নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়ি এবং লেখি

সৃষ্টিশীল আলিম

ক্ষুদে সাহিত্যিক, সৃষ্টির নেশায় উন্মুখ

সৃষ্টিশীল আলিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুনশি আলিমের ৬টি সেরা কবিতা

০২ রা এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪







অনুভূতির সাতকাহন

-------------------------------------------------------------------

তোমার ভাপা পিঠার মতো বুক দেখলে আমার হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বরের কথা মনে পড়ে

মাছ বিক্রেতার ফরমায়েশি ফাঁকিবাজি প্লেট উবু হয়ে সামনে আসে

ইতিহাসের প্রাচীরে দাঁড়িয়ে বিবর্ণ পিঙ্গল চোখের ভিতর দিয়ে দেখেছি তোমার ছেড়া কাঁথার মতো মন

তোমার ভালোলাগার আমিষে এখনও পারফিউমের গন্ধ বেরোয়!

তাই দেখতে গায়ে হলুদ মেখেছে প্রত্যাশার নগরী

তোমার অভিবাদন নিতে ধান খেতে নেমে আসে রূপালি চাঁদ

গত শতকে তোমাকে খুব শাসন করতে ইচ্ছে করেছিলো, কিন্তু পারিনি!

সেই থেকে একটি প্রজন্ম ধরে বিপন্ন ইচ্ছেরা রচনা করে চলছে অনুভূতির সাতকাহন

বাদামপাতার শিখরে লুপ্ত সময়

অবসাদের গায়ে সন্ধ্যার ঘ্রাণ নিয়ে আসে অদ্ভুত চেতনার ইতিহাস

এই তো চিন্তার নগরী, এখানে কেউ ঘুমায় না

গোধূলির ম্লান আলো মেখে পরিচিত নক্ষত্র গিয়েছে পুড়ে কাল সারারাত

হৃদয়ের কুয়োতলায় একটি মৃত শব্দের ভিতর জন্ম নেই। পৃথিবীর উঠোন জুড়ে নতুন বার্তা।



------------------------------------

মুনশি আলিম

১৯/২০.০৩.২০১৫

শাহবাগ, জকিগঞ্জ, সিলেট







মানচিত্র খচিত ভোর

-----------------------------------------------------

পোয়াতি ইস্টিশনের অদূরে আলোর লকলকে জিহ্বায় বাতাসে ডুবে সন্ধ্যে নামে

স্বাদ-বর্ণ-গন্ধহীন কোন অস্থির সময়ে নারী দেহের গোপন নিবন্ধপাঠ করে চরিত্রহীন রাত্রির গায়ে হাত বুলাই

অন্ধকারে আস্তিনের ভাঁজ থেকে বেরিয়ে আসে লোভের পারফিউম

ভাঙা রাত্রি দোহন করে সময়ের গোপন পৃষ্ঠা

কৃত্রিম বসন্তের অরণ্যে আমি আর আমার উদ্বিগ্ন প্রজন্ম;

কয়েক শ বছর ধরেই দোয়া-দরুদ ছাড়াই নারীর কোমরের নিচে পবিত্র তীর্থযাত্রায় নামি

হলুদ চোখ মেলে দেখি পূর্ণিমার ঠোঁটে সনাতন পুরুষের গোসলপর্ব

রাত আর নারী আমাকে প্রতিদিন ধার দেয় লোভ - তাদের গুপ্ত বুকে আকাশের মতো বড় নীল পোস্টাপিস,

দক্ষিণ আমেরিকার সমস্ত সোনার খনি, অরণ্যের চিত্রকলার গোপন স্টুডিও

উহ! গোপন সুখ জাগে পৃথিবীর আঙিনায়!

চেতনার উঠোনে প্রজন্মের ঠোঁট কামড়ে ধরেছে রূপসীর বগলের কনিফেরাসের মতো মানচিত্র খচিত ভোর!



------------------------------------

মুনশি আলিম

২১.০৩.২০১৫

বোরহানবাগ, পূর্বশিবগঞ্জ, সিলেট





ভবিষ্যতের চোখে জল

-----------------------------------------------------------------------------

ইনকামের ব্যাকরণ খুঁজে হাইওয়ে পুলিশ যখন ডবল ঘুস নেয়,

তখন বরফ সন্ধ্যার ভাবী স্বপ্নগুলো নীল জলের মতো মিহি হয়ে আসে।

প্রত্যাশিত ফাগুনের দরজা খুলে মোহনায় দাঁড়িয়ে দেখি ফিকে সন্ধ্যা;

আমাকে ছুঁয়ে যায় চেতনার রূপালি ভোর।

দুর্নীতির মড়কে আক্রান্ত বৃদ্ধের সাদাকাগজে পৌষের একটি রাত সময়ের তীর ঘেঁষে চলে যায় রাত্রির জলাশয়ে।

জরাজীর্ণ নীতি আজ ভীষণ খরায় ভুগছে। ভবিষ্যতের চোখে জল।



------------------------------------

মুনশি আলিম

২১-২৩. ২৩.০৩. ২০১৫

বোরহানবাগ, পূর্বশিবগঞ্জ, সিলেট





শরীরের বন্দনাগুলি

--------------------------------------------------------------

ফুলে চুমু খেয়ে প্রজাপতি যখন রসায়নের সমীকরণে- তুমি তখন পাঠশালা ভুলে এভাবেই পুরুষের শরীর মুখস্ত কর; অথচ আশ্চর্য তুমি এখনো জানলে না শরীরের ব্যাকরণ! দ্রেীপদীর শাড়ির মতো তোমাকে খুলতে ইচ্ছে করে, রোদের তাওয়ায় সেঁকতে ইচ্ছে করে তোমার অভিমানের পুঞ্জিকা- তোমার রহস্যের পৃষ্ঠাগুলো এখনো ছেঁড়া হয়নি- এই কারণে যে, ফাল্গুন এলেই আমি বাসন্তীয় দুপুর হয়ে যাই। এখনো সময় আছে- তসবি পাঠের মতো জেনে নিও শরীরের বন্দনাগুলি।

---------------------------------------

মুনশি আলিম

২৩.০৩. ২০১৫

পূর্বশিবগঞ্জ, সিলেট







চারখাই স্টপিস

----------------------------------------------------------------------------



পৃথিবীর বেদনার মতো ম্লান দাঁড়িয়ে বিয়ানীবাজারের চারখাই স্টপিস-

মধ্যবিত্ত সড়কের ওপর বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়া ভাববিলাসী সেই ভিক্ষুকদ্বয় এখনো বুনো ঋষিদের মতো জপ করে অর্বাচীন পংক্তিমালা;

কী মাহত্ম্য! কী করুণ মিনতি! তাই দেখে- নিয়ত পথিকের ম্লান হাসির মৃত গন্ধ বেয়ে নামে চকিত বাতাস।

শালুকের ঘ্রাণ ছুঁয়ে ঈশ্বরের পবিত্র রোদ্দুর আর দয়া চড়াট করে চারখাইয়ের হিজল তলার অনতিদূর;

পৃথিবীর বয়সী চোখে নরম রোদ বেয়ে নামে জল; সকালের আকাশের মতো বয়স জলের!

হায়! স্বার্থলোলুপ শাসক!!! কেউ নেয়নি খবর!

সেই হাঁপানি রোগী আর জন্মান্ধের কপালে এখনো জুটেনি কোন বয়স্ক ভাতার কার্ড, কিংবা একটু মাথা গোঁজার ঠাঁয়!

ঈশ্বরের নির্লিপ্ততায় সৌখিনদের বাঁকা চাহনির বৃষ্টিতে ওরা এখনো ভিজে

স্থানীয় শাসকের দৃষ্টির অগোচরে কেটে গেল প্রায় সত্তরটি বছর!

কোন এক বধির যুগে আমরা-

বেড়ালের বিকশিত ফ্যাকাশে হাসির মতন শাসকের আশ্বাস পৃথিবীর বুনো আলো জুড়ে অন্যসাজে

বাতাসের গন্ধে কোন চিৎকার শোনে না একালের শাসক; হাগা, মুতা আর সঙ্গমে রত একালের চেয়ারম্যান কিংবা শাসকেরা! বেশ আয়েশি জীবন!

প্রত্যাশার পারফিউম মেখে পৃথিবীর জরায়ু থেকে নিয়ত হাজির হয় দুঃখী সকাল

আশ্বাসের মৃত পথে পরবর্তী প্রজন্মের চেতনা।

---------------------------

মুনশি আলিম

০১.০৪.২০১৫

জকিগঞ্জ, সিলেট





নিঃসঙ্গ ইচ্ছেরা

---------------------------------------

বিচিত্র রঙের জামা পরে কীনব্রিজের রেলিং ছুঁয়ে সেই কখন চলে গেছে শহরের একটি অনিবার্য বিকেল!

স্তনের মতো বিকেলের সূর্যকে ঘিরে আমাদের অভিলাস কলিংবেল টিপে এখনো সওদা করে চলছে উচ্চাশার সাথে

পৃথিবীর ধূসর মনে তাই বুঝি মড়কের মতো অভিমান!

বুনো বাতাসের ক্লান্ত বুকে স্বচ্ছ জলের মতো ঘামের গন্ধ মুছে দূর কৌতুকী আকাশ

সময়ের গায়ে নতুন জামা লাগাতে লাগাতে বড্ড ক্লান্ত আমাদের নিঃসঙ্গ ইচ্ছেরা।

------------------------------

মুনশি আলিম

৩১.০৩.২০১৫

টিলাগড়, সিলেট

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৩৬

মিঠু জাকীর বলেছেন: ভালো

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:১১

সৃষ্টিশীল আলিম বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:৫১

জুন বলেছেন: সময়ের গায়ে নতুন জামা লাগাতে লাগাতে বড্ড ক্লান্ত আমাদের নিঃসঙ্গ ইচ্ছেরা। সত্যি বড্ড ক্লান্ত আমরা এখন ।
অনেক ভালোলাগলো আপনার কবিতা
+

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:১৪

সৃষ্টিশীল আলিম বলেছেন: ধন্যবাদ । অফুরন্ত শুভ কামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.