![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাসতে হাসতে হরিপদের খিল ধরেছে পেটে
নানান রকম হচ্ছে দেওয়া দাওয়া
কেউ ছুটেছেন কবিরাজের বাড়ি
কেউ বলেছেন ওরাল স্যালাইন খাওয়া ।
পাড়া পড়শী আসছে ছূটে দরদ নিয়ে মুখে
হরিপদের বউও বেহুশ স্বামীর খিলের শোকে।
মায়ের রোদন হরিপদের হায়রে বিধির লেখা
তুই কেন বাপ এত হাসি হাসতে গেলে একা
দশটাও নয় পাঁচটাও নয় একটা আমার পোলা
তোর কেন আজ দাঁতকপাটী চোখের পাতা খোলা।
এই দুনিয়ায় কম কী আছে মাগনা হাসির লোক
বল্ল সবাই, তাড়াতাড়ি খিল ছাড়ানো হোক।
বেশি সময় থাকে যদি দাঁত-কপাটী লেগে
রোগীর দশা হতে পারে খারাপ দ্রুত বেগে।
ঘন্টা খানেক পার হয়েছে হুশ ফেরেনি তার
বিলাপ ক্রমেই চলছে বেড়ে হরিপদের মার
উল্লা পাড়ার মোল্লাবাড়ি অনেক দূরের পথ
সেথায় নিয়ে চলুন তারে সবাই দিলেন মত।
মত দিয়েছেন ভাল কথা যাওয়ার উপায় কী
কেউবা বলেন রিক্সা ডাকো ,কেউবা সিএনজি।
ডাকবো না হয় রিক্সা অটো কিন্তু দেখুন ভাই
এসব বাহন এই গেরামে আসার রাহা নাই
কী আর করা ,অবশেষে পলোর মাঝে পুরে
হরিপদকে নেওয়া হল নয়শো মিটার দূরে।
রাস্তা তো নয়,ধানী জমির একটু বড় আল
রিক্সাওয়ালার পায়নি দেখা ভূলেও কোনো কাল
বিশেষ লোকের অনুরোধে বিশেষ চড়া দামে
ত্রি-চক্রযান এলো সেথা হরিপদের নামে।
কবিরাজ-কাম মোল্লা সাহেব রোগের বয়ান শোনে
কাল তাগায় গিট্টু দিলেন তসবিহ গোণে গোণে
সর্ষে তেলে পালাক্রমে সাতটি দিলেন ফুঁ
ভাবখানা এই জ্বীনের বাপের নেইতো থাকার জো।
চিন্তাক্রমে বেড়েই চলে সঙ্গে স্বজন যারা
নিরাময়ের লক্ষনাদি পায়নি খুঁজে তারা
চেতন ছাড়া হরিপদের নিথর দেহ ঘিরে
মোল্লা-বাড়ির সারা উঠোন ভাসে চোখের নীরে।
রাত বারোটায় খিল ধরেছে ,এখন দিনের বারো
এক মিনিটও অপেক্ষাতে যায় না থাকা আরো
কবিরাজের বাড়ি থেকে তড়িৎ বিদায় নিয়ে
জেলা সদর হাসপাতালে হাজির হলেন গিয়ে।
ডাক্তারেরা ভাল মানুষ সেবা দিলেন বেস্ট
সমান তালে লিখে দিলেন নানান রকম টেস্ট
সকল কিছুই সঠিক আছে কিডনি লিভার বিপি
খুঁজে খুঁজে তৈরি হল রোগের নিদান লিপি ।
হাসপাতালে দুদিন আজি কাটেনি তার কোমা
ভাবখানা তার খুলবে না চোখ মারলে পেটে বোমা
হরিপদের শ্বশুর বাড়ি শিবনারায়ন গ্রামে
নিত্য প্রসাদ হচ্ছে বিলি হরিপদের নামে ।
শ্বাশুড়ি তার জয় ললিতা ব্যস্ত পুজো অর্ঘে
কখন জানি খবর আসে জামাই গেছেন স্বর্গে ।
হাসপাতালে তৃতীয়দিন সন্ধ্যে বাজে সাতটা
হঠাৎ করে উঠল নড়ে হরির বামের হাতটা ।
চোখের পাতা নড়ছে মৃদু,কাপছে দুটি ঠোঁট
বলতে গেলে অগ্রগতি এটাই সর্বমোট।
ভাবলো সবাই বাঁচবে হরি আপাতত রক্ষা
সেরে উঠার মানেই হবে তিন-দু-গুনে ছক্কা।
[হরিপদ এখনো হাসপাতালে, তার কী হল পরের পর্বে জানাবো]
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:১৪
প্রামানিক বলেছেন: দারুণ লাগল হরিপদের খিল। ধন্যবাদ