নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভৌতিক মানব

ভৌতিক মানব › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসাধারণ একটি ভালবাসার গল্প ২

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৭

শুনছেন একজন ইঞ্জিনিয়ার এর গল্প

ক্যাম্পাসের মেইন গেইট পার হইয়াই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়িলাম। মনে হইল ‘আমি আসিলাম,আমি আসিলাম’।কিন্তু ইহা আমি কোথায় আসিলাম?তবে গেইট দিয়ে ঢুকার সময় দারোয়ান সাহেব বলেছিলেন- welcome welcome.যদিও রিকশাওয়ালা বলেছিল-হে হে,এইবার ঠিকই পাশতে পারবেন কুথি এসে গিলছেন।যেহেতু প্রথম দিন ছিল তাই নিজের সাজসজ্জার দিকে একটু বিশেষ নজর দিয়েছিলাম, তাই একটুখানি set-wet ও মেরেছিলাম।ক্লাসে ঢুকতেই -এ কি!! ক্লাস শুরু হয়ে গেলো নাকি।কারন একজন madam সামনে দাঁড়িয়ে কি যেন বলছিলেন। তাই আমি একটা সালাম দিয়ে ক্লাসে ঢুকলাম। কিন্তু সবার হাসাহাসিতে বড়ই লজ্জা পেলাম।পরে এক বন্ধু মারফত জানতে পারলাম-উনি madam না,উনি আমাদের ক্লাসম্যাট,সদ্য CR নির্বাচিত হয়েছেন।আহ!!!পরের দিন ঘটল আরেক ঘটনা।আগের দিনের মতই এক লোক সামনে দাঁড়িয়ে লেকচার দিচ্ছিলেন ।আমি ভাবলাম, সেও হয়ত সদ্য CR নির্বাচিত হইয়াছে। তাই,হাই দোস্ত- Congrats বলিয়া ক্লাসে ঢুকলাম। কিন্তু সে কি!! উনি তো পড়ানো শুরু করিলেন। বুঝতে বাকি রইল না, উনি যে লেকচারার।দুনিয়া তো আসলেই বড় আজব।

যাই হক-এখন প্রেম তো করতে হবে। সবুরে নাকি মেওয়া ফলে,কিন্তু সবুর করতে করতে এমন অবস্তা হয়েছে যে -দেশ থেকে সব মেওয়া গাছই উজার হয়ে যাচ্ছে। so no more সবুর।পাশের ক্যাম্পাসের একটা মেয়ের সাথে ফেবুতে খুব ভালো পরিচয় ছিল।তাই ঐখানে একটা try মারাই যায়।পাশেই কেন প্রেম করতে চাই তার বহুত কারণ আছে-যেমন যারা নিজ ক্যাম্পাস থেকে অন্য কোন শহরে প্রেম করে তাদেরকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়।যদিও Airteler ভালবাসার টান আর grameen phone তাদেরকে খুব কাছে রাখে।তবুও মাসে অন্তত একদিনের জন্য হলেও তাদেরকে চলে যেতে হয় সেইসব শহরে।যার ফলে বন্ধুদের কাছ টাকা ধার নিয়ে তারা হয়ে পড়ে ঋণগ্রস্ত। আর সেই ঋণ থেকে মুক্তি পায়নি -তার আগের সিরিজ,তার আগের সিরিজ,তার আগের সিরিজ।তারপর ঐ মেয়ের সাথে আমার প্রেম হল বিদ্যুতের গতিতে, কিন্তু আমার daily daily CT,LAB,ASSIGNMENT ঐ প্রেমকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল আলোর গতিতে।তখন মনে হল-নিজের ক্যাম্পাসে প্রেম করতে পারলে তো খুবই ভালো হয়। প্রেমদেবীর অশেষ কৃপায় তাহাও পাইয়া গেলাম। কিন্তু কি পাইলাম!! তা পরে হাড়ে হাড়েই টের পাইয়াছি। যেমন একদিন রাতে সব কাজ বাদ দিয়ে একটা গানের সুর তুললাম গীটারে, পরের দিন তাকে শুনাব বলে । হা, পরের দিন একটা আটো ভাড়া করে ওকে নিয়ে চলে গেলাম রাবির ক্যাম্পাসে।খুব কাছাকাছি বসে আমি বাজানো শুরু করলাম এই গানের সুরটা-

অনেক সাধনার পরে আমি

পেলাম তোমার মন

পেলাম খোঁজে এ ভুবনে

আমার আপনজন...।

ঠিক তখনই উনি আমার চোখে চোখ রাখলেন। আমি সুখ সাগরে ভাসতে ভাসতে ডুবিয়া গেলাম যখন উনি বললেন- এই MOSFET জানি কি ,আজ যে SIR পড়ালেন। একেই বলে আমি কি কই, আর আমার সারিন্দা কি কয়। তারপর সব বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম –দেবদাস সাজব। তাই দাড়ি গোঁফ রাখা শুরু করলাম। কিন্তু সামনের Board viva দেবদাস সাধন ভঙ্গ করে দিল।

অবশেষে মাথার অর্ধেক চুল বিসর্জন দিয়ে বাকি অর্ধেক চুল নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হলাম। চাকুরীজীবনের ২ বছরের মাথায় জীবনের তাগিদে একটা বিয়েও করে ফেললাম। আহ!!! কি সুখের জীবন। হানিমুনের জন্য চলে গেলাম সুইজারল্যান্ড। সেখানে প্রচুর বরফ পড়ে, সেদিনও খুব বরফ পড়তেছিল। আমি ভাবতেছিলাম এখন আমার স্ত্রী হয়ত এসে বলবে- এই চলনা আমরা বরফ পড়া দেখি। কিন্তু সে কি!! ও এসে বলল-এই মাগুর মাছ না আমার খুব প্রিয়, আমি আজ মাগুর মাছের ঝুল রান্না করি? সেরেছে!!!!!!!!!!!!!!!! দেশে ফিরে আসলাম। প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি,তাই সবসময় হাইপারটেনশানে ভোগতাম না জানি কখন ছাটাই হয়ে যাই। তেমনি একদিন বাসায় ফিরে দেখলাম ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টিস্নাত রাত গুলো খুব রোমান্টিক হয়। আমিও খুব রোমান্টিক হয়ে গিয়েছিলাম ।কিন্তু ই মেইল চেক করতেই দেখি এক গাদা ASSIGNMENT । কালকের মধ্যে করে নিতে হবে। সাথে সাথে একটা বজ্রপাত হল যখন বউ এসে বলল- এই চলনা আজ বৃষ্টিতে ভিজি। কয় কি!!!!!! অনেক বলে কয়ে বউ কে বুঝালাম। বিড়বিড় করে কি জানি বলল। কিছু বলুক, আগে চাকরি, then লারকি।

বৃষ্টির জল নামলে

নিজের চোখের জল ঢাকি

আজও তোমায় কিছু কি

বলার আছে বাকি ...।

এই গানটা প্লে করে একটা সিগারেট ধরালাম, আর রোজকার মতই কাজ শুরু করলাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.