আদি যুগের অপরিপক্ক ধারণা, অসম্পুর্ণ জ্ঞান, দুর্বল সংস্কৃতি, এই যুগের জন্য সমাধান নয়

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৬

আমেরিকার অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজিক জীবনে ইহুদীদের অবস্হান ও প্রভাব সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জ্ঞাত আছেন; কিন্তু ওদের ধর্ম ও সংস্কৃতিকে ওরা আমেরিকান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্হায়, কিংবা সামাজিক জীবনে প্রতিষ্টিত করার চেষ্টা করেনি কোন কালে; চেষ্টা করলেই সংঘাতের শুরু হতো। ইহুদীরা তাদের ধর্ম পালনে খুবই নিবেদিত; এবং সংস্কৃতিতে কোনভাবেই তারা আধুনিক আমেরিকানদের চেয়ে পেছনে পড়ে নেই। ইহুদীরা কি তাদের ধর্ম বই অনুসরণ করে না? অবশ্যই করে, এরপরও তারা আধুনিক বিশ্বের আধুনিক সংস্কৃতির অগ্রভাগে থাকে কি করে? তারা তাদের ধর্মীয় পুস্তকের লেখাগুলোকে তাদের আদি পুরুষদের জীবনের অভিজ্ঞতা, ধারণা ও সংস্কৃতি হিসেবে মানে; সেই ধারাকে মেনে, আধুনিক জীবনের সাথে তাল মিলিলে ধর্মীয় জীবন যাপন করে থাকে।

গত ১ মাসে নিউইয়র্ক শহরের ব্রুকলীনের কিছু এলাকায়, রাস্তায় ইহুদী নাগরিকদের উপর হালকা কিছু আক্রমণ হয়েছে; আপনারা জানেন, তাদের পোশাক ও দাঁড়ি দেখে তাদেরকে চেনা যায়; যারা আক্রমণ করেছে, তাদের বড় অংশ ছিলো আফ্রিকান-আমেরিকান তরুণ ছেলেরা। গত সপ্তাহে এর প্রতিবাদে মিছিল করেছে ব্রুকলীনের লোকজন; তাতে অনেক মুসলমানও অংশ নিয়েছিলেন। প্রতিবাদ শেষে, সিএনএন প্রতিবাদী গ্রুপগুলোর লীডারদের ইন্টারভিউ নিয়েছে ১০ মিনিটের মতো।

ইন্টারভিউতে অংশ নিয়েছেন খুবই তরুণ এক ইহুদী রাবাই ও একজন পাকিস্তানী-আমেরিকান তরুণ মুসলমান। ২ জনেই সমস্যাটাকে তুলে ধরেছেন, রাবাই বিবিধ সমাধানের কথা বলেছেন। ইহুদী রাবাই ইহাকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা হিসেবে তুলে ধরেছেন: তিনি বলেছেন যে, আফ্রিকান আমেরিকান তরুণদের পড়ালেখার সুযোগ কম, তাদের অনেকের শক্ত পরিবার নেই; এই কারণে এদের অনেকের ভালো চাকুরী নেই; যাদের ভালো চাকুরী থাকে না, তারা রাস্তাঘাটে গন্ডগোল করতে ভয় পায় না, তাদর হারানোর কিছু নেই। তিনি একটি দরকারী বিষয় উল্লেখ করেন যে, ইহুদী ব্যবসার মালিকেরা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে আফ্রিকান-আমেরিকানদের চাকুরী দেয় না; ইহাও ক্ষোভের কারণ; ইহুদীরা নিজেদের এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক সমস্যা না বুঝলে, সমস্যা বাড়বে শুধু, কমবে না। রাবাইকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, এখানে ধর্মের কিছু আছে কিনা! উনি উত্তরে বলেছেন যে, ইহুদীরা ধর্মের দিক থেকে আমেরিকানদের খুবই কাছাকাছি; ফলে ইহা মুল সমস্যা নয়, মুল সমস্যা সামাজিক দুরত্ব ও অর্থনৈতিক বৈষম্য।

এরপর এলেন তরুন মুসলীম লীডার; উনার শুরু ছিলো কোরানের ১ আয়াত (আরবী) দিয়ে; উহাকে অনুবাদ করে ও ব্যাখ্যা করে উনি ২ মিনিট কাটালেন। এরপর উনি ব্যাখ্যা করলেন যে, মানুষের ধর্মবিশ্বাস কমে যাচ্ছে, তারা সৃষ্টিকর্তাকে ভয় পাচ্ছে না; যার ফলে, সমাজে বিশৃংখলা দেখা দিচ্ছে। এরপর উনি আরো ৩টি আয়াত পড়ে বললেন যে, কোরান ভবিষ্যতবাণী করেছে, একটা সময়ে সমাজ ক্রমেই বিশৃংখলার মাঝে ঢুবে যাবে। উনি কোন সমাধানের কথাও বললেন না।

রাবাইকে প্রশ্নকরা হলো, সরকারী পদক্ষেপে বাহিরে ইহুদী কম্যুনিটি কোন সমাধানের চিন্তা করছে কিনা! রাবাই বললেন, সাময়িক সমাধান হিসেবে, ইহুদীদের বলা হয়েছে, এলাকায় একাকী না চলতে, গ্রুপে কমপক্ষে ২/৩ জন চলতে, সন্ধ্যার পর গাড়ীতে চলাচল করতে; আর দীর্ঘমেয়াদী হিসেবে, এলাকায় চাকুরীহীনদের নিয়ে আলাপ করে, চাকূরীর ব্যবস্হা করতে ও উহুদী সেন্টারগুলোতে ক্রমাগতভাবে আফ্রিকান-আমােরিকান স্কুল ও কলেজের ছাত্রদের নিমন্ত্রণ করে এই ২ গ্রুপের সামাজিক দুরত্ব কমিয়ে আনতে।

১১ টি +০/-০