নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মুহাম্মদ এনামুল হক আপনাদেরই লোক

ঢাকার লোক

বাংলা ভালোবাসি

ঢাকার লোক › বিস্তারিত পোস্টঃ

টাকার রং কালো !

০৫ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৩

সেদিন ব্লগার আরেফিনের লেখায় বাংলাদেশে এক ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি কালো টাকা আছে দেখে কালো টাকা সম্বন্ধে আরো জানতে ইচ্ছে হলো। তারই ফলশ্রুতি এই পোস্ট।

কালো টাকার সমস্যাটি বৈশ্বিক,বাংলাদেশে ছাড়াও বিশ্বের আরো কিছু কিছু দেশ কালো টাকার সমস্যা এবং কর ফাঁকির উচ্চ মাত্রার কারণে বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছে। এদের মাঝে ভারত, চীন, রাশিয়া, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল অন্যতম।
এই দেশগুলোতে কালো টাকার বিপুল পরিমাণ প্রবাহ রয়েছে যা তাদের অর্থনীতি ও সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে কালো টাকার সমস্যা বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে বিদ্যমান, এবং প্রতিটি দেশেই এ সমস্যার সমাধানে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

কালো টাকা হলো সেই অর্থ যা আইনত উপার্জন করা হয়নি এবং যা সাধারণত কর ফাঁকি দিয়ে গোপনে রাখা হয়। কালো টাকার উৎপত্তির প্রধান উৎসগুলি হল অবৈধ ব্যবসা, ঘুষ, চোরাচালান, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা,কর ফাঁকি, এবং বিভিন্ন প্রকারের দুর্নীতি। অলিখিত নগদ লেনদেন এবং জাল নথিপত্র তৈরি করে মানুষ কালো টাকা সংগ্রহ করে থাকে।

এটি অর্থনীতির জন্য একটি বড় সমস্যা কারণ এটি দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করে এবং সামাজিক অসমতা বৃদ্ধি করে।এই অর্থ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কোনো অবদান রাখে না বরং এটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কালো টাকার কারণে বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য কার্যক্রমে প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হয়। সরকার যথাযথ পরিমাণে রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারে না, ফলে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও জনসেবা কার্যক্রমে ঘাটতি দেখা দেয়। সাধারণ মানুষকেও এর ফলে নানান অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং অন্যান্য জনকল্যাণমূলক খাতে বিনিয়োগের অভাবের জন্য কালো টাকা অন্যতম দায়ী। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ সঠিক পথে ব্যয় না হওয়ার কারণে এসব খাতের মানোন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে সমাজে বৈষম্য বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশ অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ে।

বিপুল পরিমান কালো টাকা যার আছে সে একজন ক্রিমিনাল তার সামাজিক পরিচয় যাই থাকুক না কেন ! এ টাকা অর্জন এবং উপযুক্ত ট্যাক্স না দিয়ে গোপন রাখাই প্রথম অপরাধ। এ টাকার মালিক বাজারে ইনফ্লেশন সৃষ্টিতে সহায়তা করে। ব্যয় হয় অনেক সময় অপরাধমূলক কার্যক্রম চালানোর জন্য। সম্প্রতি যে একজন এমপি ভারতে খুন হয়েছেন এতে কালো টাকার প্রভাব অনস্বীকার্য্য। কালো টাকার আধিক্য দেশে অপরাধমূলক কার্যক্রম বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ব্যাংকের মারফত না করে বড় বড় লেনদেন নগদ টাকায় করা হয়, ফলে সরকার আয়কর থেকে বঞ্চিত হয়। দেশের অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব প্রকট হয়।
অপরাধীরা রাজনীতিবিদ, ক্ষমতাধরদের প্রভাবিত করতে অনেক সময় এই কালো টাকা ব্যবহার করে। এতে অপরাধীরা অপরাধ করে পার পেয়ে যায়। দেশ ভয়ানক পরিণতির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ।

কালো টাকার প্রভাব শুধু আর্থিক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি সমাজের নৈতিকতার উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে। কালো টাকার ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সহজে অর্থ উপার্জনের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, যা নৈতিক অবক্ষয়ের কারণ হয়। ফলে সৎ উপায়ে উপার্জিত অর্থের মূল্যায়ন কমে যায় এবং সৎ মানুষদের মধ্যে হতাশা এবং অসন্তোষ জন্ম নেয়।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কালো টাকার কারণে অর্থ পাচার এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বেড়ে যায়, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই কালো টাকা নির্মূল করতে হলে, স্থানীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সকল স্তরে কালো টাকার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

কালো টাকার প্রচলন বন্ধ করতে সরকার ও প্রশাসনের শক্তিশালী পদক্ষেপ প্রয়োজন, যাতে আর্থিক সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সমাজে সমতা ফিরে আসে। সরকার বিভিন্ন সময়ে কালো টাকার প্রবাহ রোধ করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যেমন ডিমনিটাইজেশন, বেআইনি অর্থ লেনদেনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন এবং আর্থিক লেনদেনের উপর নজরদারি বৃদ্ধি করা। তবে, এসব পদক্ষেপ কার্যকর হতে হলে সাধারণ জনগণের সচেতনতা এবং আইন মেনে চলার মানসিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কালো টাকার প্রবাহ রোধ করার জন্য প্রযুক্তিগত পদক্ষেপও অত্যন্ত জরুরি। ডিজিটাল লেনদেন, ব্লকচেইন প্রযুক্তি, এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা সম্ভব। এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নজরদারি বৃদ্ধি করে কালো টাকার প্রবাহ বন্ধ করা যায়।

সরকারি নীতিমালার পরিবর্তন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা, এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে কালো টাকার বিরুদ্ধে সংগ্রামকে আরো জোরদার করা যেতে পারে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা এবং প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে মানুষ কালো টাকার কুফল সম্পর্কে অবগত হয় এবং এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। একসাথে কাজ করে এবং সততা ও নৈতিকতা বজায় রেখে আমরা কালো টাকার সমস্যা মোকাবেলা করতে পারি এবং একটি স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত সমাজ গড়ে তুলতে পারি।
(লেখাটি ChatGPT র সহায়তা নিয়ে লেখা)






মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ইয়ে, লাস্ট লাইনটা না লিখলে কি হতো না? :) আমি মুগ্ধ হচ্ছিলাম আপনার লেখনিশক্তি দেখে। যাই হোক, যথাযথ ইনপুট দিতে পেরেছেন বলেই এমন ভালো লেখাটা পেয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকেই :)

যার/যাদের কালো টাকা আছে, তাদের কিছু ছিঁড়ার ক্ষমতা আসলে আমাদের নাই। ট্যাক্স দেয়ার সময় ক্যালকুলেশনে ২/৩ শ টাকা হেরফের হলেই টেনশনে পড়ে যাই, এই আবার ঝামেলায় পড়লাম নাকি। আর এরা কোটি কোটি টাকার ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে কালো টাকার পাহাড় গড়ে বসে আছেন।

ইচ্ছে করলেই গোয়েন্দা মারফত কালো টাকার মালিকদের ধরা যায়। অবস্থা বিশেষে এটা সহজেই বোঝা যায়, কালো টাকার মালিক কে বা কারা। কিন্তু তাদের ধরবে কে?

০৫ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৮

ঢাকার লোক বলেছেন: লেখাটি ভালো হয়েছে জেনে খুশি হলাম ! এতে ChatGPT র অবদান অস্বীকার করে অনেকটা ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার মত অপরাধে অপরাধী হতে চাইনি !
আর কে ওদের ধরবে ? আন্তরিক হলে সরকারই পারে !!

২| ০৫ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩

কামাল১৮ বলেছেন: কালোটাকা মানে অবৈধ টাকা না।অপ্রদর্শিত টাকা।আপনি জমি বিক্রয় করলেন এক কোটি টাকায় দলিল করলেন দশ লাখ টাকার।৯০ লাখ টাকা কালো টাকা হয়ে গেলো।

০৫ ই জুন, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঢাকার লোক বলেছেন: অপ্রদর্শিত টাকা বা কর ফাঁকি দেয়া টাকা যেমন কালো টাকা তেমনি অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকা, যেমন ঘুষ, চাঁদাবাজি, চোরাচালান, কাউকে খুন করা বাবদ পারিশ্রমিক(?) বা মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত টাকাও এর আওতায় পড়ে, কেননা এ "কামাই" ও কেউ তার আয়কর বিবরণীতে ( ট্যাক্স রিটার্ন ) পেশ করে না !
ধন্যবাদ পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

৩| ০৬ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৯:২৭

রাসেল বলেছেন: আমাদের দেশে মাননীয় আইনপ্রণেতা এবং আইনরক্ষাকারীগণ কর ফাঁকি দেয়ার বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে থাকেন, সাম্প্রতিক ঘটনা বিবেচনা করা যেতে পারে, যদিও সময়ের সাথে সাথে এই দোষী ব্যক্তিরা নির্দোষ এবং অন্যান্য পুণ্যের অধীকারী হিসাবে বিবেচিত হবেন। যা কিছু কর আদায় হয়, তার বেশীরভাগ অর্থ মাননীয়গণ নিজের সম্পদ মনে করেন। এই পরিস্থিতিতে, দয়া করে পরামর্শ দিন সাধারণ মানুষকে কর দিতে কীভাবে উৎসাহিত করা যায়। যদিও সাধারণ মানুষের সরাসরি কর দেয়ার মত খুব কম আয়ই হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.