নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বড় হবে যতো, মাথা নুয়াবে ততো।

স্বপ্নছোঁয়া

নাম ভুলে গেছি,দুরবল মেধা স্মরণে রেখেছি মূখ। কাল রজনীতে চিনিব তোমায় আপাতত সৃতিভুক।

স্বপ্নছোঁয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

"কালো রঙের ছাতা"

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:১৩





এই কেমন রুম??এত অসস্থি লাগছে তনিমার। একটা খাট ঘরের মাঝখান বরাবর।খাটটা পুরনো দিনে খাট গুলো যেমন হতো ঠিক সেইরকম কাঠের খোদাই করা চারপাশটা ডিজাইন করা আটকানো,বাচ্চাদের দোলনা যেমন করে বানানো হয় তফাৎ শুধু দুই পাসে বের হওয়ার পথ যা এই খাটে আছে।এই খাটটাতে সে শুয়ে আছে।কি আশ্চর্য! মাথার উপর ফ্যান নাই তার বদলে যা আছে তা বড় বিদঘুটে।একটা কালো নৌকা আর তাতে একটা কালো রঙের ছাতা ঝোলানো। ছাতাটা বন্ধ না, খোলা।একটু একটু করে দুলছে।ছাতার বাকা প্রান্ত নৌকার মাঝ বরাবর আটকান।নৌকায় কোন বৈঠা নেই।উপরের কিছু অংশ ফাকা, আলো আসছে। হঠাৎ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কিছু ফোঁটা ডানে বামে উপর থেকে তনিমার মুখে পড়ছে।



তনিমা বিছানায় উঠে বসলো। দুঃস্বপ্ন দেখেছে।আজকাল হাবিজাবি স্বপ্ন বেশি দেখছে।ঘুম থেকে উঠেই তনিমার মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল।এ কেমন স্বপ্ন!! কাল অনেক রাত জেগে পড়াশুনা করেছে।কাল নয়টায় বাচ্চু স্যার মিডটার্ম পরীক্ষা নিবে বলেছে। কালো রঙের ছাতা তনিমার একেবারে অপছন্দ তবে অবচেতন মনে যা ভাবে অনেক সময় তাই নাকি স্বপ্ন দেখে কিন্তু কালতো পরীক্ষার টেনশন ছিল এই ফালতু জিনিস তো মাথায় আসেনি তাও এই স্বপ্ন দেখল কেন।তনিমা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সি,এস,সি র প্রথম বর্ষের ছাত্রী।মাথায় তাই পরীক্ষার চিন্তা,তাড়াতাড়ি রেডি হতে হবে।তনিমার বেশি সময় কখনও লাগেনাও না।হাত মুখ ধুয়ে জামা পরেই রেডি। ক্যাফেতে নাস্তাটা সেরে নিতে হয় ক্লাসের আগে, যেদিন একটু বেশি রেডি হতে ইচ্ছে করবে একটু কাজল আর ছোট একটা কালো টিপ। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে তনিমা রেডি হয়ে তার প্রিয় নীল রঙের ছাতাটা নিয়ে বের হল।হলের সামনে রাহাত দাঁড়িয়ে লাল কালো রঙের চেকের ছাতাটা হাতে ধরা।তনিমা কিনিয়েছে।রাহাত শঙ্কর এর কালো একটা ছাতা কিনেছিল তনিমা রেগেমেগে একাকার করেছে ,বলেছে



-এইটা কি কিনলা?কালো রঙের ছাতা একটা ছাতা হল?



রাহাতের রুচি নিয়েও কিছু নিয়েও কিছু প্রশ্ন উঠলো।রাহাত তনিমাকে অনেক বুঝানর চেষ্টা করেছে ছেলেদের হাতে কালো ছাতাই ভালো দেখা যায়। একটা ছেলে লাল নীল রঙের ছাতা নিয়ে হাঁটছে তা ভালো দেখায়না।তনিমা ডিফেন্সে বলেছিল

-রঙ্গিন ছাতা কিনতে কে বলেছে শুধু পুরো কুচকুচে কালো না হলেই হয়।

শেষে বাধ্য ছেলের মতন এই ছাতা কিনা। একটু রাগ ও হয়েছিল দুই দুইটা ছাতার খরচ বহন করতে হয়েছিল বেচারাকে।হলে থাকা একটা ছেলের জন্য এই খরচ একটু বেশি বাড়াবাড়ি।তারপর আবার বন্ধুদের তিরস্কার ও সহ্য করতে হয়েছে। অবশ্য এই রাগ রাহাত তনিমার উপর দেখায়নি।নতুন নতুন প্রেম প্রেম ভাবে রাগ কম থাকে।হলে হয় একটু অভিমান তাও বেশি সময় টিকে থাকেনা!!



তনিমা মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে রাহাতকে বললো



-গুড মর্নিং!



জবাবে রাহাতের মিষ্টি একটা হাসি।

তনিমা জানে এই রাহাত ছেলেটার সাথে তার প্রেম প্রেম ভাব রাহাত এখনও তাকে কিছু বলেনি,তবে তাদের মধ্যে অব্যক্ত ভালোলাগা, অঘোষিত ভালবাসা আর অবাধ মেলামেশা চলে।সারাক্ষন সুপার গ্লুর মত দুজন দুজনের সাথে লেগে থাকে।ক্লাসে লাইব্রেরীতে আড্ডায় সবখানে তারা দুজন একসাথে।তনিমার রাহাতকে ভালো লাগে,ছেলে ভালো লম্বা শ্যামচরণদাশ ।তনিমার কেন জানি রাহাতকে বেকুব বেকুবও লাগে তাও ভালো লাগে তবে তনিমা জানে ছেলে সত্যিকারে বেকুব নয় কিছু মানুষ থাকে যারা নিজেকে সেভাবে মানুষের সামনে তুলে ধরতে জানেনা যদিও বা মাঝে মাঝে অতি উৎসাহী হয়ে কিছু করে দেখাতে যায় তখন বোকামির মাত্রা আরও বেশি করে প্রকাশ পায়।কিছু সময়ের জন্য ভুলে যায় যাহা স্বাভাবিক তাহাই সুন্দর!!এই ছেলে তা করেনা এই জন্য রাহাতকে তার আরও বেশি ভালো লাগে।



দুজন হেটেই ক্যাফের দিকে রওয়ানা হয়েছে| বৃষ্টি সবার ভালো লাগে তনিমারও পছন্দের শুধু বিরক্তিকর এই কাল রঙ্গের ছাতা চারপাশে এত কালো রঙের ছাতা দেখা যায় যা অসহনীয়।আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ পাওয়া যাবে যারা প্রত্যেকেই নানান কারনে বিরক্ত | যেমন কেউ কেউ আছেন তার সামনে বসে কেউ. যদি শব্দ করে কিছু খান তবে তিনি বিরক্ত কিন্তু সৌজন্যতার খাতিরে কিছু বলার উপায় নেই তাই ব্যাপারটা কে পাস কেটে যেতে হয়|তনিমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা প্রচ্ছন্ন নয় প্রকট।তাই ব্যাপারটা সে পাস কাটিয়ে যেতে পারেনা। তাদের ক্লাসের ৯৯.৯% ছেলেই কালো ছাতা নিয়ে আসে| তনিমাদের ব্যাচে নয় জন মেয়ে বাকি সব ছেলে| তনিমা খেয়াল করেছে এই নয়জন মেয়ের মধ্যে তিন জন মেয়ে আছে কালো ছাতা ব্যবহার করে বাকিরা রঙ্গিন ছাতাধারী।



বৃষ্টি একটু কমেছে।বৃষ্টিতে যখন গাছের পাতাগুলোতে পড়ে থাকা ধুলোবালি ধুয়ে যায়, পাতার প্রকৃত সজিবতা ফুটে উঠে, নিজের দেখা প্রতিদিন কার সেই প্রকৃতি যেন নব রুপ নিয়ে ধরা দেয়| কি একটা শান্তি স্নিগ্ধভাব চারপাশে বিরাজ করে|মানবজীবনের বৈচিত্রময়তা কখনো কখনো এই স্নিগ্ধ সজীব প্রকৃতি অসীম ভালো লাগার পাশপাশি মনে গভীর উদাসীনতা দিয়ে যায়| প্রিয় মানুষের কথা মনে করিয়ে দেয়| পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে ।বৃষ্টি এখনও থামেনি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে| পরীক্ষা শেষে টঙ্গে বসে চা খাচ্ছে তনিমা রাহাত।তনিমার রাহাতের কথায় মনযোগ নেই এক দৃষ্টি তে বৃষ্টি দেখছে|ছোট বেলা থেকেই বৃষ্টি তনিমার অনেক বেশী পছন্দের| একেবারে ছোটবেলা বাবা স্কুলে আনা নেয়া করত | মা বাবা দুইজনই চাকরি জীবি তাই নিজেদের সুবিধার্থে ক্লাস সিক্স সেভেন এ তনিমার জন্য একটা বুয়া রাখা হয়েছিল যে তাকে স্কুলে দিয়ে আসবে ছুটি হলে নিয়ে আসবে| তনিমার যে স্কুলে পড়ত তা তনিমার বাসার কাছেই ছিল রিকশা করে যাবার মত পথ ছিল না|এইটে উঠার পর তনিমা সিদ্ধান্ত নিল সেস্কুলে একা একা আসা যাওয়া করবে অল্প একটু পথ তার সমস্যা হবেনা| বাবা মাও রাজি হয়ে গেলেন। আজ মাকে ভিষণ মনে পড়ছে | কখনও মাকে ছেড়ে দুরে এইখানে একা হলজীবন কাটাতে হবে স্বপ্নেও ভাবেনি| মায়ের আচলে বড় হয়েছে তনিমার মাকে ছাড়া একদিন চলেনা, প্রথমে তনিমা আসতে চায়নি মাকে ছাড়া থাকতে পারবেনা | শেষে সবাই অনেক বলে কয়ে রাজি করালো |এখনও পুরপুরি খাপ খাওয়াতে পারেনি তনিমা। ঢাকা থেকে আসার দিন বাচ্চাদের মত করে কাদে| এখানে বড় আপুদের দেখেছে দিব্বি হেসে খেলে যাচ্ছে খুব বেশী মন খারাপ করে না নিজেরা নিজেরা পরিবারের মত হয়ে গেছে।



বাবাকে অনেক বেশি মিস করে সবসময়।বাবা ছোট তনিমার সাথে পাঞ্জা খেলতো আর মিথ্যে মিথ্যে হেরে যেত তনিমা হেসে লুটুপুটি খেত বাবার কোলে গড়িয়ে পড়ত।বড় হবার পরও বাবা আর মেয়ে আরও ভালো বন্ধু হয়ে গেল।বাবা অফিস থেকে এলে বাবার সাথে সারাদিনের গল্প জুড়ে দিত।বাবা মনযোগী শ্রোতা হয়ে সব শুনত।তনিমা তখন সবে মাত্র ক্লাস টেনে উঠেছে | এমনই এক বৃষ্টির সকাল তনিমা স্কুলে যাবার জন্য তৈরী হয়েছে| বাবা বের হয়েছে, বাজারে যেতে হবে বাইরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল তাই বাবা কালো রঙ্গের ছাতাটাও নিয়ে বের হয়েছে |বাসার কাছেই বাজার | তনিমা বারান্দায় দাড়িয়ে বৃষ্টি দেখছিল যাবার সময় বাবাকে গেটে দেখে

বাবা! বলে ডাকলো, বাবা কালো রঙ্গের ছাতাটাও বাম হাতে ধরে পেছন ফিরে হাসি দিয়ে বাজারের উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়ে গেল|তার ঠিক বিশ মিনিটের মধ্যে ই মার মোবাইলে একটা কল আসল মা পাগল প্রায় হয় তনিমার হাত ধরে ছুটে চলল, তনিমা জিজ্ঞেস করাতে শুধু বলেছিল



- তোর বাবা এক্সিডেন্ট হয়েছে!



বৃষ্টি তে ভিজতে ভিজতে তারা মা মেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়| মা ও মেয়ের চোখের জল আর বৃষ্টি র জল কোন ভেদ নেই সব এক হয়ে গেছে|ঘটনার আকস্মিকতায় তনিমা হতভম্ব।বাবার লাশের পাশে তার পাগল প্রায় মা আহাজারি করে যাচ্ছে তনিমার কিছুই করার নেই শুধু হু হু করে কেঁদেই যাচ্ছে তনিমা| ফুটপাতের পাশে বাবার কালো রঙ্গের ছাতাটা পড়ে আছে| বাবাকে সকাল বেলা একটা বাস ছোট একটা ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে| প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে বাবা রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে পড়ে হঠাৎ করেই। বাবার শরীর ভাল ছিলো না বাবা কাউকে বলেনি কিছু।বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ততক্ষনে বাবা আর এই পৃথিবী তে নেই, বিদায় নিয়েছে চিরতরে না ফেরার দেশে। ডাক্তার বলেছে বাবার ছোট খাট একটা মাইনর অ্যাটাক করেছে |মা আর বিয়ে করেনি তনিমাকে নিয়ে বাকি জীবন কাটাবে ।অনেকে মাকে জোরালোভাবে বিয়ের কথা বলেছিল মা রাজি হয়নি|মাঝে মাঝে মার এককিত্ব জীবনের জন্য নিজেকে অপরাধী মনে হত।



তনিমা শীতল গলায় রাহাতকে জিজ্ঞেস করে



তনিমাঃ আচ্ছা রাহাত ব্ল্যাক হোল কি জানো?



রাহাতঃ কৃষ্ণগহ্বর!



তনিমা রেগে গিয়েছে



তনিমাঃ,এটাতো অর্থ বললে,আমি কি অর্থ জানতে চেয়েছি?ভার্সিটি চান্স পেলে কিভাবে পড়াশুনা ঠিকমত করেছিলে?



রাহাত খেয়াল করেছে তনিমা মাঝে মাঝে পাগলামি করে,শীতল গলায় প্রশ্ন করে যায় জবাব যাইহোক খেপে যায়।তাই পারতপক্ষে সে ওই সময়টাতে সিরিয়াস হতে যায়না।



রাহাতঃতুমি তো বলনি কি জানতে চাও? তাছাড়া হঠাৎ কৃষ্ণগহ্বর এর কথা মনে পড়লো কেন?আর কৃষ্ণগহ্বর কি তা না জানলে কি কোথায়ও চান্স পাওয়া যাবেনা তোমাকে কে বলল?



তনিমাঃতাই বলে সাধারন জানাটুকু জানবেনা?



রাহাতঃআমি এমন অনেক কিছু জানি যা তুমি জীবনেও শুননাই।



তনিমা বুঝতে পারছে রাহাত তাকে রাগাচ্ছে,তাই সে আর রাহাতের সাথে তর্কে গেলনা।আপন খেয়ালে আনমনে রাহাত কে বলতে লাগলো



-কৃষ্ণগহ্বর এর আকর্ষণ এত বেশি যে সে কঠিন তীব্রতায় সব কিছু নিজের দিকে টেনে নেয়। কৃষ্ণগহ্বর ছোট এবং বড় হয় দুরকম ই হয়।অদৃশ্যতাই কেউ দেখেনা।সবাইতো আর বিজ্ঞানী না হাতে টেলিস্কোপ থাকবে।অবশ্য পৃথিবীর আশেপাশে কোন কৃষ্ণগহ্বর নাই তাই এই পৃথিবীটা গিলে ফেলার ভয় নাই, পৃথিবী সুরক্ষিত আছে।আর সূর্যের পাশে এসে সূর্যটাকে গিলে ফেলতে চাইলেও পারবেনা সূর্য আর কৃষ্ণগহ্বর সমানে সমানে মামাতো চাচাতো ভাই না আপন জমজ ভাই।তনিমা একটু হেসে দিল।রাহাত খুব গভীর ভাবে তনিমাকে খেয়াল করছে।এই মেয়ের কোন সমস্যা হচ্ছে। বুকে সে কোন কষ্ট লালন করছে অথচ কাউকে বলতে চাচ্ছেনা অথবা চাচ্ছে কিন্তু কোন বাধা তাই হয়ত বলতে পারছেনা।তবে রাহাতের মন বলছে একদিন তনিমা সব বলবে রাহাত কেই বলবে আর কাউকে না।

তনিমা আনমনে ভাবতে লাগলো,তনিমার জীবন থেকে সবকিছু কেউ যেন কৃষ্ণগহ্বর এর মত টেনে নিচ্ছে তার ভেতর টা নিষপ্রান করে দিচ্ছে। সে কে রাহাত??নাহ রাহাত তো দৃশ্য মান তাকে দেখা যায়, ছোঁয়া যায়,‌ কথা বলা যায়।তাছাড়া রাহাত তাকে প্রান শক্তি দেয় কেড়ে নেবার প্রশ্নই আসেনা।নাকি অদৃশ্যমান তৃতীয় কেউ??কে??



মা আবার বিয়ে করেছে গত বার ঢাকা যাবার আগেই বিয়ের কথা জানতে পারে মামা তনিমাকে ফোনে সব জানিয়েছে। উপদেশের গলায় তাকে বলেছে সে এখন বড় হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ব্যাপারটাকে সে যেন উদার দৃষ্টিতে দেখে।তার মার ও একটা জীবন আছে তার বিয়ে হবে তারপরতো সারাজীবন একা একা কাটাতে হবে।মার দেখাশুনা কে করবে।মেয়েদের একা জীবন পার করা কঠিন।তনিমাকে এত কিছু বলার প্রয়োজন ছিলনা সে ব্যাপারটা কে স্বাভাবিক ভাবেই দেখছে।তনিমা গতবার ঢাকায় যাবার পর মার সাথে তার দেখা হওয়াটা বেশ অস্বস্থিকর ছিল।মাও খুব অস্বস্থি তে ছিলেন।সবাই তনিমা আর তার মার অস্বস্থি কাটানোর জন্য আপ্রান চেষ্টা করছে। অথচ তনিমার মার উপর কোন রাগ নেই ক্ষোভ নেই,শুধু একটু পর পর লাগছে।নিজেকে মায়ের সেই ছোট তনিমা মনে হচ্ছেনা।অল্প কয়দিনের ব্যবধানে অনেক বড় হয়ে গেছে।মাকে নতুন বউ বউ লাগছে!!মার নতুন স্বামীকে তনিমা তাকে একবার আগেও দেখেছিল মার কলিগ লোকটার বউ মারা গেছে।দুই ছেলে মেয়ে আছে মেয়ের বিয়ে হয়েছে স্বামী তাকে বিদেশে নিয়ে গেছে কিছুদিন পর বোন তার ভাইকেও নিয়ে গেছে।বাবাকে নিয়ে যেতে চায় বাবা যাবেনা দেশেই থাকবে।সবার মতে সবকিছু একেবারেই মিল মত পাওয়া গেছে।ছেলেমেয়েগুলো দেশে থাকলেই বরং ঝামেলার ছিল তবে তাদের অনুমতি নিয়েই বিয়ে হয়েছে।তনিমা লোকটাকে আংকেল সম্মোধন করে কথা বলেছে লোকটা তার সাথে বাবা বাবা না হোক তবে যেভাবে কথা বলেছে তাতে আন্তরিকতা ছিল।তার পড়াশুনা ভার্সিটির বন্ধুবান্ধব সব বিষয়ে সাবলীল ভাবে গল্প করেছে।রাহাতকে ব্যাপাটা জানানো হয়নি রাহাত কি তার মাকে খুব সস্তা মাপের কিছু ভেবে বসবে??নাকি তনিমাই তার নিজের তৈরি ধ্যান ধারনা থেকে এখন মুক্ত হতে পারেনি??



চা খাওয়া শেষে তনিমা রাহাত লাইব্রেরী র দিকে রওয়ানা হয় হঠাৎ করেই তনিমা ছাতাটাও পেছনে কাত করে আকাশের দিকে তাকায় বৃষ্টি র ফোটা তনিমা র মুখে পড়ে তনিমার চোখের কোনে জমে থাকা জল বৃষ্টি র জলের ধুয়ে যায়।পাশে অপলক দৃষ্টি তে তনিমা কে একজোড়া চোখ অবলোকন করছে। রাহাত মনে মনে ভাবছে মেয়েটাকে এত আপন আপন লাগছে কেন?? নাকি সবই বৃষ্টির খেলা, বৃষ্টি বিভ্রম তৈরি করছে।!!



মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:০৮

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
সবই খেলা, সবই ভ্রম! :)


ভালো লাগলো।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৭

স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: নারে ভাই সব খেলা শেষ হয়ে যায় ভ্রম উড়ে যায় তারপর কঠিন ভালবাসায় আটকা পড়ে যেতে হয় :P :#)

ধন্যবাদ আপনাকে ভালো জেগেছে জেনে খুশি হলাম।

২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:১৯

ডি মুন বলেছেন: শুভকামনা রইলো।

লিখে চলুন নিরন্তর।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৯

স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: ইচ্ছে আছে আশা করি সাথেই থাকবেন :#)
ধন্যবাদ।

৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৫৮

সুমন কর বলেছেন: মোটামুটি লাগল। প্রথম দিকে টেনে বড় করা হয়েছে। আর শেষে, আরো একটু বড় করা যেত। তনিমার জন্য শুভকামনা রইলো।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:০৯

স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: প্রথম দিকের বাড়তি লিখাটা আমি ছোট করতে চাচ্ছিলাম না তাই শেষে আর না টেনে ইতি টেনে দিলাম যদিও গল্পের এখানে শেষ নয় আরও একটু এগিয়ে নিয়ে উপন্যাস লিখে ফেললে কেমন হয় :D
আপনি মনযোগ দিয়ে আমার গল্প পড়ে সুন্দর মন্তব্য করেছেন আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সুমন দা।

৪| ২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:০৪

আরজু পনি বলেছেন:

আপনজনের কোন দূর্ঘটনা ঘটলে আগেই কাছের মানুষটি কোন না কোন ভাবে তার আভাস পায়...হয়তো ব্যাপারটা কাকতালীয়..তারপরও কিছু বোধয় থাকে !

মায়ের বিয়েটা ভালোই লাগলো । একা থাকার চেয়ে এই ভালো ।
শুভেচ্ছা রইল ।।

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫২

স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: ধন্যবাদ পনি আপু।
মায়ের বিয়েটা ভাল লাগা থেকেই দিয়ে দিলাম,অনেকেই দেখি একা একা জীবন পার করতে চায় শুন্যতায় ঘিরে রাখে আমার ব্যাপারটা ভাল লাগেনা।আমার এক ফ্রেন্ড এর আব্বু আমরা পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ার সময় মারা গেলেন আন্টি আর বিয়ে করলেন না ফ্রেন্ড যখন অনার্স এ উঠে গেলেন আন্টি বিয়ে করলেন যা ফ্রেন্ড এবং তার ভাই দুজনেরই মেনে নেয়া কষ্টের ছিল তখন আমাদের সবার কাছেও ব্যাপারটা অন্যরকম লেগেছিল,মনে হত আন্টি আর আগেই বিয়ে করে ফেললে পারতো!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.