নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! !
সাত।
“এই ভিডিওটা কে করেছে?” জিজ্ঞেস করলেন প্রধান শিক্ষক মজিদ স্যার।
মজিদ স্যার তার রুমের চেয়ারে বসে নিচু হয়ে ভিডিওটা দেখছে। তার চোখে মোটা লেন্সের চশমা, চশমার ফাঁক দিকে একবার সুমির দিকে তাকালেন, তাকে কিছুটা চিন্তিত দেখাচ্ছে, এই মুহূর্তে কি করা উচিৎ ঠিক বুঝতে পারছে না। ভিডিওটা সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচার হলে সবার আক্রোশ যে তার উপর পরবে সেটা বুঝতে আর বাকি নেই তার।
“এই ভিডিওটা যেই করুক সেটা আসে যায় না, বদরুল প্রায় স্কুলের ছেলেদের মারধর করে, আজ সকালে বদরুল দিপুকে প্রচন্ডভাবে মারধর করেছে, ওর বিচার করতে হবে” স্যারের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল সুমি।
মজিদ স্যার ফোনটা টেবিলের উপর রেখে বললেন “আমি জিজ্ঞেস করছি ফোনটা কার?”
“স্যার ফোনটা কার সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। কথা হচ্ছে বদরুলের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ আছে, সেটার ব্যাপারে আপনার কাছে বিচার দিতে এসেছি।“ উঁচু স্বরে বলল সুমি।
মজিদ স্যার ঝেরে গলা পরিষ্কার করে বললেন “স্কুলে ফোন আনা নিষিদ্ধ, ফোন এনেছ কোন সাহসে?” সুমির দিকে তাকিয়ে বললেন।
সুমি যেন আকাশ থেকে পরেছে, সে হাতে নাতে প্রমাণ নিয়ে এসেছে, বদরুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাকে হেনস্থা করা হচ্ছে।
সুমি কিছু বলতে যাচ্ছি প্রধান শিক্ষক তাকে থামিয়ে বললেন “তোমার বাবা মাকে আমার সাথে দেখা করতে বলবে।"
"কেন?"
"সেটা আমি তাদেরই বলব।" মুখ শক্ত করে বলল মজিদ স্যার।
সুমি হতাশ কণ্ঠে বলল “স্যার আপনি বদরুলের বিচার না করে উল্টো আমাকে শাসাচ্ছেন?“
“তোমাকে শাসাচ্ছি না। আমাদের স্কুলে ফোন আনা নিশিদ্ধ সেটা জান কিনা বল?” মজিদ স্যার তার সামনে রাখা টেবিলে থাবা মেরে বলল।
ততক্ষণে মজিদ স্যারের রুমে মোটামুটি এক ঝটলা বেধে গেছে। বেশ কয়েকজন সহশিক্ষক প্রধান শিক্ষক মজিদ স্যারের রুমে উপস্থিত হয়েছেন, কয়েকজন ঝরো হয়ে ফোনটা থেকে ভিডিও দেখছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে বদরুল আর তার সহযোগী রিপন এবং শিপন মিলে দিপুকে ধোলাই দিচ্ছে।
সুমি অন্য কিছু বলতে যাচ্ছিল, স্যার পুনরায় বললেন “আগে আমার প্রশ্নের উওর দাও?”
“ঝি, অন্যায়।“ মুখ শক্ত করে বলল সুমি।
“তাহলে স্বীকার করছ তুমি অন্যায় করেছ।“
প্রধান শিক্ষক সুমিকে তার কথার প্যাচে ফাঁসাতে চাচ্ছে, সুমি সেটা ভালই বুঝতে পারছে তবে সে কি উত্তর দিবে সেটা বুঝতে পারছে না।
“কিন্তু স্যার” আরো কিছু বলতে যাচ্ছি
স্যার তাকে থামিয়ে বললেন “তুমি কি প্রতিদিনই ফোন নিয়ে স্কুলে আস? তোমার বাবা মা কি জানে? তুমি পড়াশুনা না করে ফোন নিয়ে ঘুরে বেড়াও কেন?”
“স্যার আপনি প্রসঙ্গের বাইরে যাচ্ছেন, আমি এসেছি প্রমাণ দেখাতে যে বদরুল”
স্যার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলল “তুমি ফোন নিয়ে এসেছ আবার বড় কথা বলছ, তোমার তোমার বাবা মাকে আসতে বলবে, স্কুলের পড়ুয়াদের হাতে কেন ফোন হাতে তুলে দেন তারা? স্কুল শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য তোমাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।"
“স্যার, এই ভিডিও দেখে কি আপনার মনে হচ্ছে না আগে এর বিচার হওয়া দরকার?“
বাকী সহ শিক্ষকরা মিনমিন করে প্রধান শিক্ষকের সালে সমর্থনে মিন মিন করে বলল “এই মেয়ে বেয়াদপি করছ কেন? বেয়াদপ কোথাকার।“
“স্যার আপনারা ভিডিওটা দেখছেন, বদরুল কিভাবে দিপুকে চড় ছাপ্পর মারছে, আপনাদের উচিৎ না আমার বিচার করার আগে বদরুলের বিচার করা উচিত।“ কিছুটা ঝাঁঝ মিশিয়ে বলল সুমি।
এবার স্যার কিছুটা নমনীয় হয়ে চোরের মত বলল “বদরুলের বাবায় এই স্কুলের ডোনেশন দেন, বদরুলদের অবধানে এই স্কুল এখনও টিকে”
কথা শেষ করার আগে সুমি কথা কেড়ে নিয়ে বলে “ওদের টাকায় স্কুল চলে তাই বলেকি যাকে তাকে ধরে এভাবে হেনস্থা করবে। এই ভিডিও আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেব।“ খেঁকিয়ে বলে সুমি।
মজিদ স্যার ফোনটা তার হাতে নিয়ে ভিডিওটা মুছে দিয়ে বলে, “যাও স্কুলে যাও, তোমার ফোনটা আমার কাছে থাকল, তোমার গার্জিয়ানের কাছে দেয়া হবে।“
ততক্ষণে নবম শ্রেণির সব ছাত্রছাত্রী চলে এসেছে। মোটামুটি অনেক ছাত্রছাত্রী যারা বদরুলের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ সবাই মিন মিন করে বিচার চাচ্ছে, কেউ দাঁড়িয়ে তামসা দেখছে। বদরুল সবার পিছনে দাঁড়িয়ে ফুঁসছে। আজগর স্যার কিছুটা পরে এসে মজিদ স্যারের রুমে ঢুকল, তিনি প্রধান শিক্ষকের কানে কানে গিয়ে কি যেন বললেন। এবার স্যারকে কিছুটা নমনীয় দেখাচ্ছে, তিনি মনে হয় কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছেন।
মজিদ স্যার ইশারা দিয়ে বদরুল এবং তার সহযোগী আর দিপুকে ডাকলেন। তিনি মিনমিন করে বদরুল বাহিনীকে দিপুর কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন। ক্লাসের অনেকেই যারা বদরুলের ভয়ে তটস্থ থাকতো সবাই মুখ টিপে হাসছে। বদরুল মুখটা পটকা মাছের মত ফুলিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। বদরুল এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা ক্ষমা চাইতে নারাজ তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে উপায় না পেয়ে ক্ষমা চাইল।
ব্যাপারটা মিটমাট হয়ে যাবার পর বদরুল দ্রুত স্থান ত্যাগ করল, তবে যাবার সময় মুখ শক্ত করে টিটুন, দিপু এবং সুমিকে শাষিয়ে দাঁত কড়মড় করে বলল “এর শোধ আমি যদি না নেই আমার নাম বদরুল না।“
“তোকে ধন্যবাদ সুমি” নিজেদের ক্লাসে হেটে যাবার সময় বলল দিপু
“ধন্যবাদ কেন?” দিপুর দিকে তাকিয়ে বলল সুমি।
“এমনিই” মাথা নিচু করে বলল দিপু।
পিছন থেকে কেউ একজন সুমির নাম ধরে ডাকল, “তারা তিনজনই থেমে পিছনে তাকিয়ে দেখল আজগর স্যার। স্যার কাছে এসে সুমির ফোনটা দিয়ে বলল এই যে নে তোর ফোন সুমি। তোমার সাহসের প্রশংসা করতে হয়, আমি অভিভূত।“
“স্যার আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনি না থাকলে হয়ত বদরুলের বিচার হত না।“
আজগর স্যার হাত দিয়ে মশা তাড়ানোর ভাব করে বলল “নো প্রবলেম। তবে শুন এর পর থেকে যেন তোদের কাউকেই বিশেষ করে স্কুলে ফোন আনতে না দেখি, তোদের এই বয়সে ফোন স্কুলে আনা ঠিক না। বুঝেছিস?”
“ঝি স্যার।“ সবাই সমস্বরে বলল।
প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে টিটুন আজগর স্যারকে জিজ্ঞেস “আচ্ছা স্যার কোন ইলেকট্রিক সার্কিট কি কি কারণে পুড়ে যেতে পারে মানে বিস্ফোরণ হতে পারে?”
মানুষকে যখন তার পছন্দের কোন বিষয়ে কথা বলতে বলা হয় তখন সে খুব আনন্দিত হয়। আজগর স্যারের প্রিয় বিষয় হচ্ছে বিজ্ঞান, তিনি এই বিষয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়ে আনন্দে গদগদ হয়ে বললেন “একটি সার্কিট বিভিন্ন কারণে বিস্ফোরণ হতে পারে বা পুড়ে যেতে পারে।“
থামলেন স্যার পুনরায় বললেন “সার্কিট কিভাবে পুড়ে সেটা জানার আগে তোদের জানতে হবে সার্কিট কত প্রকার ও কি কি? আচছা বলত দেখি সার্কিট কত প্রকার ও কি কি?”
উত্তরে অপেক্ষা না করে আজগর স্যার বলে চললেন “সার্কিট সাধারণত দুই প্রকার, সিরিয়াল সার্কিট এবং প্যারালাল সার্কিট। আরেক প্রকার সার্কিট আছে তাকে মিক্স সার্কিট বলে যেখানে সিরিয়াল এবং প্যারালাল দুই ধরনের সার্কিটের সমন্বয়ে” আরো বলতে যাচ্ছিল
টিটুন তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল স্যার “আমি জানতে চাচ্ছিলাম কোন ইলেকট্রনিক সার্কিট কি কি কারণে পুড়ে যেতে পারে?”
স্যার এবার কিছুটা থেমে বললেন “সার্কিট বিভিন্ন কারণে বার্ণ বা ডেমেজ হতে পারে, যেমন তুই যদি ধর ডিসি সার্কিটে এসি কারেন্ট দিস তাহলে পুড়ে হতে পারে।“
স্যার একটু থেমে পুনরায় বললেন “আচ্ছা এসি এবং ডিসি কি জানিস-তো? বলেই স্যার বলতে শুরু করলেন এসি মানে হচ্ছে অলটারনেটিভ কারেন্ট, যেটা দেখতে সাইন ওয়েব মানে ঢেউয়ের মত। ডিসি কারেন্ট হচ্ছে ডাইরেক্ট কারেন্ট যেগুলো দেখতে সরল রেখার মত। ধর তোর সার্কিটে ইলেক্ট্রনিক্সের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডিভাইস আছে যেগুলোর ভোল্টেজ পাঁচ কিন্তু তুল দিলি হাই ভোল্টেজ ২২০ এসি কারেন্ট সেই ক্ষেত্রে সার্কিট পুরে যেতে পারে।“
টিটুন চট করেই যেন ধরে ফেললে তাকে কি করতে হবে তাদের এক্সপেরিমেন্টটার জন্য। আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল আজগর স্যার,
টিটুন তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল “স্যার পরে এ বিষয়ে কথা হবে।“ কথা শেষ হবার পরপরই সুমি এবং দিপুকে নিয়ে দ্রুত চলে গেল।
আট।
এই সভায় উপস্থিত সবাই বেশ গোমরা মুখে বসে আছে। সবার ডানে যে বসে আছে তিনি বিজ্ঞানী সিদ্দিক, মাথায় অল্প চুল, মধ্য বয়স্ক, তার পাশেই যেই সর্বকনিষ্ঠ ভদ্রলোক বসে আছেন তিনি বিজ্ঞানী রহমান। এই সভায় সুদূর আমেরিকা থেকে ভিডিও কলে জয়েন করেছেন সাধা চামড়ার মহামান্য বিজ্ঞানী ড. ওয়াটসন, তিনিই সব চেয়ে প্রবীন এই সভার, বয়সের ভারে গলার চামড়া ঝুলে পরেছে তার। তারা সবাই আমেরিকার ফিউচার ইনকর্পোরেশন ল্যাবরেটরির কর্মকর্তা। ফিউচার ইনকর্পোরেশন ল্যাবরেটরি আমেরিকার সরকারের ফান্ডে পরিচালিত হয়, যেটা নিয়ন্ত্রণ করে আমেরিকার ডিফেন্স মিনিষ্টি, যেটা হাই-টেকনোলজি নিয়ে কাজ করে, এদের গবেষণা মূলত ভবিষ্যৎ কেন্দ্রিক, যেগুলো জনসাধারণের কাছে প্রকাশিত হয় না সাধারণত।
“নতুন কোন লিড পেয়েছ?” ঝরঝরে ইংরেজিতে বললেন মহামান্য বিজ্ঞানী ওয়াটসন।
থেমে বিজ্ঞানী ওয়াটসন বললেন “ড. সাফায়াত আমাদের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত ছিল, তিনি শেষের দিকে গোপন কোন প্রজেক্টে কাজ করছিল। সেদিন কি হয়েছিল, সেটা আমরা জানার আগে যেন কখনও বাইরে প্রকাশ না পায়।“
“স্যার আমরা চেষ্টা করছি, ব্যাপারটা জানার জন্য, তার পরিবারকে আমরা বিগত তিন বছর ধরে নজর রাখছি, তবে আমাদের মনে হয়না তার পরিবার কিছু জানে” বললেন সভার সর্বকনিষ্ঠ বিজ্ঞানী রহমান সাহেব।
“আমার বিশ্বাস ড. সাফায়াত কোন গোপন প্রজেক্টে কাজ করছিল, সে যেদিন নিখোঁজ হয় সেদিন আমাদের তথ্য অনুসারে তার বাসায় উচ্চ মাত্রার ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়েছিল এবং ম্যাগনেটিক ফিল্ড নিদিষ্ট একটি বৃত্তের মাঝেই শুধু ক্রমাগত ঘুরপাক খাচ্ছিল, এখন পর্যন্ত কোন মানুষ এমন নিদিষ্ট আকারের ঘূর্নয়নমান উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করতে পারেনি। আমাদের জানা দরকার সেদিন ঠিক কি হয়েছিল?”
“স্যার ড. সাফায়াতে বাসা আমরা তন্ন তন্ন করে কিছু পাইনি সেসময়। আমরা আমাদের চোখ রাখছি তার পরবারের উপর। সম্প্রতি ভয়ানক একটা” বলেই থামলেন বিজ্ঞানী রহমান সাহেব।
বিজ্ঞানী ওয়াটসন ভিডিও এর উপর পাশ থেকে বললেন “সম্প্রতি কি?”
বিজ্ঞানী রহমান সাহেব কম্পিউটারের স্কিনটা শেয়ার দিলেন, সেখানে একটি ম্যাপ শেয়ার দিয়ে বললেন “সম্প্রতি আমরা স্যাটালাইটের সাহায্যে সেই একই ধরনের ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক ফিল্ড ডিটেক্ট করেছি, এরকমই একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড সেদিন তৈরি হয়েছিল যখন ড. সাফায়াত নিখোঁজ হন।“
বিজ্ঞানী ওয়াটসনকে বেশ উত্তেজিত দেখাচ্ছে, তিনি নড়েচড়ে বসলেন। আগ্রহ নিয়ে বললেন “এটা কোথায় এবং আর কিছু কি জানতে পেরেছ?”
“স্যার ড. সাফায়াতে ছেলে টিটুনদের স্কুলের ল্যাবরেটরিতে লোকেশন দেখাচ্ছে। বিজ্ঞানী সাফায়াতের ছেলে টিটুনের এর সাথে কোন সংযোগ থাকতে পারে! আমরা ইতিমধ্যে তার ছেলে টিটুন এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপর নজর রাখেছি কিন্তু” বলেই পুনরায় থামলেন রহমান সাহেব।
“কিন্তু কি?” উত্তেজিত গলায় জিজ্ঞেস করেন বিজ্ঞানী ওয়াটসন।
“সব চেয়ে রহস্যজনক ব্যাপার হল যেই মাত্রায় ম্যাগনেটিক ফিল্ড উৎপন্ন হয়েছে, আমাদের ম্যাপের লোকেশন অনুসারে সেই ল্যাবরেটরির ভয়ংকর ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যাবার কথা কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় আমরা এর কোন হদিস পাইনি।“
বিজ্ঞানী ওয়াটসনকে বেশ চিন্তিত দেখা যাচ্ছে। নিজেকে সামলে জিজ্ঞেস করলেন “এমন কি হতে পারে সেই ছেলেপুলে গুলো কোন ভাবে আবার সেগুলোকে মেরামত করেছে?“
একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বিজ্ঞানী রহমান সাহেব বললেন “সেটা অসম্ভব স্যার, আমরা কিছুক্ষণ পরেই সে স্পটে লোক পাঠিয়েছিলাম। সেখানে কাউকেই পাইনি এমনকি কোন আলামতই ছিল না ল্যাবরেটরিতে। তবে আমরা সেই ছেলেপুরের বাসার সামনে নজর রাখছি লোক দিয়ে।“
“তাহলে কারা সেই ল্যাবরেটরিটি ঠিক করতে পারে? এমনকি হতে পারে তৃতীয় পক্ষ কেউ এখানে জড়িত?“ চিন্তিত কণ্ঠে বললেন ওয়াটসন।
“হতে পারে স্যার।“ মাথা চুলকে বললেন বিজ্ঞনী রহমান সাহেব।
“ব্যাপারটা আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সরূপ।এই তৃতীয় পক্ষটা কে বা কারা এবং তাদের উদ্দেশ্যই বা কি সেটা আমাদের বের করতে হবে।“ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন বিজ্ঞানী ওয়াটসন।
থেমে পুনরায় বললেন “ড. সাফায়াত যেদিন নিখোঁজ হয়, সেদিন তার ছেলে কি নাম যেন, টিটুন না ডিটুন তার সাথেই ছিল। আমাদের তথ্য অনুসারে কোন অস্বাভাবিক কিছু একটা ঘটেছিল, যেই ঘটনা ঘটেছে সেটা আমাদের পৃথিবীর নিরাপত্তার জন্য হুমকি সরূপ হতে পারে, এর সঠিক কারণ অনুসন্ধান করার আগে যদি ব্যাপারটা পাবলিক হয় তাহলে আমরা বিপদে পরব।“
আবার বললেন বিজ্ঞানী ওয়াটসন “কড়া নজর দারি জারি রাখ ছেলেগুলোর উপর। সন্দেহ ভাজন কিছু দেখলে সরাসরি আক্রমণ করবে। আমরা কোন ঝামেলায় জড়াতে চাই না!”
“ইতিমধ্যেই আমাদের লোক টিটুন এবং তার বন্ধুদের উপর কড়া নজর রাখছে।“ বললেন বিজ্ঞানী রহমান।
সভায় তখন প্রবেশ করলেন টিটুনের সাইক্রিয়াস্টিক টেকো মাথার শরিফ সাহেব, যিনি আসলে ফিউচার ইনকর্পোরেশন ল্যাবরেটরির একজন সম্মানিত বিজ্ঞানী এবং বাংলাদেশ ব্র্যাঞ্চের প্রধান। “সেই ছেলের ব্যাপারে চিন্তা করবেন না, তার উপর বিশেষ নজর রাখছি আমি যাতে আরো ডিটেইলস তথ্য বের করতে পারি।“ বলেই সভায় যোগ দিলেন টিটুনের সাইক্রিয়াস্টিক তথা ফিউচার ইনকর্পোরেশন ল্যাবরেটরির প্রধান বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
বিঃ দ্রঃ প্রতিদিন একটি করে পর্ব দিয়ে বারটি পর্বে শেষ করে ফেলব।
আগের পর্বঃ ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: ডায়েরি (পর্ব তিন)
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:২৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: আমি চেষ্টা করি সাইন্স ফিকশন হলেও যেন সবাই বুঝতে পারে, চরিত্রের নামের বেলায়ও চেষ্টা থাকে যাতে পাঠকের মনে থাকে নামগুলো। আমার কাছে অহেতুক শব্দের ঝনঝনানি এবং বাক্যের কচকচানি পছন্দ নয়, আমি চাই কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সীরাই আমার লেখা পরে যাতে বুঝতে পারে।
ধন্যবাদ আপনাকে সাথে থাকার জন্য।
২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:০২
ইসিয়াক বলেছেন: বদরুল কিছুটা জব্দ হলো বলে ভালো লাগছে যদিও সে প্রতিশোধ পরায়ন ছেলে ।ভবিষ্যতে সে সুমি টিটুন বা দিপুকে সহজে ছেড়ে দেবে মনে হয় না। আজকাল এ ধরনের ক্ষমতার দাপট অনেক ছেলেরা দেখায়। টিটুন চরিত্রটার ব্যপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে,তাকে ঘিরে মুল কাহিনী আবর্তিত । তার বাবা ডঃ সাফায়তে চরিত্র মধ্যে সম্ভবত আসল রহস্য। তার গোপন প্রজেক্টাই বা কি ছিল সেটাই আস্তে আস্তে সামনে প্রকাশ পাবে সম্ভবত। টিটুন ক্রমশ জড়িয়ে যাচ্ছে নানা রহস্যময়তায়। বিজ্ঞানী ওয়াটসনের চরিত্রটা আগ্রহ জাগাচ্ছে। তার ভুমিকা কি কেন সে টিটুনের পিছু নিয়েছে।সাইক্রিয়াস্টিক শরীর সাহেবও টিটুনের বিরুদ্ধে। শত্রুু তো চারিদিকে টিটুন কি পারবে নিজেকে রক্ষা করতে? তার বাবা কি আবার ফিরে আসবে? নানা প্রশ্ন মনে? অপেক্ষায় পরবর্তী পর্বের... শুভ কামনা রইলো প্রিয় ব্লগার।
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:২৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। আপনি ঠিক বলেছেন বদরুলের মত ছেলেপেলে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়। টিটুনকে ঘিরেই গল্প আবর্তিত হয়েছে, আপনি ঠিক ধরেছেন এখানে অনেকগুলো প্রশ্ন, টিটুন তার বাবাকে ফিরে পাবে কিনা বা তার বাবার সাথে কি ঘটেছিল। এতটুকু বলতে পারি রহস্যের সমাধান হবে সামনে এবং নতুন রহস্য তৈরি হবে, এবং সব প্রশ্নেরই হয়তবা জবাব মিলবে।
আবারো পাঠ ও মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল অনেক।
৩| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৩১
জুল ভার্ন বলেছেন: অত্যন্ত সাবলীল ও সুখপাঠ্য। +
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:২৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: পাঠের জন্য কৃতজ্ঞতা রইল অনেক।
ভাল থাকুন।
৪| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: কাহিনী শুধু ধীরে এগুচ্ছি।
গত দুই দিন ঢাকার বাইরে ছিলাম। আজ ফিরে সবগুলি পর্ব পড়লাম।
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:২৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: সবগুলো পর্ব পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।
আমি চেষ্টা করেছি, আপনি পড়েছেন দেখে ভাল লাগল। শেষ পর্যন্ত পড়বেন আশা করি।
৫| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৪৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: পরের পর্ব
৬| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:২৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন এগুচ্ছে...
টাইপো গুলো সময় পেলে এডিট করে দিয়েন!
চক্ষে থুরি পড়তে লাগে হা হা হা
++++
০৩ রা জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৪২
কাছের-মানুষ বলেছেন: হ্যা আমি এডিট করব অবশ্যই। তবে আপাতত অনেক দিন/মাস ফেলে রাখব, এতে হয়ত কাহিনী আমিও ভুলে যাব, তখন নতুন করে পড়ে এডিট করলে আরো ভাল হবে আমার বিশ্বাস।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার এই উপন্যাসে সবচেয়ে সুন্দর দিক হলো- সহজ করে লিখেছেন। এবং চরিত্রের নাম গুলো ছোট ও সুন্দর। মজিদ স্যার। আমাদের স্কুলে আসলেই মজিদ স্যার ছিলেন। সুমি নামটা বেশ। আমাদের পাশের বাসায় একটা মেয়ে আছে। সুমি নামে।