নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ দেখতে পছন্দ করি, এবং মানুষের গল্প শুনতে পছন্দ করি...
১
সকালে বাবু ভাইয়ের কলে মনটা খারাপ হয়ে গেলো!
ভাই কল করে বললেন, তুই আজকে থেকে ৫ বছরের জন্য আমাদের ক্লাবে নিষিদ্ধ...
বললাম, কেন ভাইয়া? আমার অপরাধ কী?
ভাই বলেন, তোর অপরাধ, তুই বিয়ে করে ফেলছিস। আমরা বিবাহিতদের ক্লাবে রাখি না...
এইটা বলেই কল কেটে দিলেন...
ওইদিকে রিপনকে বিষয়টা জানানোর জন্য কল দিলে, রিপন কল রিসিভ করে না। কেটে দেয়। একটুপর সে মেসেজ দিয়ে বলে, আমরা বিবাহিত পুরুষদের সাথে কথা বলি না...
চেনা মানুষের অচেনা সুর দেখে নিজেই নিজের সমাধান বের করার চেষ্টা করছি...
কোন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না...
সবাই অভিমান করে বসে আছে...
২
সন্ধ্যায় ক্লাবে গিয়ে দেখলাম, প্লেকার্ডে লেখা, "বিবাহিত পুরুষ নট এলাউড"...
ক্লাবের ভেতরে বেশকিছু ছোট ছোট কাগজে, বিভিন্ন বাণী টাঙ্গানো পোষ্টার বাইরে থেকে পড়তে লাগলাম...
"বিয়ে করে না যেই জন, সেই জন সেবিছে বাঘ"
নিচে লেখা "শ্রদ্ধেয় বাবু ভাই"...
তার আরেকটাতে লেখা, "আসল পুরুষ তারায়, যারা বিয়ে করে না"
সেটারও নিচে লেখা "বাণীতে শ্রদ্ধেয় বাবু ভাই"...
আমি এইসব দেখে চুপচাপ সেখান থেকে ফিরে আসতেই, বাবু ভাইয়ের ডাক...
শোন, তোকে ক্লাবে রাখতে পারি একটা শর্তে। তবে সিক্রেটভাবে। বিষয়টা তোকে পরে জানাবো বলেই, সবাইকে উদ্দেশ্য করে আমাকে দেখিয়ে বললো, নয়ন হচ্ছে স্পেশাল কেস। ওকে এলাউ করি ক্লাবে। তুরা কী বলিস?
সবাই হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালে, বিষয়টা ওখানেই মীমাংসিত হয়...
মনে মনে বলতে লাগলাম, যাক অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। নাহলে তো আড্ডা না দিয়েই বাকি জীবন কাটানো লাগতো!
৩
রিপন প্রেম করে সেটা কীভাবে কীভাবে জানি বাবু ভাই জেনে গেছেন...
তাই আজ রিপনকে নিয়ে বিচার বসাবেন বাবু ভাই।
বাবু ভাই কষ্টে জর্জরিত। বুকে হাহাকার। রিপনকে নিজের আয়না মনে করতেন বাবু ভাই। এখন সেই আয়নায় মুখ দেখে অন্যকেউ। মানতে পারছেন না...
বাবু ভাই একটার পর একটা সিগারেট ধরাচ্ছেন, আর এক টান দিয়ে ফেলে দিচ্ছেন...
ফলাফল বাবু ভাইয়ের রাগ বাড়ছে...
৪
বিচারে রিপন আসেনি। আসেনি বলতে, রিপন তার প্রেমিকাকে নিয়ে কক্সবাজার পালিয়েছে...
গত দুইদিন ধরে সে প্রেমিকাকে নিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট দেয় আর বাবু ভাইকে ট্যাগ দেয়...
আর ওইদিকে বাবু ভাই এগুলো দেখে বাঘের মত গর্জন করতে থাকে...
এইটুকু পর্যন্ত ঠিকঠাক।
হঠাৎ টানা বেশ কয়েকদিন বাবু ভাইয়ের কোন খবর নাই। কল দিলে রিসিভ করেন না। বাসায় গেলে দেখা করেন না, ব্যস্ত আছি বলে দরজা থেকেই বের করে দেন। ঘরে ঢুকতে দেন না। মোটকথা বাবু ভাই আর আগের মত আমাদের সময় দেন না...
৫
আমরা এখন অসহায় ভাবে জীবন যাপন করছি। না আছে বাবু ভাই, না আছে রিপন...
ফেসবুকে রিপনের আপডেট পাওয়া গেলেও, বাবু ভাইয়ের কোন আপডেট নাই...
কী জানি, নতুন কোন প্ল্যানে আছেন কী না!
একদিন রাত তিনটায় বাবু ভাই কল দিয়ে বলেন, নয়ন একটু বের হ, জরুরী কথা আছে। একজন মুমূর্ষ রোগীর জন্য ডাব নিয়ে যেতে হবে। আমি বললাম, ভাইয়া, আমি তো গাছে উঠতে জানি না!
ভাই বললেন, দূর, তোকে বলেছি নাকি গাছে উঠতে! আমি ডাব নিয়ে আসছি, তুই গিয়ে দিয়ে আসবি...
নেমে ভাইয়ের হাত থেকে ডাব নিয়ে, সেই ঠিকানায় পৌছাই দিলাম...
এলাকারই ঠিকানা। তাই খুঁজতে তেমন বেগ পেতে হয়নি...
যিনি ডাব নিলেন, তিনি নতুন এসেছেন। দেখতে বেশ সুন্দরী। তবে মুমূর্ষ রোগী মনে হয়নি। বেশ নাদুস-নুদুস ভাবে ডাব হাতে নিলেন...
আর আমি দিয়েই ভাইয়ের কাছে ফিরে আসলাম...
বাবু ভাই বললেন, এইটা সিক্রেট রাখিস। তোর ভাবী। নাম এ্যানি। ডাব খেতে চাইছে, না করতে পারি নাই। ওদের আবার একটা কুকুর আছে। তাই ভয়ে যায়নি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা বিয়ে করবো...
আমি বললাম, কীভাবে কী হলো! তাছাড়া আমাদের ক্লাবেরই কী হবে?
ভাই বলেন, দেখতেই তো পাচ্ছিস, বয়স হয়েছে, চুল পেঁকে যাচ্ছে, আর কত! দেশে যে হারে মানুষ কমছে, এভাবে চলতে থাকলে তো পুরো বাংলাদেশ মানুষ শূণ্য হয়ে যাবেরে!
এভাবে প্রাণের বাংলাদেশ শেষ হয়ে যাবে, সেটা ভাবতেই আমি এই দ্বায়িত্ব নেওয়ার প্ল্যান করেছি...
তুই ছোট সেসব বড়দের কথা। আমরা কাল বিয়ে করছি সিলেটে গিয়ে। তুই পুরো বিষয়টা সিক্রেট রাখবি, এই কথা বলে ভাই আমার থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন...
৬
সকালে এলাকায় প্রায় সবার মুখে মুখে অমুকের মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই বাবু ভাইয়ের কাছে গেলে, বাবু ভাইয়ের দরজার প্লেকার্ডে লেখা, "মানুষের এত আগ্রহ কেন? খুঁজলে যদি সব পাওয়া যেতো, তাহলে সবাই গর্ত খুঁড়তো, জব-টব করতো না...
ভাইয়ের এমন লেখার মানে কেউই বুঝলো না...
প্রথমে আমারও মাথার উপর দিয়ে গেলো....
পরে ফেসবুক স্ক্রল করে দেখি, বাবু ভাইয়ের পোষ্ট। ক্যাপশনে লেখা, অবশেষে এ্যানিকে নিয়ে পালালাম...
সেই পোষ্টে ট্যাগ দিলেন রিপনকে। বিঃদ্রঃ দিয়ে রিপনকে বললো, কেমন দিলাম রিপন?
নয়ন বড়ুয়া
নভেম্বর, ২০২৪
১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০৫
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: চিরকুমার হইলে তো কিছু কিছু রহস্যও রাখতে হয়...
সব তো আর পাবলিকলি বলা যায় না...
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:০৯
নান্দাইলের ইউনুছ বলেছেন:
যেই পুরুষের দুই পায়ের মদ্যিখানে একখানা সোনা আছে সেই পুরুষ আবার চিরকুমার অয় কিরাম কৈরা?