![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাঁঝবাতি
বাবা এই পাঁচ বছর অসুস্থ যতদূর সম্ভব চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি ডাঃ দেখিয়ে সুস্থ রাখার, কতদিন বেঁচে থাকে ঈশ্বর জানেন,এমনটা থাকলেও ভালো লাগে,সামনে ঘোরাফেরা করে বেশ ভালোই লাগে।মার শরীরও ভালোনা,দুইবার বড় অপারেশন হয়েছে অন্যান্য রোগও আছে,শরীর দুর্বল,হাঁটতে কস্ট হয়,খাওয়াদাওয়া কম করে।তবুও ঈশ্বরের কৃপায় ভালোই লাগছে আমাদের মা বাবা আছে,এ পরম তৃপ্তি।এখনও অসুস্থতার বা আনন্দের খবর শুনলে ছুটে আসেন।অনার্স মাস্টার্স পড়ার সময় আমার চাহিদামত টাকা ধার করে মাসের প্রথমেই মনিঅর্ডার করে পাঠিয়ে দিতেন,কেননা সেসময় বাবার বেতন পেতে আট দশ তারিখ লেগে যেতো।বাড়িতে টানেমানে সংসার চলতো,তবে ডাল ভাত ঠিকমতো চলতো,গরম ভাত তিনবেলা মার রান্না করা লাগতো,ছেলেমেয়েদের কস্ট না হয়।পরীক্ষার ফিও ঠিকমতো ধার করে যোগাড় করে দিতো।তবে এ ধারদেনার কাজটা মা ই শামাল দিতো বেশি।স্কুল জিবনে প্রাইভেট তেমন পড়া লাগতোনা,টুকটাক যা লাগতো তাতেই বাবা হিমশিম খেয়ে যেতেন।জামাকাপড় পূজোর সময় একসেট পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হত,মনে হতো সকলের বানানোর পরে আমাদেরটা সবার শেষে হতো।বিজুখলিপার দোকান হুলারহাটে বানাতে যেতাম পূজোর জামা।প্যান্ট তাতো মার হাতের শেলাইয়ের বানানোতা পড়তাম,ইংলিশ হাফ প্যান্ট কেনা যার মূল্য ছিলো সর্বোচ্চ পঁচিশ টাকা একটা বিশাল ব্যাপার।মা বাবা যে ভালো পড়ছে তাওনা,মার শাড়ি ছিড়ে সেলাই না হওয়া পর্যন্ত নতুনতা জুটতনা।গামছা লুঙ্গির দশাও তাই।হুলারহাট থেকে অনিলদের দোকান পরে অন্য দোকান দিয়ে বাকীতে মুদি সদায় করা হতো,পরে মুলগ্রাম বাজার দিয়ে পর পর কজনার কাছ দিয়ে মুদি সওদা করতাম বাকীতে,অন্যান্য সওদাও এভাবে বাকীতে আনা হতো।পড়ালেখার ব্যাপারে মা বাবা দুজনই ছিলেন খুব কঠিন।আমরা দুটাকা যাতে ঘরে আসে সেজন্য নাড়া কাটতাম,গোবর টোকাতাম ভোর রাত্রে লাকড়ির জন্য,নৌকোয় করে কৈবর্তখালির ওপার যেতাম ঘসি টোকাতে লাকড়ির জন্য।তারমধ্যে পড়ালেখায় ফাঁকি দেয়া ছিলো দুঃসাধ্য।এখন চার ভাই বোনের মধ্যে তিনজন চাকরী অন্যজনও মোটামুটি আছি।এখনো হিসাবেই চলে সংসার তবে আরেকটু স্বাচ্ছন্দে।
©somewhere in net ltd.