![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নীলিমা! নীলিমা!
নীলিমা পেছন ফিরে তাকালো দেখে রনি দাঁড়িয়ে আছে।নীলিমা ডাকে রনি পাগলা।সব উল্টাপাল্টা কাজ করা রনির স্বভাব তাই তার এই নাম।সারাক্ষণ পাগলামি করে বেড়ায় যেন কোন ক্লান্তি নেয়।রনি দৌড়াতে দৌড়াতে এসে নীলিমার সামনে দাঁড়ালো।
রনিঃ কই ছিলি এতক্ষণ? তোকে খুঁজে খুঁজে হয়রান।
নীলিমাঃ সেমিনারে ছিলাম এখন স্যারের কাছে যাচ্ছি।আমার প্রজেক্ট এ কিছু ভুল ছিল ঠিক করলাম।এখন স্যারকে দেখাবো।
রনিঃ ধুর! ভুল টুল কিছুইনা সুন্দরী নীলিমা স্যারের আসে পাশে স্যার স্যার করে দৌড়া দৌড়ী করবে ,স্যার তাই চায়।
নীলিমাঃ রনি! তুই একটু বেশি বুঝিস।
নীলিমা রনিকে এডিয়ে যেই স্যারের কাছে যেতে প্রস্তুত হল,রনি নীলিমার হাত টা টেনে ধরে যাবার পথে বাধ সাধল, আর বলল আচ্ছা বিজ্ঞ নীলিমা যাবার আগে একটা প্রশ্নের উত্তর দিয়া যান।নীলিমা রনির কথায় মেজাজটা এমনি খারাপ হয়ে গেল তারপরও বলল, কি প্রশ্ন?
রনিঃ আচ্ছা বলতো রোদের আলোতে যে ছায়া পড়ে আর ভরা পূর্ণিমায় চাঁদের আলোতে যে ছায়া পড়ে দুইটার মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
নীলিমা চিন্তার মধ্যে পড়ে যায় কারন নীলিমা ভাল করে জানে এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রনি তার কাছে আশা করেনা এবং যে উত্তর ই নীলিমা দিবে রনি সেটা নিয়ে তুমুল হাসি তামাশা করবে।তার হাসির শব্দে চারপাশের সবাই তাদের দিকে চাতক পাখির মতন চেয়ে থাকবে।
নীলিমাঃ হুম,একটা সূর্যের আলোতে তৈরি আরেকটা চাঁদের আলোতে তৈরি সিম্পল!
রনিঃ ভয়ঙ্কর রকম অট্ট হাসি দিয়ে বললো আরে গাধী! কোন অমিল নাই বরং মিল আছে দুইটাই মাথা বিগডে দেয়ার মতন,সূর্যের আলোতে যে ছায়া তাতে গরমে মাথা বিগডে যায় আর চাঁদের আলোতে যে ছায়া তাতে ভাল লাগায় মাথা বিগডে যায়।পাশে তোমার মতন নীলিমা থাকলেতো কথাই নেই।নীলিমার থুতনিতে হাত দিয়ে খুনসুটি করে রনি হাসতে হাসতে চলে যায় বন্ধুদের মাঝে। নীলিমা রনির উত্তরে মজা পায়, মুচকি হাসি দিয়ে সেও চলে যায় স্যারের চেম্বারের দিকে।
নীলিমা আর রনির বন্ধুত্ব সেই ইউনিভারসিটির প্রথম থেকে,দুজনের চলাফেরা আর পছন্দের কোন মিল নেই।অমিলে টইটম্বুর।নীলিমা রনির ব্যাপারে কখনও মাথা ঘামায়নি যতটা না তার বন্ধুরা ঘামায়। নীলিমার ধারনা রনি নিজে ই পাগল কখন কি বলে তার ঠিক নেই।কোন ব্যাপারেই রনি সিরিয়াস না তাছাড়া রনি কখনও বলেনি সে নীলিমা কে ভালবাসে।সুতরাং যেমন আছে তেমন ই ভাল। নীলিমা শান্ত কোমল জীবন নিয়ে কোন হেয়ালিপনা নেই। তবে কি এক আকর্ষণ নীলিমার মধ্যে আছে যা সবাইকে আকর্ষিত করে।সবাই পছন্দ করে নীলিমার সঙ্গ কেমন করে যেন নিজেকে নীলিমার কাছে সমর্পণ করে দেয়। নীলিমার সবচেয়ে সুন্দর টার গভীর দুটি চোখ।
নীলিমার সাথে রনির প্রথম সাক্ষ্যাতে নীলিমা বেশ আতঙ্কিত ছিল। ইউনিভারসিটির প্রথম দিন ক্লাসের জন্য যাচ্ছে নীলিমা। ডিপার্টমেন্টে যেই ঢুকল হঠাৎ একটা ছেলে বড়সড় শরীরের অধিকারী জিম করে শরীরটা পাহাড় বানিয়েছে সানগ্লাসেস পড়া বেশ ফিল্মী ভঙ্গিমায় নীলিমার মুখের কাছে এসে স্থির।নীলিমার নিশ্বাস নিতেই কষ্ট হচ্ছে,বিরক্তিতে কপালে ভাঁজ পরেছে যদিও তবুও ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে কি করবে তাও মাথায় আসছেনা।মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। ইউনিভারসিটির র্যাবগিং ব্যাপারটা সম্পর্কে নীলিমার জানা আছে।ভাবছে এর পরবর্তী স্টেপ টা কি হবে??এইবার ছেলেটা একটু দূরে সরে সহজ ভঙ্গিমাতে বলছে দূর থেকে দেখলাম তোমার চোখে আমার ছবি কাছে এসে ব্যাপারটা কনফার্ম হলাম।এই বলেই একটা অট্টহাসি দিয়ে চলে গেল। নীলিমা কিছুই বুঝলনা নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ।তারপর সস্থির নিশ্বাস ফেলেমনে মনে ভাবল যাক বাঁচা গেলো র্যা গিং এততুকুই ছিল। যদিও প্রথম দিন ক্যাম্পাস এসে নীলিমার মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। ক্লাসে ঢুকে মেজাজ আর দিগুন তিনগুন খারাপ হল যখন দেখল ওই ছেলে সিনিয়র না তার ক্লাসেরই।তাও আবার নীলিমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।পরে বহুবার ক্ষমা চেয়ে নীলিমার সাথে সম্পর্ক ঠিক করেছে। তারপর ধীরে ধীরে দুজন ভাল বন্ধু হয়ে উঠে। যদিও রনির একটা স্বভাব আগের মতই আছে নীলিমাকে খেপানো শুধু নীলিমা এখন বদলে গেছে আগে মেজাজ খারাপ হত এখন হয়না।বরং সে কিছুটা মজা পায়।
আজ ইউনিভারসিটির শেষ পরীক্ষা ছিল, নীলিমার মনে সেই প্রথম দিনের আতঙ্ক। নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে, পা টলছে।মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম,মনের ভেতর হাজারও প্রশ্নের ঝড়।মনের ভেতর লুকিয়ে থাকা ভয় যেন শরীরে শিহরন দিয়ে যাচ্ছে অনবরত।
রনির হাতে লাল গোলাপ নীলিমার মনে কোন দোলা দিচ্ছেনা। রনি কত সরল ভাবে অবলীলায় বলে দিল ভালবাসি!!
নীলিমার বিয়ে ঠিক হয়েছে ছেলে ডাক্তার।ভবগুরে একজন রনিকে তার পরিবার কখনই মেনে নিবেনা,অপেক্ষাও করতে দিবেনা।আর পরিবাবের মতের বাইরে কোন সিদ্বান্ত নিবে নীলিমা সেভাবে গড়ে উঠেনি। নীলিমার মন জানে সেও রনিকে ভালবাসে শুধু জানতে দেয়নি রনিকে। সেদিন বিয়ের কথা জানিয়ে চলে এসেছিল।প্রতিকুলতা মোকাবেলা করার একটু সাহস করে উঠতে পারেনি।এই গ্লানি তাকে সারাজীবন কষ্ট দিবে,একবার ভাবে একটু সাহস করলে কি হতো সবাই নাই বলবে তাও তো চেষ্টা করার তৃপ্তি টুকুতো থাকতো। নীলিমার নির্লিপ্ততা রনির মনে আঘাত আনে ভীষণ ভাবে। মনের কথা জানাতে একটু বেশিই দেরীই করে ফেলল বোধ হয়, রনির বিশ্বাস ছিল নীলিমা তাকে ফিরিয়ে দিবেনা, যোগাযোগ আর করেনি সেদিনের পর শুনেছে নীলিমার বিয়ে হয়ে গেছে...।
সেই প্রথম দিনে বেগুনী জামা পরা নীলিমার ছবি রনির মনে গেঁথে গেছে চাইলেও ভুলতে পারেনা সেই চিকন কালো চুলের ঝরনা।কি ভীষণ মায়াবী নীলিমার ওই দুটি চোখ।আমৃত্যু নীলিমা তেমনই থাকবে রনির হৃদয়ে। মাঝে মাঝে ভাবে নীলিমা কি তাকে ভুলে গেছে??রনি এখন কবি অশুভ রনি সবাই ভাবে তার মাথা বিগড়ে গেছে, প্রতি পূর্ণিমায় রনি ভাবে তার মাথাটা যদি সত্যি সত্যি বিগড়ে যায়, যদি ছায়াটার দেখা মেলে!!!!
২৮ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৯
স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: ভাল লেগেছে জেনে প্রীত হলাম।
ধন্যবাদ ।
২| ২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:১৯
সুমন কর বলেছেন: ভালো হয়েছে। আরো ভাল করার সুযোগ ছিল।
২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১:৩০
স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: ভালো লাগায় ধন্যবাদ| মন্তব্য গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় থাকলো, কল্পনার পুরোটা সুন্দর মাঝে মাঝে লেখনিতে ফুটিয়ে তুলতে পারিনা এই ব্যর্থতাটুকু মুছতে চাই|
৩| ২৯ শে মে, ২০১৪ ভোর ৫:১৭
সকাল হাসান বলেছেন: ভাল হয়েছে। চালিয়ে যান
++
২৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৪৭
স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: ধন্যবাদ.। চালিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা পেলাম ।
৪| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:০১
এহসান সাবির বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩৯
স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: ধন্যবাদ। এহসান সাবির
৫| ৩০ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:২৭
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: সাদামাটার ভেতর দিয়ে ফুটেছে ভালো। তবে একটা কথাই বোঝা গেল, মন একজনের কাছে, শরীর আরেকজনের কাছে। কারো কারো এমন দ্বিবিধ জীবন।
৩১ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:১৬
স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ জুলিয়ান ভাই|
তবে দ্বিধা নিয়ে আমার যা মনে হয় প্রত্যেক মানুষ জীবনে কম বেশি দ্বিধায় পড়ে কিন্তু শরীর এবং মন দুটি সত্তা আলাদা করে রেখে সহজ স্বাভাবিক জীবন বেশ কঠিন|
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৭
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার!!