নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজীবনে শুধু মানুষের গল্প শুনতে চাই, আর নিজের মত করে গল্পগুলো লিখতে চাই...

নয়ন বড়ুয়া

মানুষ দেখতে পছন্দ করি, এবং মানুষের গল্প শুনতে পছন্দ করি...

নয়ন বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ হিমুর সোফা বাতিক...

২২ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫২

মাজেদা খালা সোফা কিনেছে। তিন সিটের সোফা। হিমু আর রূপার বিয়েতে উপহার দেওয়ার জন্য।


বিয়ের যাবতীয় কাজ ঠিকমত সু-সম্পূন্ন হয়েছে।

হিমু বিবাহিত ভাবতেই, মাজেদা খালা আনন্দে আত্মহারা...

বিয়ের একমাসপরও হিমু আগের মতই ভাব...
হিমুরা চাকরি করে না, বিয়ের পর বউয়ের প্যারা নিয়ে ঝিম মেরে কোথাও বসে থাকে না। বাজারে যায় না। ডিমের দাম কত জানে না! রূপাকে কোন শপিং করে দেয় না...
সারাদিন শুধু হলুদ পাঞ্জাবী পরে আর রাস্তায় রাস্তায় হাঁটে। আর রূপাকে নীল শাড়িতে দেখবে বলে অপেক্ষায় থাকতে বলে, কিন্তু যায় না...
কারণ, হিমুরা কথা রাখে না...
অন্যদিকে রূপা ছাদে নীল শাড়ি পরে, হিমুর আসার অপেক্ষা করে, কিন্তু হিমু আসে না। রূপা জানে যে হিমু আসবে না, তবুও অপেক্ষা করে...
কারণ রূপারা ছাদে নীল শাড়িতে অপেক্ষা করতে জানে...

এই অপেক্ষার শেষ হয়, মাজেদা খালার বকনিতে...
মাজেদা খালা রূপাকে বলে, কেমন স্ত্রী তুমি! যে স্বামীকে কন্ট্রোলে রাখতে পারো না! তোমাকে ভালোবাসে না নাকি? প্রেমের বিয়েতে এমন অবহেলা! ক্যামনে সম্ভব!
মাজেদা খালার এমন কথায় রূপার এক ধরণের জেদ চেঁপে বসে মাথায়। মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয়, মাজেদা খালাকে দেখিয়ে দিতে হবে, আমিও আর দশটা বউয়ের মত, স্বামীকে কন্ট্রোলে রাখতে পারি...

যেমন ভাবা, তেমন কাজ...

পরবর্তী এক মাস রূপা হিমুকে এমন ভালোবাসার মায়ায় ফেললো যে, হিমু হয়ে গেলো রূপা পাগলা...
তাঁরা দুইজন একসাথে চাঁদ দেখে, একসাথে ছাদে হাঁটে, ক্ষিধে লাগলে জোছনা খায়, জোছনায় স্নান করে...
দুইজনে নীল শাড়ি, পাঞ্জাবী পরে ছাদে অপেক্ষা করে। কার জন্য করে, তাদের দুইজনের কেউই জানে না!

হিমু মাঝে মাঝে রূপাকে প্রেমের কবিতাও শোনায়, রূপা আদর করে হিমুকে 'কবি হিমু' বলেও ডাকে...
রূপার মুখে 'কবি হিমু' শুনে, সব কবিতার মাঝে যেনো প্রাণ ফিরে পায়, কবিতারা ফিকফিকিয়ে হাসে...

সবকিছুই ঠিকঠাক। হিমু পুরো কন্ট্রোলে। কন্ট্রোলে বলতে, হিমুর কর্মকাণ্ড আগের মতই। পরিবর্তন শুধু রূপাকে পাগলের মত ভালোবাসা। রূপাকে ছাড়া হাঁটে না। রূপাকে ছাড়া চাঁদ দেখতে ভালো লাগে না। একা একা জোছনা খেতে ভালো লাগে না, একা জোছনা স্নান করতে ভালো লাগে না...
যেদিন তাদের ঝগড়া হয়, সেদিন হিমু জোরে জোরে হাঁটে। হিমুকে শান্ত করতে রূপাও হিমুর সাথে তাল মিলিয়ে হাঁটে। রূপার এমন হাঁটা দেখে, হিমুর রাগ বরফের মত ঠান্ডা হয়ে যায়...

একদিন রূপা তিন সিটের এক সাইডে বসে শুভ্রর সাথে গল্প করছিলো...
দারুচিনি দ্বীপের সেই শুভ্র। কোটিপতি ঘরের একমাত্র ছেলে। যাকে বন্ধুরা আদর করে কানা মামা ডাকতো...
তো তারা দারুচিনি দ্বীপ ভ্রমণ নিয়ে গল্প করছিলো। শুভ্র বসে ছিলো, সোফার আরেক সাইডে।

হিমু সারাদিন হাঁটা শেষে, বাসায় ঢুকেই রূপার দিকে তাকিয়ে রইলো পলকহীন...
এরপর হিমু দ্রুত রুমে চলে গেলো। সচারাচর হিমু এত দ্রুত রুমে যায় না। রেগে না গেলে, সে এমনটা করে না...
রূপা দ্রুত উঠে হিমুর রুমে গেলো। দেখলো হিমু সজোরে রুমের এই পাশ হতে ওই পাশে হাঁটছে...
সাধারণত হিমু বেশি রেগে গেলেই এমনটা করে।
রূপা সজোরে হাঁটতে হাঁটতে জিজ্ঞেস করলো, কী হয়েছে?
হিমু রূপার সাথে হাঁটতে রাজী না। রূপা তার সাথে হাঁটলে সে হাঁটবে না। হিমুর এমন আচরণে রূপা কেঁদে দেয়...
এরপর হাঁটতে হাঁটতে হিমু বলে উঠে, ওই কানার সাথে সোফায় বসতে খুবই ভালো লেগেছিলো, তাই না? আমার সাথে তাইতো আগের মত হাঁটো না! যাও, ওই কানাকে নিয়েই সারাদিন সোফায় বসে থাকো, আমি যদি আর তোর সাথে হাঁটি! বলেই হিমু ঘরের বাইরে চলে গেলো...
রূপা অবাক হয়ে হিমুর চলে যাওয়া দেখলো, আর মনে মনে বললো, শালা সাইকো...

বিঃদ্রঃ ১। তিন সিটের সোফার গল্পের প্যারোডি।
২। স্যারের সৃষ্টি সেরা চরিত্রগুলোকে, এমনভাবে লেখায় ক্ষমা চাইছি...
৩। দয়া করে কেউ সিরিয়াসলি নেবেন না...

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৫

জেরী বলেছেন: ভাই লেখাটা এত ফানি হয়েছে পড়ে হাসি চেপে রাখতে পারলাম না =p~

চিরচেনা ভালবাসার ক্যারেক্টারগুলোকে ফানি ভাবে দেখছি,পড়ছি

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ...
সুস্থ ও ভালো থাকুন সবসময়...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.