নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়ি এবং লেখি

সৃষ্টিশীল আলিম

ক্ষুদে সাহিত্যিক, সৃষ্টির নেশায় উন্মুখ

সৃষ্টিশীল আলিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্যগল্প ' লজ্জা' :P :P :P

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৪৯





আমি ও মামা রুবজ এ রহমান সিলেট ‘সন্ধানী নাট্যচক্র’ সংগঠনের একনিষ্ঠ নাট্যকর্মী। গত সপ্তাহ থেকে সংগঠনে কর্মশালা শুরু হয়েছে। একমাস ব্যাপি কর্মশালা। কর্মশালাতে নিয়মিত থাকতে হয়, শুধু তাইই নয় একেবারে ঠিক ঠিক সময় উপস্থিত হতে হয়। একদিন মামা বের হতে দেরি করায় আমি একা একাই রওয়ানা হয়ে গেলাম শাস্তি থেকে বাঁচার ভয়ে।

ঢাকা শিল্পকলা থেকে ট্রেইনার হিসেবে লিটন স্যারকে আনা হয়েছে। আমরা প্রত্যেহ সকাল নয়টাতে উপস্থিত হই। সেদিনও আমি কাটায় কাটায় নয়টাতে গিয়ে উপস্থিত হলাম। শুধু ফেসে গেলেন কেবল মামা। উনি পাঁচ মিনিট পর উপস্থিত হলেন। যথারীতি যুতসই একটি অজুহাতও বের করে ফেললেন। কী কারণে যেন ঐদিন লিটন স্যারের মন খুব খারাপ ছিল। সে প্রভাব এসে পড়ল মামার ওপড়।



মামাকে উনি ক্ষমা করলেন না। শাস্তি স্বরূপ ৫০ টি ফ্রগ জাম্প দিতে হবে। কী মুশকিল! ৫০টিই দিতে হবে?

লিটন স্যার বললেন-হ্যাঁ

-কিছু কমানো যায় না স্যার?

- মোটেও না। এ নিয়ে আর কোন প্রকার কথা শুনতে আমি ইচ্ছুক নই।

ধমকের স্বরে কথাটি বলেই তিনি এমন ভাব নিলেন যে আমরা যারা উপস্থিত ছিলাম, সকলেই ভয় পেয়ে গেলাম। ওখানে একটা বাজে নিয়ম ছিল। আর তা হল কেউ কথা বললে তা সকলকেই শুনতে হত এবং শাস্তি পেলেও সকলকেই তা দেখতে হত।

লিটন স্যার মামার ঠিক পিছনে এসে বসলেন। উনার সাথে সাথে নাট্য সংগঠনের সভাপতি মুক্তা দিদিও এসে বসলেন। মনে হল শাস্তি কতবার হল তা কাউন্টিং করার জন্য আসা! শাস্তি শুরু করার আগে মামা একবার আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলেন। ঐ মুচকি হাসি যে লজ্জা মিশ্রিত ছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না! কিন্তু তাতে আমার জন্য একপ্রকার হুমকিও ছিল- পৃথিবীর আর কেউ না বুঝলেও ঐ ভাষাটা কেবল আমিই বুঝেছি। সব ভাষাই মুখ দিয়ে প্রকাশ করার নয়, হৃদয় দিয়ে উপলব্দিরও ভাষা আছে।

যাই হোক, মামার শাস্তি শুরু হয়ে গেল। আমার মনে হল জীবনের প্রথম এবারই বোধ হয় মামা ফ্রগ জাম্প দিচ্ছেন। কাটায় কাটায় বিশটি দিয়ে মামা একটু রেস্ট নিতে চাইলেন। হাপানি রোগীদের মত উনি তখন হাপাচ্ছিলেন। কিন্তু লিটন স্যার সেদিকে ভ্রুক্ষেপও করলেন না। উপরন্তু ধমক দিয়ে ওঠলেন। উনার ভরাট কণ্ঠের ধমকে চারদিকের দেয়াল প্রকম্পিত হতে লাগলো। মামা উপায়ন্তর না দেখে আবারও শুরু করলেন। কাটায় কাটায় ৪০টি হবার সাথে সাথেই রুমে টায়ার ব্রাস্ট হবার মত শব্দ হল। একজন আরেকজনের দিকে তাকাতে লাগলেন। কোথায় শব্দ হল, কীসের জন্য হল ঠিক বুঝেও যেন বুঝতে পারলাম না। তবে মনে হল শব্দটি মিশ্র শব্দ! রুমে এমনিতেই পিনপতনের শব্দটিও ছিল না, তার উপরে এমন শব্দ- সবাইকে তাজ্জব করে দিল। মামার পিছন থেকে লিটন স্যার বলতে লাগলেন- ইস রে! দিলি তো আমার সব নষ্ট করে! বেয়াদব কোথাকার!

আমাদের সবার দৃষ্টিই তখন লিটন স্যারের ওপর। উনি কী বলেন বা কী করেন তার প্রতি ছিল আমাদের সৈনিক মার্কা দৃষ্টি! দেখলাম, লিটনদার সাদা টি শার্টে হলুদ হলুদ কী যেন ভরে গেছে। মুহূর্তেসমস্ত রুম জুড়ে এক বিচ্ছিরি দুর্গন্ধে ভরে গেল। কেউ কেউ ভাবতে লাগলাম হয়ত পাশের ড্রেনের গন্ধ। শহরে তো এমন সমস্যা খুবই নিত্য। প্রচণ্ড গন্ধে আমরা যার যার মত নাক ধরতে লাগলাম। আমি ঘটনাটি ভাল করে বুঝার জন্য মামার প্যান্টের দিকে তাকালাম। দেখলাম, ওনার প্রিয়তমার উপহার দেয়া নতুন প্যান্টটি ফ্রগ জাম্পের কারণে ছিড়ে গেছে। উনার প্যান্ট ক্রমশই ভিজে ওঠছে। আমার আর বুঝতে বাকী রইলো না ঘটনাটি কী হয়েছে! কেন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে! লিটনদা বারবারই কেবল ছি! ছি!! ছি!!! করতে লাগলেন। লিটনদা ওনার গেঞ্জিতে ভরা গু যখন মুক্তাদিকে দেখাচ্ছিলেন তখন সবাই আমরা অট্ট হাসিতে ফেটে পড়লাম।

লিটনদা এতে খুবই লজ্জিত হলেন। লজ্জায়, ক্ষোভে তিনি আরও উচ্চস্বরে ধমক দিলেন। কিন্তু কে শুনে কার কথা! এত সহজেই কি আর আমাদের হাসি থামে! অবস্থা প্রতিকূলে দেখে তিনি বললেন- আজ আর কর্মশালা হবে না। কাল এসো। বলেই তিনি রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। ওনার পিছে পিছে মুক্তদিও গেলেন। এরপর আমরা সবাই অট্টহাসিতে ফেটে পড়লাম। রুম থেকে বের হওয়ার আগে সব দুষ্টু কর্মীরা অট্টহাসি দিয়ে কটাক্ষের স্বরে ছি! ছি!! ছি!!! রুবজ______ বলে বের হয়ে গেল। মেয়েদের আড়ালে মামার দিকে ঈষৎ তাকিয়ে আমিও একবার মুচকি হেসে বের হয়ে এলাম।

সীমাহীন লজ্জায় ঈষৎ নত হয় সবার প্রস্থানের দিকে তাকিয়ে রইলেন রুবজ এ রহমান। আর কেউ নেই।

.........................................

২৫.০৭.২০১৪

শিবগঞ্জ, সিলেট

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৩

অণুজীব বলেছেন: :p

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:২৯

সৃষ্টিশীল আলিম বলেছেন: ;) :P ;) :) ;) :P ;) :) ;) :P ;) :) ;) :P ;) :) ;) :P ;) :) ;) :P ;) :) ;) :P ;) :) ;) :P ;) :) ;) :P ;)


কষ্ট স্বীকার করে গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ বন্ধুবর 'অণুজীব '। অনেক ভাল থাকুন।

আজকের পৃথিবীতে ফোটা সকল ফুলের সুবাস ছুঁয়ে যাক আপনার সৃষ্টিশীল হৃদয়ের গোপন দহলিজ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.