নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

‘মানুষ তার স্বপ্নের চাইতেও বড়’

কাছের-মানুষ

মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! !

কাছের-মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব বার এবং সমাপ্ত)

১২ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:৩৫


তেইশ অধ্যায়

নিউক সিটিসির কন্ট্রোল রুমে প্রবেশ করল। বেশ লম্বা কক্ষটি, ধূসর আলোর ভরে আছে চারপাশটায়। কক্ষটির ডানে এবং বামে দুধারে কুলিং মেশিন লাগানো আছে সিটিসির শক্তিশালী প্রসেসরটাকে ঠাণ্ডা রাখার জন্য। তাই দরজা দিয়ে ঢুকেই নিউক কন্ট্রোল রুমের সাথে বাহিরের তাপমাত্রার একটা তারতম্য লক্ষ্য করল, বেশ শীতল বাতাস আছড়ে পরছে নিউকের শরীরে। কন্ট্রোল রুমের সামনেই বড় একটি স্বচ্ছ কাচের মনিটর, সেখানে ডান দিক থেকে বাম দিকে অনবরত কিছু তরঙ্গ প্রবাহিত হচ্ছে সাইন ওয়েব আকারে। নিউকের বুকের ভিতর কেমন জানি ধক ধক করতে লাগল, তার মনে হতে লাগল কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।

“যেই উদ্দেশ্য এসেছ তা সফল হবে না।” গমগমে গলায় একটি শব্দ ভেসে এলো কোথায় হতে থেকে যেন।

শব্দটি শুনেই সতর্ক হয়ে উঠে নিউকের কান দুটি। নিউক শব্দের উৎস খুঁজতেই দেখতে পেল মাথার উপরে ঝুলে থাকা স্পিকারের থেকে আওয়াজটা এসেছে। সেন্ট্রাল কম্পিউটার সিটিসি ভোকাল কর্ডের মাধ্যমে কথা বার্তা চালাতে পারে আগেই জেনেছিল নিউক।

“তুমি এতটা নিশ্চিন্ত হচ্ছ কিভাবে সিটিসি?” সামনের মনিটরে তাকিয়ে বলল নিউক।

তাচ্ছিল্যের হাসি ভেসে এলো। “যদি বাচতে তাহলে এখান থেকে ফিরে যাও।” সিটিসি যখন কথা বলছিল সামনের মনিটরের প্রবাহিত তরঙ্গ গুলো পরিবর্তিত হতে থাকে।

“আমি যে জন্য এসেছি সেটা করেই যাব। তোমার কাছে যেই গোপন প্রজেক্টের নথি পত্র আছে সেগুলো জানতে হবে, তাছাড়া এই গ্রহের সমস্ত মিডিয়া তোমার নিয়ন্ত্রণে। তোমাকে পরাজিত করে পৃথিবীর সমস্ত মানুষের কাছে আসল সত্যটা তুলে ধরতে হবে।”

“আমি সিটিসি, সমস্ত তথ্য আমি নিজের কাছে রেখেছি, তোমাকে যদি কোন তথ্য নিতে হয় তাহলে আমার ডিফেন্স সিস্টেম ধ্বংস করে ফেলতে হবে, আমার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিনাশ করেই কেবল আমার তথ্যে আঘাত হানতে পারবে, কিন্তু তুমি হয়ত জানো না আমি অপরাজেয়, পৃথিবীর কোন মানুষই আমাকে ধ্বংস করতে পারবে না যদি আমি নিজে না চাই। যে কোন মানুষের মস্তিষ্কেই আমি প্রবেশ করে তার পরবর্তী চাল কি হবে সেটা ধরে ফেলতে পারি। আমি অন্তর্যামী, ঈশ্বরে ক্ষমতা অর্জন করেছি।” গম্ভীর গলায় বলে সিটিসি। তার কণ্ঠে অহংকার ঝরে পরে।

“তুমি ঈশ্বর নাকি ইবলিশ সেটা একটু পরই বুঝা যাবে সিটিসি গর্জন করে বলে নিউক।”

একটু থেমে আবার সাহস সঞ্চয় করে বলে নিউক “তোমার অহমিকা আমি ভেঙ্গে চুরমার করবই।”

“তোমাকে সুযোগ দিয়েছিলাম, তুমি শুনলে না, এখন তোমাকে মরতে হবে। আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে মানব কল্যাণের জন্য, এর মাঝে কেউ বাধা হয়ে আসলে তাকে করুন পরিণতি ভোগ করতে হবে, তোমার আগেও অনেকেই এখানে প্রবেশ করেছিল কিন্তু কেউ ফিরে যেত পারেনি।”

“সবার সাথে আমার তুলনা দিও না। এই পৃথিবীতে পুরুষের কোন অস্তিত্ব নেই, এক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে, প্রকৃতি আমাকে সাহায্য করবে।” সিটিসিকে দৃঢ় ভাবে বলে নিউক।

“বেশ দেখা যাক কে জয়ী হয় নির্বোধ।”

নিউক দূত আগাতে নেয় সিটিসির দিকে হঠাৎ মাথায় একটি সূক্ষ্ম ব্যথা অনুভব করে, দুহাত দিয়ে মাথায় দিয়ে কুঁজো হয়ে বসে পরে নিউক, মনে হয় কে জানি চিকন একটি সূচ দিয়ে মস্তিষ্ক ভেদ করার চেষ্টা করছে, তার চিন্তা চেতনা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে, দুলতে থাকে চারপাশটা। গভীর এক শূন্যতায় হারিয়ে যেতে থাকে নিউক। নিউকের মনে হয় সে শূন্যে ভাসছে তার অতীত বর্তমানের স্মৃতিগুলো কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যেতে থাকে, শরীরের পেশীগুলো কেমন জানি আসার হয়ে আসে।

প্রায় পাচ মিনিট জায়গা থেকে নরতে পারে না নিউক। মনে হয় সে আর চেনা জগতে নেই, গভীর একটি বিষাদ ঘিরে ধরে তাকে, সে কে এবং কেন এখানে ঠিক মনে করতে পারে না, কেমন জানি হতাশ লাগে। আরো কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ প্লেরার কোমল চেহারাটা ভেসে উঠে তার অবচেতন মনে, তার অবচেতন মন বলছে তাকে জেগে উঠতে হবে, অন্তত এই মেয়েটার জন্য হলেও জেগে উঠতে হবে।

নিউক হালকা একটি জোরে শ্বাস নেয়, আস্তে আস্তে চেতনা ফিরে আসে আবার চলে যায় তবে এটা বুঝতে পারে সিটিসি একটি তরঙ্গ তৈরি করে তাকে কিছু করার চেষ্টা করছে, তার মস্তিষ্কে ঢুকার চেষ্টা করছে সিটিসি। নিউক আরো একটি দীর্ঘ শ্বাস নেয়, তার স্নায়ু আস্তে আস্তে শীতল হতে থাকে। চেতনা ফিরে আসছে, এবার কিছুটা স্থির হওয়ার চেষ্টা করে, নিজের সমস্ত চিন্তা চেতনা একই জায়গায় ঘনীভূত করার চেষ্টা করে, অতিরিক্ত চিন্তার ফলে মস্তিষ্ক যেই তরঙ্গ সৃষ্টি করেছিল সেটাকে তার নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে কারণ সিটিসি মস্তিষ্ক থেকে নির্গত তরঙ্গের সাথে কানেক্ট হতে চাচ্ছে। নিউকের বেশ হালকা মনে হতে থাকে নিজেকে, আস্তে আস্তে পুরোপুরি চেতনা ফিরে আসে তার।

“এ হতে পারে না!” বিস্ময় নিয়ে বলে সিটিসি।

একটু থেমে আবার বলে সিটিসি “এই পৃথিবীর সমস্ত মানুষের ব্রেনের সিগনাল মেশিন লার্নিং দিয়ে ট্রেনিং আমার ইলেকট্রনিক ব্রেনে ইন্সটল করা হয়েছে। মানুষের মস্তিষ্কের থেকে নির্গত তরঙ্গের সাথে কানেক্ট করে তার পরবর্তী চিন্তাগুলোকে ধরতে পারি আমি। কিন্তু কি আশ্চর্য তোমার মস্তিষ্কের তরঙ্গ সম্পূর্ণ আলাদা, অনেক চেষ্টা করেও তোমার মস্তিষ্কের তরঙ্গে ধরতে পারিনি, তুমি মানুষ হতে পার না!!” সিটিসির কন্ঠে আতংক।

হা হা, হেসে উঠে নিউক, “তুমি ঠিকই ধরেছ আমি মানুষ নই!”

একটু থামে তারপর নাটকীয়তা করে বলে “তোমাদের বর্তমান পৃথিবীতে মানুষকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় সেই হিসেবে আমি মানুষ নই।” বলেই সিটিসির প্রতিক্রিয়া শুনার জন্য অপেক্ষা করে নিউক।

“বুঝলাম না?” বিস্ময় নিয়ে বলে সিটিসি।

“একটি নিদিষ্ট অতীত থেকে তোমরা মানুষ বলতে শুধু নারীদের বুঝ, কিন্তু আমি একজন পুরুষ, তাই তোমাদের সংজ্ঞায় আমি মানুষ নই। মহামান্য নিকোলাই মারা যাবার আগে আমাকে বলে গিয়েছিল প্রকৃতি আমাকে নির্বাচন করেছে। তোমাকে পরাস্ত করতে কেউ যদি পারে তাহলে আমিই পারব, কিন্তু সেটা কিভাবে এতদিন আমি জানতাম না, তবে এই কন্ট্রোল রুমে ঢুকেই আমার মনে হল আমি আমার চিন্তাকে একটি কেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি হয়তবা তুমি আমার মস্তিষ্কের ভার নিতে পারবে না হয়ত কারণ তোমাদের সমাজে সংজ্ঞায় আমি মানুষ নই।” বলে নিউক।

থেমে যোগ করে বলে “তোমাকে ট্রেনিং করা হয়েছে সব নারীদের মস্তিষ্কের ম্যাপ দিয়ে যেহেতু এই জগতে পুরুষ নেই, কিন্তু নারী এবং পুরুষের মস্তিষ্কের গঠনে সামান্য একটু তারতম্য আছে, সাধারণত পুরুষের মস্তিষ্কের আকার একটু বড় হয়, তাদের নিউরনের কানেকশন কিছুটা ভিন্ন তাছাড়া মস্তিষ্কের সেল সংখ্যা নারীদের তুলনায় বেশী, তাই আমার মস্তিষ্কের তরঙ্গ কানেক্ট হওয়া সহজ নয়।”

জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে আবার বলে নিউক “আশ্চর্য এই ব্যাপারটা আমার এত দিন মনে হয়নি। প্রকৃতি আমাকে নির্বাচন করেছে এটা এই কন্ট্রোল রুমে ঢুকার আগে ধারণা করতাম তবে আমার ধারণা এখন বিশ্বাসে পরিণত হয়েছে।”

একটু নীরবতা নেমে আসে সিটিসির কক্ষে। নিউক এগিয়ে আসে সিটিসির মনিটরের সামনে, তারপর নিজের পকেট হাতড়ে লিডানের দেয়া ইনজেকশনটি পুষ করার প্রস্তুতি নেয় সিটিসির মূল পোর্টে।

ব্যাপারটা আচ করতে পেরে সিটিসি। আতঙ্ক জোরানো গলায় বলে “এটা তুমি করতে পার না।”

“এটা ছাড়া আমার আর কোন উপায় নেই সিটিসি। মানব জাতির বৃহত্তর কল্যাণের জন্য তোমাকে যে ধ্বংস হতেই হবে।”

নিউক আর দেরি না করে ইনজেকশনটি পুষ করে, ভাইরাস মূহুর্তেই তার কাজ শুরু করে দেয়, হঠাৎ অস্বাভাবিক একটি ধ্বনি ভেসে আসে সিটিসির স্পিকার থেকে। চিনচিনে গলায় কান্নার আওয়াজের মত অনেকটা। শব্দটি এই কক্ষ ধ্বনিত হয়ে বার বার ফিরে আসে নিউকের কানে। বেশ ঘাবড়ে যায় নিউক, সিটিসি একজন কম্পিউটার তার কাছ থেকে মানুষের মত বেদনার ধ্বনি সে আশা করেনি।

চব্বিশ অধ্যায়

সিটিসির স্পিকারের ভিতর থেকে বিপ বিপ কিছু অস্পষ্ট শব্দ ধ্বনিত হল। তারপর সেই ধ্বনিগুলো আরো বেড়ে হঠাৎ থেমে গিয়ে জোরে শব্দ হল, স্পিকারটি চর চর করে শব্দ করে বিস্ফোরিত হল। তীব্র আলোর ঝলকানি দিয়ে উপর থেকে স্পিকারটি ভেঙ্গে নিচে পরে গেল। ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিটের চর চর শব্দ কানে আসে নিউকের। পুরো কক্ষটি কেপে উঠে, নিউক নিজের ভারসাম্য ঠিক রাখতে হাত দিয়ে সিটিসির মনিটরটি শক্ত করে ধরে। সামনের স্বচ্ছ মনিটরে যেই তরঙ্গগুলো ঢেউয়ের মত যাচ্ছিল সেগুলো অনবরত একবার ডান দিক থেকে বামে আরেকবার বাম দিক থেমে ডানে যাচ্ছে। লিডান হয়ত এতক্ষণে সম্ভবত সিটিসির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। সিটিসি এখন নিজের কৃত্রিম বুদ্ধিমতী এবং সেলফ ডিফেন্স হারিয়ে একটি সাধারণ কম্পিউটার এর মত পরিণত হয়ে যাবার কথা।

হঠাৎ কন্ট্রোল রুমের ধাতব দরজায় প্রচণ্ড শব্দে কেপে উঠে, ধ্বংসাত্মক রশ্মি অনবরত আঘাতে বেকে যায় দরজাটি। ধাতব দরজাটি ছিদ্র হয়ে তার ভিতর থেকে সাধা আলোর বিচ্ছুরণ বের হতে থাকে, একটু পরে কে যেন লাথি মেরে দরজাটি ভেঙ্গে ফেলে। আট দশজন ঢুকে পরে সিটিসির কন্ট্রোল রুমে, অস্ত্র থেকে ছোড়া ধ্বংসাত্মক আলোর বিচ্ছুরণে চারদিকটা ধোয়ায় ঢেকে যায়, সামনে কিছু দেখতে পারে না নিউক। কয়েকজন লাল নীল বিচ্ছুরণ ছুড়তে ছুড়তে সামনে আসতে থাকে, নিউক একেবেকে নিজেকে বাঁচিয়ে হাতের বামের মোটা ধাতব খাম্বার পিছনে আড়াল করে নিজেকে। ধ্বংসাত্মক রশ্মি তার পিছনের দেয়ালের তারগুলোতে লেগে আগুন লেগে যায়, তারের পোড়া গন্ধ ভেসে আসে নাকে।

ধোয়াগুলো কমে এলে দেখা যায় সামনেই জেনারেল গ্রাটিয়া এক হাতের ধ্বংসাত্মক অস্ত্র নিয়ে দাড়িয়ে আছে, আরেক হাত দিয়ে ধরে আছে প্লেরার ছোট করে কাটা বাদামী চুল। পিছনে দাঁড়িয়ে আছে আট দশজন রোবট, সবার হাতেই ভারী অস্ত্র।

“বেরিয়ে আয় হারামজাদা, তোমাদের দুজনকে আগেই মেরে ফেলা উচিৎ ছিল।” মুখ শক্ত করে বলে জেনারেল গ্রাটিয়া। তার কণ্ঠে প্রচণ্ড ক্রোধ।

নিউক হাত দুটো উঁচু করে ধাতব খাম্বা থেকে বেরিয়ে আসে। “আপনি অনেক দেরি করে ফেলেছেন জেনারেল গ্রাটিয়া। সিটিসির সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন সিটিসি একটি সাধারণ কম্পিউটার বৈ অন্যকিছু নয়।”

“কোন দেরি হয়নি, তোমাদের দুজনকে মেরে আবার নতুন করে শুরু করব। এবারই প্রথম এরকম ঝামেলা আমাকে দেখতে হয়নি এর আগেও এরকম ঝামেলায় পোহাতে হয়েছিল, তাই আমি সব ঠিক করে ফেলব।”

প্লেরার দুহাত পিছনে বাধা, নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার বৃথা চেষ্টা করে শরীর ঝাঁকি দিয়ে বলল “এবার আর সব কিছু ঠিক করা সম্ভব নয় জেনারেল গ্রাটিয়া।”

“কেন সম্ভব নয়? দরকার পরে তোমাদের দুজনকে মেরে ফেলব।” চোয়াল শক্ত করে বলে জেনারেল গ্রাটিয়া।

“হা হা আমাদের মারলেও কি শেষ রক্ষা হবে? সিটিসি এখন আট দশটা সাধারণ কম্পিউটারের মতই একটি কম্পিউটার। আমাদের লোক লিডান ইতিমধ্যেই সিটিসির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে, ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন?” বলল প্লেরা।

জেনারেল গ্রাটিয়া হাতের অস্ত্রের উল্টো দিক দিয়ে প্লেরার মুখে জোরে আঘাত করে ফেলে দেয়, মুখ থেকে রক্ত বের হয়ে আসে প্লেরার।

হাতের মুঠি শক্ত হয়ে আসে নিউকের। এক দৃষ্টিতে জেনারেল গ্রাটিয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ শক্ত করে বলে “ওকে ছেড়ে দিন জেনারেল গ্রাটিয়া। আপনারা যা করেছেন তার জন্য অনুতপ্ত হওয়া উচিৎ আপনার।”

“অনুতপ্ত? আমি যা কিছু করেছি সব মানব জাতির জন্য করেছি, আমাদের মহান শাসক উথারের জন্য করেছি। দিন রাত কাজ করে গিয়েছি, কোন কিছুর প্রতিদানের আশা ছাড়াই। আমাদের বিজ্ঞানীরা জীবনের সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে কাজ করেছে, একটি সুন্দর আগামীর জন্য!”

“এটাকে আপনি সুন্দর আগামী বলছেন? আপনি কত কত শিশুকে হত্যা করেছেন এক্সপেরিমেন্ট করে, বন্ধী করে রেখেছেন অনেককে। অনেক শিশুকে আপনারা কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে আটকে রেখেছে পরিস্থিতি সামাল দিতে, একে আপনি মানব কল্যাণ বলছেন? কেন জানতে পারি?” জিজ্ঞেস করে নিউক।

“আমাদের এই সমাজে কোন পুরুষ নেই প্রায় দু হাজার বছর হয়ে এলো। তবে মানুষের ডিএনএ নারী পুরুষের যেই আবেগ তা সংরক্ষণ করে রেখেছে, সেটাকে পুরপুরি আমরা নিয়ন্ত্রণ নিতে পারিনি। প্রকৃতি থেকে পুরুষ বিলুপ্তি সাথে সাথে নারীদের মাঝে এক ধরণের শূন্যতা তৈরি হয়, নিজেকে একাকী ভাবে। আমরা এর পার্মানেন্ট সল্যুশন নিয়ে কাজ করছি। আমরা সাধারণ হিউম্যান থেকে নতুন এক ধরনের এপসিলন হিউম্যান তৈরি করব।”

একটু থামে জেনারেল গ্রাটিয়া তারপর বলতে শুরু করে “আমাদের সৃষ্টি এপসিলন হিউম্যান একই সাথে নারী এবং পুরুষ দুই ধরণের সত্তা বহন করবে। আমাদের এপসিলন হিউম্যান কখনো একাকী অনুভব করবে না, এরা নিজেদের মাঝে আনন্দে সময় ব্যায় করতে পারবে।” আমরা হিউম্যান ইভুলেশন ঘটাচ্ছি প্রকৃতিতে।

তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে নিউক। “ইভুলেশন প্রকৃতি ঘটায়, একটি ন্যাচারাল প্রসেসের মাধ্যমে, প্রকৃতি তার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে মাইক্রো লেভেলের ইভুলেশন ঘটিয়ে চলে, আর আপনারা যেটা করতে চাইছেন সেটা আরোপিত ইভুলেশন, প্রকৃতি এটা কেন পছন্দ করবে?”

যোগ করে বলে “প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে যেটা নয় সেটা প্রকৃতি হতে দিতে পারে না! আপনারা এত এত মানুষ মেরেছেন, এই পৃথিবীর গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছেন, মিডিয়াকে জিম্মি করে মানুষকে স্বাধীন চিন্তাভাবনা কেড়ে নিয়েছেন, আর বলছেন মানব কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন।” চোয়াল শক্ত করে বলে নিউক।

জেনারেল গ্রাটিয়ার মুখ শক্ত করে উপরে তার অস্ত্র থেকে রশ্মি ছুড়ে বলে “বড় কিছু করতে হলে ছোট কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হয় মূর্খ পুরুষ। তোমরা কেউ বাচতে পারবে না।”

“হুম পুরো মানব জাতির সামনে যখন আপনাদের এই অন্যায় গুলো প্রকাশ পাবে, শিশু হত্যা, গোপন এক্সপেরিমেন্ট এগুলো যখন একযোগে সব প্রকাশ পাবে, সামাল দিতে পারবেন?” বলেই প্লেরা জেনারেল গ্রাটিয়ার মুখে থুথু ছিটিয়ে দেয়।

হঠাৎ মাথার উপর থেকে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে, উপর দিক থেকেও ইলেকট্রিকের শর্ট সার্কিটের শব্দ হয়ে মনি মুক্তর মতন আলোর বিচ্ছুরণ পরতে থাকে নিচের দিকে। প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কেপে উঠে রুমটা, কক্ষের একপাশটা দেবে যায়, রোবটগুলো ভয়ে ছোটাছুটি করে, জেনারেল গ্রাটিয়া ছিটকে পরে আছাড় খায় মেঝেতে। একটি ধাতব পদার্থ প্লেরার উপরে পরতে নেয় আর তখনই নিউক দৌড়ে এসে প্লেরাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়।

“ধন্যবাদ নিউক।”

“কেন? তোমাকে বাঁচানো আমার দায়িত্ব প্লেরা।” ঠোট জোরা প্রসস্থ করে বলে নিউক।

“আমাকে বাঁচানোর জন্য নয় নিউক। সিটিসিকে পরাস্থ করে তুমি বেচে আছ এর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।” চোখ ঝাপসা হয়ে আসে প্লেরার।

“ধন্যবাদ দেবার অনেক সময় পাবে প্লেরা, এখন কি করা যায়? কি হচ্ছে এগুলো?” জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে বলে নিউক।

“লিডান সম্ভবত সিটিসির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। আমাদের বিদ্রোহী চলে এসেছে উপরে, গোলাগুলি হচ্ছে প্রচুর। এখন আমাদের বের হয়ে যেতে হবে এখান থেকে শীঘ্রই।”

নিউক নিচে পরে থাকা একটা অস্ত্র নিয়ে প্লেরার হাতের বাধন রশ্মি ছুড়ে খুলে দেয়।

জেনারেল গ্রাটিয়া মেঝেতে থেকে উঠে যায়, তার হাতে থাকা গান নিয়ে তাক করে প্লেরাকে মারতে নেয়, প্লেরা একেবেকে নিজেকে বাঁচিয়ে লাথি মেরে জেনারেল গ্রাটিয়ার হাত থেকে অস্ত্র ফেলে দেয়। তারপর নিউকের হাতের অস্ত্র দিয়ে রশ্মি ছুড়তে নেয়।

“ওকে মের না প্লেরা। আমার মনে হয় পুরো মানব জাতির সামনে সব সত্য বেরিয়ে আসবে কিছুক্ষণের মধ্যে, জেনারেল গ্রাটিয়াকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা যাবে।” বলে নিউক।

নিউক প্লেরাকে হাত দিয়ে হিচকে টান দিয়ে সরিয়ে নেয়, বলে “আগে চল এখান থেকে পালাই।”

বিদ্রোহীরা তখন ভিতরে ঢুকে পরেছে, চারদিকে প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছে, চারদিকে লাল নীল রশ্মির ধোয়ায় ভরে যাচ্ছে। রোবটগুলি যে যেদিকে পারে ছুটাছুটি করছে। জেনারেল গ্রাটিয়া ভাবলেশহীন ভাবে পরে থাকে মেঝেতে, উপর থেকে সিলিং ভেঙ্গে তার উপর এসে পরে, সেখানেই ভবলীলা সাঙ্গ হয় তার।

নিউক এবং প্লেরা যখন উপরে আসে তখন উপরে গিয়ে দেখে লিডান চলে এসেছে বিজ্ঞান পরিষদে। “কি খবর লিডান?” জিজ্ঞেস করে নিউক।

“আমরা সিটিসিকে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছি, সিটিসির মাধ্যমে মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণ এখন আমাদের হাতে, গোপন প্রজেক্টের সমস্ত তথ্য এখন চলে গেছে সমস্ত মানব জাতির সামনে, চারদিকে হইচই পরে গেছে, মানুষজন রাস্তায় নেমে এসেছে, যেই চাটুকার এবং তেলবাজরা এতদিন শাসক উথারের হয়ে কথা বলত তারাও আজ নিজেদের পিঠ বাচাতে জনগণের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। হিউম্যান রাইট সংস্থাগুলো এতদিন মিনমিন করত কোমরে ক্যালসিয়াম অভাবে আজ তারাও সোচ্চার হয়েছে।” বলতে বলতে লিডানের নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে।

স্টকের অক্সিজেন ফুরিয়ে গেলে ফের লম্বা দম নিয়ে বলে “তোমাদের দুজনের অবধান বলে শেষ করা যাবে না। তোমাদের দুজনকে ধন্যবাদ, তোমরা না হলে আজ আমরা সফল হতাম না।”

“আপনাকেও ধন্যবাদ লিডান। আপনি সর্বক্ষণ সাহায্য না করলে এত বড় কাজ করতে পারতাম না। আমাদের সবার সম্মিলিত কাজের ফলে আজ সফল হয়েছি।” বলল প্লেরা।


পরিশেষ

পঞ্চাশ বছর পর।

রাতের আকাশ। বারান্ধায় দাঁড়িয়ে আছে প্লেরা। হাতে ধূমায়িত কফির মগ, চুমুক দেয় আলতো করে। তিন হাজার এক তলার এই বারান্ধা থেকে বাহিরে তাকালে পুরো শহরটাই দেখা যায়। বয়সের ভারে মুখের চামড়া কুচকে আছে, কপালে ভাজ পরেছে, চুলগুলো সাধা বর্ণ ধারণ করেছে, মাথাটা পিছনে ঘুরিয়ে ফের তাকায় বাহিরে। বিভিন্ন আকৃতির ক্ষুদ্র এবং অতিকায় স্কাইজায়ানগুলো হলুদ আলো বিচ্ছুরিত করতে করতে এগিয়ে চলে সামনে। হঠাৎ দেখতে পায় উড়ন্ত একঝাক মোটর যান নিয়ে বাচ্চাদের দল উড়ে যায় তার বারান্দা ঘেঁষে, দমকা হাওয়ায় তার চেহারায় আছড়ে পরে, এক হাত দিয়ে চোখ ঢাকে।

পঞ্চাশ বছর আগের সেই স্মৃতিতে হারিয়ে যায় প্লেরা। সেই উত্তাল সময়ে বিজ্ঞান পরিষদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল লিডানকে, তার নেতৃত্বে নতুন করে ঢেলে সাজিয়েছিল বিজ্ঞান পরিষদ। এই গ্রহের সমস্ত নিতি নির্ধারণ করে থাকে বিজ্ঞান পরিষদ, মানুষ নিয়ে ভয়ঙ্কর পরীক্ষাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, মানবিক আবেগ অনুভূতিগুলো নিয়ন্ত্রণ না করে সেগুলোর প্রাকৃতিক-ভাবে বিকশিত হতে দেয়া হয়। গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করা হয় নতুন করে, মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ না করে করে স্বাধীন করা হয়। শাসক উথারকে বিচারের সম্মুখীন করা হয়, বিচারে তার আজীবন কারাদণ্ড হয়, তার সঙ্গী সাথিদেরও বিভিন্ন মেয়াদী শাস্তি দেয়া হয়। গোপন প্রজেক্ট দায়িত্বে থাকা ড. লেথরিনকে আজীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।

এই পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্রোয়োনিক এক্সপেরিমেন্টে অবস্থায় থাকা হাজার হাজার নারী পুরুষকে জাগ্রত করা হয় নিউকের সাহায্যে। আবার এই গ্রহতে নারী পুরুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছে, সাথে চলছে রোবট। সত্যিকারের আবেগ অনুভূতি নিয়ে এগিয়ে চলছে নতুন এক মানব সভ্যতা। এই পৃথিবীতে আজ আর কোন কালো ছায়া নেই, পৃথিবীতে মতের এবং ভাষার কারণে বিভাজন নেই, সমস্ত পৃথিবী একটি দেশ এবং জাতী হিসেবে এগিয়ে চলছে।

আজ নতুন এই মানব সভ্যতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে আকাশে নীল আতসবাজির উৎসব চলছে, আলোক রশ্মি বিস্ফোরিত হয়ে মনি-মুক্তোর মত ছড়ীয়ে ছিটিয়ে পরছে চারদিকে। পিছনে আলতো হাতের ছোঁয়া পেয়ে মুখ ঘুরায় প্লেরা, নিউককে দেখে তার মুখের হাসি প্রসস্থ হয়। নিউকের যেই রোগ হয়েছিল সেটা সারিয়ে তুলেছিল এই গ্রহের সমস্ত ডাক্তার মিলে। আজ নতুন এই সভ্যতার পঞ্চাশ বছর সাথে তাদের একসাথে পঞ্চাশটি বসন্ত পার করার। ছেলেমেয়েরা এসেছে রুমে কেক নিয়ে, সবাই উল্লাস করছে, সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই প্লেরার, নিউকের চওড়া বুকে মুখ-গুজে প্লেরা, তার উষ্ণতা টের পায় নিজের শরীরের, নিজের মাঝে প্রশান্তি অনুভব করে সে। (সমাপ্ত)

আগের পর্ব:
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব এক)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব দুই)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব তিন)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব চার)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব পাঁচ)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব ছয়)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব সাত)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব আট)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব নয়)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব দশ)
ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: নিউক (পর্ব এগার)

বি,দ্র সবাইকে ধন্যবাদ এতদিন সাথে থাকার জন্য।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৩২

কল্পদ্রুম বলেছেন: আবারো মন্তব্য করে প্রথম স্থান অধিকার করলাম।যে কোন দীর্ঘ গল্প বা উপন্যাস পড়ার পর চরিত্রগুলোর জন্য একরকম মায়া অনুভব করি।এই সিরিজের চরিত্রগুলোর জন্যেও মায়া জন্মে গেছে।কিশোর সাহিত্য নিয়ে অনেকে লিখতে চান না।আপনি লিখবেন আশা করি।ব্লগে সব বড় এবং বুড়োরা থাকে।ব্লগের বাইরে কিভাবে কিশোরদের কাছে এ লেখাগুলো পৌছানো যায় সেটাও ভাববেন আশা করি।
এখন যেহেতু সিরিজ শেষ।একটি বিশেষ বক্তব্য।ফান হিসেবেই বলছি।এই গ্রুপে সম্ভবত কোন শক্তিমান ফেমিনিস্ট নেই।থাকলেও মন্তব্য করেন না।না হলে পুরুষদের অভাবে নারীদের যে হাহাকারের কথা লিখেছেন।আপনাকে এক হাত দেখে নেওয়ার কথা। :)

১২ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২২

কাছের-মানুষ বলেছেন: প্রথম থেকেই আপনাকে পেয়ে আসছি এই সিরিজে। প্রায় অধিকাংশ পোষ্টেই প্রথম এবং এই শেষ পর্বে তার
ব্যতিক্রম নয়। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।

অদ্রিশ বর্মণের একটি বইতে দেখেছিলাম শুরুতে লেখাছিল ভুতের গল্প যেমন ভুতদের জন্য নয় ঠিক তেমনি সায়েন্স ফিকশনও শুধু সায়েন্স এর লোকদের জন্য নয়। তাই উপন্যাসটি শুরুতে আমার টার্গেট ছিল এটা যেন কিশোর থেকে শুরু সব বয়সী মানুষের পড়ার উপযোগী হয়।

কিশোর উপন্যাসে একটি সুবিধা হল এটা সব বয়সীদের ভাল লাগার কথা কারণ যারা কিশোর তাদের-তো ভাল লাগবেই এমনকি যারা পরিণত বয়সের তাদেরও ভাল লাগবে যদি সেভাবে লেখা যায় কারণ তারাও একসময় কিশোর ছিলেন, পড়ে তারাও নস্টালজিক হবে, স্মৃতি কাতর হবে। মানুষতো নষ্টা লজিক এবং স্মৃতি কাতর হতে ভালবাসে!

এখন যেহেতু সিরিজ শেষ।একটি বিশেষ বক্তব্য।ফান হিসেবেই বলছি।এই গ্রুপে সম্ভবত কোন শক্তিমান ফেমিনিস্ট নেই।থাকলেও মন্তব্য করেন না।না হলে পুরুষদের অভাবে নারীদের যে হাহাকারের কথা লিখেছেন।আপনাকে এক হাত দেখে নেওয়ার কথা।

হা হা, আমাকে-তো ভয় পাইয়ে দিলেন সত্যি সত্যিই। কোন ফেমিনিষ্ট আসলে আমাকে দৌড়ায়া পালাতে হবে।

২| ১২ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:০৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভীষণ ভালো লাগলো লেখা ।

১২ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে প্রথম থেকে সাথে থাকার জন্য।
শেষেও পেয়েছি আপনাকে, ভাল লাগল।

৩| ১২ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: নিউকের ডায়লগ ভালো লাগে। সে বলে তুমি ঈশ্বর নাকি ইবলিশ সেটা একটু পরই বুঝা যাবে।

নিকোলাই মারা যাবে ভাবিনি। তার মৃত্যু আমাকে কষ্ট দিয়েছে। গ্রাটিয়া মরলে আমার খারাপ লাগতো না।

পরিশেষ এ যা বললেন, তাতে আমি মুগ্ধ!

চমৎকার উপন্যাস। সহজ সরল ভাষায় লিখেছেন। ঘটনা ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়েছে। কখনও আনন্দ পেয়েছি, কখনও ব্যথিত হয়েছি। উপন্যাসের প্রথম থেকে সাথে থাকতে পেরে ভালো লেগেছে।

আপনার জন্য শুভ কামনা।

১২ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: আমি চেষ্টা করেছি। আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল।

আমার প্রতিটি চরিত্রের জন্যই মায়া লাগে। কোন খারাপ চরিত্রকেও মারতে মন চায় না! কোথায় যেন পড়েছিলাম স্রষ্টা তার নিজের বানানো নিয়মের জালে বন্ধী! লেখক যদি গল্পের স্রষ্টা হয় তাহলে তারও চরিত্রগুলো কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলতে হয় না চাইলেও, মারতেও হয় না চাইলেও!!

প্রথম থেকে আপনাকে পেয়েছি এই উপন্যাসে। ধন্যবাদ রইল।

৪| ১২ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ!
এক দারুন বিজয়
মানবতা, মনুষ্যত্বের, গণতন্ত্রের প্রকৃতির

আহা, আমরা যদি এমন একদল পেতাম, প্লেরা, লিডান, নিউকের মতো ;)

দারুন সিরিজের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
অবশেষে মোড়কাবৃত করে ফেলুন নিউককে :)

+++

১২ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২৬

কাছের-মানুষ বলেছেন: হ্যাঁ মানবতার জয় হোক, মানুষগুলো মানবিক হোক।

আমরাও যদি পেতাম প্লেরা, নিউক এবং লিডানেরমত, হয়ত মন্দ হত না! হয়তবা আছেও এমন অগণিত মানুষ কিন্তু হয়ত সামনে আসতে পারছে না!!

আপনার মন্তব্যে সবসময় অনুপ্রাণিত হয়েছি।

আমার ইচ্ছা আছে এটাকে মোড়কাবৃত করার! এছাড়াও ব্লগে অনেকগুলো সায়েন্স ফিকশন গল্প রয়েছে আমার, সেখান থেকে বাছাইকৃত দশটি গল্প মোড়কাবৃত করব ভবিষ্যতে কোন না কোন সময় ইনশাল্লাহ! লেখতে থাকি আপাতত জমতে থাকুক!

৫| ১৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:০৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




ভাই, মানবতার জয় হোক কিন্তু এই মানবতার জয় করতে গিয়ে আমাদের কি পরিমান জীবনের মায়া ত্যাগ করতে হয় তা কি আমরা আপাত দৃষ্টিতে কখনো ভেবে দেখেছি? আপনার গল্পে কিছুদিন সময় পার হলো। ব্লগে ভালো গল্প পড়তে পারলে আনন্দ পাই, মনে হয় এই গল্পের সাথে আমার নিজের কোথাও না কোথাও যোগসূত্র আছে।

শুভেচ্ছা নিবেন।

১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:১৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: বাস্তবতা অনেক কঠিন। আমরা সবাই চাই মানবতার জয় হোক, মনের সুপ্ত বাসনা গল্পে প্রতিফলনের একটি সুযোগ থাকে।

এই উপন্যাসটি লেখতে ৩-৪ মাস লেগেছে, তাঁরপর ব্লগে দিলাম। সময় নিয়ে কোন গল্প লিখে পরে দিব, খুব শীঘ্রই নয়। তবে অন্য ক্যাটাগরির লেখা দিব মাঝে মাঝে হয়ত আর আপনাদের সাথে ব্লগে আছি মন্তব্যে।

৬| ২৬ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৪৪

করুণাধারা বলেছেন: চমৎকার পরিসমাপ্তি! পুরো সিরিজ জুড়েই যে টানটান উত্তেজনা ছিল তা শেষ পর্যন্ত বজায় রেখেছেন। বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখা খুব কঠিন, তাই এ বিষয়ে লেখকের বড় অভাব। সেদিক দিয়ে দেখলে আপনার মৌলিক এ রচনা খুবই ভালো হয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন লেখা লিখবেন আশাকরি।

তবে কাহিনীতে বলা কিছু বিষয়ে আমি দ্বিমত পোষন করছি। যেমন এ আই গবেষণা এখন যে গতিতে চলছে, তাতে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন অনেক মারণ রোগের ঔষধ তৈরি করা হবে, কৃত্রিম অঙ্গ তৈরি করা যাবে, ফলে মানুষের জীবনকাল অনেক বেড়ে যাবে। সেটা হবে আগামী একশ, বড়জোর দু'শ বছরের মধ্যে। তাছাড়া এজিং প্রসেস এতটাই ধীর হবে যে মানুষের বয়স বাড়বে না। তাই ছয় হাজার বছর পরের প্লেরার চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ায় খটকা লাগলো। তাছাড়া দুই তিন হাজার তালা বাড়ি বানানো সম্ভব হলেও এত মানুষের বসবাসের জন্য যে রিসোর্স দরকার এতকাল পরের পৃথিবীতে তা থাকবে না। এখন থেকেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে শুণ্যে ভাসমান বাড়ি বানাবার, অথবা অন্যত্র আবাস গড়ার। তাই তিন হাজার তালা বাড়ি বাস্তব সম্মত মনে হয়নি।

এটা শুধু পাঠক হিসেবে আমার মত জানালাম। কিন্তু সব মিলিয়ে আপনার কল্প বিজ্ঞান কাহিনী উপভোগ্য হয়েছে। +++++শুভেচ্ছা রইল।

২৬ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:৪৬

কাছের-মানুষ বলেছেন: চমৎকার। আপনার মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগল অনেক।

কয়েক বছর আগে আমি একটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী উপন্যাস লেখায় হাত দিয়েছিলাম, আমার মনে আছে তখন ছয়/ সাতটি পর্ব লিখে নিজেই খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম। তারপর ভাবলাম আগে কিছু কল্পকাহিনী গল্প লেখা শুরু করি, পরে উপন্যাস লেখব। সেই পরিকল্পনা মাফিক আগালাম এবং করোনায় সময়টাকে কাজে লাগিয়ে এই উপন্যাসটা লিখলাম।

আগামী একশত বছরে বায়োটেকনোলজি দিয়ে হয়ত মানুষ কৃত্রিম কিডনি, হাত, পা বানাবে যাতে দুর্ঘটনায় এগুলো অকেজো হলে যেন অপারেশনের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা যায়, এগুলো মানুষের জীবনকে আরাম দায়ক করবে তবে সত্য কথা হল এখনো মানুষের আয়ু বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা নেই! এটা এখনো মোটামুটি দোয়াছোয়ার বাইরে!

মানুষ যুদ্ধে যে টাকা ব্যয় করছে সেই হিসেবে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করছে না। আমার বিশ্বাস এক শতাব্দীর মধ্যে মানুষ তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধে জরাবে, আর এখন মানুষের কাছে এমন পারমানবিক বোমা আছে যেগুলো ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের বোমা থেকেও হাজারগুণ বেশী শক্তিশালী। যেহেতু বোমা মজুত আছে, এর ব্যাবহারও হবে! আর এক একটি বিশ্বযুদ্ধ মানব জাতিকে কম পক্ষে পাঁচশত বছর পিছিয়ে দিবে, রোগ জীবানু বয়ে আনবে এগুলো। তাছাড়া করোনার মত শক্তিশালী ভাইরাসতো আছেই। তবে এ, আই তে মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে জোর দিবে, একজাতি আরেক জাতির উপর আধিপত্য বিস্তারের জন্য। যেহেতু গল্পে বুঝিয়েছি ৭ টি বিশ্বযুদ্ধে করেছে মানুষ তাই স্বাস্থ্য খাতকে ততটা উন্নত বিচার করিনি। ভবিষত আমরা হয়ত ভাবছি আরো উন্নত গেজেট আসবে, জীবন যাত্রা সহজ হবে, সত্যকার অর্থে তাঁর উল্টোটা হবার সম্ববনাই বেশী!


আমি চিন্তা করেছি ভবিষ্যতে এ,আই আরো উন্নত হবে, যেগুলো হয়ত বিল্ডিং বানানোতে কাজে দিবে। জলবায়ুর পরিবর্তনে যদি মানুষের ভূমির পরমান কমে আসে তাহলে আমার বিশ্বাস মানুষ আকাশ ছোঁয়া বিল্ডিং বানাবে কম জায়গায় বেশী মানুষ থাকার জন্য! তবে আসলে সত্যকারের ভবিষ্যতের পৃথিবী কোন দিকে যায় সেটা কল্পনা করা কঠিন। কল্পকাহিনী বিভিন্ন থিওরি এবং বিজ্ঞান মিশিয়ে লেখা হয়, সেগুলোতে সম্পূর্ণ বাস্তব বিবর্জিত বিষয়ও আনা হয়! যেমন আইজ্যাক অসিমোভ তাঁর বিখ্যাত ফাউন্ডেশন সিরিজে দেখিয়েছেন মানুষ ভবিষতে গ্যালাক্সির বিভিন্ন গ্রহে বসবাস করে, সেখানে বিশাল সাম্রাজ্য তাদের। আমার কাছে এগুলো পুরোটাই ফ্যান্টাসি মনে হয় অথচ এগুলো কল্পকাহিনী হিসেবে লিখেছেন তিনি।

বিজ্ঞান কল্প কাহিনী বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে লিখা হয়, আপনার কমেন্টে যেই সম্বাবনার কথা বলেছেন সেগুলো মাথায় রেখেও ভবিষ্যতে লিখতে পারি নতুন কোন গল্প। আবার সময় নিয়ে নতুন কোন লেখায় হাত দিব!

আপনাকে প্রথম থেকে পেয়েছি ভাল লাগল। আপনার মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা রইল, অনুপ্রাণিত হলাম।

৭| ০৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:২১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার গল্পের সবগুলো পর্ব পড়লাম। প্রথমেই আমার কিছু অবজার্ভেশান।

প্রতিটা পর্বের শুরুতে আগের পর্বের আর শেষে পরের পর্বের (প্রথম পর্বে পরের পর্বের, আর শেষের পর্বে আগের পর্বের লিঙ্ক) লিঙ্ক দিয়ে দিবেন। তাহলে পরবর্তীতে কোন পাঠককে বার বার হোচট খেতে হবে না। যদিও পরোক্ষভাবে আপনি সেটা করেছেন, তবে আমার কাছে অর্গানাইজড মনে হয়নি, তাই এতো কথা। মনে রাখবেন, ভবিষ্যতে যারা আপনার এই গল্প পড়বেন, তারা সবাই মন্তব্যগুলো নাও পড়তে পারেন।

আপনার লেখার বানানে বেশ, বেশ সমস্যা আছে। মনে রাখতে হবে......বানানের কারনে একটা চমৎকার লেখাও অনেক সময়ে তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে!

“আনা আপনার কাছ আমরা এগুলো আশা করিনি। আপনি যে এতটা বিশ্বাসঘাতকতা করবে সেটা বুঝতে পারিনি, আপনাকে একজন নিতিবান এবং সৎ মানুষ বলে ভাবতাম।” বলে নিউক। এখানে একটা কথা বলা জরুরী। বিশ্বাসঘাতক ইজ বিশ্বাসঘাতক! এখানে কিন্তু এতটা জাতীয় কোন স্কেল নাই। ডায়ালগটা ওইরকমের একটা পরিস্থিতিতে বাংলা সিনেমার মতো হয়ে গিয়েছে।

তাছাড়া, সিটিসি'র কক্ষে ঢোকার আগে নিউক আর প্লেরার বিতর্কও বাংলা সিনেমার মতোনই একটা ব্যাপার হয়েছে। এ'ধরনের হাই প্রোফাইল অপারেশানে প্রতিটা সেকেন্ড মুল্যবান। প্রতিটা বিষয় আগে থেকেই ছক করা থাকে। সেখানে কে ঢুকবে, এটা কিন্তু কোন তাৎক্ষনিক বিষয় না। নিউকের ঢোকার পক্ষের যুক্তি ঠিক আছে, তবে সেটা আগেই ঠিক থাকা উচিত ছিল, অন দ্য স্পট হওয়াতে ঝুলে গিয়েছে।

আরো অনেক ব্যাপার আছে। ডায়ালগ নিয়ে আপনাকে আরো অনেক কাজ করতে হবে। বিস্তারিত বলতে গেলে অনেক কিছু টাইপ করতে হবে। আমার জন্য সেটা বেশ কষ্টকর! তবে, এমন একটা বড় গল্প লেখা চাট্টিখানি কথা না। আপনি সেই সাহস দেখিয়েছেন এবং পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখতে পেরেছেন......হ্যাটস অফ!!!

আপনার কাছ থেকে এমন লেখা আরো আশা করতেই পারি। আমার মন্তব্যের কারনে যদি কোনধরনের কষ্ট পান.......আগেই স্যরি বলে রাখছি। :)

০৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:০২

কাছের-মানুষ বলেছেন: প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সবগুলো পর্ব পড়েছেন জেনে।

প্রতিটা পর্বের শুরুতে আগের পর্বের আর শেষে পরের পর্বের (প্রথম পর্বে পরের পর্বের, আর শেষের পর্বে আগের পর্বের লিঙ্ক) লিঙ্ক দিয়ে দিবেন। তাহলে পরবর্তীতে কোন পাঠককে বার বার হোচট খেতে হবে না। যদিও পরোক্ষভাবে আপনি সেটা করেছেন, তবে আমার কাছে অর্গানাইজড মনে হয়নি, তাই এতো কথা। মনে রাখবেন, ভবিষ্যতে যারা আপনার এই গল্প পড়বেন, তারা সবাই মন্তব্যগুলো নাও পড়তে পারেন।

পরে আমি আপডেট করব। সহমত।


আপনার লেখার বানানে বেশ, বেশ সমস্যা আছে। মনে রাখতে হবে......বানানের কারনে একটা চমৎকার লেখাও অনেক সময়ে তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে!

বানান ভুল এড়ানোর চেষ্টা করেছি। এই সমস্যা থেকেই যায়।


“আনা আপনার কাছ আমরা এগুলো আশা করিনি। আপনি যে এতটা বিশ্বাসঘাতকতা করবে সেটা বুঝতে পারিনি, আপনাকে একজন নিতিবান এবং সৎ মানুষ বলে ভাবতাম।” বলে নিউক। এখানে একটা কথা বলা জরুরী। বিশ্বাসঘাতক ইজ বিশ্বাসঘাতক! এখানে কিন্তু এতটা জাতীয় কোন স্কেল নাই। ডায়ালগটা ওইরকমের একটা পরিস্থিতিতে বাংলা সিনেমার মতো হয়ে গিয়েছে।

আমার কাছে আসলে ভাল,খারাপ, বিশ্বাসঘাতকতা, সততা সব কিছুর স্কেল আছে। একজন মানুষ ভাল কিন্তু কতটা ভাল, মানুষ যদি খারাপ হয় সে কতটা খারাপ এই ব্যাপারগুলো ইন্টিলিজেন্ট সত্তা স্কেলিং করতে পারে। এই ব্যাপারগুলো বাইনারি নয়, হয়ত খারাপ নয়ত ভাল এরকম কোন শর্টকাট নয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্টের বড় দুর্বলতা হল, এরা এই স্কেলিং ভালভাবে করতে পারে না। আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্টের এ পড়ানো হয় কম্পিউটারে এই স্কেলিং কিভাবে রিপ্রেজেন্ট করা যায়, আকাশ নীল কিন্তু কতটা নীল। কম্পিউটারকে এই ব্যাপারগুলো প্রোগ্রাম করা অনেক কঠিন যেটা মানুষের ব্রেন সহজে করতে পারে! তাছাড়া কথ্য ভাষাতেতো আমি মানুষকে দেখছি এত খারাপ, এত ভাল, অতি-ভাল, অতি চালাক,বেশী চালাক ইত্যাদি বিশেষণ ব্যাবহার করতে।

তবে আপনি যদি নিজস্ব লজিক থাকে তাতে আমি তা সম্মান করি। এই ব্যাপারগুলো কে সঠিক বা ভুল এরকম নয়, যে যেভাবে
চিন্তা করে, আপনি যদি মনে করেন স্কেলিং ঠিক নয়, আপনি সেভাবে চিন্তা করতে পারেন।


তাছাড়া, সিটিসি'র কক্ষে ঢোকার আগে নিউক আর প্লেরার বিতর্কও বাংলা সিনেমার মতোনই একটা ব্যাপার হয়েছে। এ'ধরনের হাই প্রোফাইল অপারেশানে প্রতিটা সেকেন্ড মুল্যবান। প্রতিটা বিষয় আগে থেকেই ছক করা থাকে। সেখানে কে ঢুকবে, এটা কিন্তু কোন তাৎক্ষনিক বিষয় না। নিউকের ঢোকার পক্ষের যুক্তি ঠিক আছে, তবে সেটা আগেই ঠিক থাকা উচিত ছিল, অন দ্য স্পট হওয়াতে ঝুলে গিয়েছে।


ব্যাপারটা কিন্তু আগেই ঠিক করাই ছিল। প্লেরার ঢুকার কথা ছিল, কিন্তু নিউকের মনে ছিল অন্যটা সেটা সে তখন বলেনি। বড় কোন অপারেশনের আগেও টুকটাক কথা হয় এরকম আমার মনে হয়। অনেক উপন্যাসে বা হলিউড সিনেমাতেও দেখা যায় এরকম দৃশ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় নিজেদের মাঝে, চিৎকার চেচামেচি করে । নাটকীয়তার দরকার আছে! এগুলো গল্পে একটু টেনশন ক্রিয়েট করে আরকি।


আপনার কাছ থেকে এমন লেখা আরো আশা করতেই পারি। আমার মন্তব্যের কারনে যদি কোনধরনের কষ্ট পান.......আগেই স্যরি বলে রাখছি।

আমি সমালোচনা প্রুফ জ্যাকেট গায়ে দিয়েই লেখি। কোন মনে করার কোন প্রশ্নই আসে না। বরং খুশি হলাম আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন। প্রত্যেকেই একটি নিজস্ব ধ্যান ধারণা আছে, মতামত আছে। সেগুলোকে আমি মূল্যায়ন করি।

আমার এই উপন্যাসটা লেখার পড়ে দ্বিধায় ছিলাম ব্লগে দিব কিনা কারণ এতগুলো পর্ব সবাই পড়বে কিনা দ্বিধায় ছিলাম। মনোযোগী পাঠক হিসেবে আপনাদের পেয়ে সত্যিই আমার ভাল লাগছে। ধৈর্য ধরে এত-বড় গল্প পড়েছেন দেখে ভাল লাগল। আমার স্যালুট নিন। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.