নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তাইফুর এর ব্লগ

মানুষ হয়েও মানুষ হতে হয় পুনরায়।

ব্লু আই

আমি ব্লু আই

ব্লু আই › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনার অধিনস্ত কর্মচারীকে ভালোবাসুন

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৫

হাসপাতালে একজন ওয়ার্ডবয় এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, স্যার- কিছু লাগবে? আমি বললাম না। কিছুই লাগবেনা। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার নাম কি? বলল ‘সজীব’



ছেলেটিকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে তার বয়স খুব বেশী হলে ১২-১৩ বছর। আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ওকে বিভিন্ন জিনিস জিজ্ঞেস করতে লাগলাম। ওরা দুই ভাই ও এক বোন। ভাই দের মধ্যে ও ছোট। বোনটি(সুমাইয়া) সবার ছোট, ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। বাবা মা ও বোন গ্রামে থাকে। বড় ভাই রাজীব ওর চেয়ে ৩-৪ বছরের বড়। একই হাসপাতালে ওয়ার্ডবয় হিসেবে কাজ করে। সজিবের বেতন ২০০০ টাকা ও রাজিবের বেতন ২৫০০ টাকা মাত্র। দুজনের মিলিত ইনকাম ৬০০০-৭০০০ টাকা। তা দিয়েই বাবা মা ও বোন সবার খরচ চলে যায়।



এত অল্প টাকা দিয়েই চলে যাচ্ছে তাদের সংসার। ছেলেটিকে দেখে খুব খারাপ লাগলো। এতবড় সংসারের বোঝা মাথায় নিয়ে হাসি মুখে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিদিন। অথচ ওর মতো যখন বয়স ছিল আমার, তখন আমি ক্রিকেট এর ব্যাট হাতে মাঠে দৌড়তাম, ঘুরি উড়াতাম, ব্যাগ হাতে স্কুল এ যেতাম, বাবা মায়ের স্নেহে থাকতাম, বাবাব সাথে বাজারে যেতাম , মা আমাকে খাইয়ে দিত। কতই না হাসি আনন্দে চিন্তাহীনভাবে দিন কাটাতাম। কেউ আমাকে বকা দিলে দৌড়ে গিয়ে মায়ের আঁচলে লুকোতাম। অথচ সেই বয়সে সজীব ছেলেটি সবার বকা খেতে খেতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কেউ মুখে তুলে খাইয়ে দেয়া তো দুরের কথা, নিজেকেই রান্না করে খেতে হয়। এত অভাব, তবুও জিজ্ঞেস করলে খুব সহজেই উত্তর দিয়ে দিলো ‘খেয়ে পড়ে খুব ভালো আছি স্যার’



কিন্তু আমাদের কোনও অভাব নেই তবুও যেন শুধুই অভাব আর অভাব। কিসের অভাব তা আমরা নিজেরাও জানিনা কিন্তু তবুও অভাব যেন শেষই হয়না কখনও। আসলেই কি আমাদের এত অভাব? এই অভাব কোনোদিনও শেষ হবেনা। কারন, মনের অভাব কোনোদিনও শেষ হয়না।



টাকা দিয়ে কি কখনও ভালবাসা কেনা যায়? না, কখনও সম্ভব নয়। ছেলেটিকে কাছে ডেকে খেতে দিলাম আমি যা খাচ্ছিলাম। বসতে বললাম। ভয়ে ভয়ে বসলো। এক পর্যায়ে জানতে পারলাম, প্রতিদিন ২০ টাকা জমা দেয় একটি সমিতি তে। জিজ্ঞেস করাতে বলল, আজ এখনও কোনও বকশিস পায়নি তাই আজকের টাকা এখনও দিতে পারেনি। আমি মানিব্যাগ থেকে বের করে মাত্র ২০ টাকা দিয়ে বললাম, এটা তোমার সমিতির জন্য। টাকা নিতে চাচ্ছিলনা। অনেকটা জোড় করেই দিলাম। টাকা হাতে নিয়ে ছেলেটি এমন একটি চমৎকার হাসি দিলো যা বলে বোঝানোর মত না। মাত্র ২০ টাকা দিয়ে কি আদৌ এত সুন্দর, চমৎকার, মিষ্টি হাসি পাওয়া সম্ভব?



এই হাসিটির মূল্য কারো কারো কাছে মূল্যহীন হতে পারে কিন্তু আমার কাছে তা লক্ষ্য টাকার চেয়েও দামী। লক্ষ্য টাকা দিয়েও আপনি অনেকের হাসি কিনতে পারবেন না, কিন্তু ভালবাসা মিশ্রিত ২০ টাকা দিয়েই সেই হাসি টি কে অর্জন করতে পারবেন অনায়াসে। তা আমরা অনেকেই বুঝিনা-খেয়াল করিনা-বুঝতেও চাইনা আমরা।



পুনশ্চঃ

আমাদের অধিনস্ত ছোট্ট শিশুটির মাথায় হাত দিয়ে আদর করলে কি আমাদের সম্মানের খুব হানী হয়ে যায়??? তবে কেন আমরা তাদের সাথে অযথাই চিল্লা ফাল্লা করি সামান্য কিছু ভুল করলেই।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭

বোকামন বলেছেন: "এত অল্প টাকা দিয়েই চলে যাচ্ছে তাদের সংসার"
চলে যাচ্ছে না, চালাইতে হচ্ছে .......................................................

আমারে মত :(

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৩১

ব্লু আই বলেছেন: ঠিক বলেছেন। :)

২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭

ইখতামিন বলেছেন: পোস্টে ++++++

প্রথম ভালো লাগা.

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৩৩

ব্লু আই বলেছেন: ধন্যবাদ। ইখতামিন ভাই।

৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৮

হেডস্যার বলেছেন: ভালো লাগা দিলাম :)

৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৩৫

ব্লু আই বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.