![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঢাবিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যয়নরত
‘গণমাধ্যম আছে বলেই গণতন্ত্র আছে।’ প্রবীণ বর্ষীয়ান সাংবাদিক এ.বি.এম. মুসা গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তিন দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে “ বাংলাদেশের সাংবাদিকতা শিক্ষার ৫০ বছর” শীর্ষক আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান ও সাখাওয়াত আলী খান।
এ.বি.এম মুসা আলোচনার শুরুতেই এ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা আতিকুজ্জামান খানের অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন ‘সাংবাদিকতা এখন বহু বিস্তার ঘটেছে। সাংবাদিকতা এখন শুধু লেখালেখির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়,এটি সাহিত্য ও সমাজসেবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি আরও বলেন ‘ আমরা যখন সাংবাদিকতা শুরু করি তখন এটা ছিল মিশন, পরে এটা হয়ে যায় প্রফেশন ; এখন সাংবাদিকতা ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক স্বার্থোদ্ধারের ক্ষেত্র।’
তিনি তার সাংবাদিকতার প্রথমদিকে মনে করতেন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে সাংবাদিকতায় আসা সম্ভব নয়। তখনকার সময়ে কেউ সাংবাদিকতা বিষয়ে এক বছর ডিপ্লোমা নিয়ে তার কাছে সাংবাদিকতা করার জন্য আসলে তিনি বলতেন ‘এক বছরে আপনি যা শিখেছেন আরও একবছরে তা ভুলে তারপর আসবেন কেননা একাডেমিক শিক্ষা এখানে কোন কাজে লাগবে না।’ তবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সম্পর্কে তার বিরূপ মনোভাব তিনি প্রত্যাহার করে নিয়ে বলেন ‘ সাংবাদিকতা এখন বহুদূর বিস্তৃত হয়েছে, প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইন মিডিয়ার প্রসার ঘটেছে। তাই বর্তমানে সাংবাদিকতা করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।’ গণমাধ্যমগুলো গণতন্ত্রকে সংহত করতে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন ‘যেখানে সর্বদা বিরোধীদল অকার্যকর, গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় সেখানে গণমাধ্যমগুলো বিরোধীদলের ভূমিকাও পালন করছে। তিনি উন্নয়ন ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী করার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের অধিক জোর দিতে বলেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন ‘ এ বিভাগের ক্যামেরা, এডিট প্যানেল ইত্যাদির সংকট রয়েছে, ৫০ বছরে এসে এটা মেনে নেয়ে যায় না।’ তিনি সাংবাদিকতা শিক্ষার ব্যবহারিক ও গুণগত মানোন্নয়নে বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষাথীদের মানসিক ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে থাকার অঙ্গিকারও ব্যক্ত করেন। তিনি একাডেমিক ও তাত্ত্বিক শিক্ষার সাথে ব্যবহারিক শিক্ষার সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে বলেন ‘ আমরা যদি একাডেমিক শিক্ষার সাথে ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক তৈরি করতে পারি, তাহলে সাংবাদিকতা শিক্ষা ব্যবস্থা আরও এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন ‘ এ বিভাগেরই অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান সাংবাদিকতা বিষয়ে উপমহাদেশের প্রথম পিএইচডি, নিউইয়র্ক টাইম্সের আগেই আমাদের বেঙ্গল গেজেট ছিল তাই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে আমাদের অতীত অনেক গৌরবের।’ সেইসাথে বর্তমানেও এ পেশার অনেক বিস্তার ঘটেছে। যার ফলে অনেকগুলো প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ তৈরী হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন। তিনি বিভাগীয় উদ্দ্যেগে একটি জার্নাল বের করার জন্যও বিভাগের প্রতি আহবান জানান।
বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক সাখাওয়াত আলী খান বলেন ‘মিডিয়াগুলোতে একটি বিশাল অংশ জুড়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা দাপটের সাথে কাজ করছে। ৫০ বছরে এটা আমাদের একটা বড় অর্জন।’ তিনি তার আলোচনায় সাংবাদিকতা বিভাগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও অতীতকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন ‘ অতীতের তুলনায় সাংবাদিকতার ক্ষেত্র ও সুযোগ-সুবিধা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সাংবাদিকতায় পড়ে সাংবাদিক ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, বিচারপতি বা মন্ত্রী বিভিন্ন পেশাতেই আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা সফল হয়েছেন।’ তিনি বিভাগের সিলেবাসকে ব্যবহারিক ও পেশাগত কাজের সাথে আপডেট রাখার ওপর জোর দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান বলেন ‘ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একাডেমিক ও প্রফেশনাল ক্ষেত্র নিয়ে দ্ব›দ্ধ রয়েছে। তবে একাডেমির ও ইন্ড্রাস্টির যে রিলেশন সেটা তুলনামূলকভাবে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশে অনেক ভালো।’
তিনি আমাদের দেশের সাংবাদিকতার উন্নত ও যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন ‘ আমাদের একাডেমীর ক্ষেত্রে প্রফেশনাল ক্ষেত্র থেকে ওঠে আসা অনেক বিশেষজ্ঞরা যুক্ত আছেন। আমাদের দেশের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনেক অনেক বিশ্বমানের গবেষণা করছেন। বিশ্বের অনেক দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে আমাদের যোগাযোগ ও ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার আগেই মিডিয়ার সাথে যুক্ত থেকে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করেছেন।
©somewhere in net ltd.