![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
৪৪ বছর পূর্বে পাকিস্তানী বৈষম্য, শোষন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জন্ম নেয়া আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, বাক-স্বাধীনতা, আইনের শাসন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক চরম বৈষম্যই পূর্ব-বাংলার স্বাধীনচেতা নাগরিকদের স্বাধীন ভূখন্ড অর্জনে পাগলপারা করে তুলেছিল। ৯ মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অসংখ্য শহীদ-গাজী মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রিয় এই মাতৃভূমি। আজ স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও অর্জিত স্বাধীনতা রক্তাক্ত।
একটি দেশ স্বাধীনতা লাভ করার পরে স্বল্প সময়কাল পর্যন্ত টানা-পোড়নের মধ্যে থাকাটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু ৪৪ বছর পরও যখন দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই, যততত্র দেখা যায় শাসকদের বুলেটের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত যুবকের লাশের পাশে সন্তানহারা পিতা-মাতার গগণবিদারী আর্তচিৎকার, বিচারের বাণী যেখানে নিভৃতে কাঁদে, বিরোধীমতের ব্যক্তি/বিরোধীমত মানেই প্রত্যাখ্যাত, নকল মুক্তিযোদ্ধাদের ভীড়ে আসল মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ভূলুন্ঠিত, স্বৈরশাসনের তাপদাহ যখন আইযূব খান/ইয়াহিয়াকে ছাড়িয়ে যায়, সেখানে ভোটাধিকার, অন্ন,বস্ত্র, বাসস্থান, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রত্যাশা করা কেবলমাত্র নিজেকে প্রবোধ দেয়া ছাড়া আর কি বলা চলে? এককথায় বলতে হয় “আমার অর্জিত স্বাধীনতা এখন রক্তাক্ত”।
যে দেশের শাসকগোষ্টী দলীয় গন্ডি পেরিয়ে জনগণের একজন হতে পারেনা, জনগনের চোখের-মুখের ভাষা বোঝেনা, ক্ষমতার গরমে নিজের দূর্বলতা ও অপশাসনের গঠনমূলক সমালোচনা সহ্য করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তখন নাগরিকরা কার কাছে তাদের অধিকার প্রাপ্তির আর্তি জানাবে? তাহলে কি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, ৪৪ বছর আগে অর্জিত মহান স্বাধীনতা, পূর্বপুরুষদের এক সাগর ত্যাগ-তিতিক্ষা, অর্জিত একটি প্রত্যাশিত সোনালী বাংলাদেশের স্বপ্ন-স্বাধ ও বিশ্বাসের ইমারত সব তছনছ হয়ে যাবে? কখন স্বপ্নগুলো জোড়া বুনবে? কখন জাতির মাঝে পরস্পর বিভেদ রেখা পেরিয়ে ইস্পাতদৃড় ঐক্য গড়ে উঠবে?
যেদেশের শাসক গোষ্টী ঐক্যের কথা বলে বিভেদ সৃষ্টি করে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির জিগিড় তুলে নিজেরাই সম্প্রীতি নষ্ট করে পরের কাঁধে দায় চাপায়, নিরীহ জনগনকে নানা ছুঁতোয় কষ্ট-নির্যাতন চালিয়ে বিপথে (বিনা দোষে অতিষ্ট হয়ে সন্ত্রাস বা প্রতিশোধ পরায়ণ হতে বাধ্য হওয়া) যেতে বাধ্য করে ও জঙ্গিবাদের ধোঁয়া তুলে নিজের দেশের ক্ষতি নিজে করতেও পিছপা হয়না তাদেরকে কি করে দেশের শত্রু বৈ বন্ধু বলা চলে?
আমরা এমন শাসক চাইনা যাদের কথা ও কাজে গরমিল, সংবিধানের কথা বলে অসাংবিধানিক কাজ করে, স্বাধীনতা রক্ষার বুলি আওড়িয়ে স্বাধীনতাকে বিপর্যস্ত করার কাজে লিপ্ত হয়, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের কথা বলে সব রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দলীয় কাঠামোতে পরিনত করে দেশকে অকার্যকর করে তোলে।
আমরা সেই স্বপ্নের মুকুলে লালিত প্রত্যাশিত বাংলাদেশ চাই। যে বাংলাদেশে মানুষ হবে মানুষের জন্য। ৪৪ বছরের মহান স্বাধীনতার এ দিনে প্রত্যাশা করি "বিভেদ ভুলে দেশের আগামীর পথচলা হোক ঐক্য ও সমৃদ্ধির"।
©somewhere in net ltd.