![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাঁঝবাতি
“ও ‘মা’ তোমরা আসলে কখন!”-পরীক্ষা দিয়ে বাসায় এসে মা-বাবা কে হঠাৎ দেখে মেয়ের আশ্চার্যান্বিত প্রশ্ন।পরীক্ষার সময় ঠ্যাক দেয়ার জন্য মাকে বাসায় আসতে বলেছিলো ।কিন্তু মা তার সংসার সামলাতে না পেরে না আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো।“তা আসলা কীভাবে?”-ওরে তোর বাবাকে সাথে নিয়ে না আসতে পারলে আমি আসবো কীভাবে,তোর বাবা ছাড়া আমিতো এক পাও বের হতে পারবোনা,সে রাজি হয়েছে তাই চলে আসলাম।
দীর্ঘ চার বছর ধরে দিপ্তী এর স্বামী অসুস্থ।তার লিভার সিরোসিস।স্নান করানো,ওষুধ খাওয়ানো,খাবার গুছায়ে বা কখনো মেখে খাওয়ানো,স্মানের পর লুঙ্গি ধুয়ে দেয়া এসবকিছু দিপ্তীকে সামলাতে হয়।তারপরে নাতির সবকিছু করে দিতে হয়,বৌমা এখনো সবকিছু শিখে উঠতে পারেনি তাকেও সারাদিন হেল্প করতে হয়।সারাদিনে বিছানায় গা দেয়ার সময় কৈ।সবাইকে গুছায়ে যখন দেখে স্বামী ঘুম পড়েছে,নাতি ঘুমায় তখন স্বামীর বিছানার এক কোনে কোনরকমে একটু গা এলিয়ে দেয়।
মেয়ের সাথে আলোচনার এক ফাঁকে তার বাসার গল্প বলে কে কী রকম করে।“যতদিন রথ চলে ততোদিন করে যাবো-বৌয়ের ভরসা আমি করি না,ওরে মা নিজের থালাখান খাওয়ার পর নিজে ধুয়ে রাখতে হয় তাই বোঝেনা,একটু কিছু তোর বাবা বললে তা অমনি ফোন করে তার বাবাকে বলে দেয়”।দিপ্তী কানে একটু কম শোনে।তাকে হিয়ারিং এইড লাগায়ে দিলে সে ভালো শুনতে পারে।কিন্তু কে দেবে!কোন কাজে ভুল করে বসলে স্বামী বলে উঠে তোমার মাথা কী খারাপ হয়ে গেছে নাকী?ডাঃ অনেক কিছু খেতে নিষেধ করেছে আবার কিছু কিছু সীমিত আকারে খেতে বলেছে।একঘেয়েমি লাউ,শশা,পেঁপে,চালকুমড়ার তরকারি কী আর রোজ ভালো লাগে।তাই নিষিদ্ধ খাবার ভাজাপোড়া ,গুড় ইত্যাদি লুকায়ে বা চেয়ে খায়।তা দেখলে বা শুনলে ছেলেও মা কে ঝারি দেয়,আবার না দিলে ওদের বাবা তার সাথে খিটমিট করে।মুখ বুজে শোনে আর সবদিক সামলায়ে কাজ করে যায়-সংসারের সকলকে সুখি করার জন্য।
বিয়ের পরে শ্বশুর তাকে ভিন্ন করে দিলে নিজের মত করে সংসার গুছিয়ে বড় করেছে।গরু পালানো,জমির ধান চাল কায়দা করে গুছায়ে গোলা ভরে রাখা, ছেলে মেয়ে পালানো সব তার এক হাতে করা লাগছে।কেননা স্বামী সপ্তাহ শেষে বাড়ি আসতো।সপ্তাহের বাকী দিনগুলি অন্যকে দিয়ে বাজার করানো থেকে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা তাদের দেখভাল করা সে একহাতে করেছে।
সতের আঠারো বছর শহরে আছে।মেয়ে ছেলে বিয়ে দিয়েছে।নাতি নাতনি আছে।স্বামী কে ছেড়ে কোথায়ও একটু ঘুরতে যেতে পারেনা।বিনোদন বলতে নাতির সাথে খুনসুটি করা।
বিয়ের পর স্বামীকে সুখী করা।এরপর ছেলেমেয়েদের খুশীতে রাখা।পুতের বৌয়ের সাথে তাল রেখে চলা।নাতি নাতনিদের আনন্দে রাখতে রাখতে নিজে যে কখন হারিয়ে গেছে তা সে জানেনা।নিজেকে জ্বালিয়ে অন্যদের সুখি রাখাই এদের জীবন।
বিদ্রঃ ছবিটি অনলাইন থেকে নেয়া।
০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৪৪
দেব জ্যোতি কুন্ডু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য
২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: ইদানিং আমিও কানে কম শুনছি। সবচেয়ে বেশি সময়া হয় মোবাইলে কথা শুনতে।
০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৪৫
দেব জ্যোতি কুন্ডু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১:১২
মা.হাসান বলেছেন: ভালো লাগছে।
নিষিদ্ধ খাবার লুকিয়ে লুকিয়ে দেয়ার বিষয়টা মনে হয় বাস্তবেও হয়।
০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৪৫
দেব জ্যোতি কুন্ডু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যর জন্য
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩০
অধীতি বলেছেন: গ্রামীন বাংলা থেকে শহরে বিশেষ করে ঢাকা শহরে এদের দেখা মেলে। মাঝে মাঝে দেখা যায়, মোটা ফ্রেমের চশমা পরা কেউ বিকেলে বেলকনির ফাক দিয়ে পান চিবোয় আর শহর দেখে। ঢাকা শহরের পানিতে এদের আয়ু আরো কমে যায়। মুছে যায় নকশি কাঁথার যুগ।