| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বনী ইসরা"ইলের শুরু কিভাবে হয়েছিল তা জানার আগে আমাদের জানতে হবে 'father of faith' তথা ইব্রাহিম (আ
এর পরিবার সম্পর্কে।
ইরাকে এক মূর্তিপূজক বাবার ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। দ্বীন প্রচার করতে গিয়ে নিজ জাতির তোপের মুখে পড়ে তিনি আল্লাহর নির্দেশে স্বদেশত্যাগ করেন। সঙ্গে ছিলেন প্রথম স্ত্রী সারাহ এবং ভাতিজা লুত (আ
।
ইব্রাহিম (আ
এর আরেক স্ত্রী ছিলেন- হাজার (বা হাজেরা), যিনি ছিলেন তার প্রথম পুত্র সন্তান ইসমাইলের জননী। তাকে এবং শিশু ইসমাইলকে আল্লাহর আদেশে রেখে আসেন মক্কায়, যা পরবর্তীতে হয় 'বনী ইসমাইল' বংশ এবং ইসলামের সূতিকাগার। এই বংশে জন্ম নেন কেবলমাত্র একজন নবী- মুহাম্মদ (সা
।
প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে ইব্রাহিম (আ
মূলত বাস করতেন শামে (বর্তমান সিরিয়া, ফিলি"স্তিন, জর্ডান, লেবানন সহ আরো বিস্তৃত এলাকা)। এখানেই জন্ম নেন তার দ্বিতীয় পুত্র ইসহাক এবং নাতি ইয়াকুব (আ
, যার উপাধি ছিল ইসরাইল (অর্থ: আল্লাহর বান্দা)। আর ইয়াকুব (আ
এর বংশ থেকেই শুরু হয় 'বনী ইসরা"ইল' জাতির ধারা।
এই বনী ইসরা"ইলেই একে একে আবির্ভাব ঘটে বিভিন্ন নবী ও রাসূলের, যার মধ্যে মূসা ও ইসা (আ
অন্যতম। তাদের ৫০০০ বছরের সুদীর্ঘ ইতিহাস ছিল কিছুটা আনুগত্যের, কিন্তু বেশির ভাগই অবাধ্যতার। ফলে বারবার বিপর্যয়ের মুখোমুখিও হতে হয়েছে তাদের, ভবিষ্যতেও হবে।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কুরআনে তো বনী ইসরা"ইল ও মূসা (আ
এর কাহিনীতে মিশরের কথা বলা হয়। তারা কি করে সেখানে গেলো? এই একই প্রশ্ন ই"হুদীরা রাসূল (সা
কে করেছিল, যার উত্তরেই নাযিল হয় সূরা ইউসুফ।
সূরাটি পড়লে আমরা জানতে পারি কি করে ইয়াকুব (আ
এর ছেলে ইউসুফকে তার সৎ ভাইয়েরা ঈর্ষাবশত একটি কূপে ফেলে দেয়। সেখান থেকে উদ্ধার হয়ে তিনি মিশরে এক ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি হয়ে যান এবং ভাগ্যের পরিক্রমায় একবার জেলের কয়েদী হয়ে পরবর্তীতে আবার সেদেশের মন্ত্রী হয়ে যান, সুবহানাল্লাহ! এরপর তিনি তাঁর পিতা ও ভাইদের শামের কিনান থেকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। আর এভাবেই মিশরে আবাদ হয় বনী ইসরা"ইলের। (আরো বিস্তারিত জানতে পড়ুন সূরা ইউসুফ)
ইউসুফ (আ
এর মৃত্যুর পর ৭০০-৮০০ বছর বনী ইসরা"ইল আল্লাহর আনুগত্যশীল ছিল এবং সুখেও দিন কাটাচ্ছিল। কিন্তু একসময় তারা বিভিন্ন অবাধ্যতায় জড়িয়ে পড়তে থাকে। আর তার পরই শুরু হয় ফিরাউনদের দুঃশাসন এবং তাদের গোলামীর জীবন। এভাবে চলে প্রায় ৩০০ বছর।
'ফিরাউন' শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত, এটি ছিল তৎকালীন মিশরীয় বাদশাহদের উপাধি। সর্বশেষ ফিরাউন রামেসিস-২য় এর সময় কিছু গণক (মতান্তরে স্বপ্ন বিশারদ) তাকে বলে, বনী ইসরা"ইল এর এক সন্তান তার পতন ঘটাবে। এতে ক্রুদ্ধ ফিরাউন বনী ইসরা"ইল এর ছেলে নবজাতকদের হত্যা করতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু আল্লাহর কুদরতে শিশু মূসা জন্মের পর বেঁচে তো যানই, এমনকি বেড়ে উঠেন ফিরাউনের নিজ প্রাসাদে, নিজ স্ত্রী আসিয়ার যত্নে!
যৌবনে মূসা (আ
ভুলক্রমে একটি হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় মিশর ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর আশ্রয় নেন মাদইয়ানে, সেখানেই বিয়ে করেন। পরবর্তীতে আল্লাহ তাকে নবুয়্যত দান করেন এবং ফিরাউনের কাছে দাওয়াত পৌঁছাতে নির্দেশ দেন। এই মিশনে সঙ্গী হিসেবে পান নিজ ভাই হারুনকে, যাকেও নবুয়্যত দেয়া হয়।
এরপর তিনি ফিরাউনের দরবারে গিয়ে হিদায়াতের বাণী পৌঁছান এবং আল্লাহর ইচ্ছায় মুজিযা (অলৌকিক ক্ষমতা) দেখান। দাওয়াত কবুল না করলে বনী ইসরা"ইলের মুক্তি চান। কিন্তু ফিরাউন সব অস্বীকার করে, নিজেকে প্রভু দাবি করে এবং তাদের হত্যা করতে উদ্যত হয়। ফলে বনী ইসরা"ইলের মিশর ত্যাগ করা ছাড়া আর উপায় থাকে না। ফিরাউন ও তার দলও তাদের পিছু নেয়।
এরপরের ঘটনাটা আমরা সকলে জানি। বনী ইসরা"ইলকে নিয়ে মূসা (আ
লোহিত সাগরের পাড়ে (বর্তমানে সুয়েজ গালফ) পৌঁছান এবং আল্লাহর নির্দেশে লাঠি দিয়ে সমুদ্রে আঘাত করেন, সেটি দুভাগ হয়ে প্রকাণ্ড একটি রাস্তা তৈরি হয়ে যায়। তারা সবাই পার হয়ে গেলেও পিছু নেয়া ফিরাউন বাহিনীর সেখানে সলিল সমাধি হয়ে যায়। এই ঘটনা (exodus বা ইয়ম কিপ্পুর) ঘটে মুহাররমের ১০ তারিখ, যেদিন ই"হুদীরা রোজা রাখে। (আরো বিস্তারিত জানতে পড়ুন সূরা কাসাস)
সাগরের ওপারে ছিল সিনাই মরুভূমি, যা শত শত মাইল লম্বা একটি অঞ্চল। মূসা (আ
ও তার দলের যাত্রা অব্যাহত থাকে। কারণ তাদের গন্তব্য বনী ইসরা"ইলের হাজার বছর আগের সেই আদি নিবাস- ফিলি"স্তিন।
চলবে...
collected
©somewhere in net ltd.