নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! !
আধুনিক মানুষ পৃথিবীতে এসেছে আনুমানিক প্রায় ২ লক্ষ বছর আগে তার মধ্যে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিগত ২ শত বছরে যে উন্নতি লাভ করেছে তা মানব ইতিহাসে বিরল । বর্তমান পৃথিবীর মানুষ অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশী জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে , সুখী , মোটা এবং লম্বা । এর কারন কি ? নাস্তিকেরা প্রায় উন্নয়নের সাথে জ্ঞান-বিজ্ঞানকে সাংঘর্ষিক হিসেবে উপস্থাপন করে বিশেষ আরাম পান । তারা বলে থাকেন ধর্মই উন্নয়নের গলা চেপে ধরেছে অন্যথায় মানব-জাতি অনেক আগেই ধুমায়া উন্নতি লাভ করত। ইউরোপ আমেরিকা ধর্ম থেকে সরে এসেছে বা ধর্মের প্রভাব কমিয়েছে জীবনে তাই তারা আজ ধনী আর আমরা ফকির । এই লেখায় ধর্ম এবং উন্নয়ন যে সাংঘর্ষিক বিষয় নয় এবং মানব জাতির অগ্রগতির ফ্যাক্টরগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব ।
ইতিহাস বলে মানুষ যখন বুঝতে বা চিন্তা করতে শিখল তখন প্রথমেই যে ঘরটা বানাল সেটা নিজে থাকার ঘর নয় বরং ধর্মীয় উপসানালয় । কারন বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে প্রথম চিন্তা হল আমাকে কে সৃষ্টি করল ! অবশ্য নাস্তিকেরা এক ডিগ্রি এগিয়ে তারা নিজেকে কে সৃষ্টি করল সেই দিকে না গিয়ে তাদের প্রশ্ন হল ’সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করল ? ’ । যদিও এই প্রশ্নের উওর জানা না জানার উপর স্রষ্টার অস্তিত্ব নির্ভর করে না , তারপরও এই প্রশ্নের উত্তর আমি আমার আগের লেখায় দিয়েছি ( মহাজগৎ, সৃষ্টি এবং স্রষ্টা : স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করল, নাস্তিকেরাই কি অন্ধ বিশ্বাসী নয় ! ) ।
কোন কিছুর তুলনা বা পার্থক্য তখনই করা যায় যখন জিনিষগুলো সাদৃশ্য প্রকৃতি বা ধর্ম বহন করে । উদাহারন হিসেবে বলা যায় আমরা চা বা কফির মাঝে তুলনা করতে পারি কারন দুইটা জিনিষের উদ্দেশ্য উৎফুল্ল এবং সতেজ রাখা এবং একটা-আরেকটার কপ্লিমেন্টারি , চা বা ভাতের তুলনা অর্থহীন । ধর্ম এবং বিজ্ঞান দুইটা দুই জিনিষ । ধর্ম মানুষের জীবন বিধান, আদর্শ এবং স্রষ্টাকর্তিক জীবন পরিচালনার নিয়মাবলী । ধর্ম মানুষকে বিনয়ী, মানবিক মানুষ, ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য শিক্ষা দেয় । আর বিজ্ঞান হল মহাবিশ্ব বা আমাদের বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য তার সুষ্ট , সুন্দর এবং নিয়মতান্ত্রিক গবেষণার নাম । তাই ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের এবং উন্নয়নের কোন কোন বিরোধ নেই । ধর্ম কখনোও বলে নাই তোমরা কাজ-কাম, বিজ্ঞানের গবেষণা ছেড়ে দিয়ে বেকার হয়ে ঘুরে বেরাও।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি , প্রশ্ন হল মানব সভ্যতা বিগত ২ শত বছরে এত উন্নতি কিভাবে করল ? ২ শত বছর আগে কি মানুষ আঙ্গুল চুষছিল যে কিছুই করতে পারে নাই !! নাকি নাস্তিকদের কথামত ধর্মই মূল কালপিট এর পিছনে তাই ধর্মকে দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় যাবত-জীবন ফাঁসি দেয়া উচিৎ! উওর হল না, মানব সভ্যতার উন্নয়ন শুধু বিগত ২ শত বছরে হয়নি তবে এই উন্নয়ন বিগত হাজার হাজার বছরের অল্প-অল্প উন্নয়নের সমষ্টিগত ফল। সত্যি কথা হল মানুষ বিগত গত ১০ হাজার বছর ধরেই অগ্রগতি সাধন করে চলেছে যেটা বেগবান হয়েছে গত ২ শতক বছরে । একটা খুব কমন একটা উদাহারন দেয়া যাক , আপনাকে ১ টাকা দিয়ে বলা হল বছর শেষে সেটাকে একশত দিয়ে গুন করতে হবে । তাহলে প্রথম বছরে ১*২ =২, দ্বিতীয় বছর দারায় ২*২ = ৪ এবং তৃতীয় বছর দারায় ৪*২ = ৮ । প্রথম বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ১০০ শতাংশ , দ্বিতীয় বছর শেষে ৩০০ এবং সবচেয়ে বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে তৃতীয় বছরে প্রায় ৭০০ শতাংশ । এর কারন কি ? এটা খুব সাধারণ গণিত , আগের বছর গুলর সমষ্টিগত বৃদ্ধিই এর মূল কারন ।
খৃষ্টপূর্ব ১০ হাজার বছর আগে পৃথিবীর জনসংখ্যা কখনই ১ বা ১.৫ কোটির বেশী ছাড়ায় নাই, আমাদের ঢাকা শহরেই বর্তমানে ২ কোটির মত লোক বসবাস করে। আর তখন মাত্র অল্প কিছু মানুষ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল , যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় একজনের জ্ঞান আরেকজন ব্যাবহার করতে পারত নাহ । মানুষ লিখতে শিখেছে খৃষ্টপূর্ব প্রায় ৩ হাজার বছর আগে তাই কোন প্রযুক্তি আবিষ্কার করলেও পরের জেনারেশনকে সেটা আবার নতুন করে আবিষ্কার করতে হত । চিন্তা করুন প্রতি শতাব্দীতেই যদি আপেক্ষিক তত্ব বা নিউটনের গতি সূত্র আবিষ্কার করতে হত তাহলে কি অবস্থা হত! মানব সভ্যতার ২ লক্ষ বছরের মধ্যে মাত্র ৪ হাজার বছর আগে যোগাযোগের জন্য জিনিশপত্র বা মানুষ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য চাকা আবিস্কার করে। চিন্তা করুন বাংলাদেশ থেকে যদি ইউরোপে রওনা হন হেটে তাহলে ব্যাপারটা কি ঘটবে ! সাহারা মরুভূমি যদি পার হতে বলা হয় কত জনইবা হেটে পার হতে পারবে !!
মানুষ ১ লক্ষ ২৫ হাজার বছর আগে আগুন ব্যাবহার শিখেছে কিন্তু কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না তাতে, মাত্র ৫ হাজার বছর আগে মানুষ নিয়ন্ত্রিত উপায়ে আগুনের ব্যাবহার শিখেছে । আগের মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৩০ বছর , চিন্তা করুন একটা মানুষের যদি যুবক হতে হতেই পটল তোলার সময় হয়ে যায় তাহলে সে গবেষণা বা জ্ঞান কিভাবে করবে আর কিভাবেই বা পরবর্তী প্রজন্মে তা বিতরণ করবে ।
বর্তমান জ্ঞান বিজ্ঞান শতশত বছরের ট্রায়াল এবং ইররের মাঝে গিয়ে বর্তমান পর্যায়ে এসেছে , এটা রাতারাতি হয়নি । বর্তমান বিশ্বে ধর্মের প্রভাব কমেছে তাই গত দুই শতাব্দী মানুষ উন্নতি সাধন করেছে ব্যাপারটা এমন নয় বরং উল্টোভাবে বললে উন্নতি করার পরে ইউরোপ বা আমেরিকা ধর্ম থেকে কিছুটা সরে গেছে । মানব জাতি বিগত ২ শতক ধরে উন্নতির পিছনে রয়েছে অনেকগুলো ফ্যাক্টর যার সামান্য কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করেছি মাত্র ।
আগের পর্ব :
মহাজগৎ, সৃষ্টি এবং স্রষ্টা : স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করল, নাস্তিকেরাই কি অন্ধ বিশ্বাসী নয় !
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১৬
কাছের-মানুষ বলেছেন:
ভাই নির্বাক চাতক আমি আদম (আঃ), নুহ (আঃ) এর সময় কালের কথা বলি নাই , সেই সময়ে গবেষনার করার প্রতিবন্ধকতা কি ছিল তা আলোচনা করেছি ।
মোহাম্মাদি (সাঃ) এর সমইয়ের কথাই বলছি , এ কালেরই গড় আয়ু দেখেন উপরের গ্রাফে , বেশী না ১৯৬০ এর সময়েই ওয়াল্ড এর গড় আয়ু ছিল ৪৮ , তার আগের ডাটা গেলাম না, তার ২ শত বা ৩ শত বছর আগে একটু বেক করে দেখেন গড় আয়ু কত ছিল মেলে কিনা । আমি আলোচনা করেছি হঠাত কেন ২ শত বছরে এত উন্নতি করল বিজ্ঞান তার কয়েক শত বছর আগে কি করছিল ।
"বর্তমান পৃথিবীর মানুষ অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশীজ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে , সুখী , মোটা এবং লম্বা" এই উক্তি ধর্মের সাথে মিলেনা!
আমার ধর্মের সাথে দ্বিমত নেই তবে ব্যাপারটা আপেক্ষিক , জ্ঞান বিজ্ঞান বলতে ধর্মে যেটা ইঙ্গিত করেছে আমি সেটা করি নাই । যোগাযোগ ব্যাবস্থা , প্রযুক্তি এবং আমাদের দৈনন্দিন কাজে যেই প্রয়ুক্তি ব্যাবহার করেছি সেটার কথা মিন করেছি । এই প্রযুক্তিতো আমরা এগিয়ে কি বলেন ভাই নির্বাক চাতক !
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩১
নির্বাক চাতক বলেছেন: "বর্তমান পৃথিবীর মানুষ অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশীজ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে , সুখী , মোটা এবং লম্বা" এই উক্তি ধর্মের সাথে মিলেনা! ধর্মমতে বর্তমান প্রজন্মই সবচেয়ে খাটো ও চিকন।
"আগের মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৩০ বছর" এই তথ্যটিও ভুল। আদম (আঃ), নুহ (আঃ) ইনারা ৯০০+ বছর বেচে ছিলেন। আমরা মোহাম্মাদি (সাঃ) উম্মতেরাই সবচেয়ে কম আয়ুর।