নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঢা কা র কু তু ব

হও সাবধান, আমরা আগুয়ান

ঢাকার কুতুব

যত মত তত পথও, ঢাকার কুতুব থতমত!

ঢাকার কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাসাদবাস কিংবা একটি অফিসিয়াল ছোটগল্প

০১ লা জুন, ২০১৪ রাত ১১:২৬

এক রাজ্যে এক রাজা ছিলেন। রাজা তার প্রজাদের ভীষণ ভালবাসতেন। রাজার ভালবাসার তুলনায় রাজ্যে সম্পদ ছিল কম। প্রজাদের অধিকাংশেরই ভাল ঘরবাড়ি ছিলনা, ভাল খেতে পারতো না। এই অবস্থা দেখে রাজার খুব মন খারাপ হতো। তাই রাজা সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি নিজেই একটা বিশালাকার প্রাসাদ বানাবেন, আর সেখানে তার প্রজাদের নিয়ে বসবাস করবেন। রাজার আদেশমতো অল্পদিনের মধ্যেই প্রাসাদ তৈরি হয়ে গেল। রাজার সামর্থবিহীন প্রজারা ধীরে ধীরে প্রাসাদে উঠতে লাগলো এবং তাদের প্রায় সবাই প্রাসাদে স্থান পেল।



প্রাসাদের প্রজাদের রাজা তাদের চাহিদার থেকেও বেশি দিতেন সবসময়। প্রথম প্রথম প্রজারা এতো কিছু পেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেলেও একসময় তারা এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়লো। ধীরে ধীরে রাজার প্রাসাদে লোকজনও বাড়তে লাগলো। রাজার অনেক আত্মীয়স্বজনের দেখা মিলল, যাদের আসলে প্রাসাদে থাকার প্রয়োজন নেই, তারাও প্রাসাদে এসে উঠতে লাগলো। তাছাড়া এতো লোকজনের দেখাশোনার জন্য আরো লোকজন দরকার হলো। ফলে একসময় রাজার প্রাসাদ লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়লো।

কথায় বলে, বসে বসে খেলে রাজার গোলায়ও কুলায় না। এই রাজার ক্ষেত্রে তেমনটি হলোনা। কারণ রাজা প্রজাদের এতো ভালবাসতেন যে তিনি রাজ্যের বাইরে থেকে ধন সম্পদ আহরণ করে প্রজাদের স্বার্থে কাজে লাগাতে লাগলেন। কিন্তু সমস্যা হলো অন্যখানে। প্রাসাদের তুলনায় লোকসংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়ে গেল। কিছুদিন এইভাবে চললো, তবে একসময় রাজা ঘোষণা দিলেন সবাইকে প্রাসাদে নাও রাখা হতে পারে। প্রজাদের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়ে গেল, কাকে প্রাসাদ থেকে বের করে দেয়া হয় এই দুঃচিন্তায়।

প্রজাদের দুঃচিন্তায় রাজাও চিন্তিত হলেন, কারণ তিনি প্রজাদের ভালবাসতেন। তিনি মনে মনে উপায় খুঁজতে লাগলেন। একসময় রাজার কাছ থেকে ঘোষণা এল, অধিকাংশকেই প্রাসাদ ছেড়ে দিতে হবে। তবে রাজা প্রজাদের নিয়ে অনেক ভাবেন এটাও জানালেন। আরো জানালেন, সামর্থ থাকলে তিনি প্রজাদের জন্য আরেকটি প্রাসাদ তৈরি করতেন। সেটা যেহেতু সম্ভব না তাই তিনি প্রাসাদের অদূরে একটি কুঁড়েঘর তৈরি করবেন, সেখানে যারা থাকতে চায়, তাদের বন্ধু রাজ্যের যোদ্ধাদের সাথে একটা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে। যুদ্ধে যারা জয়ী হবে, তারাই নতুন কুঁড়েঘরে থাকতে পারবে। রাজার আদেশমতো কুঁড়েঘর তৈরি হলো। একেবারে চলে যাওয়ার চেয়ে কুঁড়েঘরই ভাল, এই ভেবে প্রজাদের মধ্যে অনেকেই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলো। তবে তাদের মধ্য থেকে অল্পসংখ্যক জয়ী হলো এবং তারা কুঁড়েঘরে উঠে গেল। যারা জয়ী হতে পারলো না তারা আপাতত প্রাসাদেই থাকতে লাগলো, তবে যেকোন সময় প্রাসাদ ছাড়ার দুঃচিন্তা তাদের রয়েই গেল।

রাজা প্রজাদের অনেক ভালবাসতেন তাই তিনি সমস্যার সমাধান করতে নানান পথ অবলম্বন করলেন। অবশেষে এক বন্ধুরাজ্যের রাজা রাজাকে সহযোগিতা করলেন একটি বড় পাকাবাড়ি নির্মাণ করার জন্য, যাতে অনেক প্রজারা সেখানে থাকতে পারে। যথা সময়ে রাজ্যে একটি পাকাবাড়ি তৈরি হলো। তবে যেহেতু সবাইকে রাখা সম্ভব নয়, তাই নতুন পাকাবাড়িতে থাকার জন্যও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হলো। যুদ্ধে যারা জয়ী হলো তারা পাকাবাড়িতে উঠে গেল।

কুঁড়েঘর ও পাকাবাড়িতে দুই দফায় প্রজারা উঠে যাওয়ার ফলে দেখা গেল প্রাসাদে আগের মতো ভীড় নেই। রাজা যেমনটি চান ঠিক তেমন নিরিবিলি পরিবেশ প্রাসাদে আবার ফিরে এলো। রাজা তার প্রজাদের অনেক ভালবাসেন তাই প্রাসাদ থেকে প্রজাদের বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন। দীর্ঘদিন পর মনে শান্তি নিয়ে রাজা ঘুমোতে গেলেন। তবে বিছানায় শুয়ে শুয়ে রাজার মাথায় একটা নতুন চিন্তা এলো। রাজা ভাবতে লাগলেন, সবচেয়ে দুর্বল প্রজারাই এখন তার সাথে প্রাসাদে অবস্থান করছে। তাদের চেয়ে যারা একটু সবল, তারা চলে গেছে পাকাবাড়িতে। যারা সবচেয়ে শক্তিশালী তারা এখন বাস করছে কুঁড়ে ঘরে। শান্তি নিয়ে রাতে ঘুমোতে গেলেও পরদিন সকালে রাজাকে চিন্তিত দেখা গেল।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০১৪ রাত ১১:৩৯

একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
ভালোয় লেগেছে।

বাট ঠিক ক্লিয়ার না।

২| ০২ রা জুন, ২০১৪ রাত ১২:১১

ঢাকাবাসী বলেছেন: তারপর কি হলো?

৩| ০২ রা জুন, ২০১৪ রাত ১২:১৭

সাদা মেঘ কালো ছায়া বলেছেন: raja onek boka. Jara jitbe tader k prashad a rakha uchit chilo.

৪| ০২ রা জুন, ২০১৪ রাত ১২:৫২

অনিন্দ্য অন্তর অপু (অঅঅ) বলেছেন: শুভ কামনা । অনেক ভালো লাগা

৫| ০২ রা জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৪০

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: :)

৬| ০২ রা জুন, ২০১৪ রাত ১১:৫৭

পংবাড়ী বলেছেন: ইন্টারেস্টিং, তবে কোন কনক্লুশন দেখছি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.