেশা ও নেশা; তাই তাদেরকে এখান থেকে বিরত রাখা সম্ভব নয়। আর জাতীয় ইস্যুতে রাজনীতিবিদের উচিৎ প্রথমেই সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়া। এইক্ষেত্রে আমার আপাতত মনে হয়, সরকারী ও বিরোধী দল শাহাবাগ নিয়ে খেলেছেন এবং যখন একজন খেলায় পিছিয়ে গিয়েছেন তখন আরেকজনকে দোষারোপ করছেন ও জাতীয় ইস্যুকে জোর করে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করতে চাচ্ছেন। আর এই পরিক্রমায় অন্য দলকে আরও সুবিধা করে দিচ্ছেন। তাহলে প্রশ্ন করি আপনিই যদি বুঝেন শাহাবাগ ইস্যু সরকারী দল ব্যবহার করছে; তাহলে কেন বিরোধী দল ও তার নেতারা প্রথম থেকেই বিভ্রান্তিকর মতবাদ দিয়ে এই ইস্যুটিকে কুলশিত করে তরুণ সমাজের কাছে বিতর্কিত হয়েছেন?
যদিও আপনার প্রশ্ন অনেক ছোট, উত্তরগুলো অনেক বিস্তারিত করলাম যাতে আপনার বুঝতে সুবিধা হয়। যদি এখনও সমস্যা থাকে অথবা জেগে জেগে ঘুমান তাহলে আমার কিছুই করার নেই। এই সব মতবাদ আমার একান্ত, তাই দয়া করে কোন দলের সাথে জুরে দিবেন না।
©somewhere in net ltd.