![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুখের আশায় ছুটতে ছুটতে মানুষ অসুখে পড়ছে। আর আমি তখন সত্যের সন্ধানে ছুটছি।
গত কয়েক ঘন্টা লোকটাকে ফলো করতে করতে এইমাত্র লোকটাকে একটা গলির ভিতর একা পেল সাব্বির।
এই সুযোগ এখনই যা করার করে ফেলতে হবে। রাত সবেমাত্র ৮ টা কিন্তু কেমন যেন থমথমে একটা অবস্থা চারিদিকে বিরোধী দলের ডাকা অবরোধের জন্য। মানুষজন কেউ নেই। এই মোক্ষম সুযোগের অপেক্ষায় ছিল সাব্বির। রাস্তা হতে বড় একটা ইট কুড়িয়ে নিয়ে পিছন হতে লোকটার মাথায় সজোরে আঘাত করল। লোকটা শুধু একবার মাগো করে চিৎকার করে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লো। ঝাপসা সোডিয়াম আলোয় লোকটার রক্তাক্ত মাথাটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। চোখে মুখে একটা ভয়। বাঁচার জন্য প্রানপন আকুতি করছে তাঁর দুটি চোখ। ধীরে ধীরে চাঁদরের ভিতর হতে পেট্রোলের বোতলটা বাম হাতে বের করে আনলো আর ডান হাতে ধরল লাইটার।
তারপর ধরিয়ে দিল আগুন তাঁর গায়ে। লোকটা চিৎকার করতে পারছে না শুধু গুন গুন আওয়াজ করছে আর কাঁটা মুরগীর মত তাঁর জলন্ত পুরো শরীর একস্থান হতে আরেকস্থানে গড়াগড়ি করছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে নিথর হয়ে গেলো দগ্ধ দেহ। পড়ে রইলো শুধু কুন্ডলী পাকানো ছাই। তখনও ধোঁয়া উড়ছিল। সাব্বিরের দুচোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। সে তখনও কাঁপছে। শীতে নয়... ভয়ে।। সেকি সত্যি কাউকে হত্যা করে ফেললো?
পূর্বকথাঃ অসুস্থ বাবাকে নিয়ে মিরপুর হতে পিজি হাসপাতালে যাচ্ছিল সাব্বির। বাবার বুকের ব্যাথাটা খুব বেড়েছে। সারারাত কষ্ট করার পর সকালে তাকে নিয়ে বাসে করে যাচ্ছিল। খামার বাড়ির দিকে পৌঁছানোর পর বাসের বাম দিকে যেখানে ওর বাবা বসেছিল সেই বরাবর হঠাত গ্লাস ভাংগার শব্দ অতঃপর কি ঘটেছে তাঁর বুঝার আগেই সাব্বির আর তাঁর বাবাকে আগুনের ফুলকি দাউ দাউ করে ঘিরে ধরল। বাসের হেল্পার সাথে সাথে বাসের দরজা খুলে দিয়ে লাফিয়ে পড়ল বাহিরে। ড্রাইভারও বাস থামিয়ে জানালা ডানপাশের জানালা দিয়ে পালিয়ে গেলো। সাব্বির তাঁর বাবাকে বুকে জড়িয়ে চিৎকার করতে করতে কোনভাবে বেরিয়ে এলো বাস হতে। তখনও বাসে অনেক মানুষ। দাউ দাউ করে জ্বলছে বাস। মানুষ বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করছে সেই সাথে শোনা যাচ্ছে নারী পুরুষের আত্মচিৎকার। কি হয়েছিল তা দেখার সময় নেই সাব্বিরের। তাঁর বাবার শরীরের আগুন নিভানোর জন্য চেষ্টা করছে সে। কিন্তু কিভাবে নিভাবে কিছুই হাতের কাছে কিছুই পাচ্ছেনা। তাঁর শরীরে যে আগুন ধরেছে সেদিকে তাঁর খেয়াল নেই। ইতিমধ্যে সাধারন পথচারী মানুষ ছুটে এসেছে। পাশের ফুলের দোকানী পাটের বস্তা আর চায়ের দোকানীরা পানি নিয়ে ছুটে এসেছে। তাঁরা সাব্বির আর তাঁর বাবার আগুন নিভিয়ে ফেলল। বাবা ছেলেই ততক্ষনে অজ্ঞান।
পাঁচদিন পর সাব্বিরের জ্ঞান যখন ফিরল তখন নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার। তাঁর গলা হতে নিচ পর্যন্ত পুরো শরীর ব্যান্ডেজ করা পাশে তাঁর মা কাঁদছে। মায়ের কান্না দেখে সাব্বির কিছুটা আচ করতে পারলো। তাঁর বুক হুহু করে কেঁপে উঠলো। 'বাবা কোথায়' প্রথমেই চিৎকার করে জিজ্ঞেস করলো। ওর মা হাউমাও করে কেঁদে উঠলো। ''তোর বাবা আর নেইরে সাব্বির তোর বাবা আর নেই''। সাব্বিরের বাবা হাসপাতালে আনার সময় মারা গেছে। হাসপাতালের নার্স ডাক্তারসহ সবাই তখন কাঁদছে। এ এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য।
সেদিনের সেই অগ্নিকান্ডে মোট ৭ জন নিহত আর ১৫ জন আহত হয়েছিল।
৮ মাস পরঃ সাব্বির তখন পুরোপুরি সুস্থ। কার কাছে সে তাঁর বাবার বিচার চাইবে? তাঁর বাবার প্রকৃত হত্যাকারীতো সেই বিরোধী দলীয় নেত্রী যিনি এই হরতাল অবরোধে তাঁর পালিত কুত্তাদের লেলিয়ে দিয়েছে। তাকে শাস্তি দেওয়ার মত ক্ষমতা তাঁর নেই। কিন্তু সেদিন যে বাসে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল তাকে বের করা সম্ভব। সাব্বিরের মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। সে ফার্মগেট এলাকার বিরোধী দলের ছোট খাট পিকেটার হিসেবে যোগ দিল। একদিন ফার্মগেটের একটা বাসায় দোকানে পিকেটার নেতার সাথে একটা মিটিং এ যোগ দিল সে। এক সময় নেতা তাঁর বাম পাশে নুরু নামের একটা পিকেটারকে বাহবা দিয়ে সবার সামনে তাকে অনুসরন করার কথা বলল। ''এই সেই নুরু যে গতবছর খামার বাড়িতে বাসে আগুন লাগিয়ে ৭ জনরে খাইছে''। তোরা এর মত হইতে পারছ না''? নুরু তখন নতুন বউয়ের মত প্রশংসায় লজ্জায় লাল। সাব্বিরের বুকটা ধক করে উঠলো। এই সেই নুরু যে সেদিন সাব্বিরদের বাসে আগুন লাগিয়েছিল। যার জন্য তাঁর মত অনেকেই সেদিন এতিম হয়েছে। সেদিন হতে সাব্বির নুরুকে মারার প্লান করছিল। আজ তা পুর্ন হয়েছে।
কিন্তু এখানেই থামা নয়। এমনও হাজার হাজার নুরু আছে। তাদের মারতে যাচ্ছে সাব্বির। আপনারা সাথে থাকবেন কেন? আপনার পরিবারের কেউতো মারা যায়নি, হয়নি অগ্নিদগ্ধ। আপনারা থাকুন বা না থাকুন হরতাল অবরোধে ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবার তাঁর পাশে থাকবে ইনশাল্লাহ।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:২১
ভিটামিন সি বলেছেন: মুরগি পোষ্ট।