নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক দেশে ছিল এক মা ব্যাগ আর ছিল এক বেবি ব্যাগ। বেবি ব্যাগের শুধু মার্কেটে ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে।
একদিন মা ব্যাগ আর বেবি ব্যাগ গেল তালতলা মার্কেটে। মা ব্যাগটা বেবি ব্যাগকে কোলে কোলে নিয়ে ঘুরছিল। কিন্তু বেবি ব্যাগটার মায়ের পকেটে চড়ে ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগেনা। তাই মাকে বললো, ম্যা ম্যা, আমাকে নামিয়ে দাও, আমি তোমার হাত ধরে ঘুরবো, হাত ছেড়ে দেব না। মা ব্যাগ তখন বেবিকে নামিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ বেবিটা মার হার ধরে ঘুরে বেড়ালো। তারপর মা যখন কেনাকাটায় ব্যাস্ত তখন বেবিটা হঠাৎ পাশের খেলনার দোকানে গেল।
খেলনা দেখতে দেখতে তার পাশের দোকানে গেল। ভালোইতো খেলনাগুলো, বেবিটা ভাবলো। মাকে বলতে হবে কোন খেলনাটা কিনতে হবে। দেখিতো কোন খেলনাটা সবচেয়ে সুন্দর, একথা ভাবতে ভাবতে বেবিটা এই দোকান থেকে সেই দোকান ঘুরতে লাগলো। সুন্দর সুন্দর খেলনা দেখতে দেখতে বেবিটা ভুলেই গেল সে যে মার হাত ছেড়ে একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছে।
যখন খেয়াল হলো বেবিটা তখন মাকে আর খুঁজে পায়না, পায়না। বেবিটার তখন কান্না পেয়ে গেল। কাকে জিজ্ঞেস করবে মা’র কথা? যদি কোন দুষ্ট মামা জেনে যায় বেবিটা তার মাকে খুঁজে পাচ্ছেনা, তাহলেতো দুষ্ট মামাটাই বেবিকে ধরে নিয়ে যাবে। তাই বেবিটা কোন মামাকে জিজ্ঞেস করলো না ‘তোমরা আমার মাকে দেখেছ নাকি?’
হঠাৎ বেবিটা দেখলো একটা পুলিশ মামা যাচ্ছে। বেবিটা পুলিশ মামাকে বললো, পুলিশ মামা, পুলিশ মামা, আমি আমার মাকে খুঁজে পাচ্ছি না। তুমি কি আমাকে সাহায্য করতে পারবে?
পুলিশ মামা বললো, নিশ্চই সাহায্য করতে পারবো। একথা বলে পুলিশ মামা বেবি ব্যাগটাকে মার্কেটের মাইক মামার কাছে নিয়ে গেল এবং সব কথা খুলে বললো। মাইক মামা তখন বললো, তুমি চিন্তা করোনা, আমি ব্যবস্থা করছি।
এরপর মাইক মামা মাইকে ঘোষণা দিলেন--একটি জরুরি ঘোষণা, একটি জরুরি ঘোষণা। একটি বেবি ব্যাগ পাওয়া গিয়েছে, একটি বেবি ব্যাগ পাওয়া গিয়েছে। মা ব্যাগ, আপনি যেখানেই থাকুন না কেন অতিসত্ত্বর মাইকের নিকট যোগাযোগ করুন। উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে আপনার বেবিকে নিয়ে যান। একটি ঘোষনা…
ঘোষণা দেবার একটু পরেই মা ব্যাগ ছুটতে ছুটতে এসে হাজির হলো। কাঁদতে কাঁদতে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় আমার বেবি?
পুলিশ মামা আর মাইক মামা তখন মা ব্যাগকে বললো, আপনার বেবি হারিয়ে গেছে? মার্কেটে এসে কি বেবির হাত ছেড়ে দিতে হয়? নাহ।
পুলিশ মামার বকা খেয়ে মা ব্যাগ আরও কান্না করতে লাগলো। তখন পুলিশ মামা জানতে চাইলো, আপনি যে বেবি ব্যাগের মা তার প্রমাণ কী? আপনাকে তিনটা প্রমাণ দিতে হবে।
তখন মা ব্যাগ বললো, ঠিক আছে, আমি প্রমাণ দেব। এক, বেবিটার গায়ের রঙ নীল। দুই, ব্যাগের ভিতর সাতশ টাকা আছে। আর তিন, ব্যাগে বাসার দুইটা চাবি আছে।
পুলিশ মামা মা-ব্যাগের সব কথা মিলিয়ে দেখলো, হুম, ঠিকই আছে। তখন বেবি ব্যাগকে বের করে দিল, এই নিন আপনার বেবি। মার্কেটে এসে আর বেবির হাত ছেড়ে দেবেন না, ঠিক আছে?
তখন বেবি-ব্যাগ মা-ব্যাগকে জরিয়ে ধরে কান্না শুরু করলো, মা-ব্যাগও বেবিকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো।
বেবি-ব্যাগ ভাবলো, আমার জন্য পুলিশ মামা মা’কে বকা দিয়েছে, আমি মার্কেটে এসে আর কোনদিন মায়ের হাত ছেড়ে দেব না।
***
তুরানের বয়স হলো সাড়ে তিন।
সারাদিন যেমন-তেমন, কিন্তু রাতে ঘুমাতে গিয়ে সে বাবার ঘুম হারাম করে ছাড়ে--বাবা, গল্প শোনাও, গল্প শোনাও, গল্প শোনাও। এবং কোন রেডিমেড গল্প হলে চলবে না, কাস্টম মেড হতে হবে। কারণ গল্পের পাত্র-পাত্রী এবং বিষয়বস্তু সে নিজে নির্বাচন করে দেবে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, সেই পাত্র-পাত্রীর সাথে দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার বা উপেন্দ্র কিশোর রায়ের পাত্র-পাত্রীর কোন মিল নেই। যদি কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় তবে তা একান্তই কাকতাল মাত্র। কোনদিন তার পাত্র-পাত্রী হলো একটা মা সিএনজি আর একটা বেবি সিএনজি, কোনদিন বাবা ফ্যান আর বেবী ফ্যান, কোনদিন স্পাইডারম্যান আর ব্যাটম্যান।
গল্পগুলি জমিয়ে রাখছি তুরানের ত্রিশ বছর বয়সের জন্য, কোনদিন যদি তার পুত্রও ঘুমাতে গিয়ে শুনতে চায় একটা মা সাইকেল আর একটা বেবি সাইকেল কিংবা একটা মা টেম্পু আর একটা বেবি টেম্পুর গল্প।
২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪০
সুমন কর বলেছেন: তুরানের গল্প ভালো লাগল।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৩২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ভালই লাগে পড়তে।। আমার তুরানটি ২৭ বছরের।। তবুও মনে হয় শোনানো যাবে!!