নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আশা রাখো পৃথিবীর যতো অসম্ভবে

দীপংকর চন্দ

হায় চিল, সোনালি ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরেতুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিড়ি নদীটির পাশে!

দীপংকর চন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এমন সাধের জনম আর কী হবে

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪৩



অবশেষে, দীর্ঘ সাধনার পর মীনজীবন পেলাম আমি। এখন আমি মাছ, তবে যে আকার প্রকারে সচরাচর দেখতে অভ্যস্ত আপনারা, সে দৃষ্টিতে বিচার করলে বোঝা যাবে না সেটা, আর তেমনটা নয়ও ঠিক বাহ্যদৃশ্যে, কিন্তু দৃশ্যের অন্তরালে যে সব দৃশ্য লুকিয়ে থাকে, অদৃশ্যে দৃশ্যমান, সেই অতিলৌকিক দৃশ্যপটে অভূতপূর্ব পরিবর্তনটুকু ঘটে গেছে, ভাবে স্বভাবে এখন মাছ আমি, আমার শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় ঘটে গেছে অবাক রূপান্তর, আমার ফুসফুস রপ্ত করেছে ফুলকোর কর্মপদ্ধতি ইতিমধ্যে, শ্বাসযন্ত্র শিখে গেছে কী করে শ্বাস নিতে হয় জলের ভেতর, এবং দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনটুকু শুষে নিয়ে কীভাবে পরিত্যাগ করতে হয় অবশিষ্ট জলটুকু জলের ভেতরেই। এটা রপ্ত করাটাই শ্রমসাপেক্ষ, যা একটু কষ্টের, আর বাদবাকিটা অভ্যেসের, যেমন, চোখের পাতা বন্ধ না করে দিনের পর দিন অবলীলায় থাকতে পারা, এটা নিরবচ্ছিন্ন চর্চার ফল, চোখের পাতাগুলোকে অক্ষিকোটরের যতোটা সম্ভব ভেতরে ঢুকিয়ে নেবার চেষ্টা করলেই চোখের মণি দুটো স্বতঃস্ফূর্তভাবে সামনে এগিয়ে আসে অনেকখানি, এটা হয়তো জানা নেই আপনাদের, এবং না জানাটা স্বাভাবিক, যদিও বেশ ধীরে ধীরে ঘটে সেটা, তবে সেটা ঘটেই একসময়, যেমন ঘটেছে আমার ক্ষেত্রে, ১৮০ ডিগ্রি কৌণিক বিস্তারে আমার দেখার জগত এখন অনেক বড়, যেটা ধারণাতীত, এবং কল্পনাকে হার মানানো।

মীনজীবন নিয়ে আমার ভাবনাটা এসেছিলো অবশ্যই ডারউইনের বিবর্তনবাদ পড়তে গিয়ে, পড়ছিলাম, এবং পড়তে পড়তে হঠাত্ আমার ইচ্ছে হলো বিবর্তনবাদের সীমা পেরিয়ে ভাবনাকে আরও এগিয়ে নেবার, অথবা আরও পিছিয়ে নেবার বিবর্তন সীমাকে, আমি ধরে নিলাম বানর থেকে মানুষ, অর্থাত্ মানুষ হচ্ছে উত্কৃষ্ট ক্রমবিবর্তনের ফল, এবং বানর হচ্ছে বিবর্তনের শুরুটা, এই শুরুটাই কি শেষ কথা? প্রতিটা শুরুর আগে আরেকটা শুরু আছে, যেমন, কথনের আগে থাকে প্রাক কথন, সেভাবে ভাবলে 'বানর'ই-বা কি ছিলো আগে? 'বানর'ই-বা বিবর্তিত হয়েছে কোন প্রাণী থেকে? কি ছিলো এই বন্যপ্রাণীটি আদিতে, যখন কোনো বনভূমিই ছিলো না, তখন? অথবা যখন কোনো প্রাণীই ছিলো না স্থলভাগে, তখন? যখন স্থলভাগই ছিলো না পৃথিবীতে, তখন? যখন জলে জলে পরিব্যাপ্ত ছিলো পৃথিবী, তখন? সব প্রাণীর আদি উত্স কি জলই ছিলো তাহলে? মানুষ? মানুষের আদি উত্স কি জলই তাহলে? বিবর্তনের আদিম ধাপে মানুষ ছিলো জলজ জীব?

আমি প্রাণের বিকাশ নিয়ে ভাবলাম না আর, ভাবলাম না এককোষী থেকে বহুকোষী প্রাণের রূপান্তর, প্রবেশ করলাম না অমেরুদণ্ডী মেরুদণ্ডী প্রাণের বিকাশ তত্ত্বের গভীরে, জল, আমি স্থির হলাম জলে, কোনো না কোনো জায়গায় তো স্থির হতে দিতেই হয় ভাবনাকে, আমি স্থির হলাম, মীনজীবনের প্রতি আকর্ষণ আমার দুর্বার, সেই থেকে আমি শুরু করলাম সাধনা, লক্ষ্যে পৌঁছবার কঠোর তপস্যা, যার ফল এই যে আমার মাছ হয়ে ওঠা, যার ফল দীর্ঘ কাঙ্খিত এই জলবাস, এই মীনজীবন।

ছবি: সংগৃহীত

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখাটা ভালো লাগলো। পড়তে পড়তে একটা মূর্ছনার সৃষ্টি হয়। বৈজ্ঞানিকভাবে মীনজীবন কীরূপ হবে, তারও একটা সুন্দর রূপকল্প দিয়েছেন।

বিবর্তনবাদের উপর যা লিখেছেন, তার সাথে একমত।

সুন্দর লেখা।

অনেকদিন পর ব্লগে দেখলাম আপনাকে। শুভেচ্ছা রইল।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৮

দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনেক অনেক শুভকামনা শ্রদ্ধেয়।

জীবনের গতি এখন যে পথে নির্ধারিত, সে পথ লেখালেখিবান্ধব নয় তেমন।

আপনাদের কথা মনে পড়ে খুব, মনে পড়ে ব্লগজীবনের সুখস্মৃতি।

ভালো থাকবেন, ভালো লিখবেন সবসময়।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি পুশকিনের সোনালী মাছে পরিণত হয়েছেন; ভাবনাচিন্তা একটু মানবিক দানবিক করুন।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৯

দীপংকর চন্দ বলেছেন: হা হা হা হা

আমি এখন আণবিক অনেকটা! দৃশ্যত অস্তিত্বহীন, মানবিক অথবা দানবিক হবার সুযোগ নেই তেমন আপাতত!

শুভকামনা জানবেন, অনেক।

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: দরিদ্র দেশের মানুষের জীবন মোটেও আনন্দময় না।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২০

দীপংকর চন্দ বলেছেন: আংশিক সত্যি। তবে ধনী দেশের মানুষের জীবন যে আনন্দদায়ক, সে কথাও বলা যাবে না জোর দিয়ে।

শুভকামনা, অনেক অনেক শুভকামনা।

ভালো থাকবেন সবসময়।

৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: দীপংকর চন্দ,




অতল জলের নীচ থেকে উঠে এসে খানিকটা শ্বাস ছাড়লেন বাতাসে।

বোঝা গেলো বিরূদ্ধ সময়ের হাতে বন্দি। তবুও সময়ের ঘুলঘুলির ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে দর্শন দিয়ে গেলে মনে হবে জলবাসী কেউ ডাঙায় ওঠার চেষ্টায় নিরত।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৬

দীপংকর চন্দ বলেছেন: আপনার উপস্থিতি মন ভালো করে দেয় বিরুদ্ধ সময়েও।

আপনাদের সাথে এক কাতারে দাঁড়াতে না-পারার দুঃখ আমাকে তাড়া করে ঘুরেফিরেই। দুঃখ নিয়েই ভাবি, এ-ই হয়তো জীবন, জীবন হয়তো এ-ই! পুরোনোর ঝরে পড়া, নতুনের দুঃসাহসী অভিযাত্রায় স্নাত হওয়া আবার পৃথিবীর, এই তো ধর্ম, ঘূর্ণাবর্তের এই তো নিয়ম!

মেনে নেই, মেনে নিতে হয়, শুধু মনে রয়ে যায় স্মৃতির সুখচিহ্ন।

শুভকামনা জানবেন শ্রদ্ধেয়, অনেক।

ভালো থাকবেন সবসময়।

৫| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪২

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: মৎস্যকন্যা হয় এরিয়েল আপনি হয়েছেন মৎস্যমানব।
দারুন ব্যাপার
ইকথিয়েন্ডর ডলফিন মানবের গল্পও পড়েছিলাম সেটাও বেশ মজার জীবন।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪১

দীপংকর চন্দ বলেছেন: আলেকজান্ডার বেলায়েভ, ইখতিয়ান্ডর ছিলেন অ্যাম্ফোবিয়ান, ছোটবেলায় বহুবার পড়েছি বইটা, পুকুরে ডুব দিলে এখনও নিজেকে ইখতিয়ান্ডর ভাবতে ভালো লাগে, এখনও

অনেক অনেক শুভকামনা জানবেন।

ভালো থাকবেন সবসময়।

৬| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪২

দীপংকর চন্দ বলেছেন: সুস্বাগতম, আপনাকে।

৭| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৪

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: ইকথিয়ান্ডে আর গুত্তিয়েরে। ইকথিয়েন্ডরের জন্য এখনও মায়া জেগে আছে।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৩

দীপংকর চন্দ বলেছেন: আমারও, এবং আছে দীর্ঘশ্বাস।

শুভকামনা, পুনরায়।

৮| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৬

মনিরা সুলতানা বলেছেন: অনেক দিন পর দেখলাম ব্লগে !
আশা করছি ভালো আছেন ।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৪

দীপংকর চন্দ বলেছেন: হ্যাঁ, অনেক দিন! কীভাবে যে দিন চলে যায়!

ভালো থাকার চেষ্টা চলছে।

শুভকামনা, অনেক শুভকামনা।

ভালো থাকবেন, অনেক, সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.