![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!
'স্যার আসব?'
আমি ফাইল হাতে দরজায় দাঁড়ানো চব্বিশ পঁচিশ বছর বয়সী ছেলেটার দিকে তাকালাম। ছেলেটার হাবেভাবে চাকুরী প্রার্থীর ‘অহেতুক স্মার্টনেস দিয়ে আড়ষ্টতা লুকানো’র ব্যাপার টা একেবারেই নাই। বরং তার চেহারায় একটা বিনয়ী অথচ বেপরোয়া ভাবের সাথে কোথায় যেন মিশে আছে প্রচণ্ড কৌতুক!
আমি মাথা ঝুঁকিয়ে তাকে আমার রুমে ঢুকতে বলে হাতের ইশারায় সামনের চেয়ারে বসতে বললাম। আমার হাতে ওর সিভি। সিভি টা খুব সহজ এবং নির্ভুল ভাষায় লিখা। ‘লাভ টু ওয়ার্ক আন্ডার প্রেশার’ টাইপের হাস্যকর কোন তথ্য সিভি তে নেই। শুধু একটা তথ্য মারাত্নক বিভ্রান্তিকর। ওয়ার্ক এক্সপেরিয়েন্স এর জায়গায় ‘থ্রি ইয়ারস( জুলাই ২০১৩ টু জুলাই ২০১৪)’ লিখা! চিন্তা করলাম এটা দিয়েই প্রশ্ন শুরু করি।
- আপনি মাস্টার্স পাশ। জুলাই ২০১৩ থেকে জুলাই ২০১৪ পর্যন্ত কয় বছর হয়?
- ১ বৎসর স্যার!
- তাহলে তিন বছরের অভিজ্ঞতা কেন লিখলেন?
- ঠিক ই লিখেছি স্যার!
- আপনার মাথা ঠিক আছে?
- জ্বী স্যার, ঠিক আছে।
- মাথা ঠিক থাকলে এক বছর কে তিন বছর কেমনে বলেন??
- স্যার আমি লিখেছি চাকুরির অভিজ্ঞতা তিন বছর। ঠিকই লিখেছি!
- আমি দুঃখিত। আপনার সাথে কথা বলে নষ্ট করার মত সময় আমার হাতে নাই। আপনি আসেন!
ছেলেটা খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে চেয়ার ছেড়ে উঠল।আমার দিকে তাকিয়ে খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে হাসল। তারপর বলল- আমি তাহলে আসি স্যার!
ছেলেটা ঘুরে চলে যাচ্ছে, হঠাৎ করে আমার মনে হল ছেলেটাকে চলে যেতে দিলে সে আমাকে একটা রহস্যের মধ্যে রেখে চলে যাবে। সময় যত গড়াবে, রহস্য তত বাড়বে! আমি অস্বস্তি এড়ানোর জন্য খুক করে একটু কেশে তার উদ্যেশ্যে বললাম- আপনি বসেন!
সে এবারো এমন ভাবে বসল যেন কাউকে ‘আসেন’ বলার পর পর ই ‘বসেন’ বলাটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
আমি পিয়ন কে ডেকে চা আনালাম, বিস্কুট আনালাম। সে খুব সহজ ভঙ্গিতে চায়ে বিস্কুট ভিজিয়ে খেল। তারপর আমি কিছু জিজ্ঞেস করার আগে নিজে থেকেই বলা শুরু করল-
আমি যেখানে চাকরি করতাম সেখানে সকাল আট টা থেকে রাত আট টা পর্যন্ত ডিউটি। ফেস্টিভাল ছাড়া কোন ছুটি নাই। প্রায় সময় আবার নাইট করা লাগত। আমি হিসাব করে দেখেছি এক বছরের চাকরি জীবনে আমি যে কয় ঘণ্টা কাজ করেছি সেটা নরমাল ছুটিছাঁটা সহ যেকোন নটা-পাঁচটা চাকরিতে এক বছরে যে কয় ঘণ্টা কাজ করা লাগত তার তিনগুন।সেই হিসাবে সিভি তে অভিজ্ঞতা তিন বছর লিখেছি! হিসাবের স্প্রেড শীট আমার কাছে আছে স্যার। দেখবেন?
বলে সে ফাইল থেকে স্প্রেড শীট বের করতে গেল। আমি হাতের ইশারায় তাকে স্প্রেড শীট বের করতে না করলাম। তারপর জিজ্ঞেস করলাম,
-তুমি কি চাকরির ইন্টার ভিউ দিতে যেখানে যেখানে যাচ্ছ সবখানে একই ব্যাখ্যা দিচ্ছ?
নিজের অজান্তেই আপনি থেকে তুমি বলে ফেলেছি। বুঝতে পারছি নিজের অজান্তেই ছেলেটার প্রতি একটা মায়া তৈরি হয়ে গেছে। মায়ার কারনেই ছেলেটার চেহারার ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠা প্রতিটা রেখার ভাষা আমি পড়তে পারছি!
-হ্যাঁ স্যার বলেছি। সবাই এমন ভাবে তাকায় আমি যেন পাগল। স্যার আপনি ত ইঞ্জিনিয়ার। আপনি ই বলেন, আমার হিসাব কি ভুল?
ছেলেটার মুখের রেখার ভাষা আমাকে এমনিতেই এলোমেলো করে দিয়েছিল। ‘আমার হিসাব কি ভুল?’ এই প্রশ্নের তীর যেন আমার অনুভূতি’র মর্ম মূলে গিয়ে বিঁধল!
পুঁজিবাদের ভয়ঙ্কর বিষে নীল যে পৃথিবীতে গণিতের বিবর্তন হয়ে ‘সমীকরণের’ পরিবর্তে সব ‘অসমতা’ হয়ে গিয়েছে, সেখানে অঙ্ক শুদ্ধ রাখার জন্যই যে তিন কে প্রতি মুহুর্তে এক বানাতে হয়- এই কঠিন সত্য আমি তাকে সেই মুহুর্তে কিছুতেই বলতে পারলাম না। আমি চোখের চশমাটা খুলে অসম্ভব ভারী একটা মন নিয়ে ছেলেটার মুখের কাঁপা কাঁপা রেখা গুলোর দিকে তাকিয়ে রইলাম।
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:১৬
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: হুম! আপনার কি মনে হয়? ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে এই অঙ্ক দেখালে কি কারো চাকরি হবে?
২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: হুম, তা হয়তো হবার নয় কিন্তু ছেলেটার প্রতি আপনার যে মগ্ধতা ....... তাই বলছিলাম .....................
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:৫২
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: মুগ্ধ হই আর যাই হই, আমরা কিন্তু প্রতিষ্ঠিত নিয়ম গুলোকে প্রতি মুহুর্তে অতিক্রম করে বাঁচতে পারি না!
৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৪
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: লেখক বলেছেন: মুগ্ধ হই আর যাই হই, আমরা কিন্তু প্রতিষ্ঠিত নিয়ম গুলোকে প্রতি মুহুর্তে অতিক্রম করে বাঁচতে পারি না!
একমত, বাস্তবতাকে বিশ্বাস করি বলে।
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:২২
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: বাস্তবতা কে বিশ্বাস করা ভাল। কিন্তু মেনে নেয়া সব সময় ভাল না!
৪| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:৩৪
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: আলোচনা আস্তে আস্তে কঠির হয়ে যাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতায় একটি ডয়ালগ ছিল ""মেনে নেয়া আর মানিয়ে নেয়া এক নয়"
ধন্যবাদ আপনাকে।
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৩
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: শেষের কবিতার ডায়লগ হল- মেনে নেয়া আর মনে নেয়া এক নয়! আপনাকেও ধন্যবাদ!
৫| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫
এম এম করিম বলেছেন: গণিতের পূঁজিবাদী ফাঁকি।
১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৪২
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: হুম!
৬| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৮
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
গণিতে পাশ মার্ক কে পাইলো ?
১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৫
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: সুষম গনিত পাশ মার্ক পাবে এরকম পরিবেশ তৈরি করাটা জরুরী!
৭| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৫
সুমন কর বলেছেন: উপস্থাপন সুন্দর। ভাল হয়েছে।
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:০৮
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সুমন।
৮| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০০
আমি তুমি আমরা বলেছেন: অনেক কাল আগে এই টাইপ একটা জোক্স শুনেছিলাম। চাকুরীপ্রার্থীর বয়স ত্রিশ, চাকুরীর অভিজ্ঞতা পয়ত্রিশ বছরের। এই গল্পটাও খারাপ না। প্রচলিত কৌতুকের এম্পলিফিকেশন।
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:০৯
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: আপনার জোক টাও খুব সুন্দর ভাই! ভাল থাকবেন।
৯| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: +++++++++++++
এভাবেই তো চলছে । কি আর করার ।
ভালো থাকবেন ভ্রাতা
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:১০
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: সব সময় উৎসাহ দিয়ে আমাকে পূর্ণ করে দিচ্ছেন! আপনিও ভাল থাকবেন ভ্রাতা।
১০| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩
সজীব বলেছেন: +++++++++++
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:১০
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
১১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:১৯
কলমের কালি শেষ বলেছেন: কথা সত্য । লেখাটি পড়ে ভাল লাগলো ।
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:১১
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
১২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৩০
রাজা মশাই বলেছেন: ছেলেটার বুদ্ধি আছে। ওরে তো চাকরীতে নেওয়া দরকার ছিল। অন্তত এক্সট্রা অর্ডিনারী ম্যান হিসেবে। যে সব কিছু সহজ করে নিতে পারে।
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:১৩
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: হুম! চাকরের বেশি বুদ্ধি থাকাটাকে কত্তারা কিন্তু ভাল চোখে দেখেন না!
১৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৫৩
নীল রাত বলেছেন: ছেলেটা মনে হয় বুদ্বিমান এবং পরিশ্রমি।
পড়ে ভাল লাগলো।
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:২০
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: হুম! আমারো তাই মনে হয়েছে।
১৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:০৫
তাসজিদ বলেছেন: পরিশ্রমী দের বাস্তবে পাওয়া যায় না। তাহারা গল্প উপন্যাসে বসবাস করে।
১৫| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ ভোর ৬:১৭
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: পরিশ্রমী দের বাস্তবে পাওয়া যায় না। তাহারা গল্প উপন্যাসে বসবাস করে। [/sb
এবাক্যটি মনে রাখার মত
১৬| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৭:৫৭
দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: ভাল লাগল + + + + + ।
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:২২
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
১৭| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:১৮
তুষার কাব্য বলেছেন: হাজার মগ্ধতার পরেও কিছু কঠিন বাস্তবতা এড়ানো সত্যি কঠিন...
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:২২
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: কিন্তু এই বাস্তবতা তৈরির পেছনের মানসিকতাটার বিশ্লেষণ জরুরী।
১৮| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:২৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো। তবে তার এই পরিশ্রমের মূল্য সে পাবে কি না এই নিয়ে ব্যাপক সন্দীহান আমি।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪২
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: ছেলেটার চাকুরি কি হলো আপনার অফিসে?