নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

‘মানুষ তার স্বপ্নের চাইতেও বড়’

কাছের-মানুষ

মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! !

কাছের-মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরিয়ার স্মৃতিচারণঃ সব কিছুই বদলে যায়

২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৭:২৮

গত সপ্তাহে মেসেঞ্জারে আমার এক প্রাক্তন কোরিয়ান ল্যাব-মেটের মেসেজ দেখে মনটা বিষণ্ণতায় ভরে উঠল! না কেউ পটল তুলেনি, বা অক্কা পায়নি, এমনকি কেউ আহতও হয়নি। বিষণ্ণতার শানে-নযুল হল আমার কোরিয়ান প্রফেসরের রিটায়ারমেন্ট করছিল সেদিন, সেই হিসেবে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের কল করা। কোরিয়ার সময়ের সাথে আমেরিকার সময়ের তারতম্যের জন্য সেদিন আর কল রিসিভ করা হয়নি। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার কোরিয়ান ল্যাব-মেটের মেসেজ আর মিসকলটিতে আমি চোখ বুলালাম, হারিয়ে গেলাম সেই দুরন্ত সময়গুলোতে। ২০০৮ সালে প্রথম প্রফেসরের সাথে মোলাকাত, সে বছরই প্রথম দেশের বাইরে গিয়েছি আন্ডার-গ্রাজুয়েট করতে। তার ল্যাবেই ছিলাম পাঁচটি বছর। আমার মস্তিষ্কে বিদেশী প্রফেসরদের যেমন একটি টিপি-কাল চিত্র ছিল, তিনি ছিলেন ঠিক তার বিপরীত। তার উচ্চতা মাঝারি গড়নের, দেখতে ধলা এবং বেশ পরিপাটি। কোরিয়াতে কোথাও কনফারেন্স হলে আমাদের সব ল্যাব-মেটদের নিয়ে যেতেন একসাথে বেশ কয়েকদিনের জন্য, রাতে বিশাল বারবিকিউ পার্টি হত, আড্ডা হত, এবং দিনের বেলায় আমাদের সাথে ফুটবল খেলায়ও যোগ দিতেন তিনি প্রায়!

প্রফেসর একদিকে যেমন বেশ মিশুক ছিলেন অন্যদিকে বেশ কঠিন ছিলেন। আমরা তাকে মোটামুটি বাঘের-মত ভয় পেতাম, তিনি যেদিন তার অফিসে থাকতেন আমাদের ল্যাব-মেটরা কেউ আর সেদিন ল্যাব থেকে নড়ত না, আবার দেখা যেত যখন তিনি কোরিয়ার বাইরে যেতেন কয়েকদিনের জন্য একা, ল্যাব-মেটদের যেন ঈদ চলে আসত তখন, সবাই নিজেদের-মত সময় কাটাত। সোমবার আমাদের মিটিং থাকত, মিটিং শেষে আমাদের কোন রেস্টুরেন্টে নিয়ে ভোজন করাতেন ফ্রি ল্যাব ফান্ড থেকে, আমি সত্যিই এই কালচারটা মিস করি অনেক, আমি ইউরোপ বা আমেরিকায় এই কালচার কখনো দেখিনি। তিনি ২০১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক কনফারেন্সে বাংলাদেশে আসেন আমার সাথে। আমাদের বাসায়ও এসেছিলেন তিনি। আমার মাস্টার্স তখন শেষের দিকে, আমার মাকে বললেন আপনার ছেলেকে আরও ৫ বছরের জন্য পিএইচডি করতে দেন আমার কাছে, আপনাদের সংসার খরচের জন্য মাসে আশি হাজার টাকা দেয়া হবে এবং আপনার ছেলে বিয়ে করে বউ নিয়ে গেলে সেভাবে সেখানকার খরচ দিব। যাইহোক আমি রাজি হইনি, দেশকে তখন প্রচন্ডভাবে মিস করছিলাম। প্রফেসরকে কক্সবাজারেও নিয়ে গিয়েছিলাম, আমাদের বাসায়ও বেশ সমাদর করেছিলাম। তিনি বাংলাদেশ ভ্রমণ নিয়ে এতই খুশী ছিলেন যে করিয়াতে ফিরে আমার বেতন ডাবল করে দেন, একই ল্যাবে তখন পিএইচডির ছাত্রছাত্রীরা আমার থেকে অনেক কম বেতন পেত! প্রফেসরের সাথে আমি জাপান, লাউস এবং থাইল্যান্ড এক সাথে ভ্রমণ করেছি। তিনি বেশ ভ্রমণ প্রিয় একজন মানুষ। কোথাও গেলে, কোন হোটেলে থাকবেন, কি খাবেন এবং কি-কি করবেন সব ঠিক করে রাখতেন, তার সাথে থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, লাউসের রাজধানী এবং জাপান অনেক কিছু ঘুরে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে, আর কোরিয়ার বিভিন্ন শহরের কথা বাদই দিলাম।

২০১৩ সালের পর প্রফেসরের সাথে আর আমার দেখা হয়নি, আর কবে দেখা হত সেটাও জানিনা। তারপরও তার রিটায়ারমেন্টের কথা শুনে সত্যিই কেন জানি মর্মাহত হলাম, আমি ঠিক জানিনা রিটায়ারমেন্ট মর্মাহত হবার মত কোন ব্যাপার কিনা। তারপরও আহারে সময় কিভাবে যেন চলে যায়, যার ল্যাবে এক সময় ১৫-২০ ছাত্রছাত্রী দিন-রাত কাজ করত, যিনি সুন্দর একটি ল্যাব দাড় করিয়েছিলেন, সেই ল্যাবটি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, নিশ্চয়ই তার মনেও এক ধরনের মিশ্রই অনুভূতিই হবার কথা! একটি জামা অনেক দিন পরলেও কেমন যেন একটি মায়া জমে যায়,একটি বাসায় অনেক দিন থাকলেও ছেড়ে যেতে মায়া হয়। যাইহোক আমার ইচ্ছে ছিল কোরিয়া গেলে প্রফেসরের সাথে মোলাকাত করব, পুরনো ল্যাবটা ঘুরে দেখব যেখানে জীবনের ৫টি বছর কাটিয়েছিলাম।

আমাদের হাইস্কুলে হামিদ স্যার নামক একজন জাঁদরেল শিক্ষক ছিলেন। কেউ পড়া না পারলে তাকে রাম ধোলাই দিতেন স্যার। স্যারের একটি দারুণ প্রতিভা ছিল, আমরা ক্লাসে বসে আছি, ক্লাসে কাউকে অমনোযোগী দেখলেই, হঠাৎ স্যার ডাস্টার ছুড়ে মারতেন। পঁচিশ থেকে ত্রিশ জন ছাত্র বসে আছে, ঠিক যাকে লক্ষ্য করে মারতেন ডাস্টার ঠিক তার শরীরের গিয়েই লাগত,বন্ধুকের গুলি মিস হত কিন্তু তার লক্ষ্য মিস হত না! বাংলাদেশ শুটার দলে তাকে জায়গা দিলে নিশ্চয়ই সোনার মেডেল মিস হত না আমাদের, আফসোস তার প্রতিভার কদর তিনি পেলেন না! যাইহোক শেষবার বাংলাদেশে গিয়েছিলাম, ইচ্ছে ছিল স্কুলের শিক্ষকদের সাথে মোলাকাত করে আসব। যাওয়া হয়নি তবে ছুটির দিনে স্কুলটাকে দেখতে গিয়েছিলাম, হামিদ স্যারকে দেখলাম অনেক পর, তবে কাছে গিয়ে আর কথা বলা হয়নি, স্যার তখন মসজিদের ঢুকছিলেন! তবে আমি জানিনা স্যার আমাকে চিনত কিনা! স্যারের আগের সেই জৌলুস নেই, বেশ বয়স হয়ে গেছে, মুখে গজিয়েছে সাধা দাড়ি। আমার সাথে সেই স্কুলের এক ছাত্র ছিল, বলল হামিদ স্যারকে কোন ছাত্রছাত্রী আর ভয় পায় না। উল্টো পোলাপান পিছন থেকে তাকে দাদু দাদু বলে খেপায়! আমার গুরু সম্প্রদায়গুলো আসতে আসতে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। স্যারের নিশ্চয়ই রিটায়ারমেন্টের সময় হয়ে গেছে!! দেশে গেলে আর দেখা হবে কিনা জানিনা!

আমাদের জেনারেশনের অনেক ছেলে মেয়েই সরকারী প্রাইমারি স্কুলে পড়েছে। আমি যখন প্রাইমারিতে পড়ি আমাদের এলাকায় বা আশেপাশে কোন কিন্ডারগার্ডেন ছিল না, সবাই প্রাইমারি স্কুলে পড়ত। প্রাইমারিতে স্কুলের এক ম্যাডামের কাছে প্রাইভেট পড়তাম, নাম মঞ্জু। আমরা ম্যাডামকে ডাকতাম মঞ্জু আপা বলে। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে এক সাথে পড়তাম সেসময় মঞ্জু আপার কাছে, আহা কোথায় হারিয়ে গেল আমার শৈশব! মঞ্জু আপা এখনো সেই স্কুলটিতে পড়ায়, প্রাইমারি স্কুলে বোধ হয় তেমন বদলী হয়না অন্যান্য সরকারি চাকরির মতন! অনেক বছর হল কিন্তু মঞ্জু আপাকে কয়েকবার দেখেছি দূর থেকে, কাছে গিয়ে আর কথা বলা হয়নি। শুনেছি পরিচিতিদের কাছে আপা আমার কথা জিজ্ঞেস করতেন। এরপর গেলে মঞ্জু আপার সাথে দেখা করব ভাবছি।

বাংলাদেশে আমার অনেক প্রিয় শিক্ষক আছে, তার মাঝে এই মুহূর্তে ফয়েজ খান স্যারের কথা মনে পড়ছে। আমি জীবনে যদি কোন কিছু অর্জন করে থাকি তার জন্য স্যারের অবধান বলে শেষ করা যাবে না। স্যার আমার সিভিটা নিয়ে আমার হয়ে কোরিয়ান সরকারি স্কলারশিপে এপ্লাই করেছিলেন। স্যার না থাকলে আমার কোরিয়াতে যাওয়া হত না। স্যার বর্তমানে একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ভিসি হিসেবে আছেন। তার-মত এমন ভাল শিক্ষক এবং মানুষ আমি আমার জীবনে দেখিনি। কোরিয়াতে যাবার পর আমি চেষ্টা করতাম স্যারের সাথে যোগাযোগ করতে। এমনকি কোরিয়া থেকে ছুটিতে দেশে এসেও স্যারের সাথে তার কর্মক্ষেত্রে গিয়ে দেখা করেছি। তবে মাঝখানে অনেক বড় গ্যাপ হয়ে গেছে, স্যারের সাথে দেখা হয়না অনেক বছর! স্যারের সাথে দেখা করার ইচ্ছে আছে দেশে গেলে।

ডেনমার্কে আমার পিএইচডই সুপারভাইজারের নাম ছিল সোরেন। আমরা ল্যাবের সবাই তাকে তার ডাকনাম সোরেন বলেই ডাকতাম, এটাই সেখানকার কালচার। সোরেনের বয়স আনুমানিক ষাট হবে, আমার জীবনে যে কজন ভাল শিক্ষক পেয়েছি সোরেন তার অন্যতম, এমন শান্তশিষ্ট এবং নরম প্রফেসর খুব কম দেখেছি। এখনো কোন প্রয়োজনে তাকে ইমেইল করলে সাথে সাথে উত্তর দেয়, সাহায্য করার চেষ্টা করে। বছর দুয়েক আগে আমি নতুন চাকরি খুজছিলাম, তার একটি রিকোমেন্ডশন লেটারের জন্য যোগাযোগ করলাম, তিনি দিলেন, তবে চাকরিটা হবার পর আর তাকে জানাই-নি। আমাকে তার কিছুদিন পর ইমেইল দিয়ে বললেন ফ্রান্সে তার এক কোলাবোরেটর লোক খুঁজছেন, আমার এক্সপার্টাইজের। তিনি হয়ত ভাবছিলেন আমার চাকরিটি হয়নি, তাই চাচ্ছিলেন হয়ত সেখানে আমাকে ঢুকাতে। যাইহোক, ডেনমার্ক ছাড়লাম প্রায় চার বছর হয়ে গেল, ডেনমার্কে গেলে সোরেনের সাথে মোলাকাত করার ইচ্ছে আছে, জানিনা আবার কবে যাওয়া হবে! দেশ ছাড়লাম সেই ২০০৮ সালে, তারপর আর আগের মত করে দেশকে পাইনি, একবার পাখি নীড় ছাড়লে সেই নীড়ে আর ফেরা হয়না!

যাইহোক লেখাটা শুরু করেছিলাম আমার কোরিয়ান প্রফেসরকে দিয়ে, মাঝখানে কত কিছু লেখে ফেললাম! আমার গুরু সম্প্রদায় পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, কেউ রিটায়ারমেন্টে চলে যাচ্ছে, কেউ পুরোপুরি পাল্টে যাচ্ছে! যাইহোক ভাল থাকুক আমার গুরু সম্প্রদায়।

কোরিয়ার স্মৃতিচারণসমূহ:
কোরিয়ার স্মৃতিচারণঃ আমার কোরিয়া যাওয়ার প্রারম্ভিক ইতিহাস
কোরিয়ার স্মৃতিচারণঃ ইউনিভার্সিটির হোস্টেলের নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আমি পাকড়াও

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৭:৪৭

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: যে ব্যক্তির ভিন্ন ভিন্ন জাতি এবং কালচার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকে তাকে আমার বুদ্ধিমান ব্যক্তি মনে হয়।
দেখা যাচ্ছে কোরিয়ান জাতি সমন্ধে আপনার ভালোই ধারণা রয়েছে, রয়েছে দারুণ কিছু স্মৃতি যা আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিকে সমৃদ্ধ করেছে। আসলে স্মৃতি নিয়েই আমরা বেঁচে থাকি।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৪০

কাছের-মানুষ বলেছেন: মোটামুটি নিজের অভিজ্ঞতাকে লেখার মাধম্যে ধরে রাখার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন কালচার মানুষের সাথে উঠা বসার সুযোগ পেয়েছি, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের সাথেও মিশেছি, ভিন্ন মানুষ, তাদের কালচার, পুরনো স্থাপত্য আমাকে সবসময়ই টানে।

২| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৩১

কলাবাগান১ বলেছেন: এদের কে কাছ থেকে দেখেছেন তাতে আপনি নিশ্চয়ই বুঝেছেন এদের কাছে মানুষ আগে.. আর আমাদের দেশের মানুষ/শিক্ষকদের কাছে আগে সে হিন্দু নাকি মুসলিম তা বেশী মূল্য পায়..। ধর্মান্ধতা আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বিষ নিশ্বাস ছাড়ছে...।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৪০

কাছের-মানুষ বলেছেন: আমাদের উপমহাদেশে ধর্মের একটি প্রভাব আছে, ধর্মকে ঘিরেই জীবন আবর্তিত হয় এখানে। ধর্মান্ধ শুধু ঢাবিতে নয় সাঁরা দেশেই ঝাঁকিয়ে বসেছে !!!

৩| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৯

কামাল১৮ বলেছেন: কোরিয়ান ঘটনায় থাকলেই ভালো হতো।কোরিয়ান শিক্ষক ছিলো আপনার বন্ধুর মতো।শিক্ষকদের এমনই হতে হয়।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: আমি জীবনে বেশ কিছু ভাল শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়েছি। কোরিয়ান শিক্ষক বেশ ভাল ছিল, আমাকে স্নেহ করতেন, কোরিয়ার পড়াশুনার কালচার অন্যদেশ থেকে কিছুটা ভিন্ন তবে আমি মিশে গিয়েছিলাম সেই কালচারে। লেখতে বসে অনেক শিক্ষকদের কথাই চলে আসল, যাদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:২২

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


কোরিয়ান স্মৃতিচারণ ভালো লাগলো, আপনি কি এখন দেশে?

২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৩৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: এখন আমেরিকায় আছি।

৫| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

এম ডি মুসা বলেছেন: পৃথিবীতে নানা জায়গায় গেলে মানুষের নানা অভিজ্ঞতা হয়। বাঙালি পৃথিবীর যেখানেই যাক। কিছু বাঙালি নিজেদের স্বভাব তুলে ধরে। আবার কেউ কেউ ভুলে যায়। সিটিসারণ গুলো আসলেই মানুষ কে ধারণা দেয় অনেক কিছু শেখায় কে ধারণা দেয় অনেক কিছু শেখায়

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:১৯

কাছের-মানুষ বলেছেন: পৃথিবীর সব দেশেই কম-বেশী বাঙ্গালি আছে। এক-এক জন মানুষ এক-এক রকম, তবে আমার বাঙ্গালিদের সাথে খুব যে খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে তেমন না, দেশের বাহিরে বেশির ভাগই বেশ আন্তরিক মানুষ পেয়েছি। [আপনার মন্তব্যের শেষের বাক্য ঠিক বুঝতে পারিনি]

৬| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৪

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: পোস্ট দারুণ!

অনেক দিন পর আপনার পোস্ট পেলাম। ভালো লাগছে ব্লগে আপনাকে দেখে।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:২০

কাছের-মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। হ্যাঁ অনেক দিন পর পোষ্ট দিলাম, আরও কিছু পোষ্ট এই মুহুর্তে মাথায় জমে আছে, দিব সময় করে। আপনাকে নিয়মিত দেখে ভাল লাগছে।

৭| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: আমি শুনেছি কোরিয়ান প্রফেসররা খুব মানবিক হয়?
আপনি আপনার প্রফেসরকে নিয়ে কক্সবাজার গিয়েছিলেন!!!

আপনার ছিলো হামিদ স্যার। আর আমাদের ছিলো হামিদা ম্যাডাম। আমাদের বাংলা পড়াতেন।
ষাট বছরছের মানুষকে নাম ধরে ডাকা। আমাদের দেশে সম্ভব না।

সব মিলিয়ে সুন্দর লেখা পড়লাম।
আমি কোরিয়া যাবো জাস্ট ওদের স্ট্রিট ফুড খাওয়ার জন্য।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:২০

কাছের-মানুষ বলেছেন: আসলে কোরিয়ানরা ওভারঅল মানবিক মানুষ, তাদের নৈতিকতা ভাল।কোরিয়ান প্রফেসররা ভাল, তবে এখানে কাজের প্রেসার অনেক। পৃথিবীর সব থেকে বেশী ছাত্রছাত্রী এখান থেকে ঝরেও পরে, কারণ এদের ল্যাবের কালচার একটু অন্যরকম, ল্যাবে থাকতে হয় সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি যেটা পৃথিবীর আর কোথাও নেই বললেই চলে! যারা মানিয়ে নিতে পারে এবং পরিশ্রম করতে পারে তাদের জন্য কোরিয়া হচ্ছে হেভেন!

হ্যাঁ আপনি ঠিক বলেছেন, হামিদ স্যার আর হামিদা ম্যাডাম নামটিতে বেশ মিল আছে।

কোরিয়ান ফুডে ডাইভার্সিটি আছে, এটাকে খাদ্য রাজ্য বলা যায়। তাদের স্ট্রিট ফুড পৃথিবীতে বিখ্যাত। অবশ্যই ঘুরে আসুন, সুন্দর দেশ, খাবার ভাল।

৮| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:০১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হামিদ স্যার আর মঞ্জু আপার জন্য সত্যিই মনটা খুব খারাপ হলো, বিশেষ করে হামিদ স্যারের জন্য। মানুষের জৌলুশ একদিন কমতে থাকে, তারপর হারিয়ে যায়, তখন হামিদ স্যারকে পেছন থেকে 'দাদু' ডেকে খেপানোও যায়। মর্মান্তিক!

কোরিয়ান প্রফেসর্‌, বিশেষ করে তার বাংলাদেশে ভ্রমণ, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কি এর আগেও লিখেছিলেন? পড়েছিলাম বলে মনে পড়ে।

সব কিছু বদলে যায় - স্মৃতিকথায় যাদের কথা লিখেছেন, তারা বদলে গেছেন সবাই, এর জন্য দায়ী বোধহয় একমাত্র 'সময়'। বদলে যেতে যেতে সকলেই বেদনা ছড়িয়ে গেছেন অনুসারী বা শিস্যদের মাঝে।

আপনার ঐ শিক্ষকই আপনার জীবন বদলে দিয়েছেন, আমি মনে করি, যিনি আপনার কোরিয়ায় যাওয়ার সিভিটা জমা দিয়েছিলেন।

স্মৃতিকথা ভালো লাগলো। মাঝে মাঝে বেশকিছু বানান ভুল চোখে একটু ধাক্কা দিয়েছে মোলায়েম করে :)

শুভেচ্ছা রইল।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:২৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: হুম মঞ্জু আপা অনেকটা আগের মতই আছেন। তবে হামিদ স্যারের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সময় অনেক কিছু পরিবর্তন করে ফেলে! আমি স্যারের বাসায় গিয়ে প্রাইভেটও পড়তাম, স্যার বেশ কড়া ছিলেন। আসলে স্যারের পরিবর্তন বেশ অবাকই করেছিল আমাকে। আমাদের সময় মোটামুটি সব স্কুলেই এমন দুই-একজন শিক্ষক ছিল যাদের ছাত্রছাত্রীরা বাঘের-মত ভয় পেত, তবে এখন ওভারঅল নানান বিধিনিষেধের কারণে শিক্ষকেরা আর শাসন করতে পারে না, আর ছাত্রছাত্রীরাও শিক্ষকদের ভয় করে না আগের মত!

হ্যাঁ কোন এক লেখায় উল্লেখ্য করেছিলাম আমার কোরিয়ান প্রফেসরের কথা, তার বাংলাদেশ ভ্রমণের কথা। আপনার মনে আছে জেনে ভাল লাগল।

আপনি সঠিক বলেছেন আমার ঐ শিক্ষকই জীবন বদলে দিয়েছেন, তার এই উপকার কখনোই ভুলার নয়। তিনি শিক্ষক হিসেবে যেমন মানুষ হিসেবেও ঠিক তেমনই অতুলনীয়।

বানান ঠিক করার চেষ্টা করেছিলাম, তারপরও কিছু সমস্যা আছে, আমি পরে চেষ্টা করব।

আন্তরিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

৯| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:১৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: একটা রুমে ৯ মাস ধরে আছি। অত্যাধিক গরম থাকায় রুমটা ছেড়ে সামনের মাসে অন্য বাসায় উঠব, আর এতেই খারাপ লাগছে। যিনি একটা ল্যাবে এত বছর ছিলেন আর আপনার ৫ বছর; আপনাদের অনুভূতি তো আরও তীব্র হয়ে যাওয়ার কথা। আমার নিজেরই মায়া লাগছে।

আপনার স্মৃতিগুলোর বর্ণনা সুন্দর। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোচিং করার সময় আমার এক মামা বাইরে পড়ালেখার ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলছিলেন। গ্রাম থেকে মাত্র শহরে আসা আমি সুযোগ করে নিতে পারিনি, চেনাজানাও ছিল না। এখন মনে হয় তখন কোনো ব্যবস্থা করতে পারলে জীবন এমন থাকত না।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:০৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনি সঠিক বলেছেন!

যাইহোক, আমিতো ভাবছিলাম দেশে এখনো গরম সেভাবে পরেনি, মে মাসের দিক থেকে দেশে গরম মনে হয় বেশী পরে, তবে যেহেতু ঢাকায় থাকেন গরম এখনো লাগার কথা!

আপনার মামা ভাল বুদ্ধি দিয়েছিলেন! তবে কোন কিছুতে আফসোস করতে নেই, এখন যেভাবে আছেন সেখান থেকে ভাল কিছু করার চেষ্টা করুণ। মানুষের জীবন আনপেডিক্টেবল, এখানে জায়গায় জায়গায় টুইস্ট অপেক্ষা করে!

ধন্যবাদ আপনাকে।

১০| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:২০

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের সুন্দর উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

২৫ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:১৮

কাছের-মানুষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

১১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬

শায়মা বলেছেন: আমিও আমার এই ঈদের ছুটিতে আমার পুরোনো গানের স্যার আর আমাকে ড্রাইভিং শিখানোর গুরুকে দেখে এসেছি। অবসরে গিয়েছেন তারা। গানের টিচার আর আজকাল কাউকে চিনতে পারে না। :(

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১২

কাছের-মানুষ বলেছেন: বয়স হলে মানুষের অনেক ধরনের পরিবর্তন হয়। আপনার গানের স্যারের বোধ হয় ভাল বয়স হয়েছে! সময়ের সাথে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়ে যায়, কিন্তু স্মৃতিগুলো থেকে যায়!

১২| ১৮ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: কোরিয়ার প্রাজ্ঞ, প্রাণবন্ত প্রফেসরের কথা জেনে খুব ভালো লাগল। এমন একজন প্রফেসরের কাছে শিক্ষানবিশ হতে পারাটা ভাগ্যের ব্যাপার।
অমনযোগী ছাত্রদের প্রতি ডাস্টার নিক্ষেপে হামিদ স্যারের নিপুণ, লক্ষ্যভেদী পারদর্শিতার কথা জেনে বিস্মিত হ'লাম। তিনি বাংলাদেশের শুটিং দলে যুক্ত হলে বাংলাদেশ দলের সোনার মেডেল মিস হতো না, এ তির্যক মন্তব্যটাও উপভোগ করেছি। :)
ছাত্রদের প্রতি কতটা দরদ থাকলে একজন শিক্ষক তার হয়ে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারেন, ফয়েজ খান স্যার তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এমন শিক্ষকদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা!
সেই চাকুরিটা হবার পর আপনার সোরেন কে অবহিত করা উচিত ছিল।
আপনার গুরুভাগ্য সত্যিই অতি উত্তম!

২১ শে জুন, ২০২৪ রাত ২:২৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনার আন্তরিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

ফয়েজ খান স্যারের অবধানের কথা বলে শেষ করা যাবে না, তার মত এরকম ছাত্রছাত্রী বান্ধব শিক্ষক খুব কম আছেন, স্যার পড়ানও অসাধারণ। হামিদ স্যার আমার হাইস্কুলের শিক্ষক, কত স্মৃতি জরিয়ে আছে স্কুল ঘিরে, সেই সময়কে ঘিরে! স্যারকে আমাদের সময়ের ছাত্রছাত্রীরা ভয় পেত, স্যার অনেকটাই পালতে গিয়েছে! হ্যাঁ , আপনি ঠিকই বলেছেন সরেনকে সত্যিই জানানোর দরকার ছিল আমার, তিনিও অসাধারণ একজন। আমার গুরু ভাগ্য সত্যিই ভাল।

আবারো ধন্যবাদ আপনাকে, মন্তব্যের উত্তর দিতে দেরী হয়ে গেল, গতকাল বাসা পাল্টানো নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.