উড়িয়ে নিক

২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৫৯

বরাবরই খোলামেলা, আলো বাতাস পূর্ণ মৃদুলার পছন্দ ।
দিনের বেলা আলো এসে ঘর ভরে যাবে, যখন তখন একটু বাতাস এসে তাকে এলোমেলো করবে, হেমন্তে-বসন্তে চলবে বাতাসের খেলা, রাতে নাক বরাবর জানালা দিয়ে কালো আকাশে সাদা মেঘের ওড়াউড়ি দেখা যাবে , যদি বাড়তি পাওনা হিসেবে রাতে জোছনা দেখা যায় তাও মন্দ নয়

যেহেতু ভাড়া বাড়িতে থাকা হয় , তাই এত ভাললাগা আর আবেগের মূল্য দেয়া কঠিন। কিন্তু মৃদুলার ভাগ্য ভাল যে এসব অনুভূতির জন্ম হতে হতে এমন ঘরে ই থাকতে পেরেছে যদিও বাড়তি পাওনাটুকু পাওনা হয়নি। তবে , আকাশ দেখা, বাতাসে চুল ওড়ানো , রাতে মেঘ দেখা-বৃষ্টি দেখা সবই হয়েছে।

এখন যেখানে আছে মৃদুলা গত ৪বছর ধরে , তার এই ঘরটাও সেই আগের পুরান ঢাকার ঘরটার মতই , ভোর হতেই আলো আসে, বিকেল হতেই রোদের খেলা চলে আমার ঘরে, আর যখন তখন পাগল করা বাতাস তো থাকছেই ।
নির্ঘুম রাতে শুয়ে শুয়ে মেঘের ওড়াউড়িও দেখা হয় মৃদুলার।

জানালার পাশেই তার কম্পিউটার টেবিল।
পড়াশুনা বা কাজের খাতিরে দিনের অর্ধেক বা রাতের অর্ধেক সময় তার এখানে বসেই কাটাতে হয়। বাতাস যখন আসে তখন একেবারে তাকে উড়িয়ে নিয়ে যায়।

তবে ইদানিং যেটি হচ্ছে, বাতাসের ছোঁয়া পেলেই এত খুশি লাগে তার
খুব খিলখিলিয়ে হাসতে থাকে সে
এই রাতের বাতাসটা যখন তার গালে, চুলে স্পর্শ করছে তখন নিজের অজান্তেই কেমন এক শূন্যতা অনুভব হয়,মাঝে মাঝে
জল চলে আসে তার চোখে।
মৃদুলার ইচ্ছে করে হারিয়ে যেতে। সব কিছু থেকে মুক্তি নিয়ে হারিয়ে যেতে, অনেক দূরে।
মিলিয়ে যেতে ইচ্ছে করে তার বাতাসের সাথে । বাতাসের তোড়ে কখনো কখনো তার মন বলে "হারাই কোন খোলা সবুজ মাঠে।"

কিন্তু সব কিছুই ঘটে কল্পনাতে, সত্যি হয় না কোন টাই।
বাতাস থমকে যায়, চলে যায় মৃদুলা আবারও পড়ে থাকে তার সেই পুরোনো জঞ্ঝালযুক্ত বাস্তব জীবনে। অপেক্ষা করে, আবার আসুক একটুখানি বাতাস, উড়িয়ে নিক তাকে, নিয়ে যাক সব কষ্ট, হতাশাগুলো, একটু করে দিক হারিয়ে যাবার সুযোগ...

০ টি +০/-০