নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! !
সতের।
গত কয়েকদিন যাবত অদ্ভুত এক ঘটনা ঘটেছে। সারা পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরেছে, ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে রেডিও সিগন্যাল দুর্বল হয়ে পরেছে। হঠাৎ স্যাটালাইট কাজ করা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে, মহাকাশে ষ্টেশনগুলোতে যেই নভোচারিরা আটকা পরেছে তাদের সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন উপমহাদেশ যেমন আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ ইত্যাদি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সরকারী কিছু সংস্থা প্রাইভেট ব্যান্ডউইথ ব্যাবহার করে সরকারী পর্যায়ে অল্পবিস্তর যোগাযোগ করছে তবে সেটা কতদিন টিকে থাকা সেটা দেখার বিষয়।
সমস্ত দুনিয়া এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে, যেমন ব্যাংকে লেনদেন, সরকারী হিসেব নিকেশ, শেয়ার বাজারের লেনদেন, সিগন্যাল বা কমিউনিকেশন কাজ না করাতে কার্যত সব কিছুই ভেঙ্গে পরছে। বাঘা বাঘা সব বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়াররা সবাই মিলে কাজ করছে, কিন্তু কোন কুল কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না, কোন কিছুতেই কোন সমস্যা নেই তারপরও কেন কাজ করছে না সেটা কেউ বুঝতে পারছে না।
গোলটেবিল বৈঠক চলছে। থমথমে মুখ করে বসে আছে ফিউচার ইন-কর্পোরেশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শরিফ সাহেব । তিনি নিজের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না, ব্যাপারটা নিশ্চিন্ত হবার জন্য পুনরায় খসখসে গলায় বললেন “কি বললে তুমি?“ তাকে বেশ বিষণ্ণ দেখাচ্ছে।
“স্যার আমরা আক্রমণের শিকার।” বললেন বিজ্ঞানী রহমান সাহেব ।
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব নিজেকে সামলে পুনরায় বললেন “হ্যাঁ, বুঝতে পারছি, আমাদের কেউ আক্রমণ করেছে, তুমি আর কি যেন বললে?”
বিজ্ঞানী রহমান সাহেব গলার স্বর কিছুটা নামিয়ে বলল “স্যার, আর কি?”
এবার বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বললেন “আমাদের কেউ আক্রমণ করেছে, সেটা বুঝতে পারছি, এটা বুঝার জন্য আইনস্টাইন হতে হয় না। আমি বলতে চাচ্ছি কারা আক্রমণ করেছে তুমি বললে?”
এবার বিজ্ঞানী রহমান হালকা কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে বলল “স্যার, আমার মনে হচ্ছে এলিয়েন”
এই গোলটেবিল বৈঠকে আরো যারা বসে আছে, তারা সবাই যেন নড়েচড়ে বসল। একজন আরেক জনের সাথে ফিসফিসয়ে কথা বলছে, তারা কেউই যেন নিজের কানকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না, আবার সম্প্রতি যা ঘটছে তা দেখে ফু দিয়ে বিজ্ঞানী রহিমের কথা উড়িয়ে দিতে পারছে না।
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব টেবিলে চাপড় মেরে সবাইকে ফিসফিস করতে নিষেধ করলেন, তারপর নিজেকে সামলে বিজ্ঞানী রহমানের দিকে তাকিয়ে বললেন “তোমার কেন মনে হল এলিয়েন? এটা কোন হ্যাকারও-তো হতে পারে?“
এবার বিজ্ঞানী রহমান জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে বললেন “স্যার এত বড় সার্ভার আক্রমণ করার মত ক্ষমতা কারো হয়নি যে পুরো পৃথিবীর সিস্টেমকে একযোগে মূহুর্তেই ধ্বংস করে দিতে পারে, আমাদের স্যাটালাইট, পাওয়া ফুল নেটওয়ার্ক”
আরো কিছু বলতে যাচ্ছি বিজ্ঞানী রহমান সাহেব, প্রধান বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব তার মুখ থেকে কথাটা কেড়ে নিয়ে বললেন “কেন আগেও-তো সার্ভার আক্রমণ হয়েছে, তাই নয়কি?”
“স্যার আগেও হয়েছে, তবে সেগুলো বিচ্ছিন্ন ভাবে যেমন কোন নিদিষ্ট সার্ভারে আঘাত এনে হয়ত কিছু তথ্য চুরি, বা সিস্টেম কিছুদিনের জন্য করাপ্ট করে দিয়েছে তবে এখনকার মত সারা পৃথিবীর সমস্ত সিস্টেম ভেঙ্গে ফেলেনি, এটা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।“
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব নতুন সিগারেটের প্যাকেট ভেঙ্গে একটি সিগারেট মুখে গুঁজলেন তারপর পকেট থেকে লাইটার বের করে জ্বালিয়ে নিলেন তাতে। সাধারণত ল্যাবরেটরির ভিতরে বিশেষ করে সভা চলাকালীন সময়ে সিগারেট খাওয়া একেবারেই নিষিদ্ধ, তবে তিনি প্রচণ্ড দুশ্চিন্তায় নিয়ম বহির্ভূত কাজটি করে ফেললেন অনায়াসেই।
সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বললেন “তুমি এত নিশ্চিন্ত হয়ে কিভাবে বলছ এটা এলিয়েন?”
এবার বিজ্ঞানী রহমান সাহেব নিজের হাতে ধরে থাকা একটি ডিজিটাল ডিভাইস শরিফ সাহেবের দিকে এগিয়ে দিলেন, ডিভাইসে এই পৃথিবীর একটি ত্রিমাত্রিক মানচিত্র দেখা যাচ্ছে। সেই মানচিত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় কিছু লাল রঙ্গয়ের ছোপ ছোপ দাগ দেখা যাচ্ছে, লাল রঙ্গয়ের দাগগুলো বিভিন্ন আকৃতির, যেমন কিছু সরু, কিছু দাগ বর্গাকার, ডিম্বাকার ইত্যাদি। সেই লাল রঙ্গগুলো বেশ নড়াচড়া করছে স্বতন্ত্রভাবে।
সভার সবার দৃষ্টি সেই ডিভাইসের দিকে, সবাই উকি মেরে দেখার চেষ্টা করছে, কি আছে সেই ডিভাইসে। শরিফ সাহেব বেশ নড়েচড়ে বসলেন, মুখের সিগারেটটি খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে তাকিয়ে আছেন ডিভাইসটির দিকে, ব্যাপারটা কি ঘটছে তিনি বুঝার চেষ্টা করছেন।
“স্যার পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সেন্সর বসানো আছে, যেই সেন্সরগুলোর কাজ হচ্ছে যদি কোন এনার্জি বা বলের বড় ধরনের কোন তারতম্য দেখা যায় সেন্সরগুলো সেগুলো ধরতে পারে, এবং সেগুলো আমাদের এই ডিভাইসে কর্ডিনেটসহ পাঠায়, ডিভাইসে সেই এনার্জির তারতম্যকে ম্যাপে লাল রঙ দিয়ে প্রকাশ করে।“ বলেই থামে রহমান সাহেব।
ফের বলে “আপনি লাল রঙের নড়াচড়া করা যেই আকৃতিগুলো দেখছেন সেগুলো হচ্ছে সেই এনার্জিগুলো। “
পুরো সভায় এক ধরনের নীরবতা নেমে এলো। সবাই নিজের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। শরিফ সাহেব ডিভাইসটি টেবিলে রেখে চিন্তায় ডুব দিলেন, সভার অন্যরা তখন ডিভাইসটি নিয়ে কাড়াকাড়ি করে দেখতে লাগল। এই মুহূর্তে ঠিক কি করা উচিত শরিফ সাহেব বুঝতেন পারছে না তিনি।
সভার সবাই চুপ, বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব নীরবতা ভেঙ্গে বললেন “ঠিক আছে ধরে নিলাম অদৃশ্য কোন শক্তি আমাদের এই পৃথিবীতে আছে এটা বুঝা গেল। তবে তুমি কিভাবে নিশ্চিন্ত হলে এগুলো কোন এলিয়েনের কাজ?এই অদৃশ্য শক্তির সাথে এলিয়েনকে কিভাবে মিলাচ্ছো?? কোন এলিয়েন বা শিপ এগুলো-তো আমরা দেখতে পাচ্ছি না?”
“স্যার, আমরা এলিয়েনের ব্যাপারে এতদিন সিনেমা, মুভি বা বইতে পড়ে এসেছি যে এলিয়েনরা দেখতে অদ্ভুত হবে, তাদের হয়ত আমাদের মত শরীর থাকবে, তবে চোখ হয়ত আমাদের থেকে কম বেশী হতে পারে, বা মাথা এক বা একাধিক থাকতে, এরা আসবে উড়ন্ত সসারে চরে। তবে এরকম নাও হতে পারে বাস্তবে” বলেই সবার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য থামলেন বিজ্ঞানী রহমান সাহেব।
সভায় ইতিমধ্যেই পিনপতন নীরবতা নেমে এসেছে। পুনরায় বলে চলে বিজ্ঞানী রহমান সাহেব “অর্থাৎ আমাদের মস্তিষ্কে এলিয়েনদের একটি ছবি দাড় করিয়েছি আমরা অবচেতন মনে। তবে এলিয়েনরা ফিজিক্যাল শরীরের নাও হতে পারে, তাদের আসার জন্য কোন উড়ন্ত সসার নাও লাগতে পারে এই ব্যাপারটি আমাদের মস্তিষ্ক ধরতে পারছে না।“
“তুমি ঠিক কি বলতে চাঁচ্ছ?” প্রশ্ন করলেন প্রধান বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
“স্যার আমি বলতে চাচ্ছি আমরা এখন যাদের আক্রমণের শিকার এদের আমাদের মত বায়োলজিক্যাল শরীর নেই হয়ত তবে তাদের অস্তিত্ব আছে, তারা আমাদের মতন বা আমাদের থেকে বেশী চিন্তা করতে পারে। হয়তবা তারা ভিন্ন কোন ডাইমেনশনে আছে। এই যে লাল রঙ্গা এনার্জিগুলো স্বতন্ত্রভাবে নড়ছে যেগুলো খালী চোখে দেখা যায় না এরাই হয়ত এলিয়েন আমার হাইপোথেসিস অনুসারে।“
"বিজ্ঞানী রহমান সাহেব আপনি কি বলতে চাচ্ছেন তারা আরো উচ্চমাত্রার প্রাণী? আপনার মাথার ঘিলু ঠিক আছে?” বলেই হো হো করে কৃত্রিম হাসি টেকো মাথা বিজ্ঞানী সিদ্দিক সাহেব।
বিজ্ঞানী সিদ্দিক সাহেব ভাবছিলেন সভার অন্যরাও তার সাথে হাসিতে যোগ দিবেন, তবে কারো কাছ থেকে কোন সাড়া না পেয়ে হাসিটা এমনভাবে থামালেন যেন কখনো সেটা শুরুই হয়নি।
“বোকার মত হাসবেন না” বিজ্ঞানী সিদ্দিকের দিকে তীক্ষ্ণ-ভাবে তাকিয়ে কটাক্ষ করে বললেন বিজ্ঞানী রহমান সাহেব।
এবার বিজ্ঞানী সিদ্দিক সাহেব গোমরা মুখে জিজ্ঞেস করল “আপনি কিভাবে নিশ্চিন্ত হচ্ছে এরা উচ্চ মাত্রার প্রাণী?”
“আপনার কাছে কি এর চেয়ে ভাল কোন ব্যাখ্যা আছে বিজ্ঞানী সিদ্দিক সাহেব?” পাল্টা প্রশ্ন বিজ্ঞানী রহমান সাহেবের।
জবাব না দিতে পেরে চুপ করে রইলেন বিজ্ঞানী সিদ্দিক সাহেব।
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব হালকা কাশী দিয়ে পুনরায় বললেন “ঠিক আছে ধরে নিলাম এরা এলিয়েন, তবে এই এনার্জিগুলোই এলিয়েন এটা কেন মনে হল তোমার? পৃথিবীর বাইরে থেকেও হয়ত কোন এলিয়েন আমাদের এখানে আক্রমণ করেছে। আর যেই লাল রঙ্গা এনার্জিগুলো এখানে আছে সেগুলো হয়ত তাদের এক ধরনের অস্র?”
“ভাল প্রশ্ন করেছেন স্যার, তবে লক্ষ করে দেখুন কেউ যদি পৃথিবীর বাইরে থেকে আক্রমণ করতে তাহলে কিন্তু অনেক আগে থেকেই আমাদের স্যাটালাইট তা ধরতে পারত যে কোন এনার্জি এদিকে ধেয়ে আসছে। তাছাড়া আপনি এদের প্যাটার্ন দেখুন, এনার্জিগুলো স্বতন্ত ভাবে নড়াচড়া করছে, এবং এই এনার্জিগুলো মাঝে মাঝে নিজেদের সাথে মিলিত হচ্ছে ম্যাপ থেকে বুঝা যায় অর্থাৎ এরা চিন্তা করতে পারে। এরা দলবদ্ধ বা এককভাবে আক্রমণ করেছে।“ বলেই থামলেন বিজ্ঞানী রহমান সাহেব।
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব চিন্তায় ডুব দিলেন একটিও যুতসই উত্তরের আশায় তবে বার্থ হলে চরমভাবে। ভালো লজিক না পেয়ে বিজ্ঞানী রহমানের হাইপোথেসিস মেনে নিয়ে প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন “তোমার কি মনে হয় এদের উদ্দেশ্য কি?”
“স্যার আমার মনে হয় তারা অনেক পরিকল্পনা করে আক্রমণ করেছে, তারা প্রথমে আমাদের দুর্বলতা খুঁজে বের করেছে, আমাদের দুর্বলতা হচ্ছে যোগাযোগ। আমরা ডিজিটাল যোগাযোগ নির্ভর, যদি আমাদের সেই সিস্টেম নষ্ট করে দেয়া যায় তাহলে পুরো পৃথিবী আইসোলেটেড হয়ে যাবে” বলেই থামলেন বিজ্ঞানী রহমান সাহেব।
আবার বলতে লাগলেন “আমরা এখন কার্যত আইসোলেটেড বা বিচ্ছিন্ন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরেছে, আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও গুড়িয়ে দিয়েছে, সারা পৃথিবী এখন কার্যত অন্ধকার। কিছুদিনের মধ্যেই হয়ত খাদ্য-সংকট, মহামারি দেখা দিবে, যেহেতু সমস্ত কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই।“
আরো কিছু বলতে চাচ্ছি বিজ্ঞানী রহমান সাহেব। বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন “ওকে বুঝতে পারছি তুমি কি বলতে চাইছ। তিনি বিজ্ঞানী সিদ্দিকের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন হেড অফিস আমেরিকার সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছ?
আমাদের তথ্য অনুসারে এই পৃথিবী চতুর্থ মাত্রিক প্রাণীদের আক্রমণের শিকার ব্যাপারটা তাদের জানানো দরকার।“
“স্যার সম্পূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরেছে। অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারিনি।“ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে বিজ্ঞানী সিদ্দিক সাহেব।
শরিফ সাহেবকে বেশ হতাশ দেখাচ্ছে। হঠাত এই গোলটেবিল বৈঠকের মাঝে দরজায় নক করে অফিস পিয়ন ঢুকল এবং শরিফ সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলল “স্যার বাইরে একজন লোক এসে দাড়িয়ে আছে। আপনার সাথে দেখা করতে চায়, বলল খুবই আর্জেন্ট।“
শরিফ সাহেব বেশ বিরক্ত হলেন, এই মুহূর্তে কে আসতে পারে, ভাবতে লাগলেন তিনি। “তাকে বল আমি ব্যস্ত আছি”
“স্যার খুব জরুরি, সে একটি কাগজে নোট পাঠিয়েছে, বলল এটা দেখলে তাকে চিনবেন এবং তাড়াতাড়ি ভিতরে আসতে বলবেন।” বলল অফিস পিয়ন।
শরিফ সাহেব বেশ বিরক্ত হলেন, অনিচ্ছা স্বত্বেও কাগজের নোটটি পিয়নের কাছ থেকে নিলেন। চোখ বুলিয়ে দেখতেই চমকেই উঠলেন, তাড়াতাড়ি পিয়ন নির্দেশ দিলেন তাকে ভিতরে নিয়ে আসতে।
আঠার ।
ফিউচার ইন-কর্পোরেশনের প্রধান বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব কাগজের নোটটিতে আরেক বার চোখ ভুলালেন, সেখানে লেখা এই পৃথিবী চথুর্ত মাত্রিক প্রাণীদের আক্রমণের শিকার, নোটের নিচে মোটা দাগে লেখা নাম লেখা আজগর স্যার। নিজের নামের সাথে নিজেই স্যার লাগিয়ে লিখেছে লোকটা ভেবেই অবাক হলেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব। শরিফ সাহেবের সব কিছু তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে, এই আজগর স্যার লোকটাই বা কে, আর এই লোক কিভাবে জানে এই পৃথিবী চথুর্ত মাত্রিক প্রাণী আক্রমণের শিকার, এই তথ্য তারা ছাড়া আর কেউ জানেনা তার ধারনা ছিল। বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব অপেক্ষা করছে আজগর সাহেবের জন্য, পিয়ন গেছে তাকে ডাকতে।
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব সভায় একবার চোখ ভুলালেন, এবং জিজ্ঞেস “আজগর স্যার লোকটা কে?তোমরা কেউ চেন?”
বিজ্ঞানী সিদ্দিক একটু ভেবে বললেন “স্যার আমি একে জানি, ইনি টিটুনদের স্কুল শিক্ষক। আমরা তার উপর নজর রাখছি। আপনিই বলেছিলেন টিটুনের বন্ধু বান্ধব, শিক্ষক সবার উপর নজর রাখতে।“
“আই সি, তার পরিচয়, ঠিকানা জানতে পেরেছ?” ফের প্রশ্ন শরিফ সাহেবের।
“স্যার আপনাকে বলতে চেয়েছিলাম, এই লোকের কোন তথ্যই আমাদের কাছে নেই, তার জন্ম, বাবা মা, স্থায়ী ঠিকানা যেই তথ্যগুলো আমরা স্কুল থেকে পেয়েছি, সেগুলো ভেরি-ফাই করে দেখেছি কোন তথ্যই সত্য নয়, লোকটার সব তথ্যই ভুয়া। “ বললেন বিজ্ঞানী সিদ্দিক সাহেব।
কথা বলতে বলতে আজগর স্যার সভায় প্রবেশ করলেন। বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব তাকে একটি চেয়ার দেখি বসতে বললেন। তারপর জিজ্ঞেস করলেন “আপনি বলতে চাচ্ছেন আমরা চথুর্ত মাত্রিক প্রাণীর আক্রমণের শিকার?”
“আমার বিশ্বাস আপনারাও ইতিমধ্যেই বুঝে ফেলার কথা, কোন প্রাণী এই পৃথিবীতে আক্রমণ করেছে।“
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেবকে বেশ অপ্রস্তুত দেখাচ্ছে, তিনি নিজেকে সামলে বললেন “আপনার পরিচয় কি? আমাদের রেকর্ড বলছে আপনার জন্ম তারিখ, আইডি কার্ড, পাসপোর্ট সব জাল।“
“স্যার সেগুলো নিয়ে এখন কথা বলার সময় নয়” আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল আজগর স্যার।
তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল “আপনি জানেন আপনাকে পুলিশে দিতে পারি?”
“আমাকে পুলিশে দেবার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনাদের বর্তমান পৃথিবীর এই সমস্যা নিয়ে চিন্তা করা, কিভাবে এর থেকে বের হওয়া যায়।“ দৃঢ় প্রত্যয়ে বলল আজগর স্যার।
“ভুল তথ্য দেয়া, নিজের পরিচয় গোপন করা, পাসপোর্ট জালিয়াতি এগুলো যে বড় অপরাধ আপনি জানে না?” ফের প্রশ্ন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেবের।
আজগর স্যার বললেন “এগুলোর পিছনে শক্ত কারণ আছে, এগুলো না হয় পরে আলোচনা করা যাবে। তারচেয়ে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করাই মনে হয় বুদ্ধিমানের কাজ।“
থেমে আবার বললেন “তাছাড়া ভুলে যাবেন না আপনিও কিন্তু নিজের আসল পরিচয় লুকিয়ে টিটুনের সাইক্রিয়াটিস্ট পরিচয় ধারণ করেছিলেন। যাইহোক এই কথাটা আপনাকে স্মরণ করিয়ে কোন লজ্জা দিতে চাইনি শুধু বুঝাতে চেয়েছি পরিস্থিতি আমাদের আমাদের অনেক সময় অনেক কিছু করতে বাধ্য করে।”
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে বললেন “হুম, আমি যেটা করেছিলাম সেটা অন্যায়। আপনি কি একটা অন্যায় দিয়ে আরেকটি অন্যায়কে জাস্টিফাই করার চেরার চেষ্টা করছেন?”
“আমি দুঃখিত স্যার, আমার সেটা উদ্দেশ্য ছিল না। আমি বলতে চাচ্ছি আমার বিচার না হয় পরে করবেন এখন আমাদের আরো বড় সমস্যা নিয়ে চিন্তা করা উচিত” বললেন আজগর স্যার।
“কি করা উচিত আর কি করা উচিত সেটা নিয়ে আমাদের জ্ঞান দিতে হবে না। আপনি কি বলতে এসেছেন সেটা বলেন।“ প্রসঙ্গ পাল্টানোর সুরে বললেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
“স্যার এরা হলেন চতুর্থ মাত্রিক প্রাণী, এরা রেডিও সিগন্যালের তৈরি, এদের আমাদের মত জৈবিক শরীর নেই।“
পুরো সভায় পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে, সবাই তাকিয়ে আছে আজগর স্যারের দিকে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব “আপনি কিভাবে জানলেন?”
“স্যার আমি কিভাবে জানলাম সেটা জানা কি খুব জরুরী? পাল্টা প্রশ্ন আজগর স্যারের।
“হ্যা অবশ্যই জানা দরকার, কারণ এই তথ্য আমরা ছাড়া আর কেউ জানার কথা নয়। তাই আমাদের জানতে হবে আপনি জানলেন, আপনি কে?” জিজ্ঞেস করলেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
“আমি কে আর কিভাবে জানলাম সেটা বললেন আপনারা কেউই বিশ্বাস করবে না” বলে আজগর স্যার।
“দয়া করে আপনি নাটকীয়তা করবেন না। সরাসরি বলেন আপনি কে আর কিভাবে জানেন?” কিছুটা রাগত স্বরে জিজ্ঞেস করলেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
“স্যার আমি ভবিষ্যৎ থেকে এসেছি” বলেই থামলেন আজগর স্যার।
সবার সবাই মাথা বড়বড় চোখ করে আজগর স্যারের দিকে তাকালেন। ফের বললেন “কি ব্যাপার আপনি অবাক হচ্ছেন না?”
“আজ কয়েক দিন যাবত যা ঘটছে তাতে আমি আমার অবাক হবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি” একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
“তার মানে ধরে নিচ্ছে আপনি আমাকে বিশ্বাস করছেন। “
“আমি বলিনি আপনাকে বিশ্বাস করেছি, আমি বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস কিছুই করছি না। আপনি বলেন কি বলতে এসেছেন।“ গলার স্বর নামিয়ে বললেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
“যাইহোক আমাদের সময়েও এই চথুর্ত মাত্রিক প্রাণীটি আঘাত করেছে। মানব সভ্যতা আজ হুমকির মুখে, আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরেছে,যার ফলে কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, মহামারিতে পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষই মারা গেছে। অল্প কিছু মানুষ আমরা পাহাড় পর্বতে লুকিয়ে আছি, বলতে পারেন কোন মতে টিকে আছি। আমাদের বিজ্ঞানীদের পরিকল্পনা মাফিক আমাকে সময় পরিভ্রমণ করে আপনাদের সময়ে পাঠিয়েছে।“
“সময় ভ্রমণ?”
থামে আজগর স্যার, পকেট থেকে একটি ডায়েরি বের করে বিজ্ঞানী শরিফ সাহেবের দিকে এগিয়ে দেয়। সবার দৃষ্টি ডায়েরির দিকে।
“এটা কি?” জিজ্ঞেস করে বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
“এটা মহামান্য বিজ্ঞানী টিটুনের বাবা সাফায়াত সাহেবের ডায়েরি, তিনিই সর্বপ্রথম সময় ভ্রমণের যন্ত্র বানিয়ে এখানে লিখে রাখেন। সে যখন সময় ভ্রমণ যন্ত্র বানিয়ে বাসায় পরীক্ষা করেন। মহাবিশ্বের নিজস্ব একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে যার কারণে চথুর্ত মাত্রিক প্রাণীরা ইচ্ছে করলেই মানব ইতিহাসের নিদিষ্ট কোন সময়ে যেতে পারত না। তবে যখন মহামান্য বিজ্ঞানী সাফায়াত সাহেবে যখন টাইম মেশিন বানিয়ে পরীক্ষা করছিল বাসায় তখন মহাবিশ্বের ডিফেন্স সিস্টেমে কম্পন হয় এবং সেটি নষ্ট হয়ে যায়, আর সেই সুযোগেই সেই প্রাণীটি আপনাদের সময়ে চলে আসে। “
সভার সবাই বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছে আজগর স্যারের দিকে। “তারমানে আপনি বলতে চান সে প্রাণীটি আমাদের সময়ে এসে বিজ্ঞানী সাফায়াতকে মেরেছে?”
মাথা উপর নিচে নামিয়ে হ্যা বলে আজগর স্যার।
“কিন্তু টিটুনের সেই ডায়েরিটা-তো আমাদের কাছে এখন সেটা আপনার কাছে এলো কিভাবে?” পাশ থেকে প্রশ্ন করে বিজ্ঞানী রহমান সাহেব।
“আপনি ভুলে যাবেন না, আমি ভবিষ্যতের মানুষ। এট ভবিষতেও আপনাদের কাছেই মানে ফিউচার ইনকর্পোরেশন ল্যাবরেটরিতেই থাকবে। আমি নিজেও ফিউচার ইনকর্পোরেশন একজন ভবিষ্যতের কর্মি” বলেই সবার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য তাকালেন।
সভার সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আজগর স্যারের দিকে। "আপনি তাহলে আমাদের সাথে আগে যোগাযোগ করে নিজের পরিচয় দেননি কেন? " একটু চুপ থেকে জিজ্ঞেস করেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
"স্যার আমি এখানে কোন রি-ইউনিয়ন পার্টি করতে আসিনি, একটি মিশনে এসেছি, আপনাদের সাথে যোগাযোগের তাই কোন প্রয়োজন বোধ করিনি" বলেই থামলেন আজগর স্যার।
সবার সবাই চুপ, নীরবতা ভেঙ্গে বিজ্ঞানী রহমান সাহেব বললেন “আমরা এই ডায়েরী দেখে একটি প্রোটোটাইপ বানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু তার আগেই দেখতেই পাচ্ছেন পৃথিবীর নতুন সমস্যায় পরেছে, তাই আর ওদিকে সময় দিতে পারছি না।“
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন “আপনাকে আপনার সময়ের বিজ্ঞানী অতীতে পাঠালো কেন?”
“আমাদের বিজ্ঞানীরা দেখলেন এই প্রাণীরা সবাই এক এবং একই সাথে ভিন্ন ভিন্ন স্বতন্ত্র প্রাণী, যার ফলে তারা দলগত-ভাবে চিন্তা করতে পারে,তাই তারা চিন্তায় আমাদের থেকে উন্নত। তাই আমাদের বিজ্ঞানীরাও টেলিপ্যাথি টেকনোলজি আবিষ্কার করল যাতে আমরাও দলগত ভাবে চিন্তা করতে পারি, যোগাযোগ করতে পারি নিজেদের মধ্যে। আমাকে দায়িত্ব দেয়া হল আমি যেন এই সময়ে এসে এটা মানব সভ্যতার মাঝে ছড়ীয়ে দেই।“
বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব এবার নড়েচড়ে বসল মিসিং পাজল যেন কিছুটা মিলে যাচ্ছে, সেদিন টিটুন, সুমি এবং দিপু সম্ভবত টেলিপ্যাথি শক্তি ব্যাবহার করে বদরুল এবং তার বন্ধুদের কিছু করছিল। তিনি আজগর স্যার দিকে তাকিয়ে বললেন “টিটুন, সুমি এবং দিপু এই তিনজনের কি টেলিপ্যাথি শক্তি আছে, তার মানে আপনিই তাদের এগুলো দিয়েছেন?”
হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লেন আজগর স্যার। “আমাদের বিজ্ঞানীদের ধারনা মানব জাতি যদি এই দলবদ্ধভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা অনেক আগে থেকেই পেয়ে যায় তাহলে তারা জ্ঞান বিজ্ঞানে আরো উন্নত হবে, পর্যায় ক্রমে এগুলো তাদের অন্যান্য কগনেটিভ ফাংশনগুলোও প্রার্কতিক নিয়মে আরো উন্নত হবে, এতে আমরা হয়ত এক সময় এই চথুর্ত মাত্রিক প্রাণীগুলোকে হারাতে পারব।“
প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব বললেন “যাইহোক আপনি কি এখন এই প্রাণীটিকে কিভাবে তার সময়ে পাঠানো যায়, এবং স্পেস টাইমের সেই ক্ষত কিভাবে দূর করা যায় সেটা বলবেন?”
একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন “সেটা সম্ভব নয়।তবে টিটুন, সুমি এবং দিপু এই তিনজন হয়ত তাদের টেলিপ্যাথি শক্তি কাজে লাগিয়ে এই চথুর্ত মাত্রিক প্রাণীর সাথে যোগাযোগ করতে পারে, এমনকি তাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে হয়তবা হারাতেও পারবে কে জানে?”
“আপনি কি বলতে চাচ্ছেন সেই পিচ্চি ছেলেমেয়েগুলো এর সাথে যোগাযোগ করবে এবং তাদের সাথে পেরে উঠবে?” নাক সিটকালেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
“স্যার, ডোন্ট আন্ডার এস্টিমেট দ্যা পাওয়ার অব চিলড্রেন, মনে রাখবেন তারা এখন একই সাথে একজন এবং তিনটি ভিন্ন স্বত্বা, তারা দলবদ্ধভাবে এর সংকটের হয়ত মোকাবেলা করতে পারবে, তিনটি মস্তিষ্ক একত্র হলে তার ক্ষমতা কত হতে পারে তার কোন ধারনাই নেই আপনা!” বলে আজগর স্যার।
“আপনাদের-তো টেলিপ্যাথি ক্ষমতা আছে তাহলে ভবিষ্যতে পারেন নাই কেন এই প্রাণীর সাথে” ফের প্রশ্ন করে বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
বেশ থতমত খেয়ে গেল আজগর স্যার, শান্ত স্বরে বলল “আমরা প্রযুক্তি বানিয়েছি ঠিক, তবে আশ্চর্য বিষয়ে হচ্ছে, সিমুলেশোনে দেখা যাচ্ছে এটা কাজ করছে তবে আমাদের কারোই টেলিপ্যাথি শক্তি অর্জিত হচ্ছিল না, আরো বেশী সংখ্যক স্যাম্পলকে এগুলো প্রয়োগ করার জন্য এই সময়ে অনেককে প্রয়োগ করেছি এবং আশ্চর্য-ভাবে দেখেছি সুমি, দিপু এবং টিটুনের ক্ষেত্রে এগুলো কাজে করছে।“
থেমে বললেন “আমাদের টেলিপ্যাথি শক্তি নেই তবে আমরা কম্পিউটার এর সাহায্য মস্তিষ্কে তথ্য পাঠাতে পারি তবে সেগুলো এই চতুর্থ মাত্রিক প্রাণীর সাথে যোগাযোগ বা পেরে উঠার মত নয়, আমি প্রাথমিকভাবে দিপু এবং সুমির মস্তিষ্কে কম্পিউটার দিয়ে তথ্য পাঠিয়ে যোগাযোগ করেছিলাম” বলেই থামে আজগর স্যার।
ফের বলে চললেন ”হাতে সময় নেই, প্রাণীটা আরো ভয়ানক কিছু ঘটিয়ে ফেলবে এর মাঝে আমাদের কিছু একটা করতে হবে।“
যাইহোক “এখন মুল কথায় আসুন এখন কি করতে হবে আমাদের?” জিজ্ঞেস করলেন বিজ্ঞানী শরিফ সাহেব।
“প্রাণীটি এই জগতের মাঝেও একটি চতুর্মাত্রিক জগত বানিয়ে নিয়েছে। সুমি, দিপু এবং টিটুনকে সেই বলয়ে ঢুকিয়ে দিতে হবে, একে এই মুহূর্তে ওরা তিনজনই থামাতে পারে। তবে তিনজনকে একই সাথে কিভাবে সংযুক্ত করব সেটা আমার জানা নেই, ওদের সমস্ত চিন্তাভাবনা একত্রিত করতে হবে।“ বলে আজগর স্যার।
পাশ থেকে বিজ্ঞানী রহমান সাহেব বললেন “সেটা আমাদের উপর ছেড়ে দিন, সেটা কিভাবে করা যায় আমরা চিন্তা করব, এখন কি করা যায় সেটা বলুন”
“আমাদের হাতে সময় নেই, এখনই সব কিছু শুরু করতে হবে, এখন তিনজনই স্কুলে আছে, সেখানে যেতে হবে।“ জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে বললেন আজগর স্যার।
ফিউচার ইনকর্পোরেশোন ল্যাবরেটরির বড় একটি যান আছে, যেখানে ছোটখাট ল্যাবের সেটআপ আছে। বিজ্ঞানী রহমান সাহেব, আজগর স্যার এবং প্রধান বিজ্ঞানীর কর্মকর্তা শরিফ সাহেব রওনা দিলেন টিটুনদের স্কুলের দিকে সেই যানে চরে।
বিঃ দ্রঃ প্রথমে ভাবছিলাম ১২ পর্ব লাগবে শেষ করতে, তবে এখন দেখা যাচ্ছে ১১ পর্বেই শেষ করা যাবে।
আগের পর্বঃ ধারাবাহিক সায়েন্স ফিকশান উপন্যাস: ডায়েরি (পর্ব আট)
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:২৬
কাছের-মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
ছোট মোবাইলে গুগল ম্যাপে সারা দুনিয়া দেখা যায়, জুম ইন আউট করে এরিয়া অব ইনটারেস্ট খুব ভালভাবেই দেখা যায়, সেখানে এনার্জি ম্যাপ কেন দেখা যাবে প্রযুক্তি দিয়ে বুঝলাম না! আমার ধারনা না দেখা যাবার কোন কারন নেই অন্তত এই ফিল্ডে অনেক লম্বা সময় ধরে গবেষনা/কাজ করার অভিজ্ঞিতার আলোকে মনে হয়!! রেডিও sprectrum এ আঘাত হানলে আমার ধারনা যোগাযোগ ব্যাবস্থা পুরো না হোক ভয়াবহ ক্ষতি হবে, ফিজিকাল কানেকটিভিটি যোগ করা যেত।
সিরিয়াসলি আমি জানতাম না "মহামান্য" শব্দটা জাফর ইকবালের প্রেটেন্ট করা, এটি পাঠককে নস্টালজিক করতে পারে! যাইহোক বই আকারে বের করার আগে মাথায় রাখব শব্দটার ব্যাপারে!
২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩৫
সাসুম বলেছেন: আসলে এনার্জি ম্যাপ বলতে এটা অনেকটা ব্রডঃ স্প্রেক্টাম এর মনে হয়েছে আমার কাছে। তাই ভাব্লাম আর কি। যাই হোক, বড় কোন ব্যাপার না। সাই ফাই সাজানোর দায় একান্তই লেখকের।
আর আমি জাফর ইকবাল সহ মোটামুটি বাংলাদেশের সব সাইফাই পড়া হয়েছে বলতে পারেন। এই কারনে কমন ওয়ার্ড গুলো দেখলেই চিনতে পারি। আর বেশ কয়েকটা সাই ফাই প্রকাশের আগে লেখক্ রা পড়তে দিয়েছিল পান্ডূলিপি চেক করার জন্য, সেহেতু বাস্তবতার সাথে মিল খুজি সারাক্ষন। আর জাফর ইকবালের পেটেন্ট করা বলি নাই একবার ও, জাস্ট বলতে চেয়েছি, এই ধরনের টার্ম জাফর স্যার সব সময় ইউজ করেন উনার সাই ফাই তে।
বাট, কিশোর সাইফাই হিসেবে বেশ জমেছে।
আপনার বই এর জন্য শুভকামনা রইল। বাকি পর্ব গুলোর অপেক্ষায়। আপ্নাকেও ধন্যবাদ
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪২
কাছের-মানুষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল।
৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমার কাছে আপনার এই ফিকশন ধর্মি লেখা ভালো লাগে। আপনি খুবই সহজ করে লিখেন। বুঝতে বেগ পেতে হয় না।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: আমি চেষ্টা করি যেন স ধরনের পাঠক আমার লেখা পড়ে বুঝতে পারি। আপনার ভাল লাগে জেনে আনন্দিত হলাম।
নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল।
৪| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: পরের পর্ব
৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: চরম সাসপেন্স!!
++++
০৩ রা জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৪৬
কাছের-মানুষ বলেছেন: শেষ ক্লাইমেক্সের খুব কাছেই আছেন!
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:০৭
সাসুম বলেছেন: স্যার পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সেন্সর বসানো আছে, যেই সেন্সরগুলোর কাজ হচ্ছে যদি কোন এনার্জি বা বলের বড় ধরনের কোন তারতম্য দেখা যায় সেন্সরগুলো সেগুলো ধরতে পারে, এবং সেগুলো আমাদের এই ডিভাইসে কর্ডিনেটসহ পাঠায়, ডিভাইসে সেই এনার্জির তারতম্যকে ম্যাপে লাল রঙ দিয়ে প্রকাশ করে[/sb
গড়পড়তা এনার্জি স্পাইক বলতে আসলে অনেক বড় স্প্রেক্ট্রাম হয়ে যায় বলে আমার ধারনা। আর পুরা দুনিয়ায় ভিজুয়ালাইজেশানে যদি এই এনার্জি স্পাইক ক্লিয়ারলি ধরা পড়ে একটা ছোট স্ক্রিনে তাহলে ধরে নেয়া যায় সেই স্পাইক গুলোর সাইজ সাগর মহাসাগর পর্যায়ের এবং পুরা দুনিয়াকেই গ্রাস করেছে।
আমার মতে এখানে স্পেসিফিক ইলেক্ট্রিক সার্জ, বা ইলেক্ট্রোম্যাগ্নেটিক চার্জের তারতম্য, বা সিস্মিক এক্টিভীটি বা শুধু সেই এলাকাগুলোতে ইএমপি সার্জ এর মত করে সাজালে ভাল হত।
আর পুরা দুনিয়ার কানেক্টিভিটিকে আঘাত করতে খালি রেডিও ওয়েব এ আঘাত করলেই হবেনা আরো ব্যাপক আকারে আঘাত করা দরকার। এখন সাবমেরিন কেবল আছে ফিজিকাল কানেক্টিভিটি হিসেবে, ইভেন ইউ এস আর ইউকে এর মাঝে ট্রান্স আটলান্টিক কমিউনিকেশান কেবল আছে যাতে রেডিও সিগ্নাল ব্যহত হলেও কমিউনিকেশান চালু রাখা যায় ইউরোপ আর ইউ এস এর মাঝে। তাই আমার মনে হয় নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটিকে একদম নাই করে দেয়ার জন্য এলিয়েন দের অটোমেটিক দেখা যায়না এমন আক্রমন এর সাথে ফিজিকাল কানেক্টিভিটি লাইনেও আক্রমন করানোর দরকার ছিল।
এই পর্বে এসে কেমন যেন একটু খেই হারিয়ে ফেলেছে গল্পের গতি। ও হ্যা, টিটুন এর বাবার নামের আগে মহামান্য দেখে জাফর স্যার এর সাইফাই গুলার কথা আবারো মনে পড়ে গেছে। সরি ভাইজান
বাট ক্যারি অন, কিশোর সাই ফাই হিসেবে বেশ ভাল হচ্ছে। অপেক্ষায় আছি বাকি দুই পর্বের।