নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বড় হবে যতো, মাথা নুয়াবে ততো।

স্বপ্নছোঁয়া

নাম ভুলে গেছি,দুরবল মেধা স্মরণে রেখেছি মূখ। কাল রজনীতে চিনিব তোমায় আপাতত সৃতিভুক।

স্বপ্নছোঁয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

"সুকন্যা"

১৩ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৪:১৮



সুকন্যা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।দেখে মনে হয় খোলা আকাশে সুকন্যার অবাধ বিচরন।অনেক টা বছর ঠিক এইভাবে ই সময় পার করেছে তাই বোধ হয়।সকালবেলার ঝলমলে রোধ সুকন্যার মুখে খেলা করে।তখন তার গোলাপি গালটা আর ও বেশি ঝলমল করে।মাঝে মাঝে জানালার পাশে দাড়িরে সামনে দোকানে লোকজন কি কথা বলাবলি করে টা মনোযোগ দিয়ে শোনে বেশ মজা পায়।দৃষ্টিসীমার বাইরে সূর্যের নরম কোমল আলো যখন সুকন্যার চোখে এসে পড়ে সুকন্যার অনুভুতিতে সাড়া জাগে।আলিশা সুকন্যার বড় বন।তারা তিন বোন আলিশা সুকন্যা এবং সামান্তা।সুকন্যা মেঝো আলিশা এইবার এইচ,এস,সি পাস করেছে জি,পি,এ ৫ পেয়েছে সে আইডিয়াল কলেজ থেকে। পরীক্ষা শেষ করার পর থেকে আলিশার মাথায় ভুত চেপেছে ফটোগ্রাফির। পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করার পর আলিশার মেঝো মামা মন্সুর ওকে জিজ্ঞেস

আলিশা মামুনি তোর কি লাগবে?

যেই বলা সেই মাত্র চাওয়া

মামা একটা ডি,এস,এল , আর ,লাগবে।

মন্সুর মামা আমেরিকা থাকে,এই মামাটা ওদের তিন বোন কে খুব স্নেহ করে।তিনবোনের জন্য সবসময় কিছু না কিছু পাঠাবে।আলিশার মা মারজান মন্সুর মামার খুব আদরের ছিল তাই সেই আদর এখন দিগুন আকারে তার ছেলেমেয়েদের উপর এসেছে।এটা আলিশা বেশ ভাল করে বুঝতে পারে।তাই মাঝে মাঝে সুযোগের উপযুক্ত ব্যবহার ও সে করে।মামার কাছে আবদার ও করে।মামার আদরের ভাগ্নি একটা আবদার করেছে যেই আবদার দশ দিনের মাথায় মন্সুর মামা পাঠিয়ে দিল একটা ডি,এস,এল,আর। মারজান একটু রাগই হলো ভাইয়ের উপর মেয়ে পাস করে কোথায় ভাল কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবে সেই জন্য মামা উৎসাহ দিবে টা নয় মামা ভাগ্নিকে ফটোগ্রাফির জন্য উস্কানি দিচ্ছে।মারজানের খুব চিন্তা হয় মেয়েকে নিয়ে আদৌ ভাল কোথাও চান্স পাবে কিনা। যে যুগ পড়েছে হাজার হাজার জি,পি,এ ৫ এর ভীডে তার মেয়ে যোগ্য স্থানে যেতে পারবেতো।আলিশা আবার বেশ কনফিডেন্সের সাথে মাকে জানায় সে বুয়েটে আর্কিটেকচার পড়বে। আলিশা ছোট বেলা থেকে ই বলতো আমি বড় হয়ে আর্কিটেক হব।মেয়ের চোখে যখন স্বপ্ন ঝলমল করে মারজান তৃপ্তি পায়,পরক্ষণে আবার ভয় ও পায় এই যে স্বপ্ন তার মেয়ের চোখে সে দেখছে তা যদি কখনও মলিন হয়ে যায়। কত স্বপ্ন ইতো মানুষ দেখে কালে কালে স্বপ্নগুলো গতিপথ বদলায় কিছু স্বপ্ন হারিয়ে যায় কিছু স্বপ্ন সৃতির পাতায় থাকে অগোচরে কেউ দেখেনা কেউ বুঝেনা কেউ জানতে চায়না।আলিশা একটু বড় হয়েছে সুন্দর হয়েছে চোখে লাগার মতো মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকে মারজান মনে মনে হাসে। যখন সেজেগুজে বন্ধুবান্ধবদের সাথে ঘুরতে যায় মারজান খেয়াল করে দেখেছে তার মেয়েকে অসম্ভব রুপবতী লাগে।কিন্তু আলিশার চলাফেরাতে কোন পরিবরতন নাই যেমন আগে ছিল এখন ও তেমনি একটু চঞ্চল আলিশা।মারজানের মেঝো মেয়েটা খুব ঠাণ্ডা নরম বাবার মতো হয়েছে স্বভাবটা।

মারজানেরা তিন ভাই এক বোন। ছোট বেলা থেকে খুব আদরের ছিল মারজান,পরিবারের সবার আদরের কেন্দ্রবিন্দু।ভাইদের চোখের মনি,ভাইদের সাথে মারজানের বয়সের ব্যবধান খুব বেশি না তাও কেন জানি ওর ভাইয়েরা ওকে আদরের খুকমনি ভাবতে বেশি পছন্দ করত।ছোট ভাই মারজান থেকে এক বছরের বড় বাকি দুই জন ছোট ভাই থেকে দুই বছর করে বড়। সব ভাইয়েরা বিয়ে করেছে সুখে শান্তিতে সংসার করছে,বর ভাইয়ের দুই ছেলে এক মেয়ে। ছোট জনের এক ছেলে এক মেয়ে।আর মেঝো জন মন্সুর তার এখনো কোন ছেলে মেয়ে নেই।ভালবেসে বিয়ে করেছে ক্যাথরিনকে।ক্যাথরিন কখন ও মা হতে পারবেনা।আমেরিকার নাগরিকত্ব আছে মন্সুরের তাই যখন তখন আসতে পারে বাংলাদেশে ক্যাথরিন কে নিয়ে।মাঝে মাঝে আসে অল্প কিছুদিনের জন্য,মারজানের ক্যাথরিনকে ভাল লেগেছে।কেন জানি মারজান খেয়াল করেছে ক্যাথরিন আর মন্সুরের কেমিস্ট্রি খুব ভাল আর এই ব্যাপারটা মারজানের ভাল লেগেছে বেশি।ক্যাথরিন মেয়ে হিসেবে ও ভাল নরম স্বভাবের,আমেরিকার একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাথরিন সাহিত্য পরায়।বাংলাদেশে যখনই আসে মারজানের মেয়েদের সাথে ক্যাথরিনের ভাল সখ্যতা হয়। মন্সুরের ভালোবাসা আর ক্যাথরিনে চেষ্টায় ক্যাথরিন ভাল বাংলা বলতে পারে।বাংলাদেশে আসলে ক্যাথরিন যতটুকু সম্ভব বাংলায় কথা বলে।মারজানের বাবা মা কেউ বেচে নেই।সংসার চাকরি ব্যস্ততা সব কিছুর ফাঁকে কিছু সময় মারজান পুরনো মানুষগুলোর কথা ভাবে।তখন বেশ শূন্যতা অনুভব করে।সব আছে তা কি যেন নেই।ভেতরটা এতো ফাঁপা লাগে সব কিছু ই অপ্রাসঙ্গিক লাগে কেন এতো ব্যস্ততা কেনজাবে।সব চাওয়া ,সব কিছুইতো শেষ হবে একদিন।এক এক করে সব হারিয়ে যাবে মুছে যাবে।





মারজানের স্বামী ব্যাংকে চাকরি করে।পাশাপাশি ব্যবসা ও আছে দুজন বন্ধু মিলে দেখা শুনা করে।প্রথমে বেশ কয়েকজন মিলে শুরু করেছিল পরের দিকে ব্যবসা ভাল গতিতে যাচ্ছে না তাই সবাই সরে পড়েছে এখন বাকি আছে মাসুক আর আমিন।আজ সুক্রবার।সবাই বাসায় আছে।আলিশা আর টার বাবা ঘুমিয়ে আছে।বাবা মেয়ে দুজন ই ঘুম পাগল সুযোগ পেলে আর ছাড়াছাড়ি নেই।সুকন্যা রোজকার মতো জানালার পাশে দারিয়ে,মারজান জানে টার এই মেয়ে এই সময় জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ত্থাকে।সকাল বেলার সূর্যের ঝলমলে আলো তার মেয়েকে পুলকিত করে।মেয়ের আনন্দে বাধা দিতে চায়না তাই সকাল বেলা নাস্তা তৈরি হয়ে টেবিলে আসার আগ পর্যন্ত মারজান সুকন্যাকে ডাকেনা।এততুকু ইতো আনন্দ মেয়েটার জীবনে।ভেবে ই একটু দীর্ঘশ্বাস নেয়।ছোট মেয়েটা য় সকালে উঠার অভ্যাস।সকাল বেলা স্কুল যেতে ভরে উঠতে হয় তাই অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।শুক্রবার ও সকাল সকাল উঠে যায়। উঠে ই টিভি অন করে বসে পড়বে একেবারে টিভির মুখোমুখি।মাশুক অনেকবার সামান্তাকে বারন করেছে এইভাবে টিভি দেখতে।ভয় দেখিয়েছে এই বলে

আম্মু টিভি থেকে ক্ষতিকর গামা রশ্মি বের হয় যা তোমার চোখের জন্য ক্ষতিকর।

সামান্তার কোন ভয় নেই বাবা কি বলেছে সেই দিকে খেয়াল ও নেই কার্টুন দেখছে মনোযোগ দিয়ে।বাবা যখন দ্বিতীয়বার বলবে তখন সামান্তা বাবাকে বলবে-

বাবা আমিতো চোখে ঠিক ঠিক দেখি।তুমি এতো ভীতু কেন??

যে কার্টুন সে একবার দেখেছে আবার রিপিট হচ্ছে সেটাও দেখবে।সামান্তা পড়াশুনাতেও বেশ মনোজোগি।এইদিক দিয়ে মারজানের শান্তি টার তিন মেয়ে ই দুষ্ট কিন্তু পড়াশুনাতে আবার গাফেলতি নেই তাদের।যখন যে কাজটা করে খুব মনোযোগ দিয়ে করে মারজানের বেশ ভাল লাগে।আলিশা ফটোগ্রাফি শিখছে।আলিশার মাথায় ফটোগ্রাফির ভুতটা চাপিয়েছে ওর বন্ধু সিহাব।কলেজ থাকাকালীন সে তার বাবা মার কাছ থেকে এস,এল,আর আদায় করেছে।বন্ধুরা যখন কোথাও ঘুরতে যেত শিহাব ছবি তুলতো।এইসব দেখে দেখে আলিশার সখ জেগেছে।

আলিশা টের পাচ্ছে আলিশার মনে শিহাবের জন্য একটু একটু অনুভুতি তৈরি হচ্ছে। যদিও সে তা প্রকাশ করতে দেখাতে চায়না।ভাবে বেশি সময় একসাথে থাকে তাই হয়ত।আলিশার মতে শিহাব কোন অহংকার নেই।নিরঅহংকারী একটা ছেলে মানুষের কষ্ট শিহাবকে খুব স্পর্শ করে।মার কাছে আলিশা কয়েকবার শিহাবের গল্প করেছে।শিহাব রা ভালো ধনী। ঢাকাতে তিনটা বাড়ি আছে।আলিশা ওদের বাসায় গিয়েছে।সব ই আছে ওদের এতো বড় বাসায় তাও কিসের যেন অভাব।শুক্রবার নাস্তাটা অন্যদিনের চেয়ে একটু দেরীতে করে সবাই।মারজান মাশুক আলিশাকে ঘুম ভাঙ্গাতে যাচ্ছে।দেখে তার লক্ষী মেয়ে সুকন্যা আসছে নাস্তার টেবিলে দিকে।এই মেয়েটা কোন কষ্ট ই দেয়না তাকে।

সুকন্নাঃ মা নাস্তা রেডী?

মারজানঃহ্যা,আয় মা টেবিলে বস, আলিশা উঠেছে ??

সুকন্যাঃ হুম,আমি ডেকে দিয়েছি,দাত ব্রাশ করছে এখন ই আসবে।

মারজান মাশুক আর সামান্তাকে নিয়ে টেবিলে হাজির।মাশুক কে উঠাতে তার একটু বেগ পেতে হয়।এত সময় পার হয়েছে সংসার জীবনে অথচ এখনো মাশুক ঘুম থেকে উঠার সময় মারজানকে নতুন বউ এর মতো আদর করা মাশুকের চাই চাই।মারজান অবশ্য বিরক্তি ভাব দেখালেও ব্যপারটা উপভোগ করে।তাও মাঝে মাঝে বলে-

এতো বয়স হল তিন মেয়ের বাবা হলে তাও তোমার লজ্জা করেনা??

মাশুকঃ তিন মেয়ের বাবা হলে বউকে আদর করা যাবেনা এটা সংবিধানে নেইতো?

মাশুকের সাথে মারজানের পনের বছরের সংসার জীবন।মাশুকের কিছু কিছু ব্যাপার মারজানের কাছে পজিটিভ লাগে।প্রচলিত রীতিনীতি মাশুক মেনে চলেনা,তার কাছে যা যুক্তিসঙ্গত মনে হয় সেই মোতাবেক চলতে পছন্দ করে।কার উপর কোন কিছু জোর করে চেপে দেয়া অথবা কে কি ভাবল সেই ভেবে কাজ করা এইসব মাশুক কখনও করেনা।এইসব দেখে মারজানের মাশুকের উপর সন্মান টা আরও বহুগুনে বেড়ে জায়।পনের বছর সংসার জীবনে মারজান সবসময় মাশুকের সাপোর্ট পেয়ে এসেছে।

টেবিলে সুকন্যা আলিশা আর সামান্তা গল্প করছে আর হাসছে। আলিশার একটা বড় গুণ সে যেখানে থাকবে আশেপাশের সবাইকে খুব হাসিখুসি রাখবে।বিশেষ করে সে যখন তার দুই বোনের সাথে থাকে।হাসির খিল খিল রিনিঝিনি শব্দে ঘর আলোডিত হয়।মারজান যখন পাশে থাকে তা খেয়াল করে।বাবা খাবার টেবিলে এসেই জিজ্ঞেস করলো –

মাশুকঃকি ব্যপার এতো হাসি কেন??তিন বোনেতে কি আলাপ হচ্ছে??

আলিশাঃ সুকন্যা কে মকবুল ভাইয়ের ছবি তোলার গল্প করছিলাম।

মাশুকঃ কেন ও আবার কি করলো??

আলিশাঃমকবুল ভাই আমাকে বলল- আফা আফনের হাতে এইডা কি ক্যামেরা?

আমি বললাম হ্যাঁ ।সে বলে-এইডা দিয়া ভাল ছবি তুলা যায়?

আমি বললাম তোলা যাবে কেন?সে বলে-আমার একখান ভাল ছবি তুইল্লা দিবেন বিল্কিস বানুর লাইগা পাঠামু।আমি ছবি তোলার জন্য যেই টাকে ফোকাস করলাম দেখি উনি নামাযের ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছে এন্ড সবচেয়ে মজার ব্যাপার তার দুই গাল বেয়ে লাল পানি ঝরে পড়চ্ছে।

বাবা তুমিই বল তার এই বয়সে পান খাওয়ার কি দরকার।

He looks like a vampire.

ছেলেমেয়েদের এইসব ছেলেমানুষি কথায় মাশুক হাসে।বুঝিয়ে বলে মা একটা মানুষ পান খেতে ই পারে পান খাওয়াটা তার স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে আর পান খেতে তো বয়স লাগেনা।তবে এটা ঠিক সে সুন্দর মার্জিত ভাবে খেতে পারে যেন পানের রস গাল বেয়ে না পড়ে দেখতে যেন খারাপ না দেখায়।অন্য মানুষের জন্য তা যেন বিরক্তির কারণ না হয়ে দারায়।হাসি মজা করতে করতে নাস্তা পর্ব শেষ হল।মাশুক আর মারজান বারান্দায় গেল খবরের কাগজ পরছে।সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে এই দিনটাতে সকালের কিছু সময় তারা বারান্দায় কাটাতে পারে।দুজন ভাল কিছু সময় পার করে এক্সাথে।বারান্দাটা মারজানের ভীষণ প্রিয় নিজের মনের মতো করে সাজিয়েছে।বেশ রোদ ও আসে বারান্দায়।কিছু লিলি লাগিয়েছে সে।কিছুদিন আগে লিলি ফুটেছে গোলাপি আর সাদার মিস্রন ঝরনার মতন লাগে।কেমন যেন তরঙ্গ। সপ্তাহের বাকি ছদিন অফিস করে ই দিন যায়।মাঝে মাঝে মধ্য রাতে মারজান আসে একাকি কিছু সময় কাটায়।।মাশুকের ঘুম ভাঙলে সেও উঠে আসে মারজান ধিমি গলায় গান শোনায়।মারজানের গলাটা ভারী মিষ্টি ছিল এখনও বুঝা যায়।আগেও মাশুককে গান শুনাতো। এখন একটু নষ্ট হয়ে গেছে ।তাও বেশ ভাল গায়।মাশুকের কাছে অসাধারণ লাগে মারজানের খালি গলায় গান সুন্তে।মারজানের গানের আর তিন জন ভক্ত আছে তারা হল তার তিন মেয়ে আলিশা সুকন্যা আর সামান্তা।



সুকন্যা দৃষ্টিপ্রতিবন্দী ।পৃথিবীর সব রঙ রুপ সুকন্যা দেখতে পায়না শুধু অনুভব করতে পারে।সুকন্যার আত্মসন্মানবোধ সব চেয়ে বেশি এটা আলিশা খেয়াল করেছে।তাই কখনও সেই জায়গাটাতে সুকন্যা কে আলিশা আঘাত করেনা।সুকন্যা দেখতে পারেনা তাই কেও ওকে বেশি বেশি সমবেদনা জানাতে গেলে অথবা সাহায্যর হাত বাড়ালে ও পছন্দ করেনা।আত্ননির্ভরশীল হতে চায়।নিজের কাজ নিজে করতে চায় এবং সে খুব নিপুণ হাতে তা করে।মারজান একবার সুকন্যার জন্য চানমালা নামক এক কাজের মেয়ে ঠিক করেছিলো দুদিন পার হবার পর সুকন্যা মাকে বলেছিল-

সুকন্যাঃ মা চানমালা কে বিদায় করে দাও

মারজানঃ কেন মা ও ঠিক মতো খেয়াল রাখেনা তমার?কথা শোনেনা?

সুকন্যাঃ চানমালা থাকলে আমার প্রাইভেসি নষ্ট হয়।

মাত্র পনের বছরের মেয়ের মুখে এই কথা শুনে মারজান একটু মুচকি হাসলো।তার তিন মেয়েই রূপবতী তার মধ্যে এই মেয়েটার রুপ যেন বেশি আকরশ্নিও।মারজান ভাবে না জানি নিজের ই নজর লেগে যায়।

সুকন্যার কিছু ছবি তুলেছে আলিশা।কি অদ্ভুত মায়াবী লাগছে তার বোন টাকে। চোখে দৃষ্টি শক্তি নেই বলেই কি তার বোনের চোখ গুলো এতো অপূর্ব লাগে! নাকি অপূর্ব দুটি চোখ তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে।আলিশা তখন চতুর্থ শ্রেণিতে।তারা দুবোন একসাথে খেলা করতো। ওদের পুরনো বাসার নিচে একটু ফাকা জায়গা ছিল।একটা বকুল ফুলের গাছও ছিল বিকেলে বাসার ময়না নামের মেয়েটাকে নিয়ে সেখানে তারা খেলা করতো।সন্ধ্যা হবার আগে মা বাবা দুজন চলে আসতেন আর সবাই একসাথে বাসায় চলে আসতো। ।মাত্র একটা বছর সে তার বোনের সাথে প্রাণ খুলে খেলা করেছে।সুকন্যার যখন বয়স পাঁচ তখন ই রোগটা ধরা পড়ল এমব্লাওপিয়া।তাও এই এক বছরে অনেক সৃতি জমা হয়ে আছে আলিশার মনে,তার এবং সুকন্যার।সুকন্যার ব্যাপারে আলিশা খুব আবেগী হয়ে যায়। চোখের কোণে পানি এসে জমা হয়।তখন আর স্বভাব সুলভ আলিশা থাকেনা। বড় বোন আলিশা হয়ে যায় যে তার ছোট বোন কে খুব ভালবাসে মুখ ফুটে বলেনা।

আজ পূর্ণিমা। চাদের আলোয় চারপাশ টা আলোকিত করে রেখেছে।সবকিছু ঝকঝকে।পূর্ণিমা মারজানের ভাল লাগে তাই সিডি প্লেয়ার এ অল্প ভলিওমে রবীন্দ্রসংগীত শুনছে।মারজান সুকন্যার রুমে গেল সুকন্যা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে মারজান ডেকে উঠল সুকন্যা...

সুকন্যা জবাব দিল কি মা কিছু বলবে?

চাদের আলোতে সুকন্যাকে দেখে মারজানের মনটা এতো খারাপ হয়ে গেল কেন??

মারজান মেয়েকে কাছে টেনে খাটের উপর বসে নিজের কোলে মেয়ের মাথাটা রেখে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন আর নিজের পুরনো সুন্দর পার করে আসা পূর্ণিমার গল্প করছেন।চাদের আলো যখন সুকন্যার মুখ ছুঁয়ে যাচ্ছে তখন মারজান ভাবছে কবে তার মেয়ের জীবনটা এমন ই পূর্ণিমার আলোর মতো পূর্ণতা পাবে??যেখান থেকে শুধু আলোর জ্যোতি বের হবে কোন অন্ধকার ছুঁতে পারবেনা!!











মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:০২

মায়াবী ছায়া বলেছেন: +++

১৩ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৯

স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: ধন্যবাদ মায়াবী ছায়া :)

ভাল থাকবেন।

২| ২৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:৪০

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার হয়েছে। প্লাস দিলাম।++

২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭

স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: দেশ প্রেমিক বাঙ্গালী ,সময় নিয়ে আমার লিখাটি পড়ার জন্য এবং উৎসাহ দেবার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.