নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! !
২০১৩ সাল, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং -এ ব্যাচেলর এবং মাস্টার্স শেষ করেছি মাত্র। মাস্টার্সে থাকা অবস্থায়ই কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল ফান্ডে পিএইচডিতে ভর্তি হলাম। আমি যখন মাস্টার্স শেষ সেমিস্টারে পড়ি তখন দেখলাম কোরিয়াতে স্যামসাং-এ লোক নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাঞ্চের জন্য, ভাবলাম ইন্টার্ভিউটা দিয়ে দেই! গ্রাজুয়েশনের আগেই জানতে পারি স্যামসাং-এ চাকরিটাও হয়ে গেছে। সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদে জয়েন করতে হবে দেশে, বেতন মোটামুটি খারাপ না! আমার অবস্থাটা তখন 'চাকরীটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছ, আর মাত্র কয়েকটা দিন ব্যাস', তবে আফসোস দেশে আমার কোন বেলা বোস নেই! যাইহোক আমি সিদ্ধান্ত নিলাম দেশে ফিরব, আসলে অনেক লম্বা সময় বিদেশ থাকব এমন কোন ইচ্ছাই ছিল না! আমি দেশে ফিরব শুনে আমার বাসায় সবাই বেশ মনক্ষুন্ন হল, তারা ভেবেছিল হয়ত ছেলে বিদেশ চাকরি-বাকরি করে বিদেশী দিনার দিয়ে পকেট ভারি করবে, দেশে ফিরছে কেন শুধু শুধু। তবে তাদের এই ভাবনাটাকে আমি খারাপ ভাবে দেখছি না!
দেশে ফিরে চাকরিতে জয়েন করলাম। আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে পাড়া প্রতিবেশী যার সাথেই দেখা হয় সবাই আমাকে দেখে মুষড়ে পরে, এত ভাল সুযোগ থাকা অবস্থায়ও কেন দেশে ফিরলাম এই ভেবে তাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবার অবস্থা! তবে আমার তাতে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। দেশে ফিরেই জানালাম বিয়ে শাদী করে ঘর-সংসার করতে চাই, অবশ্য আমি যখন কোরিয়াতে ব্যাচেলর চতুর্থ বর্ষে পড়ি তখনই বাসায় মাকে ফোনে জানিয়েছিলাম শুভ কর্মটি সম্পাদন করতে চাই।
দেশে ফিরার মাস দুয়েকের মধ্যেই শুভ কর্মটি সম্পাধান করে ফেলি! কোরিয়াতে থেকে দেশে একেবারে খালি হাতে ফিরি নাই, সরকারী স্কলারশীপের টাকা আর ল্যাবে কাজ করে যা পেতাম, সেখান থেকে ভালই জমিয়েছিলাম। ল্যাবে আমি মোটামুটি ভাল টাকাই পেতাম। অন্তত আমি বাংলাদেশে চাকরিতে যে বেতনে আসছি তার ডাবলের বেশী ল্যাব থেকেই পেতাম। আমাদের মধ্যবিত্ত সংসারে মাঝে মাঝে টাকা পাঠাতাম, অনেক সময় লাখ টাকার উপরেও পাঠাতাম একত্রে তখন। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, আমি করিয়াতে যেই ল্যাবে কাজ করতাম সেই প্রফেসরও আমাকে পিএইচডির অফার করেছিল। সেই প্রফেসর বাংলাদেশে আমাদের বাসায় এসে মাকে বলেছিল আপনার ছেলেকে আরো পাঁচ বছরের জন্য আমাকে দিন। ও বিয়ে করে বউ নিয়ে আসুক, আমি খরচ দিব আর মাসে মাসে আপনাদের আশি হাজার টাকা দিব সংসার পরিচালনার জন্য। সেই হিসেবে অর্থনৈতিকভাবে চিন্তা করলে দেশে আসা ছিল একেবারেই লস প্রজেক্ট, তবে কথায় আছে না দেশ প্রেম! আসলে দেশ প্রেমে উজ্জীবিত হয়েই দেশে ফিরেছিলাম!
আমাদের বাসা ঢাকায়, আমাদের বাসার কয়েকটা ঘর বাড়া দেয়া আছে আর একটা পুরোনো বিল্ডিঙে আমরা নিজেরা থাকতাম। দেশে আমার জমানো টাকা আর ব্যাংক লোণ নিয়ে সেই বিল্ডিংটা পাঁচতলা ফাউন্ডেশন দিয়ে দোতালা করলাম! বিয়েও করলাম নিজের টাকা দিয়ে, সেই দিকে নিজের মনে একটি সুপ্ত অহংকার কাজ করত সবসময়!
চাকরি এবং সংসার ভালই চলছিল। তবে ২০১৩ সালে তখন দেশে তাণ্ডব চলছিল! প্রতিদিন বাস পুড়ানো, মিটিং মিছিল এগুলো যেন নৈমিত্তিক ঘটনার পরিণত হয়েছিল! আমার অফিস ছিল কাওরান বাজারে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অফিস করতাম। বাসে সীট পাওয়া ছিল ভাগ্যের ব্যাপার, আর জ্যামের কথা নাইবা বললাম। অফিস শেষে বাসে ওঠার প্রতিযোগিতা করতে হত, বাসের ভিতর গাধাগাধি অবস্থা। একবার কেউ বাসে উঠে পরলে দেখতাম সেও নতুন কেউ যাতে উঠতে না পারে সেভাবে কন্টাকটারকে তাগাদা দিত! এত কিছুর পরও চাকরীটা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। আসলে যেভাবেই হোক দেশেই থাকব এরকম চিন্তা নিয়েই দেশে ফেরা!
চাকরীর বছর খানেক পার করে দিলাম। স্যামসাং এ চাকরিটা দেশের সবার জন্যই আকর্ষণীয়, তাই বুয়েট, কুয়েট থেকে শুরু করে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে প্রতিযোগিতা করে জয়েন করত। ২০১৪ সাল থেকেই স্যামসাং মোটামুটি অর্থনৈতিক ভাবে ধাক্কা খায়, তারা সিদ্ধান্ত নেয় প্রায় অর্ধেকের বেশী কর্মী ছাটাই করবে, স্যামসাং এ তখন প্রায় ৬০০ জনের মত কাজ করে! আমি খুব কাছ থেকে তখন দেখলাম দেশের মেধাবী সেই মুখগুলোর মলিন চেহারা। সবাই দু-চিন্তায়,কার কখন চাকরী যায় এই চিন্তায় সবাই অস্থির। এমনও হয়েছে অফিসে এসে শুনলাম ঘুব ঘনিষ্ঠ কারো চাকরি চলে গেছে, সবার ভিতরেই অস্থিরতা, কারণ চাকরী হারালে বাংলাদেশে নতুন একটি চাকরী যোগার করা খুব একটা সহজ নয়। তার-উপর স্যামসাং এর এই অবস্থা সারা দেশের আইটি সেক্টর ওয়াকিবহাল এবং তারা এর সুযোগ নিচ্ছিল। তারা সেই সুযোগে লোকবল নিতে আগে যেই টাকা অফার করত এখন অনেক কম করছে। আইটি মার্কেটে প্রবল অস্থিরতা বিরাজ করছিল। আমি না হয় নিজের বাসায় থেকে অফিস করি, আমার অনেক কলিগই ঢাকায় ভাড়া থেকে অফিস করে, তারা বলত বাসা ভাড়াই গুনতে হয় মাসে ত্রিশ হাজারের মত, হঠাত চাকরী হারালে বেকায়দায় পরতে হবে।
আমি নববিবাহিত, চাকরী হারানোটা ইজ্জতের শাওয়াল তার-উপর ব্যাংক লোণ আছে বাড়ির জন্য। চিন্তা করলাম কবে কি ঘটে এর চেয়ে ভাল অন্য একটি চাকরী জোগাড় করি। আমার রিসার্চে প্রোফাইল খুব একটা খারাপ না, অন্তত বাহিরে একটা কিছু চাইলেই করা যাবে! তারপরও দেশেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলাম। প্রতিদিনই অফিস থেকে ফিরেই বিভিন্ন জায়গায় চাকরির আবেদন করতে লাগলাম। আমি প্রায় ৩০/৩৫ টার মত চাকরীতে ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম, সেই হিসেবে দেশের চাকরীর বাজার, কর্পোরেট কালচার সম্পর্কে ভালই ধারনা আছে! আমার বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছে, তার কয়েকটা বলা যাক।
একটি কোরিয়ান মাল্টি-ন্যশনাল কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে গেলাম। টেকনিক্যাল পজিশন, সম্ভবত উত্তরা অফিস ছিল যতদূর মনে পরে। কোন রকম অফিস থেকে সময় ম্যানেজ করে গেলাম ইন্টারভিউ দিতে। দুপুরের রোধ এবং জ্যাম ঠেলে আশা নিয়ে ইন্টার্ভিউ দিতে গেলাম। আমাকে বলল লিখিত পরীক্ষা হবে, আমি সম্মতি-সরূপ মাথা ঝাঁকালাম। আমি ভাবছিলাম টেকনিক্যাল পজিশন তাই হয়ত টেকনিক্যাল বিষয়ে লিখিত পরীক্ষা হবে। অনেকক্ষণ বসিয়ে রেখে শেষে একটি খাতা আর একটি ডকুমেন্ট ধরিয়ে দিল আমাকে। ডকুমেন্ট খুলে দেখি কোরিয়ান লেখা, আমাকে এই কোরিয়ান লেখাগুলোকে ট্রান্সলেশন করতে হবে! আমি আকাশ থেকে পড়লাম, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদের লিখিত পরীক্ষার জন্য কোরিয়ান ট্রান্সলেশন!! আমি হাসব নাকি কাধবো বুঝতে পারলাম না! আমার জায়গায় তখন চিত্র-নায়ক জসীম হলে ততক্ষণে নিশ্চয়ই ক্ষোভে সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলত, তবে ভাগ্য ভাল আমি নায়ক জসীম নই তাই রাগ সংবরণ করলাম।
আরেক জায়গায় গিয়েছি ইন্টার্ভিউ দিতে, সেটাও উত্তরা হবে মনে হয়। গিয়েছিলাম বিকেলে, অপেক্ষা করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেল আর এদিকে আমি তখনো কিছুই খাইনি। ক্ষুধায় আমার পেট চো-চো করছে। অবশেষে দুজন এলো আমার ইন্টার্ভিউ নিতে, এসেই খুব ব্যস্ততা দেখাচ্ছে, তারা নাকি সেদিন রাতেই মালয়েশিয়া যাচ্ছে, আমার সাথে খশ গল্প শুরু করছে, দারুণ ব্যস্ততা যাচ্ছে। একজনের দেখলাম পেটটা সামনের দিকে সিজদা দিয়ে আছে, ভদ্রলোক মাল্টি ট্যালেন্টেট, কানাডার কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি পড়ান মুখ ফুলিয়ে বললেন, আমি নিজেকে অনেক কষ্টে সংবরণ করলাম।
আরেকটা ইন্টারভিউ এর কথা মনে পরছে সেটা ছিল শুক্রাবাদে মনে হয়। গিয়ে দেখি অনেককে বসিয়ে রেখেছে। কিছুক্ষণ পরপর একজন করে ভিতরে ডাকে, আমার ডাক পরল, আমি ভিতরে গেলাম। ইন্টারভিউ শেষে আমাকে জানাল এটা নাকি পার্মানেন্ট পজিশন না,চুক্তি ভিত্তিতে তাদের সাথে কাজ করতে হবে, অথচ চাকরির সার্কুলারে এগুলো লেখা ছিল না। দেশের কর্পোরেট কালচার যে এখনো প্রফেশনালিজম শিখে নাই, এখনো নাবালক অবস্থায়ই আছে সেটা টের পেলাম। আমি বিভিন্ন ধরনের বিব্রতর অবস্থায় পরেছি ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে, আমার মনে হয় প্রার্থীদের তারা মানুষ মনে করে না!
যাইহোক অনেক খুঁজাখুঁজির পর একটি কোম্পানিতে চাকরী হল, সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে, একটি ছোট এন্ড্রয়েড টিমের হেড হিসেবে। স্যামসাং-এ প্রায় দুই বছর চাকরি করার পর চাকরিটা ছেড়ে নতুন চাকরিটাতে জয়েন করি। আসলে স্যামসাং-এর চাকরিটা করতে পারতাম তবে কোম্পানির অবস্থায় ভরসা করতে পারছিলাম না, কখন কি হয় এই ভেবে। যাইহোক নতুন কোম্পানিতে আমার রিপোর্টিং ম্যানেজার ছিল কোম্পানির সিইও। সপ্তাহে ছয়দিন অফিস, সকাল নয়টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত। তবে মালিক পক্ষ চায় রাত পর্যন্ত যেন কাজ করি, বিভিন্নভাবে বলেছেও আমাকে!
নতুন কোম্পানিতে একটি কাজ দিয়ে কিছুক্ষণ পরপর সেটার আপডেট চায়। যারা সফটওয়্যার ফিল্ড-এ আছে তারা জানে এখানে প্রতিদিন আপডেটের কিছু থাকে না আসলে, মাঝে মাঝে ছোট একটি সমস্যার সমাধান করতে কয়েকদিন লেগে যায় আবার কোন সময় দেখা গেল কঠিন সমস্যাও সহজেই সমাধান হয়ে যাচ্ছে! প্রতিদিন রাত হয়ে যেতে বাসায় ফিরতে, রাস্তায় জ্যাম, বাসে অতিরিক্ত মানুষ, গরমে সিদ্ধ হয়ে বাসায় ফিরতাম। লম্বা সময় বিদেশ থেকে দেশে এসে এই ব্যাপারগুলো আমার মানিয়ে নিতে বেগ পেতে হচ্ছিল, তার উপর অফিস পলিটিক্স এর সাথে আমি অভ্যস্ত না। আসলে স্যামসাং- এ যেই টাকা বেতন পেতাম তার চেয়ে আরো একটু কম বেতনেই এখানে জয়েন করছিলাম। আসলে বললাম না দেশ ছাড়ার কোন ইচ্ছেই আমার ছিল না, দেশ প্রেম বলে একটা কিছু আছে সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝছিলাম।
স্যামসাং একটি ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি, তাই এর কালচার দারুণ ছিল। তবে লোকাল কোম্পানিতে কাজ করে বুঝতে পারলাম কত আটায় কত রুটি হয়! আমার ব্যক্তিগতভাবে মতামত আমাদের দেশের বেশির ভাগ কোম্পানির মালিক কর্মীদের চাকর ভাবে! নতুন চাকরীর কয়েক মাস না যেতেই চেষ্টা করলাম আবার নতুন চাকরী খুঁজতে। আসলে এভাবে কাজ করা যায় না! জীবনটা যেন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে, একে-তো বাসা থেকে অফিস যাতায়াতে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থাকতে হয় তার উপর অফিসে কাজ করে মজা পাচ্ছিলাম না। আমার বউ আমাকে প্রায় তাড়া দিত বিদেশ যেতে, তবে আমি তারপরও লেগে ছিলাম। ওই যে দেশ প্রেম!
আমারদের প্রথম সন্তান হবে, বউ আমাকে বুঝালো বিদেশে বাচ্চা উৎপাদনের ফজিলত অনেক বেশী। বিদেশে বাচ্চা উৎপাদন করতে পারলে তার ভবিষ্যৎ ফকফকা হবে। আমিও ততদিনে বুঝে গেলাম দেশে আসলে আমার দেবার মত কিছু নেই। অনেকেই দেশে চায়ের দোকানে বসে ঝড় তুলে আর বলে মেধাবীরা দেশ থেকে চলে যাচ্ছে, এতে বহুত ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে, আমি সেটা মনে করি না। আমি নিজেকে মেধাবী হিসেবে দাবি করছি না। আমার মতে মেধাবীরা দেশ থেকে গেলে হয়ত পরোক্ষভাবে দেশের লাভ! দেশে থাকলে যেই চাকরিটা করতাম, বিদেশে যাবার ফলে আমার জায়গায় অন্য কেউ সেই চাকরীটা করছে হয়তবা। তাছাড়া আমাদের আইটি সেক্টরে যেই লেভেলে কাজ হয় সেটা আসলে বলা যায় শিশু লেভেলের কাজ। এই কাজ করার জন্য বিদেশ থেকে বড় বড় ডিগ্রিধারীর দরকার নেই! বরং বাহিরে যেতে পারলে নিজেই দক্ষতা ভালভাবে কাজে লাগানো যায়!
চিন্তা করলাম বিদেশেই চলে যাই, আমার আর দেশকে দেবার মত কিছু নেই। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কে হল? চায়না কি পরবর্তী সুপার পাওয়ার হবে? অথবা আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ কি? এইগুলো নিয়ে চিন্তা করার চেয়ে ভাবলাম নিজের পরিবার নিয়ে ভাবি। অবশেষে কয়েক মাসের মধ্যেই ডেনমার্কে পিএইচডি যোগাড় করে ফেললাম। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি বউসহ চলে গেলাম ডেনমার্কে।
কোরিয়া থেকে দেশে ফিরে গিয়েছিলাম এই নিয়ে আমার কখনো দুংখ বোধ ছিল না এবং এখনো নাই কারণে কথায় আছে খারাপ সময় মানুষকে অনেক কিছু শিখায়! প্রায় আড়াই বছরে দেশে থেকে আমি দেশের কর্পোরেট কালচার, মানুষ, পরিবার পরিজন সবাইকে আরো ভালভাবে চিনতে পেরেছিলাম। বিয়ের পর আসলে সম্পর্কের সূত্রগুলোর পরিবর্তন হয়, পারিবারিক প্রত্যাশা, দায়িত্বের চাপ হঠাত এসে যেন ধাক্কা খেয়েছিল আমার উপর। আমি নিজের দুর্বলতা এবং শক্তিগুলোকে তখন উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম। তাই সেই অভিজ্ঞতাটা বড্ড দরকার ছিল আমার।
ডেনমার্কে পিএইচডিকে চাকরি হিসেবে চিন্তা করে অর্থাৎ একজন ছেলে মাস্টার্স শেষ করে ইন্ডাস্ট্রিতে যেই বেতন পায় পিএইচডিতে তারা সেই বেতন পায়। তার-উপর আমার দুই বছরের উপরে চাকরির অভিজ্ঞতা তাই বেতনও ভালই পেতাম! কোরিয়াতে থাকাকালীন আমি আসলে সেভিং এ জোর দেই নাই, সেটা আমার মাথায়ই ছিল না তবে ডেনমার্কে সেই ভুল কম করার চেষ্টা করেছিলাম। মাসে ভাল টাকা সেইভ করতে পারতাম, ব্যাংক লোণও শোধ করে ফেলেছিলাম। ডেনমার্ক থেকে পিএইচডি শেষ করলাম ২০১৯ সালের নবেম্বরে, পিএইচডি ডিগ্রি এবং মোটামুটি ভাল অংকের টাকা নিয়ে দেশে ফিরলাম। আমি বিজনেস পারিনা,তাই জমানো টাকা দিয়ে একটি জায়গা কিনে রাখলাম।
যাইহোক বউ আমার হতাশ হল। কারণ সে আশায় ছিল ডেনমার্কে বাচ্চা উৎপাদন করলে হয়ত বাচ্চা ডেনিশ নাগরিকত্ব পাবে। তবে আমার ছেলে পেল না, তবে এতে আমার চেহারার কোন দোষ নাই! আমার চেহারা খারাপ এর জন্য যে নাগরিকত্ব পেল না ব্যাপারটা এমন না। ডেনমার্কে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেয়া হয় না! আসলে পিএইচডির প্রথম বর্ষে থাকতেই আমাদের ছেলের জন্ম হয়। আমার বউকে হতাশ দেখে বললাম নো চিন্তা ডু ফুর্তি, আমার ছেলের ব্যবস্থা একটি আমি করবই! আমি ডেনমার্ক থেকে পিএইচডি করে দেশে ফিরলাম ২০১৯ এর নবেম্বরে, তখনো নতুন কোন চাকরির ব্যবস্থা হয়নি!
পিএইচডি করা মানে দেশে আমি ওভার-কোয়ালিফাইড, ইন্ডাস্ট্রির দরজা আমার জন্য বন্ধ! আমার একমাত্র পথ হচ্ছে ইউনিভার্সিটি। তবে দেখলাম সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার চাকরি হবে না কারণ আমি সেকেন্ড ক্লাস নাগরিক। আর সেকেন্ড ক্লাস নাগরিকের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরী হয় না! সেকেন্ড ক্লাস নাগরিক মানে আমি ব্যাচেলর করেছি কোরিয়া থেকে, বাংলাদেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অলিখিত নিয়ম হচ্ছে কেউ বাংলাদেশ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি না নিলে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবে না যদিও আমি এই দেশের নাগরিক! তারা দরকার পরে ব্যাচেলর ডিগ্রি-ওয়ালা কাউকে শিক্ষক বানাবে তারপরও এর বাইরে যাবে না! পিএইচডি ডিগ্রি এই দেশে কোন মূল্য নাই! তবে দেশে আমি মানান সই নই সেটা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম।
ডেনমার্ক থেকে দেশে আসার সপ্তাহ-খানেক পরে আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোষ্ট-ডোকরাল রিসার্চার পজিশোনে ডাক পেলাম। ২০২০ সালে চলে এলাম আমেরিকায় আর এ বছর আমার পরিবারসহ গ্রিন কার্ড পেলাম। তাই আমি বলব আমি দেশে ফিরার চেষ্টা করেছি, আমি আয়েশী জীবন এবং পশ্চিমাদের নরম বিছানায় আর কোল বালিশে শুয়ে থাকার লোভে বাহিরে আসি নাই, আমি দেশে ফিরতে চেয়েছিলাম এবং চেষ্টা করেছিলাম। আমি আনন্দিত আমি দেশে গিয়েছিলাম। যাইহোক আমি এখন অনুধাবন করতে পারি যারা দেশে বেসরকারী চাকরীজিবী তাদের অবস্থা কেমন। তারাই আসলে সত্যকারে যোদ্ধা, তারাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আর আমরা যাদের সুযোগ আগ আছে তারা চলে আসছি মানে পালিয়ে আসছি! তাই আমার টুপি খোলা শ্রদ্ধা সেই সত্যিকারে যোদ্ধাদের প্রতি!
আজ এই পর্যন্তই। জগতের সকল প্রানী সুখী হোক!
আমার স্মৃতিচারণমূলক পোষ্টসমূহঃ
স্মৃতিচারণঃ আমি একটি এপোলজি নোট লিখতে চাই
সদ্য ফেলে আসা কিছু অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতা
যেমন চলছে জীবন
কাজী সাহেব সমাচার
আমার প্রথম মোছ বিসর্জনের গল্প
আমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, অতঃপর...
গুরু সেই নার্সারী থেকে শুরু
একটি অদ্ভুদ গাছের গল্প
চুরি বিদ্যা
খেয়ে যায় মোছওয়ালা নাম পরে দাড়িওয়ালার
বন্ধু এবং বন্ধুত্ব
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৫৫
কাছের-মানুষ বলেছেন: আসলে আমার লেখার আমার সংগ্রাম এবং সেটা অতিক্রমের গল্প বলতে চেয়েছি, বলতে চেয়েছি দেশে চেস্টা করেছিলাম এবং সেই অভিজ্ঞতা আমাকে পরিনত করেছে। বিদেশে থাকা মানে খারাপ নয়, সুযোগ থাকলে অবশ্যই যাওয়া উচিত। মনে কিছু করবেন না আপনার হুট করে দেশে চলে আসা মনে হয় ঠিক হয়নি! পরিবার সবার আগে। পৃথিবীটা এখন একটি দেশ আমরা এই পৃথিবীর নাগরীক।
আপনি অবশ্যই সুযোগ থাকলে বাহিরে অপশন দেখতে পারেন।
২| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৩২
মিরোরডডল বলেছেন:
ব্যক্তিজীবনের অনেক অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য থ্যাংকস ।
বাংলাদেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অলিখিত নিয়ম হচ্ছে কেউ বাংলাদেশ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি না নিলে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবে না যদিও আমি এই দেশের নাগরিক!
তাই নাকি! এ বিষয়টা জানা ছিলো না ।
তাই আমি বলব আমি দেশে ফিরার চেষ্টা করেছি, আমি আয়েশী জীবন এবং পশ্চিমাদের নরম বিছানায় আর কোল বালিশে শুয়ে থাকার লোভে বাহিরে আসি নাই, আমি দেশে ফিরতে চেয়েছিলাম এবং চেষ্টা করেছিলাম।
এ জবাবদিহিতা কার কাছে এবং কেনো !
অপরচুনিটি থাকলে এক্সপ্লোর করবে এবং বেটার লাইফ লিড করলে সমস্যা কোথায় !
শুধু বাংলাদেশ থেকে না, পৃথিবীর অনেক দেশেই মানুষ অভিবাসী হয়ে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যায় ।
ডিপেন্ড কে কি চায় বা কার সাথে কোনটা মানিয়ে যায় ।
দেশপ্রেম বা দেশের জন্য কিছু করার ইচ্ছে থাকলে বাইরে থেকেও করা যায় ।
পরিস্থিতি ডিম্যান্ড করলেও দেশে ছাড়া যাবে না এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই ।
সমগ্র বাংলাদেশ থেকে হাজার লক্ষ কতো মানুষ প্রতিনিয়ত অনেক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় আসে,
কষ্ট করে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে থেকে যায় ভালো কিছু করার জন্য ।
তাদের সাথে কোন ডিফারেন্স নেই যখন দেশ ছেড়ে সুন্দর কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে দেশের বাইরে যায়,
ওটাকে কেনো বলবো ভালো থাকার লোভে?
It sounds so bad, isn’t it?
যাইহোক, সময়ের সাথে মানুষের ইচ্ছা চাওয়া এগুলো পরিবর্তন হয় ।
At the end you did whatever is good for you and your family.
Nothing wrong with this man!
I wish you won’t regret for your decision.
I’m sure you’re enjoying your life and you will.
ইচ্ছে হলে আবারও ফিরে যেতেই পারে ।
মাতৃভূমি ছিলো আছে থাকবে ।
দেশের প্রতি ভালোবাসাও থাকবে ।
কিন্তু জীবনের প্রয়োজনে বাইরে থাকলে গিল্টি ফিল করার কিছু নেই ।
Good luck for your upcoming career and personal life.
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৪৯
কাছের-মানুষ বলেছেন: আসলে কারো কাছে কোন জবাবদিহীতা নয়। আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং সংগ্রাম শেয়ার করতে চেয়েছি মাত্র, আমার দেশে থাকাকালীন যুদ্ধ আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। অভিবাসন খারাপ নয়, এটা সারা পৃথিবীতেই মানুষ করে, এটা খারাপ ভাবার কোন কারন নেই। আমি শুধু বলতে চেয়েছি সেই সময় দেশে যাওয়াটা আমার বেস্ট সিদ্ধান্ত ছিল, এবং সময় মতো চলে এসেছি এটাও ভাল সিদ্ধান্ত। আমি আমার সিদ্ধান্ত খুশী এবং প্রফেশনাল এবং ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে আনন্দে আছি এবং সবচেয়ে ভাল সময় পারছি, ঘুরছি, যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাচ্ছি, বিন্দাস জীবন, আর ভ্রমন আমার প্রিয় সেই স্বপ্নগুলো পূরন হচ্ছে।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৩৬
রবিন.হুড বলেছেন: কঠিন বাস্তবতা। সমস্যার মাঝে সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে হবে।
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৫৬
কাছের-মানুষ বলেছেন: অবশ্যই সমস্যার মাঝে ঘুরে দাড়াতে হবে। দেশে যারা কর্পোরেট জব করছে তারা বেশীর ভাগই যুদ্ধ করছে।
৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:০০
কামাল৮০ বলেছেন: চাকরি করিনি তাই চাকরির বিষয় আসয় ভাল জানবো না।দেশে চাকরি করার নাম কি দেশ প্রেম।বা দেশে থাকার নাম দেশ প্রেম।দেশ প্রেম বিষয়টা আসলে কি।
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৩৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: "প্রশ্নগুলো সহজ আর উত্তর-ওতো জানা!"
৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:০৮
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আপনার লেখা পুরোটাই পড়লাম। আপনার জীবন যুদ্ধের কাহিনী অম্লমুধুর বটে। আমাদের দেশে কোথাও কোন নিয়মের বালাই নেই যে যেভাবে পারে সেভাবেই চলছে।
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৩৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: আমার আসলে কোন অভযোগ নেই। নিজের স্মৃতিচারন করলাম। পিছনে ফিরে তাকালে ভাল লাগে মাঝে মাঝে।
৬| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:১০
খাঁজা বাবা বলেছেন: পরিবার পরিজন, বন্ধু স্বজন ফেলে বিদেশে থাকাও বেশ সহজ নয়।
আমি যেখানে কাজ করি সেখান থেকে বিদেশে ট্রান্সফারের সুযোগ এসেছিল দুবার।
তবে সাহস করে আগাতে পারিনি।
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৩৬
কাছের-মানুষ বলেছেন: ভাল সুযোগ পেলে সেটা নেয়া উচিত আমি মনে করে। এখন ভাল আছেন আশা করি, নিজে তৃপ্তি থাকাটা দরকার, তৃপ্ত থেকেই সুখ আসে!!!
৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:১১
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। শুভ কামনা।
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৩৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: বেশী কিছু না, বেশীরভাগ মানুষেরই সংগ্রামের ইতিহাস থাকে, কারো অনেক কম এবং কারোটা দ্বীর্ঘ হয়, এই যা! তবে সবগুলো সম্পদ।
৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৫০
ইএম সেলিম আহমেদ বলেছেন: আপনার জীবনের ঘটনা শুনে অনেক ভূল ধারনা ভেঙে গেল। ধন্যবাদ এবং স্যেলুট জানায় আমাদের সকল রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের যারা দেশ টা কে এখনো শ্রীলংকা হতে দেন নি। সেই সাথে দুঃখিত, আপনাদের কে আমরা আজও সঠিক সম্মান দিতে পারিনি। আমাদের ক্ষমা করে দিয়েন । শুভকামনা রইলো।
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪০
কাছের-মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। আসলে প্রসংসা কুড়ানোর জন্য এই পোস্ট না, সব সময়ে সফলতার গল্পই করি, আজ না হয় কঠিন সময়ের গল্প করলাম৷
ভাল থাকবেন সবসময়।
৯| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৫৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
আপনার যাপিত জীবনের একটি নির্দিষ্ট অংশের কথা খুবই গুছিয়ে লিখেছেন। সবটাই পড়লাম। আপনার দেশে থাকার ইচ্ছের বিষয়টিও খুব পরিষ্কার বুঝা গেছে। আপনার ও আপনার পরিবারের জন্য শুভতামনা রইলো।
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: সফলতার গল্পইতো সবসময় করি, আজ ভাবলাম জীবনের এই সময়টার গল্পও বলা উচিত। নিজের জীবন নিয়ে এই সিরিজে আমার বিভিন্ন সময়ের ভাবনা উঠে আসে, যেমন উপরের লিংক এ "কাজী সাহেব সমাচারে" এ আছে আমার বিয়ে নিয়ে করুন কাহিনীর কথা। উপরের কিছু লিংক আছে, সেগুলো সব নিজের অতীত নিয়েই।
১০| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৫৪
ফুয়াদের বাপ বলেছেন: অনেক লম্বা লেখা তবু কখন যে এক নিশ্বাসে পড়ে ফেললাম। লেখার পরতে পরতে যেনো নিজেকে খুঁজে পেয়েছি কয়েকবার।দেশে ইন্টারভিউ/অফিসের কর্ম পরিবেশ/কর্পোরেট রাজনীতি/যাতায়াত/স্বজনপ্রীতি ইত্যাদিতে ত্যাক্ত-বিরক্ত না হয়ে উপায় নেই।
প্রবাস জীবন কখনোই প্রত্যাশা করতাম না, মনের ভেতার চেতনা ছিল মেধার সবটুকু দিবো দেশের তরে। প্রবাসী উপর্জনের রেমিটেন্স যাচ্ছে দেশে তবে প্রত্যক্ষভাবে দেশের সেবা করতে না পারার কষ্টটা মনে জমে থাকে সবসময়।
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪৯
কাছের-মানুষ বলেছেন: এই লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন এবং নিজেকে রিলেট করতে পেরেছেন দেখে ভাল লাগল। আসলে অনেকের মানুষের জীবিনের ঘটনা এগুলো, আমি নিজের সংগ্রামের কথা বলছি অনেকে বলে না হয়ত! অনেকেই দেশে থেকে প্রতি নিয়ত এগুলোর সম্মুখীন হচ্ছে!
পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।
১১| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৫৬
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: স্যেলুট আপনাকে।
২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪৯
কাছের-মানুষ বলেছেন: পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।
১২| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:০৭
ঢাবিয়ান বলেছেন: আমি কখনই দেশে থাকতে চাইনি। সবসময় চেয়েছি বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে বিদেশেই সেটল হতে। আর তাই মাস্টার্স এর পরেই পারি জমিয়েছি বিদেশে। স্থায়ীও হয়েছি। কিন্ত এই মধ্যবয়সে এসে দেশটা চুম্বকের মত টানছে। ইচ্ছে করে সব ছেড়ে ছুড়ে চলে যাই কিন্ত বাস্তবতা সে সুযোগ দেয় না। তবে রিটারমেন্ট পিরিয়ড দেশেই কাটাবো বলে স্থির করেছি।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে বিদেশে সুযোগ পেলে চলে যাওয়াই উচিত। নিজের দেশকে সেবা দিতে চাইলে প্রবাস থেকে আরো বেশি করে দেয়া সম্ভব। কিন্ত দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে যে আমাদের দেশ, বিদেশে মেধাবী ও ভাল প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশীদের সেবা নিতে একেবারেই আগ্রহী না।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩০
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন চলে গিয়ে! আমার মনে হয় যে ভাবে ভাল থাকে সেভাবে চলা উচিৎ। আসলে নিজের দেশের প্রতি সবার একটি আলাদা টান থাকে, তাই মানুষ কোন এক সময়ে নীড়ে ফিরতে চায়, নস্টালজিক হতে চায়, আপনার হয়ত এখন তাই মনে হচ্ছে!
আমার ছোট বেলায় বিদেশ নিয়ে এরকম ছিল তবে কোরিয়াতে অল্প বয়সে গিয়েছিলাম, শৈশব-কৈশোরের সময়কে মিস করতাম তাই চেয়েছিলাম দেশে ফিরতে পড়াশুনা শেষ করে। মানুষ যখন পড়াশুনা করে মাত্র বের হয় তখন তাদের চিন্তাভাবনা একরকম থাকে, দুনিয়াটা যেরকম ভাবে আসলে সেরকম নয়! তবে আমার এখন মনে হয় না ফিরলে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক দেখা হত না! এতে সুবিধা হয়েছে দেশে এবং বাহিরে এই দুই জায়গার পার্থক্যটা বেশ ভালভাবে বুঝতে পেরেছি, তাই চলে এসেছি, চেষ্টা করেছিলাম এতে আমি তৃপ্ত। তবে দেশের সাথে অবশ্যই সম্পর্ক থাকবে সারাজীবন।
১৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:২৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে বেশ বোঝা যায়, আপনি একজন বাস্তববাদী মানুষ। ভালো মন্দ বিবেকের নিক্তিতে ওজন করে মূল্যায়ন করতে পারেন। আর এটা যারা নিরপেক্ষভাবে করতে পারে, তারা নিজেকে চিনতে পারে (know thyself)। আর আপনি নিজেকে চিনতে পেরেছেন বলে নিজের চাওয়া পাওয়াগুলোকে বিশ্লেষণ করতে পেরেছেন এবং সে অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন। আমার কাছে বিভিন্ন সময়ে নেয়া আপনার সিদ্ধান্তগুলোকে সঠিক মনে হয়েছে। সব শেষের সিদ্ধান্তটাও সঠিক এবং সময়োপযোগী বলে মনে হয়েছে। আপনার জন্য শুভকামনা---।
আপাততঃ এটুকুই বলে গেলাম। পরে আরেকবার পোস্টে আসার ইচ্ছে রয়েছে।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩১
কাছের-মানুষ বলেছেন: সত্যকার অর্থে সেই বয়সে বিদেশ যাওয়াতে একটা সুবিধা হয়েছিল সেটা হল আমার সাথে যারা বাংলাদেশী ছাত্র ছাত্রী ছিল তাদের অনেকেই বাংলাদেশের কোন না কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিল, স্বাভাবিক ভাবেই সেই বয়সে তাদের সান্নিধ্য হয়ত আমাকে সমৃদ্ধ করেছিল, তাদের বিভিন্ন ধরনের সু-পরামশ্যই ছিল এক সময় আমার প্রধান খাদ্য! দেশে থাকলে সেই বয়সে সেই সুযোগ পেতাম না হয়ত!
আমি বাস্তব বাদী কিনা জানি না, তবে চেষ্টা থাকে যে কোন কাজে বায়াস না হয়ে নিজের বিবেকের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করার। তবে কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষ তার সেরাটা দিতে পারে আমার বিশ্বাস, অনেক সময় দুর্বলতাও নিজের শক্তি হয়ে দাড়ায়!
আপনার আন্তরিক মন্তব্য আমাকে সব সময়ই অনুপ্রাণিত করে। ধন্যবাদ আপনাকে।
১৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা খুব মন দিয়ে দুবার পড়লাম।
আপনি ভালো থাকুন।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩২
কাছের-মানুষ বলেছেন: ভাল লাগল দুবার পড়েছেন দেখে কৃতজ্ঞতা রইল!
তবে কথায় আছে দানে দাইন তিন দাইন। ইয়ে মানে আরেক পড়ে হ্যাট্রিক করে ফেলতে পারেন!
১৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৪৬
অপু তানভীর বলেছেন: দেশের বাইরে গিয়ে থাকবো এমন চিন্তা আসলে কোন দিন মাথায় আসে নি । দেশেই থাকবো দেশেই মরবো টাইপ মনভাব ছিল । এখনও সত্যি বলতে তেমনই আছে । এটা আসলে জন্মস্থানের প্রতি একটা সহজাত প্রবনতা । আপনি চেষ্টা করেছিলেন দেশে থাকার ! চেষ্টা করেছিলেন । এটাই আসলে অনেক । তবে ঐ যে বললেন যেখন বিয়ে হয়, তখন অনেক দায়িত্ব চলে আসে অনেক কিছু বদল হয় !
যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন এটাই বড় কথা !
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩২
কাছের-মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার আন্তরিক মন্তব্যের জন্য।
হ্যা এটা সত্যি জন্মস্থানের প্রতি একটি দূর্বলতা থাকে, এটা কাটিয়ে উঠা যায় না। আসলে যার যেখানে ভাল লাগে সেখানে থাকা উচিৎ, আপনি দেশে থেকে যদি তৃপ্ত হন, সেটাই আসল সুখ।
ভাল থাকুন।
১৬| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩১
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: চমৎকার লেখনি।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।
১৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৪
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: যত কষ্টেই থাকি, আমার কখনোই দেশ, পরিবার ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করেনি।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: যেভাবে ভাল লাগে সেভাবে থাকাই উচিৎ আমার মনে হয়। তবে মাঝে মাঝে পরিবার ছেড়ে যেতে হয় নিজেকে এবং সবাইকে ভাল রাখতে, সময়ের সাথে মানুষের ভাবনার পরবর্তন হয়!
পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।
১৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৬
জোবাইর বলেছেন: জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করে এমন আরো অনেকের কাছে দেশের অভাব-অভিযোগ নিয়ে শুনেছি। সবগুলো অভিযোগ প্রায় একইরকম। কে কোথায়, কখন, কী কারণে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেবে তা প্রতিটি মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। এতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। অনেকে বিদেশে থেকেও দেশের জন্য সামর্থনুযায়ী অনেক কিছু করার চেষ্টা করে।
কিন্তু এভাবে সবাই পালিয়ে বা এড়িয়ে গেলে মূল সমস্যা তো থেকেই যাবে। দেশ ও জাতির স্বার্থে এ অচলায়তন তো ভাঙতে হবে। তারপরেও সংখ্যায় খুব কম হলেও অনেকে আয়েশী জীবন এবং পশ্চিমাদের নরম বিছানায় আর কোল বালিশে শুয়ে থাকার লোভ ত্যাগ করে এবং নিজের ও পরিবারের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরেছেন এবং চেষ্টা করেছেন নিজে টিকে থাকতে ও দেশকে কিছু দিতে। সবাই হয়তো কৃতকার্য হয়নি, কিন্তু চেষ্টা করেছেন সেটাই বড় কথা। তারপরেও দেশে বা বিদেশে থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা দেশের জন্য অবদান রেখেছেন ও রাখছেন সবার প্রতি শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩৬
কাছের-মানুষ বলেছেন: চমৎকার আপনার আন্তরিক মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। আসলে বর্তমানে যারা দেশে আছে, কর্মজীবী বা ব্যবসায়ী সবাই কিন্তু যার যার অবস্থান থেকে যুদ্ধ করছে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী এবং দুর্নীতিবাজ মানুষ ছাড়া। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও মানুষজন দেশে থেকে, দেশকে প্রত্যক্ষভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল আসলে এখনো যারা দেশে আছে প্রতিনিয়তই অনেকে এই সমস্যাগুলো সম্মুখীন হচ্ছে। হয়ত সরকারী চাকরিজীবী যারা তারা একটু ভাল আছে, তবে বেশীর ভাগ বেসরকারী চাকরীজিবীই জীবনের সাথে যুদ্ধ করে টিকে আছে! সবার প্রতিই শ্রদ্ধা রইল।
পড়ার জন্য কৃতজ্ঞটা রইল। ভাল থাকুন সবসময়।
১৯| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:৩০
রযাবিডি বলেছেন: ক্ষমতাসীন দল তাদের নেতারা, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কিছু রাঘব বোয়ালরা ছাড়া দেশের সবাই দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক এই সোনার দেশে।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
২০| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:৪০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমাদের সবার কাছেই একটা বলার মত গল্প থাকে।
অনেকেই পরিবারে দায়িত্ব কর্তব্য গুলো শেষ হবার পর দেশে ফিরে আসে।
আপনার হাতে সুযোগ ছিল, আপনি সেটা গ্রহণ করাতে অন্য আরেক জন সে সুযোগ টা নিতে পেরেছে।তার হয়ত এত ভালো সুযোগ ছিল না।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩৯
কাছের-মানুষ বলেছেন: হ্যাঁ আপনি ঠিক বলেছেন, মানুষের প্রত্যেকের এরকম কোন না কোন গল্প থাকে। দেশে যারা আছে এগুলো-তো তারা প্রায় সব সময়ই সম্মুখীন হয় এবং হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি দেশ থেকে গেলেই যে দেশের দেশের ক্ষতি হচ্ছে তা নয়, অন্তত আমাদের দেশের পেক্ষাপটে, এখানে শূন্যস্থান খালী থাকে না।
২১| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:১৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপাততঃ আপনার এ পোস্টটাকে 'প্রিয়'তে তুলে রাখলাম। পরে সুবিধেজনক সময়ে লিঙ্কে দেয়া পোস্টগুলো পড়বো আর মন্তব্য করবো বলে আশা রাখি।
আপনার এ পোস্ট ইতোমধ্যে বহুপঠিত হয়েছে এবং আগামী দু'চারদিনের মধ্যে এর পাঠসংখ্যা ছয়/সাতশ' হয়ে যাবে বলে অনুমান করি। এর কারণ, আপনি খুবই আন্তরিকভাবে আপনার সংগ্রামের কথা বলে গেছেন, যার সাথে দেশী ও প্রবাসী পাঠকেরা খুব সহজেই রিলেট করতে পেরেছেন।
রহস্যময়ী তনয়া, মিরোরডডল, ঢাবিয়ান, অপু তানভীর, জোবাইর, মনিরা সুলতানা প্রমুখের মন্তব্যগুলো ভালো লেগেছে।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩৯
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনি আবার এসেছেন, আমি আনন্দিত, প্রিয়তে রাখার জন্য কৃতজ্ঞটা রইল। আমি চেষ্টা করেছি নিজের ভাবনা গুলো শেয়ার করতে, ব্লগারদের ভাল লাগাতে আমার ভাল লাগছে। সকল ব্লগারদের আবারো ধন্যবাদ।
উপরে যেই লিংকগুলো দেয়া সেগুলোর কয়েকটা আপনার পড়া আছে, আপনার মন্তব্য আছে সেখানে। আসলে বিভিন্ন সময়ের লেখাগুলো, কিছু লেখা আমার প্রথম দিককার কাচা হাতের লেখা, আপনি পড়বেন শুনে কিছুটা ভয় লাগছে!
২২| ২৬ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১:২৫
জটিল ভাই বলেছেন:
অনেক তথ্যবহুল। পড়ে ধন্য। নিজের জ্ঞাণ অনেকটাই শানিত হলো।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৪০
কাছের-মানুষ বলেছেন: খাইছে আমারে! আমার পোষ্ট পড়ে জ্ঞান শানিত করলে বিপদ হতে পারে, ইয়ে মানে আমিতো নিজেই অজ্ঞান!!
২৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:১৩
স্বপন০অধ্যাবসায়ন বলেছেন: Hey there,
This was one of the most beautiful and heart felt blog i have read in a while.
I've been thinking about your journey and the choices you've made. It's clear to me that you've prioritized stability and family, which is truly admirable.
But I can't help but sense a tinge of melancholy, as if there's a part of you that still longs for the opportunity to make a meaningful impact in Bangladesh, especially after putting so much effort into trying to make it in Bangladesh.
I want you to know that life is full of unexpected twists and turns. Even though your path has led you to a fulfilling and stable life abroad, it doesn't mean your dreams for your country are lost forever. You've gained and continue gaining invaluable experience and knowledge along the way, and Maybe someday, all that knowledge and experience you're gathering will circle back to a place where you can contribute something amazing for your country.
There might come a time when you can use all that you've learned to contribute in a significant way, whether it's through your current position or new avenues that open up. Your potential for making a positive change remains intact.
I just wanted to remind you of this and offer my best wishes. You have a friend here who believes in your abilities and your capacity to create a brighter future for your homeland.
Life's chapters have a way of surprising us, and your story is far from over. So keep that spark alive and keep moving forward.
Everything comes in good time, and that good time is only known by the knower of it all.
Take care and best of luck brother!Hey there,
This was the most beautiful and heart felt experience i have read in a while.
I've been thinking about your journey and the choices you've made. It's clear to me that you've prioritized stability and family, which is truly admirable.
But I can't help but sense a tinge of melancholy, as if there's a part of you that still longs for the opportunity to make a meaningful impact in Bangladesh, especially after putting so much effort into trying to make it in Bangladesh.
I want you to know that life is full of unexpected twists and turns. Even though your path has led you to a fulfilling and stable life abroad, it doesn't mean your dreams for your country are lost forever. You've gained and continue gaining invaluable experience and knowledge along the way, and Maybe someday, all that knowledge and experience you're gathering will circle back to a place where you can contribute something amazing for your country.
There might come a time when you can use all that you've learned to contribute in a significant way, whether it's through your current position or new avenues that open up. Your potential for making a positive change remains intact.
I just wanted to remind you of this and offer my best wishes. You have a friend here who believes in your abilities and your capacity to create a brighter future for your homeland.
Life's chapters have a way of surprising us, and your story is far from over. So keep that spark alive and keep moving forward.
Everything comes in good time, and that good time is only known by the knower of it all.
Take care and best of luck brother!
৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:২৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আন্তরিক মন্তব্যের জন্য।
হ্যাঁ আমি চেষ্টা করেছিলাম দেশে থাকতে, আর যেই ষ্টাগলটুকু করেছিলাম সেটা আসল আরও অনেকেই সেরকম করে। সার্ভাইভাল ইনষ্টিক (survival instinct) বলে মানুষের মাঝে একটি জিনিষ আছে যেগুলো মানুষকে দিয়ে অনেক কিছু করিয়ে নেয়! দেশের প্রতি ভালবাসা আছে এবং থাকবে। এখনো দেশে প্রতিনিয়ত মানুষ যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে টিকে থাকার জন্য। আমি যেই পরিস্থিতিতে ছিলাম আমার মনে হয় মানুষ যে যেই পজিশনেই থাকুক না কেন এগুলো প্রতিনিয়ত ফেইস করছে, সেগুলো চিন্তা করলে আমারটাকে খুব বেশী কিছু মনে হয় না।
২৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:২০
স্বপন০অধ্যাবসায়ন বলেছেন: sorry for the double comment taking so much space, it was a genuine mistake.
৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:২৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: নো প্রবলেম। আমি বুঝতে পেরেছি।
২৫| ৩১ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৭:৪৪
শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার এই অসাধারণ লেখাটা আগে কেন চোখে পড়েনি বুঝলাম না।
আপনার দেশে ফেরার পরে কয়েক বছরের জীবন যুদ্ধটা ভয়ানকভাবে উপলব্ধি করলাম। আপনি লিখেছেন, দেশে ফেরার পরে দেশে ফিরেছেন শুনে সবাই মুষড়ে পড়তো এটা যে কি এক নিদারুন বাস্তবতা। তবে এখন যদি আপনি দেশে ফিরে যান তাহলে দেখবেন অবস্থাটা আরও বহুগুনে খারাপ হয়েছে। এখন দেশে ফেরার কথা শুনলে অনেকের হার্ট এটাক হয়ে যাবে।
আমি প্রথম বিদেশে যাই মধ্যপ্রাচ্যে একটা তেল কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে। আমার এই যাওয়াটা ছিল পরিকল্পনাহীন, খেলাচ্ছলে যাওয়া। প্রথম প্রথম যখন লম্বা ছুটিতে দেশে ফিরতাম তখন কি যে আনন্দ লাগতো। মনে হতো রাস্তার পাশের ফুটপাতের দোকানীরা, রিকশাওয়ালা,জুতো সেলাই করা লোকটা থেকে শুরু করে সবাই আমার আপন। আর যখন ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে হতো তখন নিজেকে মনে হতো All Quiet on the Western Front এর পল বোম্যারের মত- ছুটি শেষ হয়ে গেছে এখন ফ্রন্টে ফিরে যেতে হবে।
আপনার এই পোস্টের প্রথম মন্তব্যটা (রহস্যময়ী তনয়ার করা) মন ছুঁয়ে গেল। Homesickness বিষয়টাকে যে ছোট করে দেখার কোন উপায় নেই, অথচ এটা যে কাউকেই বোঝানো সম্ভব নয় - এটা মনে হলো মন্তব্যটি পড়ে।
৩১ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৮:৪৮
কাছের-মানুষ বলেছেন: এখনতো যে যেই পেশায় আছে দেশ ছেড়ে যাওয়াটা সবারই প্রথম প্রায়োরিটি। একজন শিক্ষকের লেখা পড়েছিলাম, তিনি বলছিলেন তার ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনা করে উচ্চ শিক্ষায় বিদেশ একেবারে চলে যাওয়াকে নিজেদের সফলতা ভাবে।
সার্বিক পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতাপূর্ন্য বাজারে টিকে থাকা দেশে সত্যিই কঠিন, আমি দেশে প্রথম চাকরি শুরু করেছিলাম প্রায় ৬০ হাজার টাকা বেতনে, সেই টাকা দিয়েই সব কিছু মেইনটেইন করে চলা বেশ কঠিন ছিল, বাড়ির লোণ পরিশোধ, সংসার খরচ, নিজের খরচ ইত্যাদি দিয়ে মাসের আগেই টাকা প্রায় শেষ হয়ে যেত! আর এখনতো মূল্যস্ফীতিও অনেক বেড়েছে, গ্রাজুয়েট করে বের হয়ে যেই টাকা পায় সেটা দিয়ে চলা সত্যিই মুশকিল। তাছাড়া দেশে সিন্ডিকেট, বাজার পরিস্থিতি, জিনিষ পত্রের দাম ইত্যাদি নানা সমস্যা নিয়ে যারা দেশে থাকে তারা সত্যিই জানে টিকে থাকা কতটা কঠিন, আর যারা সাধারণত ছোটখাটো চাকরিজীবী/ শ্রমজীবী মানুষ তাদের নাবিশ্বাষ অবস্থা। তাই আমার সত্যিই নিজেদের ষ্টাগলকে কিছুই মনে হয়না, আমি উপলব্ধি করতে পারি কিছুটা মানুষ কেমন আছে।
আপনি ঠিকই বলেছেন হোম সিকনেস বিষয়টাকে ছোট করে সত্যিই দেখার সুযোগ নেই। দেশের প্রতি আমাদের সবারই একটি আলাদা টান আছে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
২৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৩
মেহবুবা বলেছেন: এটাই বাস্তবতা। আজকাল মনে হয় বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের সামনে তেমন কোন দৃষ্টান্ত নেই দেশে থেকে পরিশ্রম করে হলেও সন্মানের সাথে শান্তিতে নিশ্চিত জীবন যাপনের।
আপনার স্বান্তনা আছে আপনি চেষ্টা করেছিলেন।
২৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০০
আজব লিংকন বলেছেন: আমিও তাই জানি, কেউ নিজ ইচ্ছায় দেশ ছাড়তে চায় না।।
আপনার লেখায় আমাদের চক্ষু-আড়ালে কেন মেধাবীরা বিদেশে পারি জমায় তার জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত।।
আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৮:৩৩
রহস্যময়ী তনয়া বলেছেন: আসলেই প্রবাসীদের এই দিকগুলো কেউ চিন্তা করে না। অনেকেই বিদেশের লাইফস্টাইল খুব এনজয় করে বিধায় সবাই ধরেই নেয় এটা সবার ক্ষেত্রেই একইরকম।
আমি স্কুলজীবনে পড়ালেখা বিশেষ করিনি। কোনোরকম এসএসসি করে ভাবলাম এইসএসসি আর করবো না। কোনো একটা ডিপ্লোমা করে ফেলি। গৎবাঁধা পড়ালেখা আমাকে দিয়ে হবে না। তবু বিভিন্ন জায়গায় ধাক্কা খেয়ে শেষে পরিবার থেকে সিদ্ধান্ত দেয়া হলো জিইডি (আমেরিকান হাই-স্কুল ডিপ্লোমা) করে বিদেশে আন্ডার-গ্র্যাড করতে যেতে হবে।
তখন পারিবারিকভাবে আমার অবস্থা যেমন তাতে নিজে স্বাধীনভাবে থাকার অপশনটা খুবই লোভনীয় ব্যপার ছিলো। তবু অল্প বয়সে দেশপ্রেম নামক আবেগের কাছে পরাজিত হয়ে দেশেই প্রাইভেটে ভর্তি হলাম। কথা দিলাম যে আমাকে এখানেই আন্ডারগ্র্যাড করতে দেয়া হোক, মাস্টার্সে বাইরে চলে যাবো, একসাথে পিএইচডি করে ওখানে পার্মানেন্ট কহাবে ব্যবস্থা করবো।
অনার্স চলাকালীন নিজেকে যুক্তি শেখালাম। যুক্তির কাছে আবেগ হার মানলো। দেশপ্রেমকে প্যাকেটে মুড়ে কঠিনভাবে নিজেকে গুছিয়ে কানাডার বিমানে চেপে মাস্টার্সে গেলাম। কিন্তু পারলাম না।
কয়েকমাসের মাথায় অবাধ স্বাধীনতা, পশ্চিমা আধুনিক জীবন ব্যবস্থা, কয়েকশ বছরের পুরনো ইউনিভার্সিটি, আর ভবিষ্যতের নিশ্চিত জীবনের হাতছানি সবকিছুকে ছাপিয়ে দেশের মাটিতে ফিরে আসার জন্য অস্থির হয়ে উঠলাম। আমার শারিরীক এবং মানসিক অবস্থা দেখে পরিবার থেকে বলা হলো দ্রুত দেশে আসতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত পরে হবে। দেশে ফেরার টিকেট কেটেই ঠিক করেছিলাম আর আসবো না এখানে। সব গুটিয়েই ফিরলাম।
এর পরপরই প্যান্ডামিক। আমরা বড় যৌথ পরিবার নিয়ে গ্রামে ছিলাম ২টা বছর। বাসার কেউ মুখে কিছু বলতো না কিন্তু তাদের “Disappointment” অনুভব করতে সমস্যা হতো না। অনেক আত্নীয় অবশ্য অনেক কথাই বলেছে মুখের উপর। প্রবাসী এক কাজিন বলেছিলো, “তোমরে তো সব খুব সহজে পেতে চাও। তুমি খুব সেলফিস সিদ্ধান্ত নিয়েছ। নিজের এবং পরিবারের ভবিষ্যত চিন্তা করে তোমার থেকে যাওয়া উচিত ছিলো। কষ্ট সবারই হয় বিদেশে থাকতে। আমরা কি থাকি নাই?”- ইত্যাদি ইত্যাদি।
সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যত কথাই শুনতে হোক, আর যাবো না আমি। বিদেশ আমার জন্য না।
দেশেই করলাম মাস্টার্স। এবার চাকরির যুদ্ধ। বলে রাখা ভালো, মোটামুটি প্রথম সারির একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে অনারের সাথেই অনার্স আর মাস্টার্স করেছি। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম আমার অনার্স, মাস্টার্সে যত ভালো রেজাল্টই হোক না কেন, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান (সরকারী তো বটেই, বেসরকারীও) আমার এইচএসসি সমমান পরীক্ষা নেই দেখে আমাকে সুযোগ দিবে না! জিইডি নাকি এখন ব্যান করে দিয়েছে দেশে!
অল্প খুঁজতেই বিদেশে ভালো চাকরীর অফার পাওয়া যাচ্ছে। অথচ দেশে একটা সিংগেল চাকরীও নিজে যোগাড় করতে পারলাম না। স্কুল টিচার থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক, এনজিও, আর রিসার্চ ইন্সটিটিউট কোনোটা বাদ দেইনি। পেলামই না চাকরী। শেষ-মেষ নেপোটিজম থেকেই কিছু একটা গতি হলো।
এখন নিজেকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগি আর প্রতিনিয়ত শুনি “এখনো সময় আছে। চলে যাও বাইরে"
আমি ভাবি ওখানে গেলেও মানসিকভাবে ভুগতে হবে। এখানেও ভুগছি। থাকি না আর কিছুদিন। দেখি কতদিন থাকা যায়।