![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গনতন্ত্রের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত এবং সর্বজনস্বীকৃত সংজ্ঞাটা হলো,”Goverment of the people,by the people,for the people”.এছাড়াও কোনরূপ দ্বিধাদ্বন্দ ছাড়াই গনতন্ত্র জনগনকে সকল ক্ষমতারউত্স বলে একবাক্য স্বীকৃতি দিয়েছে।একটি রাস্ট্রে গনতন্ত্র কতটা সফল হয়েছে তা নির্ভর করে সেই জনগোষ্ঠির গনতন্ত্রের সাথে সম্পৃক্ততার উপর।অর্থাত্ গনতন্ত্রের সুফল ভোগ করতে হলে সেদেশের জনগনকে নিজের অধিকার সর্ম্পকে জানতে হবে,গনতন্ত্রের প্রত্যেকটা আচার অনুষ্ঠানে জনগনকে অংশগ্রহন করতে হবে।
এখন দেখার বিষয়,বাংলাদেশে গনতন্ত্রের র্দীঘযাত্রার ফলাফল কি এবং জনগন গনতন্ত্রের কতটুকু সুফল ভোগ করতে পেরেছে?অথবা জনগনের সাথে এদেশে প্রচলিত গনতন্ত্রের সম্পৃক্ততা কতটুকু?
আমাদেরদেশে গনতন্ত্রের এই দীর্ঘ পথচলার একটা অন্যতম ফলাফল হলো,১৬ কোটি মানুষ আজ দুভাগে বিভক্ত।একভাগ হলো সাধারন জনগন অপরটি হলো রাজনীতিবিদ।রাজনীতিবিদরা হলো গনতন্ত্রের আরেকরূপ আর সেই রাজনীতিবিদদের সাথে জনগনের একমাত্র সর্ম্পক হলো ভোটের সর্ম্পক।অবশ্য ৫ বছর পরপর এই সর্ম্পক নবায়ন হয়ে থাকে,কিছু মিথ্যা আশ্বাস,কিছুমিথ্যা স্বপ্ন অথবা দুচার প্যাকেট বিড়ি,বিস্কুট,শাড়ী,লুঙ্গি অথবা কিছু নগদ টাকার বিনিময়ে।এরপর যে ভোটে হারে সে তো জনগনের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করতে শুরু করে আর যে ভোটে জিতে সে ভোটের সময় ইনভেষ্ট করা মুনাফা এবং লভ্যাংশ কড়ায় গন্ডায় বুঝে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।তারপর আবার নিজেদের জন্য এবং উত্তরসুরীদের একটা উজ্জল ভবিষ্যত তৈরির তাগিদ তো থাকেই।তাই কিভাবে তাদের জন্যবিনাশুল্কে বিলাসবহুল গাড়ী আনার বন্দোবস্ত করা যায়,কিভাবে নিজেদের বেতনভাতাও অন্যান্য সুবিধাসমূহ আদায় করা যায় সেসব আইন প্রনয়নে ব্যস্ত থাকতে হয়।মাঝে মাঝে বিশাল গনসমাবেশ বা গনস্বংবর্ধনার মাধ্যমে জনগনকে উন্নয়নের একটা বিশাল ফিরিস্তি পড়ে শোনানো হয় কিন্তু উপস্থিত জনগনের বেশীরভাগই হয় মাথাপিছু ১০০ টাকায় ভাড়া করা অথবা গ্রামগন্জ থেকে নিজেদের ভাড়া করা ট্রাকে করে,এক প্যাকেট হলুদ মাখা খিচুড়ির লোভ দেখিয়ে ফুসলিয়ে আনা কিছু ভুখানাঙ্গা।কখনো কখনো খিচুড়ির ডেকচির আধিপত্যকে কেন্দ্র করে তুলকালাম বেধে যাওয়া।
এরপর,নিজেদেরকে গনতন্ত্রের ধারক বাহক আখ্যা দেয়া এই রাজনীতিবিদ শ্রেনীর লোকের যখন নিজেদের স্বার্থের গনতান্ত্রিক কর্মসূচী জনগনের উপর চাপিয়ে দিয়ে একদল দাবি করে বসে “জনগন আমাদের কর্মসূচী সফল করেছে”,আর অপরদলের দাবী “জনগন কর্মসূচীপ্রত্যাখান করেছে”,তখন জনগন নিজেই জানে না যে জনগন কি জিনিষ।
গনতন্ত্রের প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো,জনগনের মৌলিকসমূহ অধিকার নিশ্চিত করা।অথচ এদেশে প্রতিটি পদে পদে জনগনের মৌলিক অধিকারসমূহ ভুলুন্ঠিত হয়েছে।দিনে দিনে আর্থ সামাজিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটছে।নিম্নিআয়ের মানুষরা দিন দিন নিঃস্ব হচ্ছে অপরদিকে ধনীরা সম্পদেরপাহাড় গড়ে তুলছে।
জনগনের মাধ্যমে,জনগনের মধ্য থেকে হবে সরকার,জনগনের জন্য,এটাই যদি গনতন্ত্রের সংজ্ঞা হয় তবে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে এই সংজ্ঞাটি পরিবর্তিত রূপ হচ্ছে”রাজনীতিবিদরা হবে সরকার,জনগনের মাধ্যমে,রাজনীতিবিদদের জন্য”।
আমি মনে প্রানে গনতন্ত্রে বিশ্বাস করি।গনতন্ত্রের সঠিক প্রয়োগ হলে একটা জাতি উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে পৌছেযাবে এতেও আমার কোন সন্দেহ নেই।তাই আমার অভিযোগ গনতন্ত্রের বিরুদ্ধে নয়,যারাসুবিধাভোগের জন্য গনতন্ত্রকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে।হিন্দু বাক্ষ্রনদের মতো রাজনীতিকে যারা সাধারন জনগনের কাছে অচ্ছুত করে রেখেছে তাদের বিরুদ্ধে।মাঝে মাঝে বাক্ষ্রনদের মতো অস্পষ্টস্বরে মন্ত্র পড়ে জনগনকে শোনায় ব্যক্তির চেয়ে দল বড়,দলের চেয়ে দেশ।কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাদের কাছে বড় হলো তাদের নিজের স্বার্থ।আর সেই গুটিকয়েক মানুষের স্বার্থের নীচে চাপা পড়ে যায় কোটি মানুষের স্বপ্ন,আশা,আকাঙ্খা আর অধিকার।
©somewhere in net ltd.