নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীহািরকা

Philosopher.

নীহািরকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা জনাব ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যারকে খোলা চিঠি - একজন অতিসাধারণ নাগরিক

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:১৭

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা
ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস স্যার

জনাব

বিনীতভাবে ক্ষমা চেয়ে শুরু করছি। গত ২৫শে আগষ্ট ২০২৪ ইং এ আপনি জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে লিখিত বিষয় জমা দিতে বলেছিলেন। আমি সেই ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে আমার আর দেশের প্রেক্ষাপটের সমস্যা নিয়ে কিছু অনুরোধ করতে লিখছি। আমি বিভিন্ন বিষয় নিয়েই জানাবো, তবে কোনটা কোন মন্ত্রণালয়ের জন্য তা আমি সঠিক জানি না। তাই সবিনয়ে অনুরোধ যার মন্ত্রণালয়ের সাথে মিলে যাবে আমার বিষয়, তা আপনারা আপনাদের মত করে বিষয়গুলো নিজ নিজ আমলে নিয়ে নেবেন।

আমি এই পত্রের শেষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস স্যারকে ছাত্র হিসেবে কিছু বিষয়ে আলোকপাত করবো। তাই যৌক্তিক কারণে পত্র বড় হয়ে গেলেও ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবার জন্য মার্জনা চাইছি আবার।

বিষয় একঃ কর্মহীন ও কর্মসংস্থান
ক) আমি মনে করি, একটা মানুষের জন্মের পর তার বেঁচে থাকার অধিকার আছে – হোক সে সক্ষম বা অক্ষম, অসুস্থ, বা প্রতিবন্ধী, কম বয়সী বা বৃদ্ধ, অসচ্ছল ও মেধাবী, ঋণগ্রস্থ ও উপায়হীন – সকল দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষের বাঁচার অধিকারের হুমকীতে পড়লে তার বিপথগামী হবার আগে সমাজ ও রাষ্ট্রকে জানানোর অধিকার আছে। একটা উপার্জনক্ষম মানুষ – তার বয়স যাই হোক না কেন - ১ মাসেরও বেশী কর্মহীন রাখা যাবে না। সে যে কর্মহীন সেটা সাথে সাথেই কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে জানাতেই হবে। কাজ করার অধিকারের পূর্বে – “আমার কাজ নাই’ কথাটা জানাবার অধিকার দিতে হবে।
কিভাবে এই নির্দিষ্ট ব্যক্তি নিয়ে মেকানিজমটা করবেন তা আপনাদের উপর আস্থা রাখলাম। কর্মবাজার, কর্মক্ষেত্র, কর্মে নিয়োজিত নয় কতজন আর কর্মে নাই এ কথা জানায় নাই কত জন তার সুনির্দিষ্ট তথ্য ও সেই অনুযায়ী একশান প্ল্যান আপনাদের কাছে আশা করি।

আমার দেখা মতে, এদেশে ঐচ্ছিকভাবেই প্রচুর স্কিলড বেকার তৈরী করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের স্কিলড বেকার লোকেরা প্রচন্ড অপরাধপ্রবণ হয়ে পড়ে। পরিবারের ক্ষুধা মেটানো আর মান সম্মানের কথা ভেবে যে কোন দুর্ধষ কাজ করতে আপনারা ৩৫ কি ৪৫ বয়সী বা তার বেশী লোকেদের দেখবেন। তাদের অপরাধ সংগঠনের পর ধরে-বেধে বিচারের কিছুই হয় না বা হবেও না – কেননা দিন শেষে এই লোকেরা কিন্তু আবারো বেকার।

খ) এবার জানাই আমি একজন শিক্ষিত ও কর্ম-অভিজ্ঞ বেকার। আমি একজন বেকার হয়ে যে নিজের দেশের, নিজের পরিবারের, বা নিজের অস্তিত্বের কোন কাজে আসতে পারছি না, বা আমার পরিবারের নির্ভরশীল মানুষদের প্রতিদিন বিপদের মুখে যে ঠেলে দিচ্ছি, বা আমি যেকোন সময়ে বিপথগামী হয়ে অনৈতিক কাজ যে করতে পারি, কিংবা আর কিছু না হোক আত্মহত্যার পথ যে বেছে নিতে পারি – সে কথা আমি জানি না কোথায় বলবো। আমার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ চাই, সে কথা আমি জানি না কোথায় জানাবো।

সরকারি এপস একটা আছে যেটা মাই গর্ভনমেন্ট নামে চালু করা, তাতে এরকম কিছুই বলবার সুযোগ নেই। আগের সব সরকার আদমশুমারী করাতেন; টিভি আছে কিনা, ফ্রিজ আছে কিনা, স্যানিটারী ল্যাট্রিন আছে কিনা, তার জরীপের সাথে আয়ের জরীপ তথ্য নেন। সেই জরীপে আমি জানিয়েছিলাম আমি বেকার – আর তথ্য সংগ্রহকারী হাসতে হাসতে ইনকাম একটা নিজের মনের মত লিখে মিথ্যে তথ্য সার্ভারে দিয়ে দিল। এতে মাথাপিছু আয় কেমন বেড়ে গেল জানি না তবে সেখানের জরীপে যে আনএমপ্লয়মেন্ট ইন্ডেক্স বলে কিছু নাই তা বুঝলাম। আমি NAIRU – Non accelerating inflation rate of unemployment সম্পর্কে একটু জানি যে এটা একটা পরিসংখ্যানের সূচক যা দিয়ে একটা দেশের আজকের দিনের বেকারত্বের কারণে অর্থনীতিতে যে ঋণাত্মক প্রভাব হয় তা মেপে দেখা যায়। সরকার চাইলে আমার এন আই ডি নাম্বার ধরে আমার বাসার হোল্ডিং নাম্বার ধরে সরাসরি জানতে পারেন আমার বেকারত্বের অবস্থা – এই সূচক নির্মাণে সুনির্দিষ্ট গাইডেন্স পেলে আমিও কাজটা করতে সময় ও নিষ্ঠা নিয়োজিত করতে পারি।

গ) “আমি কর্মহীন” কথাটা জানাতে লজ্জা পাওয়া যাবে না। এতে সমাজের ধিক্কারের কিছু নাই। যার যা মেধা ও অভিজ্ঞতা – তা অনুযায়ী কাজ করতে চাই। তাই বলে মুচিকে দিয়ে কসাইয়ের কাজ, বায়োলজি মাস্টার্সকে দিয়ে ব্যাংকিং, কিংবা একাউন্টিং পাস করা কাউকে মার্চেন্ডাইজিং আর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারকে কসমেটিক্স মার্কেটিং করানো এমন উদোরপিন্ডি বুদোর কর্মক্ষেত্র চাই না - যেখানে কর্মবৈষম্যে তৈরী হয়। যাকে যেখানে দরকার সেই পরিবেশটা না তৈরী হলে একটা অসম অবাঞ্ছিত প্রতিযোগীতাকে আমরা কোনভাবে কর্ম সংস্থান বলতে পারি না।

যেটা আমরা বিটিভিতে দেখে এসেছি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার তার ৮ বছরের মেধার সার্টিফিকেট ছেড়ে এখন কুমড়া বা ড্রাগন ফলের বাম্পার ফলন ঘটিয়েছেন আর বছরে দুই লাখ টাকা কামিয়েছেন এমন নিউজ ফলাও করে আগের সরকার মেসেজ দিচ্ছেন – তাতে কি বেকারত্বের সমাধান হল? টাকা ইনকাম করাই কি বেকারত্ব দূর হওয়া? তাহলে যে ড্রাগন ফল চাষী হতে চাইলো তার মার্কেট প্লেইসের কি দাম থাকল? দেশ কি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হারালো না? একই সাথে দেশ কি একটা ড্রাগন ফলের সুস্থা বাজার হারালো না? এরজন্য কি আগের সরকারের কোথাও কি আফসোস মনে হল না? তাহলে কি বাকী যারা ট্রিপল ই – লেদার টেকনোলজি নিয়ে পড়ে এসে জব পাচ্ছেন না তারা সবাই বাধাকপির চাষ করতে ক্ষেতে নেমে পড়বে এক ইঞ্চি জায়গা অনাবাদী না রাখতে? এরকম আজব বাজার চাই না।

আমার অভিজ্ঞতায় আমি একজন এমবিএ এবং পার্ট কোয়ালিফাইড সিএমএ হয়ে ১২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতায় তিনটি এমএনসিতে কাজ করার পর যেদিন কোভিডের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়লাম, সেদিন থেকে আজকে পর্যন্ত আমাকে সমাজের মানুষ শিক্ষাগত যোগ্যতাকে শূণ্যতে নামিয়ে এনে বলে - “তুমি একটা পান বিড়ির বাক্স নিয়ে রাস্তার ধারে বিক্রি কর না কেন?” এই অসম্মান আমার প্রাপ্য হতে পারে না।

ঘ) থার্ড ডিভিশন নট এলাউড – নামের অভিশাপ রাখার কারণ আমি জানি না। তাহলে থার্ড ডিভিশন পাওয়া সবাইকে একটা করে একাডেমিক ক্রিমিনাল সার্টিফিকেট কেন দেয়া হয় না। কোন কারণে কেউ থার্ড ডিভিশন পেল মানে কি তার কাজ করার অধিকার হারায়? আমার এমবিএ ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং এ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে আর সিজিপিএ ৩.৬৪ কিন্তু আমার ডিগ্রী পাস কোর্স আছে যেখানে আমি বিএসসি তে থার্ড ডিভিশন। এর মানে কি আমার চেয়ে সব ব্যাংকাররা মেধাবী। ব্যাংকিং সেক্টরকে পাবলিক এক্সাম বোর্ডের একাডেমিক রেজাল্ট নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যতা করার অধিকার কে দিল?

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থার্ড ডিভিশন রেজাল্টিং করে আমাদের মেধাহীন বলে নাই। এই থার্ড ডিভিশন পেলে ব্যাংকিং বা ফিন্যান্সিয়াল ইস্টিটিউটগুলোতে চাকরী করার যোগ্যতা আর এইজীবনে হবে না – এমন বলে নাই; বিএসসি পাস কোর্স থার্ড ডিভিশন পেলেই তাকে ঘাড় ধরে মেডিকেল রিপ্রেসেন্টেটিভের কাজ করতে হবে তা কোথাও লেখে নাই। কারো জীবনের একটা ইভেন্ট ফেইলারকে আমরা তার সারাজীবনের কাজের মূল্যায়নের মাপকাঠি ধরে নিয়ে হীনমনয়তায় ভুগতে দিতে পারি না, নিজেরাও অযাচিত অপরাধবোধে ভুগতে পারি না।

ঙ) ১) প্রোফেশনাল একাউন্টেন্টদের জব দিতে হলে আমি মনে করি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়ে কোম্পানিদের আবেদন করা উচিত – তাদের ফুল কোর্স কমপ্লিট কাউকে দরকার হোক বা পার্ট কোয়ালিফাইড। প্রোফেশনাল একাউন্টিং কোন একাডেমিক কোর্স না। জব সার্কুলারে প্রতিনিয়ত সিএ, সিএমএ, সিএসবি নিয়ে অবমানকর ও তাচ্ছিল্যের পোস্ট যেন বন্ধ হয় তার জন্য এই আবেদন কোম্পানিকেই করতে হবে। সেই সাথে কেন একজন সিএ কে নেবেন বা সিএমএ কে নেবেন সে বিষয়টা আবেদনে থাকতে হবে। সিএ কে দিয়ে কস্ট অডিটিং বা সিএমএ কে দিয়ে মার্চেন্ডাইজিং করানো যাবে না। জবের নিয়োগকর্তা হবেন বানিজ্য মন্ত্রণালয় আর যে কোম্পানিতে নিয়োগপ্রাপ্ত একাউন্টেন্ট যাবেন তিনি বাংলাদেশ কস্টিং স্টান্ডার্ডের সাথে সাংঘর্ষিক বা বাংলাদেশ নীতিমালার কোথাও গাফিলতি পেলে তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েই জানাবেন। কোন ভাবেই বায়ারের জন্য একটা ইআরপি সিস্টেম আর নিজেদের শ্রমিকদের বেতন মেরে দেয়া ইআরপি সিস্টেম করে লস দেখিয়ে ট্যাক্স কমানোর বুদ্ধিসুদ্ধি করা যাবে না। পাবলিক একাউন্টেন্টদের জব সরকারের হাতে থাকলে তখন অসাধু ব্যবসায়ীরা যখন তখন চাকরী খেয়ে ফেলতে পারবে না। আর আনএমপ্লয়েড কোন সিএসিসি বা সিএমএ পার্ট কোয়ালিফাইড থাকলে তার দ্রুত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সরকার করতে পারবে।

যারা একাউন্টিং এ অনার্স মাস্টার্স করে এসেছেন তাদেরকে জোর করে আবার প্রোফেশনাল কোর্স করানোর কিছু নাই; তারা অনার্সে জাবেদা খতিয়ান রেওয়ামিল দেখেছেন, মাস্টার্সেও একই বিষয়, এমনকি প্রোফেশনাল একাউন্টিং এ একই বিষয়। আর ঠিক একই বইয়ের একই চ্যাপ্টার পড়ানো হয় - কায়সো কিমেল ওয়েঘেন্ট এর একাউন্টিং প্রিন্সিপ্যাল (গ্যাপ ভার্সন) বা ফাইন্যান্সিয়াল একাউন্টিং (আইএফআরএস ভার্সন)। এতে কি মেধার পার্থক্য হয় জানি না।

কস্ট অডিটিং বাধ্যতামূলক করার কথা কোম্পানী এক্ট ১৯৯৪ তে বলা থাকলেও আইসিএমএ এর ছেলেরা সিএদের মত ফার্ম পায় না – গাইডেন্স পায় না – জব সার্কুলারে কার স্পেশিয়ালিটি কিসে তা জানার উপায় থাকে না। কেন সিএ পড়ছি আর কেন সিএসবি পড়ছি না তা শুধুমাত্র একটা থিওরীটিক্যাল মুখস্থ পার্থক্য বলে স্বান্তণা দিচ্ছি। এরকম স্পেশিয়ালিটি না হলে আর স্পেশিয়ালিটির বই দিয়ে কোর্স এর ক্যারেকটারকে আলাদা না করা গেলে সিএ-সিএমএ-এসিসিএ-লাউ-কদু একই শোনা যায়। কার দায়বদ্ধতা ঠিক কোথায় কিছু বুঝা যায় না।

আইসিএমএবি এর একটি জব পোর্টাল আছে কিন্তু তেমন কার্যকর নয়। এই পোর্টাল নিয়ে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে সরকারের ও আইসিএমএবি এর স্টুডেন্টদের। এই পোর্টালে চাকরীর অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যায়। এই পোর্টাল থেকে বিদেশেও প্রোফেশনাল একাউন্টটেন্টদের বাংলাদেশ সরকার চাকুরী দিয়ে পাঠাতেও পারেন।

ঙ)২) আইসিএমএবি ছাত্রদের বহু বছরের দাবি – যে পেপার পরীক্ষা দেবো, সেই পেপারের ফী দেবো। কারণ আইসিএমএ এর সাবজেক্ট ভলিউম সবগুলো সমান নয়। কোনটা পড়ে শেষ করতে অনেকের তিন চার বছরও লেগে যায়। তাই যে সাবজেক্টগুলোর পরীক্ষা ছাত্ররা দিচ্ছে না সেগুলোর ফি নিয়ে নেয়াটা অযৌক্তিক। আইসিএমএবি এর এলএমএস স্পেস নাম দিয়ে চালু না হওয়া অপশনের জন্য প্রতিবছর ফী নেয়াটা অহেতুক। আর সারা বছর সাবস্ক্রিপশন ফী না নিয়ে ঠিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন টাইমে সমস্ত ফী বসিয়ে বড় ভলিউম দেখানো ছাত্রদের প্রতি ভীতি প্রদর্শন ও অবিচার। বছরের ফি বছরে নেবে। আর পরীক্ষার সময়ে ছাত্রদের যে যে পেপার পরীক্ষা দেবে সে সেই পরীক্ষার ফী দেবে। বাড়তি যে সব সাবজেক্টে এটেন্ড করবে না তার ফী ছাত্ররা দেবে না। এটা বহু ছাত্রছাত্রীদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও টাকার বড় অংক হঠাৎ করে হয়ে যাওয়াতে বার বার পরীক্ষা পেছায় আর একজন দক্ষ একাউন্টেন্ট পাওয়া থেকে দেশ বঞ্চিত হয়।

ঙ)৩) ২০২০ ও ২০২১ এই দুই সাল কোভিডের কারণে পড়াশোনা কাজকর্ম থেকে ছাত্রদের বেঁচে থাকার লড়াই করতে হয়েছে। আইসিএমএবিও চালু ছিল না। তাই এই দুই বছরের আগের যাদের রেজিস্ট্রেশন পিরিয়ড, তাদেরকে দয়া করে দুই বছর বাড়িয়ে দেবার জন্য অনুরোধ করছি যেন ক্ষতি হয়ে যাওয়া বছরটার একটা কভার করার ছাত্ররা সুযোগ পায়।

চ) ইন্টারনেটে প্রচুর জব স্কিল সার্টিফিকেশন কোর্স দেখা যায় যাদের অনেকেই ৮ টা ক্লাস করিয়ে ৪০,০০০ টাকায় প্র্যাক্টিক্যাল একাউন্টিং আইএফআরএস কোর্স কিংবা ট্যাক্স প্রিপারেশন কোর্স করাচ্ছে যার ট্রেনিং সময়ের সাথে অর্থের কোন গুরুত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। এনারা কার মাধ্যমে সার্টিফাইড হলেন তার কোন তথ্য জানা যায় না। এই সার্টিফিকেশন করাতে সরকারের অনুমোদন না থাকলে বাতিল করানোর অনুরোধ করছি। কি করে আমরা সার্টিফাইড ইন্সটিটিউট চিনবো তার গাইডেন্স চাচ্ছি।

সার্টিফিকেট কোর্স কোনো অফিস, সংস্থা, কোম্পানি থেকে এমপ্লয়ীদের জন্য করালে একটা শৃংখলতা ও জবাবদিহীতা থাকবে। নাহলে দরিদ্র চাকুরী সন্ধানীদের উপর ব্যাক্তিগতভাবে এই স্কিল সার্টিফিকেটের খরচের অভিশাপ চাপিয়ে দিলে, আবারও বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ানোই হবে। তখন শুধু কর্মবিমুখ মানুষই দেখা যাবে যাদের অনেক সার্টিফিকেট কিন্তু কাজ করে দেখাতে পারে না।

ছ) ফ্রীল্যান্সিং এর নামে অনেক প্রতারক সংস্থা এখন লিঙ্কড ইন এ দেখা যায়। দুবাইয়ের নিমাই ফাইন্যান্সিং কোম্পানি, ইউরোপীয়ান এক্সিম ব্যাংক, আমাজন-ইবে এর মার্কেটিং – এসব নিয়ে ঘন্টায় ১,০০০ টাকা করে দিবে বলে প্রতারক চক্র চলছে নেট দুনিয়ায়। এসবের তদন্তের চেয়ে যখনই কেউ ভিক্টিম হবে তাকে সাথে সাথেই জানাতে হবে, নতুবা অনেক বেকার মানুষের অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যেতে পারে। সেই সাথে ইন্টারনেটে জুয়া খেলাকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে দাবি জানাই।

জ) বুঝতেই পারছেন আমি যেমন আজকে মন খুলে বলতে পারলাম আমি কর্মহীন ও জীবন অস্তিত্ব সংকটে আছি, তেমনি চাই আমার মত সবাই বলতে পারুক।
মাই গর্ভণমেন্ট এপসের মাধ্যমে হোক, থানায় বা কমিশনারের কাছে গিয়ে হোক, ট্যাক্স অফিসারদের কাছে গিয়ে হোক, আইসিএবি – আইসিএমএবি বা এরকম প্রোফেশনাল বোর্ডের কাছে হোক, এলুমনি এসোসিয়েশন বা স্কুল কলেজ ব্যাচ গ্রুপে পোস্ট করে হোক কিংবা ভলেন্টিয়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনের কাছে গিয়ে হোক - বলুক আমি কর্মহীন আর আমি আমার যোগ্যতা এতটুকু যা অনুযায়ী আমি কাজ চাই আর এরপর সেটা সরকারী রেকর্ডে চলে আসুক কোন লোকটা আর কতজন বেকার হয়ে আছেন আর কেমন তাদের আর্থিক অবস্থা, কেমন তাদের পারিবারিক অবস্থা। মানুষ বুঝুক এটা লজ্জার কিছু নয়, কেউ চাকরী পায় না মানে সেটা তার অপরাধ নয়, তাকে হেয় করার কিছু নাই। বরং যারা ভাল আছে তাদের চেতণার উদয় হবার দরকার।

এই মুহুর্তে আমার হাতে আর দু’মাস বাসা ভাড়া দেবার মতন অর্থ আছে। আর এই দুমাস শেষ হলে আমি আমার সংসার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ক্রাইমের পথ বেছে নিতে হলে কি আমাকে অপরাধী বলা যাবে? ভাল পথ আমাকে কি দেখানো যাবে? কে দেখাবে? এই প্রশ্নটা বিনীতভাবে রাখলাম যেন আন্তরিকতার সাথে বুঝতে পারেন।

ঝ) সরকারের কাছে ব্যবসায়ীরা সহজ ঋণের খোঁজে আসেন, ট্যাক্স কমানো, জ্বালানীর দাম কমানোর আবদার নিয়ে আসেন, বিদেশে ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরী করতে বা বিভিন্ন আঞ্চলিক সুবিধা বিড করে নিতে সরকারের কুটনৈতিক সহযোগীতার জন্য আসেন, এনজিওরাও আসেন কতকিছুর অনুমোদন নিতে, তাদের কাজ চালাবেন বলে - তাহলে দেশে কর্মসংস্থানের প্রেক্ষাপট কি তারা তা সরকারকে জানাতে পারেন না? আরো কর্ম সংস্থান কি সৃষ্টি করতে পারেন না?

এখানে সরকার যেহেতু একটা লিস্ট পেয়ে যাবেন কারা কারা বেকার তখন একটা ক্যাটাগরী করতে পারেন – মেধাশ্রমিক/ কায়িক শ্রমিক (১) প্রচন্ড কর্ম প্রয়োজন– ৪ বছর বেকার ও অপরাধপ্রবণ, (২) সদ্য কর্ম প্রয়োজন – ৪ দিন বেকার ও কর্ম উদ্যোম এরকম। আরো ক্যাটাগরী করা যায় যারা টিন সার্টিফিকেট হোল্ডার বা ড্রাভিং লাইসেন্স আছে কিন্তু এখন বেকার।

মূল কথাঃ কর্মই সব। একটা সুস্থ মানসিকতার স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ গঠনের জন্য।

বিষয় দুইঃ শিক্ষা, কর্ম ও সামাজিক মানসিকতা
ক) ‘ইনকাম করে টাকা নিয়ে আসা’ কে কাজ করা বলা হয়; ‘সেবা দিয়ে মূল্যায়ন নিয়ে আসা’ কে নয়। এই শিক্ষার জন্যে আজকে মানুষ যে পথেই হোক টাকা নিয়ে আসাকেই ইনকাম বা আয় জানে ও মানে, সেবা দিয়ে তার মূল্য পাওয়াকে নয়। যার কারণে কাজ করা বা সেবা দেওয়ার আগেই কত টাকা পাবো সেই প্রশ্নটা করে বসে। এখন সেবার মত পবিত্র বিষয় যখন শিক্ষায় নাই, তখন যাই করুক না কেন মানুষ টাকার অংক পেয়ে ভাবে কম পেয়েছে পরের বার আরো বাড়াবো। এভাবে নিজেই একটা লোভী পাশবিক চরিত্রকে নিজেই নিজের মধ্যে উন্নত করে।

সামাজিক শিক্ষা উন্নত রাখতে আমাদের ছাত্রদের শুধু নয় যারা প্রোফেশনাল এক্সপার্ট আছেন (যেমন এইচ আর এক্সপার্ট, ট্যাক্স এক্সপার্ট, উকিল, ডাক্তার) তারাও ভলেন্টিয়ার হিসেবে কাজ করে যাবেন এমন একটা ব্যবস্থা রাখা দরকার। ভলেন্টিয়ার ট্রাফিক, ভলেন্টিয়ার বাজার মনিটরের পাশাপাশি, ভলেন্টিয়ার রিক্রুটার, ভলেন্টিয়ার অডিটর এরকম অনেক সেবা সাধারণ জনগণের মধ্যে থেকে বাধ্যতামূলকভাবে এসে বিনে পয়সায় করবে দেশের জন্য। এতে করে দেশের প্রতি কেমন মানুষের দেশপ্রেম নাকি মুর্তি মুরাল ভাঙ্গা প্রেম তা স্পষ্ট হয়ে দেখা দেবে। ভলেন্টিয়ার কাজ যারা করবেন তারা নিজেদের ক্যারিয়ারের কাজে লাগাতে পারেন এমন একটা রাস্ট্রীয় সম্মান পাবেন এবং এটা কোন টাকা হবে না। টাকা ছাড়া দেশের জন্য কাজ করা লোকেরা দেশপ্রেম চর্চা করতে পারবেন। রাস্তায় কেউ বিপদে পড়লে তা দেখেও উট পাখীর মত মাথা লুকানো প্রবণতা বন্ধ করতে এই টাকা ছাড়া সম্মান পাওয়ার অভিযান করতে হবে। কোন পার্ট টাইম জব এটা হবে না। সামাজিক মানসিকতা উন্নত করতেই আমাদের আশে পাশের সব মানুষের খোঁজ নেবার বন্ধন তৈরী করবে এই ভলেন্টিয়ার।

খ) শিক্ষা শেষ করে কাজ করবে এমন অবস্থা অনেক পরিবারকে বিপদগ্রস্থ করে। দেখা যায় একটা ছেলে বা মেয়েকে মানুষ করতে দীর্ঘ ২৫/২৬ বছর অপেক্ষা করতে করতে অনেক বাবা মা জীবন ত্যাগ করেন, বা সেই ছেলে মেয়েটা চাকরী পাচ্ছে না দেখে স্কিল সার্টিফিকেট প্রফেশনাল সার্টিফিকেটের অত্যাচারে আবার টাকা পয়সা যোগানোর শেষ সম্বল ব্যয় করে, বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করে। এতে কাজ করা থেকে একটা তারুণ্য শক্তিকে দেশ হারিয়ে ফেলে। এই শক্তিটা মধ্যবয়সী লোকের কাছে আশা করা যায় না, আর মাঝ বয়সী লোকেরা সাংসারিক ও মানসিক সমস্যায় এতোটাই থাকেন যে শিক্ষা, শক্তি ও মনযোগ একসাথে করে উঠতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই ১৬ বছর থেকেই কর্মে নিয়োজিত কিনা তা সরকার জেনে নিতে পারে। বয়স অনুযায়ী কাকে কেমন কাজ দেয়া যায়, নিয়োজিত রাখা যায় তা দেখভাল করতে পারে। আর ভলেন্টিয়ার অপশন তো আছেই।

গ) পরীক্ষার জন্য সেমিস্টার সিস্টেম করে দিলে ছেলেমেয়েরা পুরো বইয়ের সবগুলো চ্যাপ্টার পড়ার সুযোগ পায়। কারণ প্রতি সেমিস্টারে তাদের অল্প অল্প করে চ্যাপ্টার পড়ানোর জোর দেয়া যায়। বর্তমান পদ্ধতিতে সারাবছর বইয়ের কিছু চ্যাপ্টার পাসের জন্য পড়ে পাস করার প্রবণতা বইটার প্রতি সম্মান আনায় না। সারাবছর পড়ে মাত্র ২/৩ ঘন্টার পরীক্ষায় কে কতটুকু মনে রাখল তার প্রতিযোগীতাকে পুরো মেধাশক্তিকে মূল্যায়ন করে না; অন্যভাবে জানুয়ারী থেকে মুখস্থ করে ডিসেম্বরে পরীক্ষার খাতায় লিখে ফেলাকে মুখস্থবিদ্যা প্রতিযোগীতা বলা যায়, কিন্তু মেধা বলা যায় না। সারাবছরে একবার ফেল করলে তাকে আবার পুরো বছর একই পড়া পড়তে হবে এমন বিষয়কে জেলখানায় আসামী রেখে দেবার সমান মনে হয়। সার্টিফিকেটে ইরেগুলার, প্রাইভেট লেখা যেন বৈষম্যপূর্ণ মনে হয়। পাস মার্ক ৩৩ দিয়ে এরপর তাকে থার্ড ডিভিশন নট এলাউড বলে সামাজিকভাবে হেনস্থা করাকে অবিচার মনে করি। প্রয়োজনে পাস মার্ক ৬০ হবে – পাস করতে না পারলে প্রতি মাসে ওই সাবজেক্টে পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থা থাকবে। যে সাবজেক্ট পরীক্ষা দেবে শুধু তার খরচ দেবে – যেগুলো পরীক্ষা দিবে না সেগুলার ফি নেবার কোন যুক্তি নেই।

ঘ) উচ্চশিক্ষিতদের চাকরীর ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে হ্যারাসমেন্টের শিকার হলে আইনী আশ্রয় প্রয়োজন। ‘কত মাস্টার্স এমবিএ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতেসে’ কোম্পানীদের এরকম কথা বলার সুযোগ বন্ধে সরকারকে হয় উচ্চশিক্ষা কঠিন করে দিতে হবে – যাতে সেখানে শুধু গবেষণার জন্য যারা নিয়োজিত হবেন তারা ডক্টরেট করতে মাস্টার্স ডিগ্রী নেবেন আর নাহয় এতগুলো মাস্টার্সকে চাকরির বাজারে কিভাবে সম্মানি দেবেন তা আমার জানা নেই।

একজন উচ্চ ডিগ্রীধারী তার জীবনের মূল্যবান সময় ব্যয় করে ও পরিবারের মা বাবার ত্যাগ তিতিক্ষাকে সাথে করে পড়াশোনা সমাপ্ত করে। তার পড়াশোনাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কোম্পানি রিক্রুটারেরা বলতে পারে না “কোত্থেকে কি পাস করসো, কোম্পানির কাজের সাথে পড়াশোনার কি মিল আছে?” কি মিল করলে ব্যবসায়ীদের সুবিধা হয় তা তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ও বিশ্ববিদ্যালয়কে বলতে পারেন। যারা ছাত্র তারা সম্পূর্ণ বিশ্বাস রেখে পড়াশোনা শেষ করে আসে একটা চাকরীতে তার প্রাপ্তির জন্য, তার বিশ্বাস নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার কোন অধিকার কোন জব রিক্রুটারের নাই। সমাজের এই নোংরা মানসিকতার চলাচল অতিদ্রুত বন্ধ হতে হবে, তা নাহলে মানুষের কোনরকমে চাকরী পাওয়া থেকে মুখবুজে অপরাধ সহ্য করে নেয়াটা সমান দোষ বাড়ানোতেই পড়ে।

বিষয় তিনঃ গৃহহীন ও মাথাগোঁজার ঠাঁইয়ের নিশ্চয়তা
ক) গৃহহীন মানুষের জন্য জায়গা দেবার একটা উৎসব দেখেছি বিগত সরকারের। আমি নিজেই গৃহহীন। আমিও জানানোর চেষ্টা করেছিলাম। আমিও চেয়েছিলাম আমি অন্তত বলি আমি আর আমার পরিবার কেন গৃহহীন। কোথাও বলবার কিছুই নাই। এমন ভাবনা থেকে মনে হয় আমি এইদেশের নাগরিকই নই। এই সরকারের কাছে আশা করবো গৃহহীনদের তথ্য নিয়ে তাদের জায়গা দিন। প্রচুর জায়গা রোডের দুপাশে খালি পড়ে থাকে, প্রচুর এপার্টমেন্ট এমনি এমনি খালি। অথচ মানুষ থাকবার জায়গা পায় না। আর জায়গা না পেলে অবৈধ উপায় ছাড়া আর কি বের করবে?

খ) বাসা ভাড়া করে যারা থাকেন তাদের অনেকেই ঋণের বোঝা কাঁধে নেন। ঋণগ্রস্থ মানুষদেরকেও আহবান করতে হবে তিনি আর চলতে পারছেন না তা যেন সরকারকে জানায়। যেসব বাড়িওয়ালা অতিরিক্ত ভাড়া নেন, অযথা ভাড়াটিয়াদের হয়রানী করেন, তাদের বিরুদ্ধে যেন ভারাটিয়ারা নির্ভয়ে বলতে পারে তার সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত। ভাড়াটিয়ার জন্যই আজকে তিনি বাড়িওয়ালা, তিনি কোন জমিদার নন যে মাস শেষে তাকে খাজনা দিতে সবাই বাধ্য, নাহলে বের করে দেবার হুমকী দেবে। ভাড়াটিয়াকে সম্মান প্রদর্শন করা সামাজিক মানসিকতার একটি অংশ।

সরকার বাজার মনিটরিং এর মত ভলেন্টিয়ারদের সাথে করে বাসাবাড়ীর-ভাড়া ব্যবসাকে মনিটর করতে পারেন। কোন বাসা বাড়িতে দুর্ঘটনা হলেই তখন সেই বাড়ির পারমিশন আছে কি নেই তার তদন্ত তখন করার চেয়ে আগে থেকেই দেখা দরকার বাড়িটা বানানোর পারমিশন ছিল কিনা, লোকেশন ও জায়গা এতটুকুই কিনা নাকি বাড়িওয়ালা নিজের স্বার্থে রাস্তাও দখল করে নিয়েছে, ইউটিলিটি লাইন বৈধ কিনা, ইউটিলিটি লাইনে কোন কারসাজি করে ভারাটিয়ার উপর তুলে দিচ্ছে কিনা, ইউটিলিটি লাইন কেটে ভাড়াটিয়েদের কষ্ট দিচ্ছে কিনা, কত স্কয়ার ফিট উনি বাসা ভাড়ার জন্য বরাদ্ধ রেখেছেন, বাসা ভাড়া এক একজনের থেকে এক এক রকম নিতে পারেন কিনা, কিসের ভিত্তি ধরে তিনি বাসা ভাড়াটা ঠিক করেছেন, ভাড়াটিয়াদের কেউ কোন বিপদে আপদে আছে তিনি জানেন কিনা, ভাড়ার রসিদ দেন কিনা (যেমন আমাদের দেয় না), আওয়ামী সরকার পতনের পর শুধু শুধুই ভাড়াটিয়া তাড়িয়ে দেন কিনা এরকম অনেক বিষয় আছে।

সরকার যদি সোশিও-সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেন ও সমাজে মানুষের মানসিকতার অবক্ষয় ও তার সম্ভাব্য প্রতিকারের ব্যবস্থা করেন সেটা খুবই আধুনিক ও জটিল হলেও দেশের মানুষের উপকার হয়। সেই সাথে রাস্তায় যে অসুস্থ মানুষদের আমরা পাগল বলি তাদের সুচিকিৎসা ও পুর্ণবাসনের জন্য কাজ করতে আহবান করি। দিন শেষে এই পাগলও বাংলাদেশী ও একজন ইন্ডিরেক্ট ট্যাক্স পেয়ার। তার অসম্মান হওয়া উচিত নয়।

বিষয় চারঃ স্বাস্থ্য গবেষণা ও পোষা প্রাণীদের অধিকার
ক) স্বাস্থ্য বিষয়ে আমার মনে হয়েছে, জটীল রোগের চিকিৎসায় যেন রোগী কোন অর্থই বহন না করে। তাহলে ডাক্তারেরা গবেষণার সর্বোচ্চ সুযোগ পায়। জটীল রোগী হয় কম আর ব্যয় বহুল হলে বিদেশে পাড়ি জমান উন্নত চিকিৎসার জন্য। অথচ দেশের ডাক্তারদের হাতযশ থাকলেও প্রতিনিয়ত জটীল রোগী নিয়ে গবেষণা করতে পারছে না – হয় রোগীর আর টাকা নেই তাই সে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন আর না হয় বিদেশে যাচ্ছেন অনেক টাকা সাথে নিয়ে।

টাকা নাই বলে চিকিৎসা নাই আর রোগিকে ধুকে ধুকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে এটা আমার সর্বশ্রেষ্ঠ অমানবিকতা মনে হয়েছে। একইভাবে টাকা দিতে পারছে না দেখে লাশ দেয়া যাবে না, এটাও হিংস্র পাশবিক মনে হয়েছে। জটীল গবেষনা যোগ্য রোগীর খরচ ফ্রী করে দিয়ে সেটা গবেষনার চ্যালেঞ্জ প্রোজেক্ট হিসেবে নিলে ডাক্তার ও ওষুধ কোম্পানির সমন্বয় হয়, দক্ষতা বাড়ানোর কারিগরি ঘাটতি সম্পর্কে জানা যায় এবং রোগী ও তার পরিবারের আস্থা অর্জন করা যায়।

খ) পোষা প্রাণিদের সাথে এদেশের মানুষের দুর্ব্যবহার ও অত্যাচার বর্বরতাকে হার মানিয়ে দিচ্ছে প্রতিদিন। বিড়াল ছানা উদ্ধার নিয়ে অনেক প্রতিবন্ধকতাতে পড়তে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। আমরা চাই সরকার পোষা প্রাণীদের রক্ষার, উদ্ধারের ও যথাযথ প্রতিপালনের একটা সুষ্ঠু আইন করুন ও কোন এনজিওকে পোষা প্রাণী দের বিষয়ে কাজ করতে নিয়ে আসুক ও অনুমোদন দিক। পৃথিবীতে শুধু মানুষেরই বেঁচে থাকার অধিকার হয় না। পরিবেশকে অস্বীকার করে দাম্ভিকতা দেখিয়ে কুকুর, বেড়াল, খরগোশ, ময়না, কচ্ছপ, হাতি পিটিয়ে মনুষ্যত্বের পরাজয় ছাড়া আর কোনো দামামা শোনা যায় না। জরুরী ভিত্তিতে নির্যাতিত পোষা প্রাণিদের পক্ষে থানায় যাতে মামলা করা যায় তার ব্যবস্থা দেখতে চাই।

বিষয় পাঁচঃ সংস্কৃতি চর্চার মূল্য ও মূল্য বুঝবার মানসিকতা
ক) স্থাপত্য হল সভ্যতার নিদর্শন। প্রাচীন যামানার ইতিহাস আমরা জেনে থাকি স্থাপত্য ও শৈল্পীক কারুকার্জ দিয়ে। আজকের এই যামানা আগামীতে ইতিহাস হবে। তখন আগামী যামানার মানুষ খুঁজবে শিল্প সাহিত্য সুর সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে। এক সময় যাকে ব্যবিলন বলতো এখন আমরা ইরান বলি। বাংলাদেশের নাম আসার আগে আদি ইতিহাস ঐতিহ্যে বাংলার অন্য নাম ছিল। এই শেকড় না জেনে থাকলে ও নতুন শিল্প চর্চা না করলে সময় ইতিহাসের সাক্ষ্য দিবে না।

খ) বইমেলায় নতুন বইগুলো ছাপানোর আগে গল্প যাচাই করা প্রয়োজন। গল্পের মান ও মাত্রার জন্য জাতীয় পুরষ্কার রাখা প্রয়োজন। বইমেলা ঘুরলে গল্পের মধ্যে নারীদেরকে স্বস্তা উপস্থাপন, ধর্ষণ, পাপাচারকে উস্কে দিয়ে বেস্ট সেলিং রেকর্ডে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। আরো দেখা যায় কোন নেতাকে নিয়ে এত এত বিভিন্ন বই লিখছে যে নেতা নিজেই যেন তাঁর সম্পর্কে জানতেনই না। আগের কোন লেখকের বই আবারও বিক্রির জন্য স্টল বসায়। কোন সরকারী আমলা কবিতা গল্পের বই লিখে মানুষজনকে বাধ্য করে কিনতে। এতে করে গল্পকার বা সাহিত্যিক তৈরী হয় না এরকম বই মাস্তানদের কারণে।

বই সিনেমার মতন নয়। বই কভার দেখেই বোঝার উপায় নেই তা সাহিত্য রসগুণ রাখবে কিনা। তাই বই পড়ার আর বইএর সাহিত্যগুণ ও ব্যবসায়িক বিক্রির এলিমেন্ট বের করার একটা টিম করা যেতে পারে যারা বই বিশ্লেষণ করবে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও দর্শন থেকে। বইটার সাহিত্যমান উন্নত হলে একটা র‍্যাংকিং দেয়া যায় আর পরবর্তীতে সিনেমা করানোর জন্য উদ্যোগ নেয়া যায়। কিন্তু সাহিত্যের সাথে আবারো পরিচয় করানো এখন এই সরকার ও ছাত্রদের দ্বায়িত্ব। বইয়ের এমন মাপকাঠির জন্য বিভিন্ন বিখ্যাত লেখকের গল্পকে আগেই বিশ্লেষণ ও গবেষণার টেকনিকগুলো দেখা যায়, আর সেই ফর্মূলা দিয়ে বইয়ের গল্পের মান বিন্যাস করা যায়। এরজন্য বাংলা একাডেমী ছাড়াও অনেকে কাজ করতে পারেন। পাঠ অযোগ্য ও সাহিত্য জ্ঞানশূন্য বই হলে তা ছাপানো যাবে না। টাকা দিয়ে মাস্তানি করে মেধাবী বলে নিজেকে চালানো যাবে না। এরপর বাকীটা পাঠকের উপর।

গ) বই মেলায় শিল্পীদের একটা প্রদশনীর ব্যবস্থা করা যায়। প্রকাশকের মতন গ্যালারীদেরকে আনা যায় নতুন ছবি, বিখ্যাত ছবির প্রদর্শনী নিয়ে। গ্যালারীদের সাথে বহির্বিশ্বের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা ও পরিচয় করানো যায়। আমাদের আর্টিস্ট মানেই শুধু বই কার্ড মেডেল লেভেল প্রিন্টিং করবে আর বিয়েতে স্টেজ সাজাবে এমনটাতে কোন শিল্পগুণ তৈরী হয় নাই, শিল্পীর সম্মানও থাকে নাই। টেলিভিশনের নাটকের ব্যাকগ্রাউন্ডের দেয়াল জুড়ে প্রচুর আঁকা ছবি দেখানো যায়।

ঘ) গানের ক্ষেত্রে আমাদের এখনও পর্যন্ত আমাদের ওস্তাদ ও ঘরানা কি কি আমরা যেন চিনিই না। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ এর পায়ের ধুলি নিয়ে পন্ডিত রবি শংকর এদেশে এসে পড়ে রইতেন সেসব আমরা যেন কখনই শুনিই নাই ও বুঝিই নাই। মিউজিক আর্ট ও বইয়ের ক্ষেত্রে কপি রাইট, পেটেন্ট, রয়ালটি যেন রূপকথার কোন চরিত্র। এখনও যারা বেঁচে আছেন তাঁদের কবে কে সম্মান দিবেন তা আমার জানা নাই। সারাদিন টিভিতে এত বেসুরো শিল্পীর কভার গানের ভিড়ে কোন মৌলিক গান তৈরী হয় নাই। বিগত ১০ বছরে পুরান শিল্পীর অনেকজনকে দেখা যায় নাই আর নতুন কোন শিল্পীই আসে নাই। এই বিশাল অনীহাকে খুঁজে না দেখলে বাংলার সংস্কৃতি চর্চা ধ্বংস হয়ে যাবে ও বিদেশী গান ধার করে শোনা ছাড়া আর কোন এন্টারটেইনমেন্ট থাকবে না।

তবে কোনো শিল্পি রাজনৈতিক কোন দলকে সমর্থন করছে বিধায় আর টেলিভিশনের পর্দায় দেখানোই যাবে না বা কোথাও কোন শো করতে পারবে না – এমন কালা কানুন দেখতে চাই না।

আরো অনেক বিষয় না লিখতে পারার জন্য ক্ষমা চাইছি। আশা করি বুঝতে পারবেন।

এখন এ বিষয়টা শুধু ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস স্যারের জন্য শুরু করছি।

বিষয় ছয়ঃ উদ্ভাবনের বাজার তৈরীকরণ ও উদ্ভাবকের জীবনধারণ ও সম্মান নিশ্চিতকরণ

প্রিয় স্যার, আপনার কাছে সময় বেশী নেবো না। আমার ফেনী দাদা বাড়ি আর নাসিরাবাদে দাদার বাসার সম্পত্তি থেকে কেন বঞ্চিত তার অভিযোগ করবো না। আমার বাবার হত্যাকে 'কবর দেবার মাটি হবে না' হুমকীতে সাধারণ মৃত্যু বলে দাফন করার ঘটণাও শোনাবো না।
আমি বলবো স্যার আমি দেশের জন্য করতে চেয়েও কিছু করতে না পারার কথা।

স্যার আমার তিনটে বিষয়ে পারদর্শীতা আছে। প্রথমটা হল আর্ট। আমি প্রচুর আর্ট দিতে পারবো – যদি বলেন পাবলো পিকাসোর ষাট হাজার কাজ ছাড়িয়ে যেতে -তাও পারবো। না হয় স্যার অর্ধেক সংখ্যা করতে পারলেও তো আমার দেশের জন্য ক্ষতি নেই। তারও অর্ধেক বা তারও অর্ধেক শিল্পকর্মও বা কার আছে এই দেশে? আমি ৪,৫০০ ঘন্টা কাজ করে ৮টি পেইন্টিং করেছি যা মালয়শিয়াতে অনলাইন শো কেইস এ সারা পৃথিবীতে প্রদর্শিত হয় এই বছর জানুয়ারী ২৮ তারিখে। নাগরিক টেলিভিশনে এ নিয়ে একটা প্রতিবেদনও হয়।

দ্বিতীয় হল গান। আমার এই মুহুর্তে ৩৫০ এর মতন গান আছে। স্বনামধন্য শিল্পীদের সাথে একটা দুটো কাজ হয়েছে। চাকরী করে টাকা জমিয়ে নিজের মত একটা ছোট্ট রুম স্টুডিও করে কাজ নিজে নিজে শিখে গান বানিয়েছি – শুধু নিজের জন্য নয়, অন্যান্য অর্থ সংকটে থাকা শিল্পী আবৃত্তিকারদের যেন সুযোগ করা যায়। ২০১০ এর চতুর্থ চাইল্ড ফিল্ম ফেস্টিভেল বাংলাদেশের জন্য লোগো মিউজিক আমি তৈরী করেছি। কিন্তু দিন শেষে আমি গরীব, তাই ব্যবসায়ী হয়ে উঠতে পারি নি। কিন্তু আমি তিন চার হাজারের মত গান ও সুর উপহার দিতে পারবো – ইচ্ছে মত নয়, মেহনত দিয়ে।

তৃতীয় হল আমার লেখা কবিতা ও গল্প। আমার কবিতা যেমন অনেক আছে ইংরেজিতে poeticous.com এ তেমনি তার চেয়ে বাংলায়ও আছে। কিছু গল্পও আছে। আমার লেখনীর ধার আছে আর দুএক জায়গায় প্রকাশিত হয়েছে। গল্প কবিতাগুলো কখনও বই আকারে বের হয় নি, কারণ আমি ব্যবসায়ী নই, প্রকাশনীকে পঞ্চাশ ষাট হাজার টাকা আমি দিতে পারি না। কোভিড নিয়ে ১৯টা সনেট লিখেছিলাম যার সাথে কিছু ডিজিটাল আর্ট ছিল এবং এটা নিয়ে ৭১ টিভিতে আমার একটা ছোট্ট সাক্ষাৎকার হয়েছে।

স্যার এই তিনটে বিষয় আপনাকে বলছি আমি আমাকে একজন উদাহরণ হিসেবে এনে। আমরা যারা প্রচন্ড প্রতিতাভান তারা শো-অফ বা জাহির করতে জানি না, তারা ইভেন্ট-মার্কেটিং-ব্রান্ডিং এসবে ইনভেস্ট করতে জানি না, টার্ন ওভার কিভাবে গোণে তা বুঝতে পারি না, স্পন্সর কে হবেন – কোন নেতা বা ধনাঢ্য ব্যাক্তি আমার কাজগুলো কিনবেন না কি নিজের বলে চালাবেন এসব কুটনীতি মাথায় ঢুকে না। আমি বা আমরা শুধু বানাতেই জানি, শুধু একটার চেয়ে একটা সৃষ্টি প্রোডিউস করতে জানি অন্তহীনভাবে – আমরা নাম কামানোর কথা ভেবে দেখি না। তাই আমার নাম কেউ শুনেও নি।

স্যার, আমার তাই আপনাকেই সঠিক মানুষ মনে হয়েছে যিনি শিল্পকর্ম ও প্রতিভার বিষয়টা বুঝবেন এবং যাকে এই বিষয়টা নির্ভয়ে বলা যায়। আমাদের স্যার বাজার বা মার্কেট মেকানিজম তৈরী করে দিতে হবে যেখানে আমাদের কাজগুলো যেমন হতেই থাকবে তেমনি প্রচার প্রসার ও বিপননও হবে। আমরা আমাদের কাজের মধ্যেই শান্তিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকতে চাই – ব্যবসা বুঝতে চাই না, নাম দেশ কামাবে আমার নাম ছড়ানোর ইচ্ছে নাই। শুধু কাজকেই প্রাধান্য দিতে চাই আর সেটা আমাদেরকে আরো এক্সপার্ট তৈরী করবে। এখন যদি এই কারুকাজ কোথায় বেচবো, কে স্পন্সর হবে, কোন গায়ক কত পেমেন্ট নিবে, স্টুডিও কস্টিং কত কম খরচে করা যাবে এসব ভেবে শেষে অনেক প্রতিভাবানদের দেখেছি অভিমান করে সরে যেতে, এমনকি সম্মান ও জীবন-জীবিকা টিকিয়ে রাখার জায়গা থেকে আত্মহত্যাও করতে। আমরা স্যার এভাবে শেষ হয়ে যেতে চাই না। আমাদের স্যার এভাবে মরতে দেবেন না।

হ্যান্ড ক্রাফট যারা বিক্রি করেন তাদের বিদেশে মার্কেট প্লেস দরকার। আমাদের পে-প্যাল লেনদেন চালু করা দরকার, বাইরে রকেট, নগদ, বিকাশ এসব একাউন্টের কথা বললে সন্দেহ করে। কিছু কিছু আর্ট মিউজিক প্লেস আছে যারা শুধুই পে-প্যাল একাউন্টকেই সমর্থন করে। আমরা এক্সপোর্ট করতে পারলে আমাদের দেশের সুনাম ও পরিচিতি বাড়বে। মানুষের কোথাও আরো কর্ম সংস্থান বাড়বে। টাকা ইনকাম করাটাই কর্মসংস্থান নয়, বরং সেবায় নিয়োজিত থাকাই কর্ম আর সে কর্মের মূল্যায়ন বাজারই করবে কর্মসংস্থান নিশ্চিত।
আমি স্যার কাজের পেছনেই দৌড়াতে চাই, আপনারাই আমার পারিশ্রমিক ঠিক করে দিন।

আমার জীবনের দুটো স্বপ্ন আমি ঠিক করে রেখেছি। আমার চাহিদার লিমিট।
একটি হল সফলতার স্বপ্নঃ আমার চার কোটি টাকা হলেই হবে। যার কিছু দিয়ে মাথা গোঁজার ঠাই কিনবো, স্টুডিওর জন্য কর্গ নোটিলাস কিবোর্ড কিনবো, একটা ছোট্ট পার্সোনাল লাইব্রেরী বানাবো যেখানে সারা বিশ্বের রূপকথা থাকবে আর বাকী টাকা ব্যাংকে রেখে ইন্টারেস্ট নেবো – যে অর্থই আমাকে অবিরাম বিশাল পরিমাণ কাজ করতে দেবার জন্য যথেষ্ট। একটা বাসাতে বসেই অজস্র আর্ট, অজস্র গান, আর গল্প কবিতা দিয়ে যেতেই পারবো কোয়ালিটির সাথে কমপ্রোমাইজ না করে। কারণ আমার তো মাথা গোঁজার ঠাই হয়ে গেছে আর ইনভেস্ট করে চলার মত ইন্টারেস্ট ইনকাম আসছে। ভাবতে পারেন এত টাকা এমনি চেয়ে বসছি কি না? আমার দেখা মতে গরীব লোক টাকা চাইলে হাজারটা কৈফিয়ত দিয়ে তাকে কনভিন্স করতে হয়। হাজার কোটি আন ইউজড টাকা লোপাট হল কোন জবাবদিহীতা ছাড়াই যেখানে, সেখানে তো আমি কাজ করে দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

আরেকটি হল ছা-পোষা স্বপ্নঃ আমার না হয় একটি একাউন্টেন্ট হিসেবে চাকুরী চাই। এই চাকরী দিয়ে আমি আইএইএমএবি পড়া শেষ করবো আর প্রথম স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাবার চেষটা করবো। দেশের কপালে যদি আমার প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ হয়, তখন পাবে - আমার যা আছে। হয়ত আন্তরিকতার একটু তারতম্য হয়ে যাবে কারণ আমার বয়স ও মানসিক চাপ বেড়ে যাবে ও তারুণ্য শক্তি কাজ করবে না। মাথা গোঁজার ঠাই, জীবন যাপনের উপযোগ, বৃদ্ধা মায়ের শুশ্রুষা পালন করে - তবেই আমাকে দেশের সংস্কৃতির সমৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে । এই পথে দেরী হলেও, তবুও আমি আমার লক্ষ্য থেকে পিছপা হবো না।

স্যার, মানুষের জীবনের চাহিদার লিমিট ঠিক করে নিলে তখন টাকার চাইতে কাজটাই বড় হয়ে সামনে আসে, আমার বক্তব্য ছিল এটাই। তখন একজীবনে কত কাজ করতে হবে তা ঠিক করা যায়। আপনি যদি আমাদের জন্য এরকম মেকানিজম ঠিক করে দেন তাহলে সাহিত্যে বব ডিলানের নোবেল আমাদের দেশের কেউ পেলে আপনার চেয়ে নিশ্চয়ই আর কেউ বেশী খুশী হবে না।

তবে স্যার সফলতার স্বপ্নে প্রতিযোগীতা থাকুক, কিন্তু যদি সফলতার স্বপ্নে মানুষ পৌঁছাতে না পারে তখন যেন সে তার ছা-পোষা স্বপ্নটাতে ফিরে আসতে পারে যেখানে সে প্রতিদিন বেঁচে থাকতে পারে। এই ছা-পোষা জীবনে স্যার যেন কোন কমপিটিশন না আসে, মানুষের ন্যুনতম সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার যেন সে তার যোগ্যতা অনুযায়ী ছা-পোষা জীবিকায় পায়।

বাংলাদেশ যেন আপনাদের হাত ধরে কর্মময়, সুঠাম অর্থনীতির, ও প্রতিভাবানদের দেশ হয়ে উঠে। কর্ম ও কর্মের প্রতি মনযোগ সব সংস্কার করে দেবে বলে আমার বিশ্বাস।

অজস্র ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা

বিনীত নিবেদক

শামীম আহমেদ চৌধুরী
বাংলাদেশের একজন শিক্ষিত বেকার প্রতিভাবান নাগরিক
ন্যাশনাল আইডি – ১৪৭৯২৯৯৯৭৪
ফোনঃ ০১৫৫৩৮৩১১৯০, ০১৮৪২৮৩১১৯০
বাসা নং ৪৭৮, রোড ১, ব্লক বি, চান্দগাও আবাসিক এলাকা
বহদ্দারহাট, চান্দগাও থানা, চট্টগ্রাম


মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১২

প্রহররাজা বলেছেন: টেকা টুকার ধান্দা না থাকলে উনি আপনার চিঠি পড়বেন না।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৮

নীহািরকা বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। আগে কখনও কোন রাষ্ট্রপ্রধান জনগণের কাছে চিঠি চান নাই। তাই প্রতিউত্তরে আমি আমার কথাগুলো জানাবার সাহস পেলাম।

২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১১

ঊণকৌটী বলেছেন: কি লেখছেন,মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝি নাই

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০১

নীহািরকা বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। মাথামুন্ডু অনেকক্ষণ খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছেন বলে

৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৩৬

ইলি বলেছেন: এ্যাবাবে বেবে দেকি নাঈ পিও...

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০২

নীহািরকা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ভেবে দেখেছেন বলে কৃতজ্ঞতা জানাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.