| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাটির কথা
আমি সেই বাংলার জনগণের একজন, যারা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে, অধিকারের জন্য জান-মাল দিয়েছে , শুনুন ইন্টারনেট রেডিওঃ http://al-hikmah.net
মুসলিম নামধারী মুনাফিকরাই মুসলমানদের বিভ্রান্ত করছে এবং সারা ভারতে মুসলমান নিপীড়নের সুযোগ করে দিচ্ছে। মোদির সাথে ভারতীয় দেওবন্দের একাংশের আঁতাত প্রসঙ্গে কিছু বিষয় আলোচনা করা হবে নিচে।
গত ১৫ই অক্টোবর মোদির পক্ষে দেওবন্দ হর্তাকর্তা, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সেক্রেটারি মেহমুদ মাদানীর (আসাদ মাদানির ছেলে এবং হুসাইন আহমদ মাদানির নাতি) সাফাই গাওয়া নিয়ে অনেকেই অবাক হয়েছেন। কিন্তু এখানে অবাক হওয়ার কিছু নেই। গত ৮ মাস ধরেই ইনিয়ে বিনিয়ে মোদির পক্ষে সাফাই গেছে চলেছে এই মেহমুদ। তার উদ্দেশ্য, মোদি সম্পর্কে মুসলমানদের ভয় কাটানো। কিন্তু একবারে মোদির পক্ষে বলছে না সুচতুর মেহমুদ। কারণ সরাসরি বললে দেওবন্দের ভিসি ভাস্তানভির মত তার অবস্থা হওয়াটাও স্বাভাবিক (মোদির পক্ষে বলায় পদত্যাগ করতে হয় ভাস্তানভিকে)। তাই ধীরে ধীরে তরকারিতে তেল ঢেলে চলেছে মেহমুদ।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে মোদির পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে মেহমুদ বলেছিল, মোদি সম্পর্কে মুসমানদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হচ্ছে। কৌশলে গুজরাটের মুসলমানরা ভাল আছে এ কথাও বলেছে সে। মেহমুদের এই বক্তব্যরে লিঙ্ক দিলাম আনন্দবাজার থেকে (Click This Link)
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে গোটা কয়েক অন্ধ দেওবন্দী ভক্তদের নিয়ে। তারা বলবে এগুলো হিন্দুরা দেওবন্দের সম্পর্কে বানিয়ে বলছে। তাই এবার সরাসরি মাদানির বক্তব্যের ইউটিউব লিঙ্কও দিয়ে দিলাম। (http://www.youtube.com/watch?v=bUcsp1gAatw)
এবার আসুন দেখি, মেহমুদ মোদির পক্ষ নেয়ায় জমিয়তের প্রেসিডেন্ট এবং হুসাইন মাদানির ছেলে (মেহমুদের চাচা) আরশাদ মাদানি গত ৮ মাস ধরে কি বলছে। মোদি ইস্যুতে দেওবন্দের মাওলানারা দুই ভাগে ভাগ বিভক্ত হয়ে গেছে। আরশাদ মাদানি বলছে মোদি হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা বাপ। মোদি মন্ত্রীসভা ও প্রশাসন দিয়ে মুসলমান মেরেছে, কিন্তু কংগ্রেস তা করেনি ব্লা ব্লাৃ.। অর্থাৎ ভারতের দেওবন্দীদের যে কংগ্রেসী মাওলানা বলা হয়, সে তার নামের স্বার্থকতা বজায় রেখেছে আরশাদ (যা একটু পড়ে প্রমাণ করব)। ইউটিউবে সাক্ষাৎকারের ভিডিও:
http://www.youtube.com/watch?v=uFPLIZDHTWw,
খবর সূত্র:
Click This Link
তবে আরশাদ আর মেহমুদ এ সকল বক্তব্যে নিয়ে কোন সমস্যা নাই। সমস্যা হয়েছে আরেক যায়গায়। গত কয়েকদিন আগেও সবাইকে অবাক করে দিয়ে বোমা ফাটিয়েছে সুচতুর মেহমুদ। সে বলেছে, “২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় কয়েকজন কংগ্রেস নেতা জড়িত ছিল”
(Click This Link)
কি বুঝলেন?????????
হিসেব খুব সোজা:
১) কংগ্রেসরা গুজরাটে মুসলিম নিধনে জড়িত তা ১১ বছর পর প্রকাশ করলো মেহমুদ মাদানি (যখন গুজরাট দাঙ্গার বিচারকার্য শেষ)। মুসলমানদের স্বার্থে নয়, সে যখন দল পরিবর্তন করছে সেই স্বার্থে। এখন এক হিন্দু জালেমকে ত্যাগ করে অন্য হিন্দু জালেমের সাথে হাত মিলাচ্ছে। যদিও মোদির নির্বাচনী ওয়াদা হচ্ছে, বাবরী মসজিদ এর স্থানে রামমন্দির প্রতিষ্ঠা, কিন্তু তারপরও সে বলছে, মুসলমানদের মোদিকে ভয় পাওয়ার কোনই কারণ নেই!!!
২) কংগ্রেস যে মুসলিম নিধনে জড়িত তা কি আরশাদ জানে না?? অবশ্যই জানে। কিন্তু রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য তা মুসলমানদের কাছে গোপন রেখেছে এবং মোদির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের হয়ে রাজনৈতিক ফাইট দিয়ে যাচ্ছে ।
বিষয়টি তাহলে পরিষ্কার, দেওবন্দীরা তাদের গোপন স্বার্থ (টাকা হওয়াটাই স্বাভাবিক) এর জন্য কংগ্রেস আর বিজেপিকে মুসলমানদের ভোট পেয়ে দিতে সাহায্য করে। তারা সকলেই জানে হিন্দুদের মুসলিম বিরোধী অপকীর্তি, তারপরও তা গোপন রাখে, জানতে দেয় না মুসলমানদের। হিন্দু খুনিদের ভালো করে সাজিয়ে সহজ সরল মুসলমানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে, ছিনিমিনি খেলে মুসলমানদের জান-মাল-ইজ্জত নিয়ে।
এখন হয়ত বলবেন:
তারা মুসলমানদের অনেক স্বার্থ রক্ষা করে তাইনা???
এর উত্তর হচ্ছে:
১) দেওবন্দ যে রাজ্যে অবস্থিত অর্থ্যাৎ উত্তর প্রদেশেই কি মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করতে পেরেছে এই দেওবন্দীরা? গত কিছুদিন আগে মুজাফফর নগরে যে ভয়াবহ মুসলিম নিধনে দাঙ্গা হলো তা তো এই উত্তর প্রদেশেই অবস্থিত। তারা কি পেরেছিল হাজার হাজার মুসলিম নারী সম্ভ্রম লুন্ঠন থেকে বিরত রাখতে, তারা পেরেছিল মুসলিম গণহত্যা বন্ধ করতে, তারা কি পেরেছিল দাঙ্গায় সোয়ালক্ষ গৃহহীনকে তাদের বাড়িঘর ফিরিয়ে দিতে? পারেনি।
উল্লেখ্য, সারা ভারতে যত দাঙ্গা হয় তার বেশিরভাগ হয় এই উত্তর প্রদেশে এবং মুসলমানরা বেশি মারা যায় এই উত্তর প্রদেশে। কিছুদিন পূর্বে প্রকাশিত ভারত সরকারের এক হিসেবে দেখা যায়, চলতি বছর প্রথম ৯ মাসে দেশটিতে ৪৭৯টি দাঙ্গা সংগঠিত হয়েছে, যার মধ্যে ৯৩টি ঘটেছে এই উত্তর প্রদেশেই। এবং শতকরা হিসেবে মোট হতাহতের প্রায় ৬০ শতাংশের ঘটনাও ঘটেছে এই উত্তর প্রদেশেই।
(সূত্র:http://zeenews.india.com/news/nation/government-releases-data-of-riot-victims-identifying-religion-for-first-time_878904.html)
২) সমগ্র ভারতের ২৮টি প্রদেশের মধ্যে যে ১৫টি প্রদেশে গরু কুরবানী/জবাই নিষিদ্ধ তার মধ্যে এ উত্তর প্রদেশেও অন্যতম। মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে উত্তর প্রদেশে গরু কুরবানী/জবাই’র বিরুদ্ধে আইন হয় ১৯৫৫ সালে। প্রথমে ২ বছরের কারাদণ্ড থাকলেও পরে তা বৃদ্ধি করে ৭ বছর করা হয়।
৩) ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি বড় অংশ (প্রায় ৪০ শতাংশ) মুসলমান। দেখুন যে দেওবন্দ কংগ্রেসকে ধর্মনিরপেক্ষ ধর্মনিরপেক্ষ বলে বার বার সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে, সেই কংগ্রেস সরকারই কিছুদিন পূর্বে তাদের উত্তর প্রদেশেই ৭০ জন নতুন জজ নিয়োগ দিয়েছে, যার একজনও মুসলমান নয়। (সূত্র:http://muslimmirror.com/eng/no-muslim-among-70-newly-appointed-judges-in-up-justice-itself-wants-justice/)
আসলে এই দেওবন্দ কিভাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করবে??? যারা সামান্য হিন্দুর অনুরোধে পবিত্র কুরআন হাদীস ঘুরিয়ে ফেলতে পারে। তারা কি কখন মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে????
১) কুরবানী করা ওয়াজিব, গরু কুবরানী করা সুন্নাত। কিন্তু সেই সুন্নতকে নাজায়িজ বলার ক্ষমতা তো তারা রাখে না। দেখুন তারা ফতওয়া ঘুরিয়ে সরকারকে খুশি করার জন্য ফতওয়া দিচ্ছে ‘গরু কুরবানী করা নাজায়িজ। (Click This Link)
এবং তারা সেটা করেছে গান্ধী নামক এক গোড়া হিন্দুর অনুরোধে !!!! (http://khabar.ibnlive.in.com/news/109892/13)
২) ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ি হিন্দুদের কাফির বলা গেলেও এই ফতওয়া হিন্দুদের অনুরোধে ঘুরিয়ে দেয় দেওবন্দ। ‘হিন্দুদের কাফির বলা যাবে না’ এই জঘণ্য ফতওয়া তারা দেয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সন্ত্রাসী নেতা অশোক সিংঘলের অনুরোধে।
আশোক সিংঘল
(Click This Link)
৩) ‘বন্দে মাতরম’ হিন্দুদের দেবতাদের প্রশংসা বানী। এবং এর বিরুদ্ধে দেওবন্দ ২০০৬ সালে ফতওয়া দিয়েছিল তাও সঠিক। এই ফতওয়ার পক্ষে ২০০৯ সালের ৩রা নভেম্বর জমিয়ত থেকে পুনরায় বলা হয়, এতে ইসলাম বিরোধী বক্তব্য আছে তাই তা পাঠ করা যাবে না। কিন্তু এর মাত্র ৬ দিনের মাথায় দেওবন্দ মাদ্রাসায় যায় হিন্দু ঠাকুর রবি শঙ্কর। সে গিয়ে মাওলানা মারগুব, প্রধান মুফতি হাবীবুর রহমান, মুফতি ইহসান কাশেমীর সাথে ১ ঘন্টা মিটিং করে। এই মিটিং এর পর দেওবন্দ তার অবস্থান থেকে সরে আসে, এবং বলে, “বন্দে মাতরমের উপর তাদের আর কোন বিধি নিষেধ নেই”।
সূত্র: (Click This Link)
সুতরাং দেওবন্দ ভারতের মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করছে, কিংবা স্বার্থরক্ষা করছে, কিংবা মুসলমানদের হয়ে কাজ করছে এ কথা সম্পূর্ণ ভুল ও বিভ্রান্তিকর। বরং তারা নিজ গোপন স্বার্থে মুসলমানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে যাচ্ছে বহুদিন ধরে। কিন্তু এরপরও এ দেশের তাদের অন্ধ ভক্তরা তাদের বিশাল ইসলামি ব্যক্তিত্ব বলে প্রচার করে চলেছে।
তাই সময় এসেছে এই সকল হিন্দুত্ববাদীদের চিহ্নিত করে, সচেতন হওয়ার। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সেই তৌফিক দান করুন। (আমিন)
©somewhere in net ltd.