নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Sometimes people dont want to hear the truth because they dont want their illusions destroyed. Friedrich Nietzsche
আমি জানি না কেন এখানে লিখতে আসলাম।মনের মাঝে কিছু কথা জমে ছিল, কাউকে বলতে পারছি না। বার মাথায় একটা কথাই ঘুরছে, স্যার, আমার যদি কিছু হয় আমি কি চিকিৎসা পাব? আপনি কি আমার দায়িত্ব নিবেন? এ দেশে দিনের পর দিন মানুষকে বুঝানো হয়েছে চিকিৎসা মানেই ডাক্তার! তাই তো কয়েকদিন পর পর ৫-৬ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে আইওয়াশ করা হয়। আর সবাই খুশী হয়ে যায়। আজকে এই করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে চিকিৎসা ব্যবস্থা মানেই ডাক্তার না। একটা হাসপাতাল শুধু ডাক্তার দিয়ে চলতে পারে না। যে কোন শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য আমার প্রয়োজন এমন একটি হাসপাতাল যেখানে প্রচুর অক্সিজেন সাপ্লাই। সিলিন্ডার দিয়ে ৫-৬ লিটারের বেশি অক্সিজেন দেয়া যাবে না, এর জন্য চাই সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন। রোগী যখন খারাপ হয়ে যাবে তখন তার জন্য লাগবে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট। একেবারে শেষ পর্যায়ে লাগবে ইন্টিউবেট করার ব্যবস্থা। এখন করোনা রোগীদের চিকিৎসা করার জন্য আমার লাগবে একটা ডেডিকেটেড হাসপাতাল যেখানে অন্য রোগীদের রাখা যাবে না। সেখানে থাকতে হবে কার্ডিয়াক মনিটর যাতে আমি রোগীর খুব কাছে না গিয়েই তার পালস, ব্লাড প্রেসার, অক্সিজেন স্যাচুরেশন দেখতে পারি। আমার ডাক্তারদের জন্য লাগবে মান-সম্মত পিপিই, যে পিপিই পরলে জীবাণু ভেতরে ঢুকতে পারবে না। আমি লোক দেখানোর জন্য যেনতেন একটা কিছু দিয়ে দিলেই তো হবে না, যেটা একটু নড়াচড়া করলেই সেটা ছিঁড়ে যায়! আমাকে দিতে হবে airtight goggles, তা না দিয়ে যদি বাইকারদের জন্য তৈরি চশমা দেয়া হয় কী লাভ হবে? আমার দরকার ভাল মানের মাস্ক৷ এন৯৫ না দিতে পারে, তার সমমানের কিছু দেয়া যেত বা প্রচুর পরিমাণে সার্জিকেল মাস্ক দেয়া যেত। এসব কিছুই দেয়া হয়নি। যে গ্লাভস দেয়া হয়েছে সেটা পরতে গেলেই ছিঁড়ে যায়। লোক দেখানোর জন্য ২০০০ পিপিই দিয়ে কী লাভ যেটা আমার কোন সুরক্ষা দিবে না। পিপিই পরার জন্য একটা ডনিং রুম এবং খোলার জন্য একটা ডফিং রুম লাগে এবং দুটি রুম পৃথক জায়গাতে হতে হয়। ডফিং রুমে ক্লোটেক সলিউশন থাকে। গগলস খুলে সেখানে ফেলতে হয় আর পিপিই খুলে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানিতে ফেলতে হয়। এরপর সেগুলো সেখানে ২০-৩০ মিনিট ধরে রেখে দিতে হয়। গগলস অটোক্লেভ করে আবার ব্যবহার করা যায়। কিন্তু পিপিই ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে সেটা বায়োহ্যাজার্ড ব্যাগে ঢুকাতে হবে, তারপর সেটা আবার ক্লোটেক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে, তারপরে সেটা পুড়িয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। এত কিছু কি করা হচ্ছে? প্রথমে টেস্ট করা হচ্ছিল না। এখন টেস্ট করতে বলছে। কিন্তু স্যাম্পল কালেকশন করার জন্য swab stick, screw capped tube দেয়া হচ্ছে না। বলা হচ্ছে ম্যানেজ করতে। এগুলা স্থানীয়ভাবে কিভাবে ম্যানেজ করা যায়? SOP তে লিখা আছে wooden swab stick অথবা cotton bud দিয়ে পাঠানো যাবে না। কিন্তু সেভাবেই তো পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে সবাই! তাহলে সঠিক রেজাল্ট কিভাবে আসবে? এখন একটা পজিটিভ রোগী যদি নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে ঘুরে বেড়ায় আর রোগ ছড়াতে থাকে তো তার দায়ভার কে নিবে? আপনি লজিস্টিক সাপোর্টনা দয়ে কেন স্যাম্পল কালেকশনের কথা বলেন? আমার ডাক্তাররা ডিউটি করতে চায় কিন্তু তাদের এই নিরাপত্তাগুলো কে দিবে? আমি কি আমার সন্তানদের এভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারি? আপনারা একটা মানুষ করোনা আক্রান্ত হতে পারে শুনলে তাকে বাসা থেকে বের করে দেন। এলাকায় কোন করোনা হাসপাতাল বানাতে দিতে চান না। কোন রোগী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে কবরের জায়গা দিতে চান না। সেই আপনারাই কিভাবে আশা করেন মৃত্যু পরোয়ানায় সাক্ষর করে এই ছেলে-মেয়েগুলো ডিউটি করতে যাবে? এরা তো বিদেশে বড় হয়নি। এরা আপনারই সন্তান। আপনি যদি এত স্বার্থপর হন তো আপনার সন্তান কিভাবে ভাল হবে বলে আশা করেন? আমার এলাকায় একটা করোনা সেন্টার বানাবো। তার জন্য একটা প্রাইভেট হাসপাতালকে রিকুইজিশন করা লাগবে। সে হাসপাতালের মালিক আবার রাজনীতি করে। সে হাসপাতাল দিবে না। স্বাস্থ্য কর্মীদের থাকার জন্য একটা হোটেল রিকুইজিশন করা দরকার, সেই হোটেলও দিবে না। এরপরে একটা স্টেডিয়ামে ব্যবস্থা হল। সেখানে একটা এসি রুম আছে সভাপতি-সেক্রেটারি বসার জন্য। সেক্রেটারি যিনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি তিনি ডাক্তারদের ব্যবহারের জন্য সেই রুমটা দিবে না! কারো পিপিই পরার অভিজ্ঞতা থাকলে বলতে পারবেন কী প্রচন্ড গরম লাগে, এই ড্রেস পরে এদেরকে আমি কিভাবে একটানা ৮ ঘন্টা থাকতে বলব? এই যে স্বাস্থ্যকর্মীরা ডিউটি করবে তাদের তো থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তারা ৭ দিন ডিউটি করবে আর ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকবে যাতে তাদের পরিবারের কেউ আক্রান্ত না হয়। তাদের খাওয়ার ব্যবস্থাটাও তো আপনারা করে দিচ্ছেন না। এরা তো আপনাদের জন্য কাজ করছে, এলাকার মানুষেরা কি পারে না চাঁদা তুলে এদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে? এটা যদি করতে না পারেন তাহলে আশা করেন কেন এরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনার চিকিৎসা করবে? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর অধিদপ্তরের বড় বড় হর্তাকর্তারা এসব কিছুর ব্যবস্থা না করেই জোর করে এদের ঠেলে দিচ্ছে ডিউটি করতে! এদের কি বিবেকে একটুও বাঁধে না? একটা দেশে কয়টা মেডিকেল কলেজ দরকার? রাস্তার মোড়ে মোড়ে প্রাইভেট হাসপাতালের কী দরকার? অন্যান্য ব্যবস্থা না করে শুধু ডাক্তার দিয়ে দেশ ভরে ফেললে হবে? স্বাধীনতার এত বছর পর এই দেশে ৬৪টা জেলা শহরে আইসিইউ ও অন্যান্য অত্যাধুনিক সুবিধাসহ ৫০০ শয্যার ৬৪টা জেলা হাসপাতাল বানিয়ে নেয়া যেত না? শুধু শহরেই উন্নতি লাগবে গ্রামের উন্নতি কে করবে? উপজেলা/ ইউনিয়ন পর্যায়ে যে সব হাসপাতালে এক্সরে, ইসিজি ব্যবস্থা নেই। যেখানে শ্বাসকষ্টের রোগী আসলে রোগীকে অক্সিজেন দেয়া যায় না, সে সব জায়গাতে আপনারা কেন ডাক্তারদের পোস্টিং দেন? শুধু রোগী রেফার করার জন্য কেন ডাক্তার নিয়োগ দেন? আগে infrastructure develop করেন তারপরে জনবল নিয়োগ দেন। সবার আগে কেন ডাক্তার পাঠান??????
২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:৪৬
রাফা বলেছেন: একটু প্যারা করে লিখলে ভালো হই'তো। অজস্র প্রশ্নের উত্তর দিবে কে ?
ধন্যবাদ,ইলুসন।
৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:০২
ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: অনেক প্রশ্ন আছে,
অনেক উত্তর থাকা উচিত ছিল!!
কিন্তু, কোথায়???
৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:২৭
সাইন বোর্ড বলেছেন: বাস্তব অনেকগুলো বিষয় তুলে ধরেছেন, কিন্তু সেগুলো সমাধান করার আসলে কেউ নাই ।
৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৩৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সব কাউয়া বকা ঘরে ডুকে গিয়েছে । বিধাতা আছে এখন আমাদের
৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:২০
রাজীব নুর বলেছেন: এতটা হতাশ হবেন না।
ভয় নেই। সব ঠিক হয়ে যাবে।
১৮ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৬০ জন মারা গেছে। ঘাবড়ানোর মতোণ কিছু হয় নাই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:৩৬
বিজন রয় বলেছেন: অনেক অনেক প্রশ্ন করলেন পোস্টে, কিন্তু কোন সদুত্তর নেই।