নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এখনও অন্ধকার রয়ে গেছে চারধারে

ধীবর চন্দন

জেনেছি মানুষ তার চিবুকের কাছেও ভীষণ অচেনা ও একা

ধীবর চন্দন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফ্রেন্ডশীপ ডে কড়চা

১০ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:১৬

ফ্রেন্ডশীপ ডে দিনটা ভালো হলেও এর শুরুর পেছনে একটু ঝামেলা আছে। এই দিনটা প্রথম চালু করে গ্রিটিং কার্ডস কোম্পানীগুলো। যাতে ফ্রেন্ডশীপ ডে উপলক্ষে তাদের কার্ড বিক্রির ব্যবসা আরো একটু চাঙা হয় - এই আর কি!

আমরা যে দিনটাকে ফ্রেন্ডশীপ ডে বলে পালন করছি সেটা হলো অগাস্ট মাসের প্রথম রবিবার। কিন্তু অফিসিয়ালি ফ্রেন্ডশীপ ডে-টা হচ্ছে জুলাই মাসের ত্রিশ তারিখ (জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেমব্লি ২০১১ সালের ঘোষণা অনুযায়ী)। যাহোক, বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন তারিখে ফ্রেন্ডশীপ ডে পালন করে।

তো ফ্রেন্ডশীপ ডে উপলক্ষে কয়েকজন বিখ্যাত লোকের কথা বলি যারা একে অন্যের বন্ধু ছিলেন:

মার্ক টোয়েইন ও নিকোলা টেসলা

প্রথম জন বিখ্যাত আমেরিকান ঔপন্যাসিক এবং দ্বিতীয়জন ভিশনারী ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। নিকোলা টেসলাই প্রথম ব্যক্তি যে ডিসি কারেন্টের বদলে এসি কারেন্ট ব্যবহারের প্রস্তাব করেন। এবং তার বস ও আরেক বিখ্যাত ইনভেন্টর টমাস আলভা এডিসন টেসলার যুগান্তকারী ধারণা যাতে মানুষ জানতে না পারে তার সব রকম চেষ্টাই করেন। কারণ, এডিসনের ইলেক্ট্রিক্যাল সাপ্লাই লাইনে শুধু ডিসি কারেন্টই যেতো! যাহোক, টোয়েইন আর টেসলার বন্ধুত্বের গল্পে ফিরে আসি। এঁদের দুজনের প্রথম দেখা হয় নিউ ইয়র্কের এক অভিজাত প্রাইভেট ক্লাবে। নাম 'প্লেয়ারস ক্লাব'। টোয়েইন এবং টেসলার বন্ধুত্বের ভিত্তিটা হলো তাদের দু'জনের অতি উর্বর কল্পনা শক্তি। এবং মার্ক টোয়েইন তার সময়ের একটা বড় অংশ টেসলার ল্যাবরেটরিতেই কাটাতেন।

টমাস আলভা এডিসন ও হেনরী ফোর্ড

এডিসনের নাম কে না জানে। মোটিভেশনাল স্পীকাররা টেসলার ১০০০ বার ফেইল খাওয়া টাঙস্টেন ফিলামেন্ট লাইট বাল্ব বানানোর এক্সপেরিমেন্টকে বহু ব্যবহারে তেতো বানিয়ে ফেলেছে। যাহোক, এডিসন আমেরিকার এবং পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম সেরা একজন উদ্ভাবক। এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হেনরী ফোর্ড হলেন আমেরিকার আরেক বিখ্যাত ইনডাস্ট্রিয়ালিস্ট এবং ফোর্ড মটর কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা। হ্যাঁ, ফোর্ডই প্রথম ইঞ্জিনচালিত প্রাইভেট কার তৈরি এবং বাজারজাত করেন। ফোর্ড এবং এডিসন দুজনেরই ফ্লোরিডার ফোর্ট মায়ার্সে ছুটি কাটানোর বাড়ি ছিলো। এডিসন ফোর্ডের অটোমোবাইল কোম্পানীতে বিনিয়োগ করেছেন, টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।

জে. আর. আর. টোলকিয়েন এবং সি. এস. লুইস

টোলকিয়েনের নাম মনে হয় সবাই শুনেছে, যারা শোনেনি তাদের জন্য বলি: এই লোকের মাথা থেকেই 'লর্ড অব দ্য রিংস' উপন্যাস গুলো বেরিয়েছে। আর সি. এস. লুইস ও একজন বিখ্যাত লেখক, এঁর ব্রেইন চাইল্ড হলো 'ক্রনিকলস অব নারনিয়া'। অতএব দু'জনের মধ্যে বন্ধুত্ব হবে এটা আর আশ্চর্য কী! না, প্রথম প্রথম কিন্তু তারা একে অন্যের প্রতিদ্বন্দী ছিলেন। দুজনই ছিলেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এবং ইনকলিংস নামে একটা অপেশাদার লেখক সংঘের সদস্য। এই দু'জনের বন্ধুত্ব আমাদের জন্যে একটা বড় আশির্বাদ হয়ে থাকবে, কারণ সি. এস. লুইস এর ঠেলাগুতানিতেই জনাব টোলকিয়েন লর্ড অব দ্য রিংস সিরিজ লেখা শেষ করেন! তা না হলে এই দারুন মুভিগুলোই আমরা পেতাম কোথায়? (আর গেম অব থ্রোনসও কিন্তু লর্ড অব দ্য রিংস এর প্রভাবেই লেখা।)

আলবার্ট আইনস্টাইন এবং কার্ট গোডেল

জার্মানীতে থাকার সময় আইনস্টাইনের অনেক বন্ধু ছিলো। কিন্তু হিটলারের জার্মানী থেকে আমেরিকায় গিয়ে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে যোগদান করার পর আইনস্টাইন বন্ধু হিসেবে পান কার্ট গোডেলকে। কার্ট গোডেল বিখ্যাত যুক্তিবিদ, গণিতবিদ এবং দার্শনিক। আইস্টাইনের ফিল্ড ইকুয়েশানের এক্সাক্ট সলুশানগুলো 'গোডেল সলুসানস' নামে পরিচিত। বিংশ শতাব্দির বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনার উপর কার্ট গোডেলের প্রভাব সম্পর্কে লিখতে হলে একটা মোটাসোটা বই হয়ে যাবে। আইনস্টাইনের উপর গোডেলের প্রভাব সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তাঁদের আরেক বন্ধু অর্থনীতিবিদ মর্গেনস্টার্ন বলেছেন, জীবনের শেষ দিকে আইনস্টাইন ডিপার্টমেন্টে আসতেন শুধু একটা কারণে, যেন বিকেলের দিকে গোডেলের সাথে হেঁটে হেঁটে বাসার দিকে চলে যাওয়া যায়। গোডেলের 'রোটেটিং ইউনিভার্স' ধারণার মধ্যে অতীতে টাইমট্রাভেল করার ধারণা থাকায় আইনস্টাইন নিজের থিওরীর উপরেই সন্দিহান হয়ে পড়েন! তাঁর ওপর এমনই প্রভাব গোডেলের ছিলো।

গোডেলও যুদ্ধবিক্ষুব্ধ অস্ট্রিয়া থেকে আমেরিকায় পালিয়ে যান। কার্ট গোডেলের আমেরিকান সিটিজেনশিপ পরীক্ষায় সাক্ষীর দ্বায়িত্ব পালন করেন আইনস্টাইন ও মর্গেনস্টার্ন।

যাহোক, এ পর্যন্ত পড়ে নিশ্চই বুঝতে পারছেন যে, জীবনে যদি কিছু করতে চান তবে আপনার কেমন বন্ধু থাকা উচিৎ!

সবাইকে হ্যাপী ফ্রেন্ডশীপ ডে!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.