নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভৌতিক মানব

ভৌতিক মানব › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুহুর্তের অনুভূতি"

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৭



অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছে চোখে মোটা চশমা পরা ছেলেটার মাঝে। শরীরের মাঝে দিয়ে বয়ে গেলো হালকা ঠান্ডা স্রোত। মনের মাঝে অদ্ভুত রকমের শান্ত এক পরিতৃপ্ত ভাব। সরল একটা মুগ্ধ দৃষ্টিতে বারবার তাকাচ্ছে ছেলেটা সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নীল রঙের স্যালোয়ার কামিজ পরা মেয়েটার দিকে। থেমে থেমে তাকায় সে। ভয় পায় পাছে মেয়েটা না বুঝে ফেলে। হয়তো মেয়েটা বুঝেছে ও যে এভাবে একমাত্র ওর দিকে বারবার তাকাচ্ছে। মেয়েরা অনেককিছুই বুঝতে পারে।



চারিদিকে আযানের প্রতিধ্বনি বাজছে। মাগরিবের আযান দিচ্ছে। এই ভর সন্ধ্যাবেলা মাথায় ওড়না দেওয়া মেয়েটা যে ছেলেটার মনে অদ্ভুত ভালোলাগার ঝড় তৈরী করবে তা সে ভাবতেও পারি নি। এতক্ষণ সব ই ঠিক ছিলো। কিন্তু হটাৎ কি যেন হয়ে গেলো। ওড়না পড়া মেয়েটার দিকে তাকিয়ে ছেলেটার মনে কিছু প্রশ্ন বারবার প্রতিধ্বনি হতে থাকে । মেয়েটা এতো সুন্দর কেনো? এতো মায়া কেনো ওর মাঝে, ওর চোখে... কেনো? নিজের ই প্রশ্ন সে আপনমনে নিজের মাঝে খুঁজে যায়। খুঁজে যায় অশান্ত দুটি চোখগুলোর শান্ত দৃষ্টির মাঝে।



বিকেল গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যা নামছে। সুর্য এইতো ডুবুডুবু ভাব। আকাশ টা লালচে আভায় ভরে যাচ্ছে। ধানমন্ডি লেকের এক ব্রিজের ধারে দাঁড়িয়ে আছে দুটি ছেলে আর তিনটে মেয়ে। চশমা পরা ছেলেটি ব্রিজের উপর রেলিং হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সন্ধ্যার গোধুলি সময়টা ওর খুব প্রিয়। তাকিয়ে সে চারপাশে সন্ধ্যা নামার দৃশ্য দেখছে আপনমনে।



সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সবার মধ্যে একমাত্র ওর ছেলে ফ্রেন্ডটি ছাড়া বাকী তিনটে মেয়ে ওর অচেনা। আজ ই প্রথম পরিচয় হল। বেশ কয়েক জায়গা ঘোরাঘুরির পর ওরা এলো ধানমন্ডি লেকে। বিকেলটা প্রায় শেষ। অনেক্ষণ থেকেই সে হাসিখুশি লাল জামা পড়া মেয়েটাকে দেখছে। ওর মনে হল অন্য দুটি মেয়ে থেকে অনেক ডিফারেন্ট। আসলে মানব মনে কেমন যেন! পার্থক্য খুজতে পছন্দ করে। ছেলেটির মেয়েটিকে অন্যরকম মনে হয়। কেন সে জানে না। সবকিছুর কেন জানতে হয় না। কিছু ব্যাপার এমনি ঘটে যায়। বিধাতার রহস্যঘেরা খেলা।



হটাৎ মাগরিবের আযান শুরু হয়ে গেলো। দূর দূরান্ত থেকে আযানের প্রতিধ্বনি আসছে। ছেলেটা তাকিয়ে দেখে মেয়েরা কেউ ই মাথায় ওড়না দেওয়া নি। হয়তো ওড়না দেওয়ার কথা ওদের খেয়াল ই নেয়। নিজেদের মাঝে আড্ডা দিতে ব্যাস্ত। ছেলেটির কাছে ব্যপারটা ভালো লাগলো না। আযান দিচ্ছে। কেন ওরা ওড়না দেবে না মাথায়????? এটাই তো নিয়ম। ওরা তো সবাই মুসলিম। ছোটবেলা থেকে ও ওর মাকে আযান দেওয়ার সময় মাথায় ওড়না দিতে দেখেছে। মা বলেছে এটাই নাকি নিয়ম। হুট করে বলে উঠে সে, আমার মনে হয় তোমাদের এখন মাথায় ওড়না দেওয়া উচিত। ওড়না দেও মাথায়। মেয়েগুলো কথা থামিয়ে ওর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মাথায় ওড়না দিলো। লাল স্যালোয়ার পড়া মেয়েটার দিকে তাকায় ছেলেটা। তাকিয়েই সে স্তব্ধ হয়ে যায়। আযান আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সেই অনুভুতিটির রেষ ছেলেটির মনে গহীনে গেথে যেতে থাকে ধিরে ধিরে আস্তে আস্তে...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.