![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ছেলেটির সাথে আমার নামের কোন মিল নেই।এমনকি আমার লিখার সাথেও নেই।আমি আমার মত।আমার লিখারা তাদের মত..
বছর দুয়েক আগের কথা...
আমার এক পুরনো ফ্রেন্ড হুট করে আমাকে মোবাইলে মেসেজ করল
"ইসরাইলি পণ্য বর্জন করুন। ফিলিস্তিনিদের উপড় অত্যাচারের প্রতিবাদস্বরুপ এটা হতে পারে আপনার মোক্ষম অস্ত্র"
ভাল কথা।খুব রক্ত টগবগ করা প্রতিবাদী মেসেজ। শুরু করলাম কোকাকোলা ফান্টার বদলে মোজো স্পিড আর প্রাণ ফ্রুটো খাওয়া...
কিছুদিন পর তাকে ফোন দিলাম...
-বন্ধু কেমন আছিস?
:এইতো বন্ধু আছি কোনরকম। কি করিস?
-স্পিড খাইতেসি ! খাইতে খাইতে তোকে ফোন দিলাম। তুই কি করিস?
:ধুর ব্যাটা ! স্পিড কি মানুষ খায় নাকি? ওষুধের গন্ধ..
-তাইলে মানুষ কি খায়? RC কোলা? ওইটা তো আর নাই মার্কেটে...
:RC কোলা না থাক,কোকাকোলা তো আছে নাকি !
ফিলিস্তিনিদের উপড় হামলার সময় শুধু আমার বন্ধুটিই নয়,বহু মানুষ ফেসবুক টুইটার ব্লগে ইসরাইলিদের গালিগালাজ করে পণ্য বর্জন করার আহবান ইত্যাদি করে দুনিয়া উলটে ফেলেছেন সেসময়।আমিও উল্টানোর চেষ্টা করেছি কিছুটা ।অস্বীকার করবনা।কিন্তু কথা হচ্ছে এই উল্টানোর ঝালটা কিছুদিন পরেই নাই হয়ে যায়। আমরা বাঙ্গালীরা একটা টপিক পেলে সেটা নিয়ে কয়দিন লাফাই। হ্যান করব ত্যান করব বলে মুখে কিছুদিন ফ্যানা তুলি।তারপর আবার আগের রুপে ফিরে যাই।
আর আমাদের হুশও হয় একটু দেরীতে।জিহাদ নামের বাচ্চাটা পাইপের ভেতর পড়ে মরার পরে আমাদের মিডিয়াগুলোর হুশ হয় বাংলাদেশে কয়টি মেইনহোলের ঢাকনা নেই সেটা নিয়ে একটু নিউজ করা দরকার।
শত শত সড়ক দুর্ঘটনার পর আমাদের হুশ হয়,ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া নিয়ে নিশ্চয়ই ঘাপলা আছে।
তাজরিন গার্মেন্টসে আগুনে পোড়া শ্রমিকের মাংস পোড়া গন্ধ পাবার পর আমাদের দেশের গার্মেন্টস মালিকগুলোর হুশ হয়,গার্মেন্টসগুলোতে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা প্রয়োজন।
শাখারীবাজার ট্রাজেডি কিংবা রানা প্লাজা ধ্বসের পর আমাদের মিডিয়াগুলো রাজউকের কর্মকর্তার সাক্ষাতকার নেয়।মিডিয়াগুলোও দেখায় কয়টি দালানের ছাদ বাঁশ দিয়ে ঠিকা দেয়া,আর কয়টি বিল্ডিং নির্মান হয়েছে খালের উপড়ে কিংবা পুকুরের উপড়ে।বিল্ডিংগুলো ধ্বসে পড়লে কি পরিমান মানুষ মারা যাবে তার একটা নিখুঁত হিসাবও দেখান।
এরপর নেপাল নিয়ে খুব লিখালিখি চলেছে। নেপালে বিল্ডিং ধ্বসে পরার পর আমাদের খবর হয়েছে,আরে আমরাও তো বিল্ডিং আছি ! অন্যদেশে সুনামি হওয়ার পর আমাদের খবর হয়, আরে আমাদের পাশেও তো সাগর আছে !
কিছুদিন আগে ভূমিকম্পে আমাদের দালানগুলো কাঁপলো। ব্যাস! এক মূহুর্তে হয়ে গেল পুরো ভার্চুয়াল জগত ভূমিকম্পময়!!
এখন গত পড়শুদিন গুলশানে গোলাগোলি হল, সালাউদ্দিন মরল , সাথে মরল আরো ২০ জন মানুষ যারা ঠিকমত জানেই না যে কেন মরল। জঙ্গীদের ছবি প্রকাশ হল, ফেসবুক থেকে শুরু করে ব্লগ পর্যন্ত পুরো গুলশানময় হয়ে গেল, সেই সাথে আবির্ভাব ঘটল নোবেল বিজয়ী (!) অনেক বুদ্ধিজীবির যারা এমন সব পোস্টও লিখছে যেগুলো পড়লে যে কেউ সে হামলার পুরো ভিডিওটি ১০৮০ পিক্সেলে দেখতে পাবে,এরপর হ্যান হল ত্যান হল, হ্যান হচ্ছে ত্যান হচ্ছে, হ্যান হবে ত্যান হবে।
আসলে একেক সময়ে আমরা এককটা ইস্যু নিয়ে মুখ দিয়ে ফ্যানা তুলছি। যখন যে ইস্যুটা সবচেয়ে হিট আরকি ! পরবর্তী আরেকটা ইস্যু পেলেই আগের ইস্যু নিয়ে যে মুখ দিয়ে ফ্যানা তুলেছিলাম সেটার কথা আমরা ভুলে যাই। ঠিকমত ৭ টা দিন সময় দিন যাবার জন্যে, নিজের চোখেই দেখবেন সবাই।
এরকমটি হয়ে আসছে বলেই এখনও ঢাকা শহরের বহু মেনহলে ঢাকনা নেই। বহু চালক ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে গাড়ী চালাচ্ছে। বহু গার্মেন্টসে এখনও অগ্নি নির্বাপক ব্যাবস্থা নেই। বহু ঝুকিপূর্ণ বহুতল ভবনে মানুষ দিব্যি বসবাস করছে। খুনোখুনিও আবার পুরোদমে চলছে।
আল্লাহ না করুক ,ধরুন আগামীকাল আরেকটা রানা প্লাজা ধ্বসে পড়ল,দেখবেন আবারো আমরা কথার মালা গেথে ফেসবুক ব্লগ গরম করতে শুরু করব । গুলশান টপিক তখন সেটায় ধামাচাপা পড়বে।কিছুদিন গালি দিব ভবন নির্মাতাকে। কিছুদিন গালি দিব রাজউক কর্মকর্তাদের।কিছুদিন গালি দিব ওই ভবনের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকে। আর যারা যারা মারা যাবে তাদের কিছু ইমেজ আপলোড করে ক্যাপশনে কিছু ইমোশনাল কথাবার্তা লিখব। ব্যাস !!! এরপর আবার আমরা নতুন টপিক খুঁজবো।
এভাবে চলতেই থাকবে। না আমরা পরিবর্তিত হব, না পরিবর্তিত হবে এই পরিস্থিতির.... -_-
২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৪২
বিপরীত বাক বলেছেন: কওয়ার কাজ তাই কইছি।
তাই বলে মানতে হইব নাকি?
টিপিক্যাল বাঙাল কালচার। এতটা অাদর্শবিবর্জিত, নৈতিকতাহীন জাতি দুনিয়ায় অার একটিও নেই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:২৪
এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান বলেছেন: