![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার সব চেয়ে প্রিয় কিছু হলো শেখা, যেখানে শেখার কিছু আছে সেখানে না শেখা পর্যন্ত মনে শান্তি থাকেনা, যখনই সময় তখনই শিখি, এখনো শিখছি
মঈন উদ্দিন সাধারণ দরিদ্র মৎস্যজীবী। বাবা, মা, দুই ভাই ও একজন সন্তান নিয়ে তার সংসার। সুবর্ণচর উপজেলার চর ক্লার্ক ইউনিয়নের একজন স্বচ্ছল বাসিন্দা ছিলেন। বছর পাঁচেক আগে বাবার কঠিন অসুখকে কেন্দ্র করে চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে গিয়ে প্রায় পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত বসতভিটা বিক্রি করে মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসাবে আশ্রয় নেন চর আলাউদ্দিনের নদীর পাড়ের কলোনিতে। দুই ভাই ও মঈন উদ্দিন নদীতে মাছ ধরে যা পান, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। প্রচূর পরিমাণে ঋণেও জড়িয়ে পড়েন।
মঈন উদ্দিন ২০১০ সালে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মনসুরাকে বিয়ে করেন। মনসুরা সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার একজন উপকারভোগী। তিনি সপ্তম শ্রেণীর পর্যন্ত পড়েছেন। ছোটবেলা থেকেই পরিবারের জন্য হাঁসমুরগী ও ছাগল পালনের মত আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন। এভাবে বাড়তি উপার্জনের মাধ্যমে এক সময় বাবাকে সহায়তা করেছেন। স্বামীর ঘরে এসে তার সেই অনুভূতি জাগ্রত হয়। মনসুরা বাবার বাড়িতে গিয়ে ছাগল ছানা এনে স্বামীর বাড়িকে বসে আয়বৃদ্ধিমূলক কাজে সম্পৃক্ত হন। এ কাজে স্বামীও তাকে সহায়তা করেন। এতে মনসুরা বার বার বাধার মুখে পড়েন।
মনসুরা ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে যখন সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা বাস্তবায়িত জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের মৎস্যজীবীদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়, তখন মঈন উদ্দিন সদস্য হন। মৎস্যজীবী দল গঠণের দিন নদীতে মাছ ধরতে যাওয়ায় তার স্ত্রী মনসুরা সভায় উপস্থিত হন। এ সভায় বিকল্প আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ড সম্পর্কে আলোচনাকালে মনসুরা তার পুর্ব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। প্রকল্প নিয়ে বার বার বিপদে পড়ার কথাও বলেন। মনসুরাকে প্রকল্পের পক্ষ থেকে আশ্বস্থ করা হয়। ফলে তিনি আবার প্রকল্প গ্রহনে উদ্বুদ্ধ হন।
মঈন উদ্দিনের পক্ষে তার স্ত্রী এই দল থেকে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ পান। স্বপ্ন দেখেন নতুন করে বাঁচতে শেখার। প্রকল্পের পক্ষ থেকে মনসুরাকে দেশি মুরগীর দিয়ে সহায়তা করা হয়। স্বামীর সহায়তা নিয়ে এর সঙ্গে আরও কিছু হাঁস-মুরগী কেনেন তিনি। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পাওয়া জ্ঞানের আলোকে মনসুরা হাঁস-মুরগী পালন শুরু করেন। এতে তার সংসারে সাফল্য আসে। মনসুরা ফিরে পান নতুন জীবন।
মনসুরা জানান, তার হাঁস-মুরগীর এখন আর কোন রোগবালাই নেই। রোগ হলেও তার ভয় নেই। পিছিয়ে যাবেন না। কারণ রোগের প্রতিষেধক সম্পর্কে ধারণা রয়েছে তার। জানালেন, যথাযথ জ্ঞানের অভাবে আগে হাঁস-মুরগী পালনে সফল হতে পারেন নি। প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার সংকল্পে দৃঢ় মনসুরা। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্প আর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
©somewhere in net ltd.